চট্টগ্রামের পূর্ব নাসিরাবাদের ‘নাগিন পাহাড়’ পুরোটাই দখলদারদের পেটে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের ৩৪ জন এ দখলের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহাড় কেটে দখলদাররা গড়ে তুলেছে ‘গ্রীনভ্যালি হাউজিং’ ও ‘পাাহাড়িকা আবাসিক’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে গত শুক্রবার গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন পড়ে মনে হয়, দখলদাররা তাদের দখল পাকাপোক্ত করার জন্য আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। তাদের যেন উচ্ছেদ করা না যায় এজন্য নিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা। দখল যেন হাতছাড়া হয়ে না যায় সেজন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা, আকাশে উড়ানো হয়েছে ড্রোন। আর নির্বিঘ্নে মাটি কাটার জন্য চারদিকে সীমানা প্রাচীর তো আছেই।
অথচ পুরো চিত্রটিই হওয়ার কথা ছিল এর উল্টো। সিসি ক্যামেরা, ড্রোন- এসব প্রযুক্তি দখল বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবহার করবে সেটাই হতো স্বাভাবিক। পাহাড়, নদ-নদী বা জলাশয় দখলের ক্ষেত্রে দখলদারদের যতটা আগ্রহ ও উদ্যম দেখা যায়, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে দখল উচ্ছেদে ততটাই উদাসীন দেখা যায়। তাদের এই উদাসীনতারই সুযোগ নিচ্ছে দখলদাররা। অন্যায় উৎসাহ পাওয়ায় প্রতিদিন দখলদারদের খাতায় নাম লেখাচ্ছে নতুন নতুন ব্যক্তি, শ্রেণী ও গোষ্ঠী।
আগে দেখা যেত মুষ্টিমেয় একটি গোষ্ঠী এসব অবৈধ দখল করত। এলাকায় বা গণমাধ্যমে তাদের পরিচয় হতো ভূমিদস্যু হিসেবে। এখন দেখা যাচ্ছে সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষই এ দখলের সঙ্গে যুক্ত। নাগিন পাহাড় দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক একজন চেয়ারম্যানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
অবৈধ জমি দখল, বেচাকেনা ও লুটপাটের সময় সরকারি আর বিরোধী দলের এক শ্রেণীর নেতা একই ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দখলের সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে দখল করেন।
পাহাড় কেটে যারা পরিবেশের ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, তারপরও পাহাড় কাটা ও দখল ঠেকানো যাচ্ছে না। এক পাহাড়ে অভিযান চালালে অন্য পাহাড় রাতারাতি কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক এলাকা।
দশকের পর দশক ধরে চিহ্নিত ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী মিলে পাহাড় কেটে দখল করেই চলছে। এমন দখল আবার রাতারাতি হয় কীভাবে সেটা আমরা জানতে চাইব। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাগের ডগায় দখলদাররা ড্রোন উড়িয়ে সেসবের তদারকিই বা করে কীভাবে? স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকলে পাহাড়খেকোদের আস্ত পাহাড় গিলে খাওয়া কোনভাবেই সম্ভব হতো না বলেই আমরা মনে করি।
যত দ্রুত সম্ভব পাহাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। শুধু উচ্ছেদ করলেই হবে না, পাশাপাশি তদারকিও করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন আবার দখল হয়ে না যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দখলদারদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার, ২৮ নভেম্বর ২০২১
চট্টগ্রামের পূর্ব নাসিরাবাদের ‘নাগিন পাহাড়’ পুরোটাই দখলদারদের পেটে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দলের ৩৪ জন এ দখলের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহাড় কেটে দখলদাররা গড়ে তুলেছে ‘গ্রীনভ্যালি হাউজিং’ ও ‘পাাহাড়িকা আবাসিক’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে গত শুক্রবার গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন পড়ে মনে হয়, দখলদাররা তাদের দখল পাকাপোক্ত করার জন্য আটঘাট বেঁধেই নেমেছে। তাদের যেন উচ্ছেদ করা না যায় এজন্য নিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা। দখল যেন হাতছাড়া হয়ে না যায় সেজন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা, আকাশে উড়ানো হয়েছে ড্রোন। আর নির্বিঘ্নে মাটি কাটার জন্য চারদিকে সীমানা প্রাচীর তো আছেই।
অথচ পুরো চিত্রটিই হওয়ার কথা ছিল এর উল্টো। সিসি ক্যামেরা, ড্রোন- এসব প্রযুক্তি দখল বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবহার করবে সেটাই হতো স্বাভাবিক। পাহাড়, নদ-নদী বা জলাশয় দখলের ক্ষেত্রে দখলদারদের যতটা আগ্রহ ও উদ্যম দেখা যায়, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকে দখল উচ্ছেদে ততটাই উদাসীন দেখা যায়। তাদের এই উদাসীনতারই সুযোগ নিচ্ছে দখলদাররা। অন্যায় উৎসাহ পাওয়ায় প্রতিদিন দখলদারদের খাতায় নাম লেখাচ্ছে নতুন নতুন ব্যক্তি, শ্রেণী ও গোষ্ঠী।
আগে দেখা যেত মুষ্টিমেয় একটি গোষ্ঠী এসব অবৈধ দখল করত। এলাকায় বা গণমাধ্যমে তাদের পরিচয় হতো ভূমিদস্যু হিসেবে। এখন দেখা যাচ্ছে সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষই এ দখলের সঙ্গে যুক্ত। নাগিন পাহাড় দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক একজন চেয়ারম্যানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে।
অবৈধ জমি দখল, বেচাকেনা ও লুটপাটের সময় সরকারি আর বিরোধী দলের এক শ্রেণীর নেতা একই ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও দখলের সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে দখল করেন।
পাহাড় কেটে যারা পরিবেশের ক্ষতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, তারপরও পাহাড় কাটা ও দখল ঠেকানো যাচ্ছে না। এক পাহাড়ে অভিযান চালালে অন্য পাহাড় রাতারাতি কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে আবাসিক এলাকা।
দশকের পর দশক ধরে চিহ্নিত ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী মিলে পাহাড় কেটে দখল করেই চলছে। এমন দখল আবার রাতারাতি হয় কীভাবে সেটা আমরা জানতে চাইব। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাগের ডগায় দখলদাররা ড্রোন উড়িয়ে সেসবের তদারকিই বা করে কীভাবে? স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকলে পাহাড়খেকোদের আস্ত পাহাড় গিলে খাওয়া কোনভাবেই সম্ভব হতো না বলেই আমরা মনে করি।
যত দ্রুত সম্ভব পাহাড়ের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। শুধু উচ্ছেদ করলেই হবে না, পাশাপাশি তদারকিও করতে হবে। ভবিষ্যতে যেন আবার দখল হয়ে না যায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। দখলদারদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।