সড়ক-মহাসড়কে ভোগান্তি এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার। যানজট, ফেরি পারাপারে দীর্ঘ লাইন, ভাঙাচোরা সড়ক, দুর্ঘটনার মতো সমস্যা লেগেই আছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এ ভোগান্তি যে কয়েকগুণ বেড়ে যাবে, সেটা বোঝার জন্য কোন গবেষণার দরকার হয় না। ঘরমুখো মানুষ যেমন জানে ঈদযাত্রায় তাদের ভোগান্তি অনিবার্য, তেমনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও বিষয়টি অজানা নয়।
ভোগান্তি থেকে নিস্তার নেই জেনেও ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাত্রাপথে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে চান। পাহাড়সম সমস্যা থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষ ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আশ্বাস দেয়। এবারও আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু তাতে ঘরমুখো মানুষের উদ্বেগ কমছে না।
ঈদে এবার ঢাকা শহর ছেড়ে যাবেন প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঘরমুখো মানুষ এবারের ঈদযাত্রায় যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন। রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার পথেই যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাতের দোকান, অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ভাঙাচোরা সড়ক ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে অসহনীয় যানজটের শিকার হতে হয় আন্তঃজেলা যানবাহনকে। রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার সাতটি পয়েন্টে যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। এসব পয়েন্টে যেন যানজট না লাগে সেজন্য সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া মাওয়া, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে চার-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন হয়ে যায়। ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় ঘরমুখো মানুষদের। দু-একটি ফেরি বাড়িয়ে এ সমস্যার সমাধান করা কঠিন। আগামীতে পদ্মা সেতু চালু হলে মানুষের ফেরিঘাটের দুর্ভোগ হয়তো কমবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে পাঁচ লাখের বেশি যানবাহনের হালনাগাদ ফিটনেস সনদ নেই। এসব যানবাহনের কোনটির আয়ুষ্কাল শেষ, কোনটি ত্রুটিপূর্ণ। ঘষামাজা করে উপরে রঙের প্রলেপ দিয়ে প্রতিবারই অসংখ্য আনফিট বাহন ঈদযাত্রায় শামিল হয়। মাঝরাস্তায় নষ্ট হয়ে কিংবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বিশৃঙ্খল আর ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে দেশের সড়ক-মহাসড়ক। বুয়েটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতিদিন যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রায় ২০ শতাংশের জন্য দায়ী আনফিট মোটরযান। ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়কে যেন কোন ধরনের আনফিট গাড়ি চলাচল করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে হবে। এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সড়ক-মহাসড়কে দুর্ভোগের আরেক কারণ মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ তিন চাকার যানবাহন। এসব ছোট যানবাহন দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেট কারের গতি কমিয়ে দেয়। রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট তৈরি করে। ফলে বেড়ে যায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি। তাই জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক ও নসিমন-করিমন চলাচল বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাস স্টেশন, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। যে কোন মূল্যে রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার পথকে যানজটমুক্ত রাখতে হবে। ঈদে যান চলাচল নিরবচ্ছিন্ন করতে হবে। যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং, অসম প্রতিযোগিতা, ওভারটেকিং, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, যত্রতত্র যাত্রী উঠানো-নামানো বন্ধ করতে হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। তাহলে ঈদযাত্রায় কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে, লাঘব হতে পারে মানুষের ভোগান্তি।
মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০২২
সড়ক-মহাসড়কে ভোগান্তি এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার। যানজট, ফেরি পারাপারে দীর্ঘ লাইন, ভাঙাচোরা সড়ক, দুর্ঘটনার মতো সমস্যা লেগেই আছে। ঈদকে কেন্দ্র করে এ ভোগান্তি যে কয়েকগুণ বেড়ে যাবে, সেটা বোঝার জন্য কোন গবেষণার দরকার হয় না। ঘরমুখো মানুষ যেমন জানে ঈদযাত্রায় তাদের ভোগান্তি অনিবার্য, তেমনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও বিষয়টি অজানা নয়।
ভোগান্তি থেকে নিস্তার নেই জেনেও ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাত্রাপথে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে চান। পাহাড়সম সমস্যা থাকা সত্বেও কর্তৃপক্ষ ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আশ্বাস দেয়। এবারও আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু তাতে ঘরমুখো মানুষের উদ্বেগ কমছে না।
ঈদে এবার ঢাকা শহর ছেড়ে যাবেন প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঘরমুখো মানুষ এবারের ঈদযাত্রায় যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন। রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার পথেই যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাতের দোকান, অবৈধ গাড়ি পার্কিং, ভাঙাচোরা সড়ক ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে অসহনীয় যানজটের শিকার হতে হয় আন্তঃজেলা যানবাহনকে। রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার সাতটি পয়েন্টে যানবাহনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। এসব পয়েন্টে যেন যানজট না লাগে সেজন্য সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া মাওয়া, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপে চার-পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন হয়ে যায়। ফেরি পারাপারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় ঘরমুখো মানুষদের। দু-একটি ফেরি বাড়িয়ে এ সমস্যার সমাধান করা কঠিন। আগামীতে পদ্মা সেতু চালু হলে মানুষের ফেরিঘাটের দুর্ভোগ হয়তো কমবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে পাঁচ লাখের বেশি যানবাহনের হালনাগাদ ফিটনেস সনদ নেই। এসব যানবাহনের কোনটির আয়ুষ্কাল শেষ, কোনটি ত্রুটিপূর্ণ। ঘষামাজা করে উপরে রঙের প্রলেপ দিয়ে প্রতিবারই অসংখ্য আনফিট বাহন ঈদযাত্রায় শামিল হয়। মাঝরাস্তায় নষ্ট হয়ে কিংবা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বিশৃঙ্খল আর ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে দেশের সড়ক-মহাসড়ক। বুয়েটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রতিদিন যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রায় ২০ শতাংশের জন্য দায়ী আনফিট মোটরযান। ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়কে যেন কোন ধরনের আনফিট গাড়ি চলাচল করতে না পারে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে হবে। এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সড়ক-মহাসড়কে দুর্ভোগের আরেক কারণ মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ তিন চাকার যানবাহন। এসব ছোট যানবাহন দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেট কারের গতি কমিয়ে দেয়। রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট তৈরি করে। ফলে বেড়ে যায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি। তাই জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক ও নসিমন-করিমন চলাচল বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বাস স্টেশন, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। যে কোন মূল্যে রাজধানী থেকে বের হওয়া ও প্রবেশ করার পথকে যানজটমুক্ত রাখতে হবে। ঈদে যান চলাচল নিরবচ্ছিন্ন করতে হবে। যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং, অসম প্রতিযোগিতা, ওভারটেকিং, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, যত্রতত্র যাত্রী উঠানো-নামানো বন্ধ করতে হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। তাহলে ঈদযাত্রায় কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে, লাঘব হতে পারে মানুষের ভোগান্তি।