মাসখানেক আগেই বন্যার পানিতে ডুবেছিল সিলেট অঞ্চল। সেই ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেখানকার মানুষ। আবারও সিলেটবাসী বন্যায় ডুবেছে। এবং এবারের বন্যা গত মাসের চেয়ে তো বটেই স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। অঞ্চলটির ৮০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে ডুবেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
সিলেটে আকস্মিক বড় বন্যার কারণ হচ্ছে ভারতের মেঘালয় ও আসামের বৃষ্টি। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার। যা সেখানকার জুন মাসের বৃষ্টিপাতের বিবেচনায় ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
বন্যায় লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তাদের আশ্রয় মিলছে না। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উদ্ধারের অপেক্ষায় আছেন অসংখ্য মানুষ। উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে প্রশাসনের। যাতায়াত-যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় তারা নিজে থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। শুধু নৌযান ব্যবহার করে উদ্ধার কাজ এগিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আটকে পড়া মানুষের তুলনায় নৌযানের সংখ্যাও কম বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে হেলিকপ্টার ব্যাবহার করার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
বন্যার্ত মানুষদের জরুরিভিত্তিতে খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি বিশুদ্ধকরণ সরঞ্জাম দিতে হবে। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। গবাদি পশু-পাখির আশ্রয় ও খাবারের সংস্থান করাও জরুরি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন গোষ্ঠী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে সেটা আমাদের আশা।
বন্যা শুধু সিলেটবাসীকেই ভোগাচ্ছে না। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলাও বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। উজানের পানির সঙ্গে যোগ হয়েছে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সহসাই উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হবে না। যে কারণে মোট ১৭ জেলায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাজেই সরকারকে বন্যা মোকাবিলায় তৎপর হতে হবে।
বন্যা বাংলাদেশের চিরচেনা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। একে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা আমাদের ভালোভাবেই জানা আছে। এবারও এই চ্যালেঞ্জ দেশের মানুষ সফলভাবে মোকাবিলা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বন্যা শুধু দুর্ভোগ আর দুর্গতিই বয়ে আনে না। এর অনেক সুফলও মেলে।
ভাটির দেশ হিসেবে এখানে বন্যা হবে সেটা স্বাভাবিক। বন্যা মোকাবিলার ব্যবস্থাও প্রকৃতি আমাদের দিয়ে রেখেছে। সেটা হচ্ছে- নদ-নদী, হাওর, বিল, খালসহ বিভিন্ন জলাশয়। তবে নদ-নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশে বন্যার পানি ধারণের ক্ষমতা অনেক আগেই কমেছে। এখনো যেসব নদনদী বা জলাশয় আছে সেগুলোর দখল-দূষণে বিপর্যস্ত, গভীরতা কমে গেছে। নদ-নদীগুলো রক্ষা করা না গেলে, এর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ বজায় রাখা না গেলে বন্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতা ব্যহত হবে। বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের অনুধাবন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
শনিবার, ১৮ জুন ২০২২
মাসখানেক আগেই বন্যার পানিতে ডুবেছিল সিলেট অঞ্চল। সেই ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেখানকার মানুষ। আবারও সিলেটবাসী বন্যায় ডুবেছে। এবং এবারের বন্যা গত মাসের চেয়ে তো বটেই স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। অঞ্চলটির ৮০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে ডুবেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
সিলেটে আকস্মিক বড় বন্যার কারণ হচ্ছে ভারতের মেঘালয় ও আসামের বৃষ্টি। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার। যা সেখানকার জুন মাসের বৃষ্টিপাতের বিবেচনায় ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
বন্যায় লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তাদের আশ্রয় মিলছে না। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উদ্ধারের অপেক্ষায় আছেন অসংখ্য মানুষ। উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে প্রশাসনের। যাতায়াত-যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় তারা নিজে থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। শুধু নৌযান ব্যবহার করে উদ্ধার কাজ এগিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আটকে পড়া মানুষের তুলনায় নৌযানের সংখ্যাও কম বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে হেলিকপ্টার ব্যাবহার করার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
বন্যার্ত মানুষদের জরুরিভিত্তিতে খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি বিশুদ্ধকরণ সরঞ্জাম দিতে হবে। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। গবাদি পশু-পাখির আশ্রয় ও খাবারের সংস্থান করাও জরুরি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন গোষ্ঠী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে সেটা আমাদের আশা।
বন্যা শুধু সিলেটবাসীকেই ভোগাচ্ছে না। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলাও বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। উজানের পানির সঙ্গে যোগ হয়েছে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সহসাই উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হবে না। যে কারণে মোট ১৭ জেলায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কাজেই সরকারকে বন্যা মোকাবিলায় তৎপর হতে হবে।
বন্যা বাংলাদেশের চিরচেনা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। একে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা আমাদের ভালোভাবেই জানা আছে। এবারও এই চ্যালেঞ্জ দেশের মানুষ সফলভাবে মোকাবিলা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বন্যা শুধু দুর্ভোগ আর দুর্গতিই বয়ে আনে না। এর অনেক সুফলও মেলে।
ভাটির দেশ হিসেবে এখানে বন্যা হবে সেটা স্বাভাবিক। বন্যা মোকাবিলার ব্যবস্থাও প্রকৃতি আমাদের দিয়ে রেখেছে। সেটা হচ্ছে- নদ-নদী, হাওর, বিল, খালসহ বিভিন্ন জলাশয়। তবে নদ-নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় দেশে বন্যার পানি ধারণের ক্ষমতা অনেক আগেই কমেছে। এখনো যেসব নদনদী বা জলাশয় আছে সেগুলোর দখল-দূষণে বিপর্যস্ত, গভীরতা কমে গেছে। নদ-নদীগুলো রক্ষা করা না গেলে, এর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ বজায় রাখা না গেলে বন্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতা ব্যহত হবে। বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের অনুধাবন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।