সিলেট নগরের হাওলদারপাড়া এলাকায় ‘মজুমদার টিলা’র অধিকাংশই কেটে সমতল করে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা এ টিলা কাটছে। শুধু মজুমদার টিলাই নয় নগরের ব্রাহ্মণশাসন এবং শহরতলির বালুচর, পীরেরবাজার, খাদিমনগর ও গোয়াবাড়ি এলাকায় ছয়টি টিলা কাটা চলছে। নগরের বাইরেও কয়েকটি উপজেলায় টিলা কাটার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক্সকাভেটর দিয়ে এসব টিলা কেটে ট্রাক বা ঠেলাগাড়ি দিয়ে মাটি সরানো হচ্ছে। ফলে ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকা, নিঃশেষ হচ্ছে বনাঞ্চল, হুমকির মুখে রয়েছে প্রাণ-প্রকৃতি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন টিলা কাটা চললেও প্রশাসনিক কোন নজরদারি নেই; ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা।
অভিযোগ আছে, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে টিলা কাটারও। সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে অন্তত তিনটি টিলা পুরোপুরি কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে আরও একটি টিলা। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, প্রভাবশালী ব্যক্তি, আবাসন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো রয়েছেই।
সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা কাটার এমন অভিযোগ নতুন নয়। বরং এগুলোর কিছুটা গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা গেলেও বাকিটা অগোচরেই থেকে যায়। টিলা কাটার প্রভাবে সিলেটে ভূমিক্ষয় বাড়ছে। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
প্রকৃতির গঠন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। টিলা কাটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যেসব টিলা এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে, সেসবের সুরক্ষা করতে হবে। দেশের পাহাড়-টিলা সুরক্ষায় আইন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। আইন অমান্য করলে অপরাধ ভেদে কারাদ- বা অর্থদ- দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ আইনের প্রয়োগ খুব একটা চোখে পড়ে না।
উন্নয়নের কথা বলে পাহাড়-টিলা কাটা হয়, নির্বিচারে বন ধ্বংস করা হয়, খাল-জলাশয় ভরাট করা হয়, নদী দখল-দূষণ করা হয়। উন্নয়নের নামে এসব ধ্বংস করার একটা প্রবণতা দেশে চালু হয়েছে। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, উন্নয়নের জন্য সাত খুন মাফ। উন্নয়নের নামে যাচ্ছে তাই করা যায়, যেভাবে খুশি সেভাবেই প্রকৃতিকে বিনষ্ট করা যায়। আমরা বলতে চাই, উন্নয়ন করতে হবে প্রকৃতি রক্ষা করে। পাহাড়-টিলা-বন-খাল-জলাশয়-নদী ধ্বংস করে উন্নয়ন করা হলে তা টেকসই হবে না।
সিলেটের টিলা কাটার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক।
সোমবার, ০৯ মে ২০২২
সিলেট নগরের হাওলদারপাড়া এলাকায় ‘মজুমদার টিলা’র অধিকাংশই কেটে সমতল করে ফেলা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা এ টিলা কাটছে। শুধু মজুমদার টিলাই নয় নগরের ব্রাহ্মণশাসন এবং শহরতলির বালুচর, পীরেরবাজার, খাদিমনগর ও গোয়াবাড়ি এলাকায় ছয়টি টিলা কাটা চলছে। নগরের বাইরেও কয়েকটি উপজেলায় টিলা কাটার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক্সকাভেটর দিয়ে এসব টিলা কেটে ট্রাক বা ঠেলাগাড়ি দিয়ে মাটি সরানো হচ্ছে। ফলে ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকা, নিঃশেষ হচ্ছে বনাঞ্চল, হুমকির মুখে রয়েছে প্রাণ-প্রকৃতি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন টিলা কাটা চললেও প্রশাসনিক কোন নজরদারি নেই; ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা।
অভিযোগ আছে, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে টিলা কাটারও। সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণের কাজে অন্তত তিনটি টিলা পুরোপুরি কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এক্সকাভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে আরও একটি টিলা। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, প্রভাবশালী ব্যক্তি, আবাসন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তো রয়েছেই।
সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা কাটার এমন অভিযোগ নতুন নয়। বরং এগুলোর কিছুটা গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা গেলেও বাকিটা অগোচরেই থেকে যায়। টিলা কাটার প্রভাবে সিলেটে ভূমিক্ষয় বাড়ছে। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ।
প্রকৃতির গঠন ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সহজ কাজ নয়। টিলা কাটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যেসব টিলা এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে, সেসবের সুরক্ষা করতে হবে। দেশের পাহাড়-টিলা সুরক্ষায় আইন রয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। আইন অমান্য করলে অপরাধ ভেদে কারাদ- বা অর্থদ- দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এ আইনের প্রয়োগ খুব একটা চোখে পড়ে না।
উন্নয়নের কথা বলে পাহাড়-টিলা কাটা হয়, নির্বিচারে বন ধ্বংস করা হয়, খাল-জলাশয় ভরাট করা হয়, নদী দখল-দূষণ করা হয়। উন্নয়নের নামে এসব ধ্বংস করার একটা প্রবণতা দেশে চালু হয়েছে। বিষয়টা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, উন্নয়নের জন্য সাত খুন মাফ। উন্নয়নের নামে যাচ্ছে তাই করা যায়, যেভাবে খুশি সেভাবেই প্রকৃতিকে বিনষ্ট করা যায়। আমরা বলতে চাই, উন্নয়ন করতে হবে প্রকৃতি রক্ষা করে। পাহাড়-টিলা-বন-খাল-জলাশয়-নদী ধ্বংস করে উন্নয়ন করা হলে তা টেকসই হবে না।
সিলেটের টিলা কাটার বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক।