পদ্মা সেতু রাজধানীর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীসাধারণের যাতায়াতের পথ সহজ ও মসৃণ করবে-এমনটা প্রত্যাশা ছিল। আশা করা হয়েছিল, সেতু চালু হলে কম সময় বা ফেরি পারাপারে সময় অপচয় না করে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করা যাবে। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন ফিকে হতে চলছে।
পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করছে। এসব যানবাহন ৫-৬ মিনিটে পদ্মা সেতু পার হলেও রাজধানীর প্রবেশমুখে দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে যানজটে। এক্ষেত্রে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে যানজট লেগেই থাকে। আগে ফেরিতে পদ্মা নদী পার হতে সময় লাগত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন ঢাকার এ প্রবেশমুখেই ২-৩ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়।
যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভার হওয়ার পরে যানজট ছিল না। ফলে রাজধানীতে প্রবেশে যাত্রী সাধারণের সময়ও কম লেগেছে। এখন যানজটের কারণে শুধু পদ্মা সেতু পার হয়ে আসা যানবাহনই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রীদেরও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় বাড়ছে শহরতলীর যানজটও। যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন সড়কের ২-৩ কিলোমিটারজুড়ে যানজটে আটকে থাকতে হয় যাত্রীসাধারণের।
যানজটের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর আন্তঃজেলা পরিবহনের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া। এর চেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সড়কে চরম অব্যবস্থাপনা। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সড়কের দুই পাশে বাসের অবৈধ পার্কিং, বিভিন্ন বাস কোম্পানির একাধিক কাউন্টার, চৌরাস্তায় সড়ক বন্ধ করে বাজার ও দোকান, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা, সড়কের মাঝখান দিয়ে গাড়ি ঘোরানো, পুলিশ ও স্থানীয় মাস্তানদের চাঁদাবাজি, যততত্র বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করানো, ফুটপাতের দোকান এবং সড়কের খানাখন্দের কারণে যানজট লেগেই থাকে।
পদ্মা সেতুর কাক্সিক্ষত সুফল পেতে হলে অবিলম্বে এ যানজট নিরসন করতে হবে। এজন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প মেয়াদে সড়কের সব অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে খানখন্দ দূর করতে হবে, যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে। আন্তঃজেলার বেশিরভাগ পরিবহনই ফ্লাইওভার ব্যবহার না করে নিচের সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এতে নিচের সড়কে চাপ আরও বেড়ে যায়। এসব পরিবহনকে ফ্লাইওভার ব্যবহারে বাধ্য করতে হবে।
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বাসের ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। হয় বাস টর্মিনালের ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে, নতুবা নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মা সেতু ও মাওয়া মহাসড়ক নির্মাণের ফলে ঢাকার বাইরের খন্ডিত যানজট ঢাকার প্রবেশমুখে নিয়ে আসা হয়েছে। সময় বাঁচানো ও যানজট নিরসনে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও সমন্বিত উন্নয়ন না করায় এসবের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার ৮টি মহাসড়কে প্রবেশের জন্য লিংক রোড নির্মাণ করতে হবে। পদ্মা সেতুর ‘ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্ক’ ইনার সার্কুলার রুটের গাবতলী সোয়ারীঘাট হয়ে কেরানীগঞ্জের সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ অগ্রাধিকারে ভিত্তিতে নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে ঢাকার প্রবেশমুখের যানজট দূর হবে না।
যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে।
বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২
পদ্মা সেতু রাজধানীর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীসাধারণের যাতায়াতের পথ সহজ ও মসৃণ করবে-এমনটা প্রত্যাশা ছিল। আশা করা হয়েছিল, সেতু চালু হলে কম সময় বা ফেরি পারাপারে সময় অপচয় না করে রাজধানীতে আসা-যাওয়া করা যাবে। কিন্তু সে স্বপ্ন এখন ফিকে হতে চলছে।
পদ্মা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ২০-৩০ হাজার যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করছে। এসব যানবাহন ৫-৬ মিনিটে পদ্মা সেতু পার হলেও রাজধানীর প্রবেশমুখে দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে যানজটে। এক্ষেত্রে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে যানজট লেগেই থাকে। আগে ফেরিতে পদ্মা নদী পার হতে সময় লাগত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন ঢাকার এ প্রবেশমুখেই ২-৩ ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়।
যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভার হওয়ার পরে যানজট ছিল না। ফলে রাজধানীতে প্রবেশে যাত্রী সাধারণের সময়ও কম লেগেছে। এখন যানজটের কারণে শুধু পদ্মা সেতু পার হয়ে আসা যানবাহনই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যাত্রীদেরও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় বাড়ছে শহরতলীর যানজটও। যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন সড়কের ২-৩ কিলোমিটারজুড়ে যানজটে আটকে থাকতে হয় যাত্রীসাধারণের।
যানজটের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর আন্তঃজেলা পরিবহনের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া। এর চেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সড়কে চরম অব্যবস্থাপনা। সংবাদের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সড়কের দুই পাশে বাসের অবৈধ পার্কিং, বিভিন্ন বাস কোম্পানির একাধিক কাউন্টার, চৌরাস্তায় সড়ক বন্ধ করে বাজার ও দোকান, ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা, সড়কের মাঝখান দিয়ে গাড়ি ঘোরানো, পুলিশ ও স্থানীয় মাস্তানদের চাঁদাবাজি, যততত্র বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করানো, ফুটপাতের দোকান এবং সড়কের খানাখন্দের কারণে যানজট লেগেই থাকে।
পদ্মা সেতুর কাক্সিক্ষত সুফল পেতে হলে অবিলম্বে এ যানজট নিরসন করতে হবে। এজন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প মেয়াদে সড়কের সব অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে। দ্রুত সড়ক সংস্কার করে খানখন্দ দূর করতে হবে, যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে। আন্তঃজেলার বেশিরভাগ পরিবহনই ফ্লাইওভার ব্যবহার না করে নিচের সড়ক দিয়ে চলাচল করে। এতে নিচের সড়কে চাপ আরও বেড়ে যায়। এসব পরিবহনকে ফ্লাইওভার ব্যবহারে বাধ্য করতে হবে।
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বাসের ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। হয় বাস টর্মিনালের ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে, নতুবা নতুন টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মা সেতু ও মাওয়া মহাসড়ক নির্মাণের ফলে ঢাকার বাইরের খন্ডিত যানজট ঢাকার প্রবেশমুখে নিয়ে আসা হয়েছে। সময় বাঁচানো ও যানজট নিরসনে বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ করা হলেও সমন্বিত উন্নয়ন না করায় এসবের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকার ৮টি মহাসড়কে প্রবেশের জন্য লিংক রোড নির্মাণ করতে হবে। পদ্মা সেতুর ‘ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্ক’ ইনার সার্কুলার রুটের গাবতলী সোয়ারীঘাট হয়ে কেরানীগঞ্জের সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ অগ্রাধিকারে ভিত্তিতে নির্মাণ করতে হবে। তা না হলে ঢাকার প্রবেশমুখের যানজট দূর হবে না।
যানজট নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে।