চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রেলক্রসিংয়ে গতকাল শুক্রবার একটি মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা লেগে ১১ জন মারা গেছেন। নিহতদের সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। অভিযোগ উঠেছে, গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত গেটম্যানকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে পুলিশ মামলা করেছে।
রেলক্রসিংয়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়েই ঘটে। বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী, রেল দুর্ঘটনায় ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২২১ জন মারা গেছেন। যাদের মধ্যে রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৮৭ জন। দেশের রেলক্রসিংগুলো যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। অরক্ষিত রেলক্রসিং তো বটেই সুরক্ষিত হিসেবে চিহ্নিত ক্রসিংয়েও দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব ক্রসিংয়ে মূলত গেটম্যানদের অবহেলায় দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। মিরসরাইয়েও একই অভিযোগ মিলেছে।
মিরসরাইয়ের দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেল দুর্ঘটনার তদন্তের পর কী হয় সেই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বেশিরভাগ তদন্তই হয় দায়সারা। অনেক তদন্তের প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। যেগুলো আলোর মুখ দেখে সেগুলো গৎবাঁধা। বেশিরভাগ তদন্তেই ঘটনার বর্ণনা প্রায় একই রকম থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেসব সুপারিশ করা হয় তা বাস্তবায়ন হয় না। কোন তদন্তে রেলের কাউকে দায়ী করা হলেও দেয়া হয় লঘুদন্ড।
গেটম্যানদের দায়িত্বশীল হওয়ার পথে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে গৎবাঁধা প্রক্রিয়া। সমস্যা হচ্ছে, রেল দুর্ঘটনার কোন দায়দায়িত্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও কখনো স্বীকার করে না। রেলক্রসিংয়ে প্রাণহানি ঘটলে তার জন্য শাস্তির কোন বিধান প্রচলিত আইনে নেই। বরং দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনের চালককেই দায়ী করা হয়।
রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, অনেক ক্রসিংয় দেখভালের দায়িত্ব তারা নিতে নারাজ। রেলের ওপর দিয়ে যেসব কর্তৃপক্ষ সড়ক তৈরি করে তাদেরই ক্রসিং দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের জন্য এক কর্তৃপক্ষ আরেক কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে দায় চাপায়। আর দায় চাপানোর এই খেলায় বলি হন সাধারণ মানুষ।
রেলক্রসিং নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যেখানে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস তৈরি করতে হবে। দেশের কোথাও কোথাও ক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস তৈরি করা হয়েছে। তার সুফলও মিলেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্থানেও বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিংয়ে ওভারপাস তৈরি করতে হবে।
সব ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রশিক্ষিত গেটম্যান রাখতে হবে। মিরসরাইয়ের উক্ত রেলগেট অস্থায়ী অপ্রশিক্ষিত ওয়েম্যান দায়িত্ব পালন করছে বলে জানা গেছে। গেট রক্ষার কাজ প্রশিক্ষিত লোক দিয়ে করা হলে এই দুর্ঘটনা নাও ঘটতে পারত। মিরসরাইসহ অন্যান্য স্থানে প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ দেয়া জরুরি।
আমরা সুরক্ষিত রেলক্রসিং চাই। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে বা কারও কোন অবহেলায় আর একটি প্রাণও যেন না ঝরে সেটাই আমাদের চাওয়া।
শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রেলক্রসিংয়ে গতকাল শুক্রবার একটি মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা লেগে ১১ জন মারা গেছেন। নিহতদের সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। অভিযোগ উঠেছে, গেটম্যানের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত গেটম্যানকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে পুলিশ মামলা করেছে।
রেলক্রসিংয়ে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়েই ঘটে। বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী, রেল দুর্ঘটনায় ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২২১ জন মারা গেছেন। যাদের মধ্যে রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৮৭ জন। দেশের রেলক্রসিংগুলো যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। অরক্ষিত রেলক্রসিং তো বটেই সুরক্ষিত হিসেবে চিহ্নিত ক্রসিংয়েও দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব ক্রসিংয়ে মূলত গেটম্যানদের অবহেলায় দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। মিরসরাইয়েও একই অভিযোগ মিলেছে।
মিরসরাইয়ের দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেল দুর্ঘটনার তদন্তের পর কী হয় সেই প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, বেশিরভাগ তদন্তই হয় দায়সারা। অনেক তদন্তের প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। যেগুলো আলোর মুখ দেখে সেগুলো গৎবাঁধা। বেশিরভাগ তদন্তেই ঘটনার বর্ণনা প্রায় একই রকম থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেসব সুপারিশ করা হয় তা বাস্তবায়ন হয় না। কোন তদন্তে রেলের কাউকে দায়ী করা হলেও দেয়া হয় লঘুদন্ড।
গেটম্যানদের দায়িত্বশীল হওয়ার পথে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে গৎবাঁধা প্রক্রিয়া। সমস্যা হচ্ছে, রেল দুর্ঘটনার কোন দায়দায়িত্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও কখনো স্বীকার করে না। রেলক্রসিংয়ে প্রাণহানি ঘটলে তার জন্য শাস্তির কোন বিধান প্রচলিত আইনে নেই। বরং দুর্ঘটনার শিকার যানবাহনের চালককেই দায়ী করা হয়।
রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, অনেক ক্রসিংয় দেখভালের দায়িত্ব তারা নিতে নারাজ। রেলের ওপর দিয়ে যেসব কর্তৃপক্ষ সড়ক তৈরি করে তাদেরই ক্রসিং দেখভালের দায়িত্ব নিতে হয়। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের জন্য এক কর্তৃপক্ষ আরেক কর্তৃপক্ষের ঘাড়ে দায় চাপায়। আর দায় চাপানোর এই খেলায় বলি হন সাধারণ মানুষ।
রেলক্রসিং নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। যেখানে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস তৈরি করতে হবে। দেশের কোথাও কোথাও ক্রসিংয়ের ওপর ওভারপাস তৈরি করা হয়েছে। তার সুফলও মিলেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্থানেও বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিংয়ে ওভারপাস তৈরি করতে হবে।
সব ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রশিক্ষিত গেটম্যান রাখতে হবে। মিরসরাইয়ের উক্ত রেলগেট অস্থায়ী অপ্রশিক্ষিত ওয়েম্যান দায়িত্ব পালন করছে বলে জানা গেছে। গেট রক্ষার কাজ প্রশিক্ষিত লোক দিয়ে করা হলে এই দুর্ঘটনা নাও ঘটতে পারত। মিরসরাইসহ অন্যান্য স্থানে প্রশিক্ষিত গেটম্যান নিয়োগ দেয়া জরুরি।
আমরা সুরক্ষিত রেলক্রসিং চাই। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে বা কারও কোন অবহেলায় আর একটি প্রাণও যেন না ঝরে সেটাই আমাদের চাওয়া।