alt

সম্পাদকীয়

বজ্রপাতে করুণ মৃত্যু

: রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

কৃষি শ্রমিক, জমির মালিক এবং নারী-শিশু মিলে তারা ১৪ জন। তাদের সবাই গিয়েছিল ফসলের খেতে। কৃষি শ্রমিকরা রোপা আমনের চারা তুলছিল। সে সময় বৃষ্টি শুরু হলে তারা সবাই টিনের তৈরি একটি সেচ ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল। তখন বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে আটজনের মৃত্যু হয়। পরে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অপর পাঁচজন। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মাটিকোড়া গ্রামে। এই ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও শোকাভিভূত।

বজ্রপাতে একসঙ্গে অনেক সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর করুণ ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরযাত্রীদের একটি দলের ওপর বজ্রপাত হলে ১৭ জন মারা যায়। বরযাত্রীর বৃষ্টির সময় নদীতীরে অবস্থিত ইজারাদারের টিনের চালার টং ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বন্যা বা সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় বজ্রপাতে এখন বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারা দেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ১৬৪ জন। তবে বজ্রপাতে কত মানুষ আহত হয়, গবাদি পশু মারা যায় কতগুলো তা জানা যায়। ঘরবাড়ি বা গাছপালা ধ্বংসের পরিসংখ্যানও জানা যায় না।

কৃষি জমি, খেলার মাঠ বা উন্মুক্ত প্রান্তরে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। বৃষ্টির সময়ে এসব স্থানে থাকা মানুষ আশ্রয় খুঁজে পায় না। যে কারণে তারা বজ্রপাতের সহজ শিকার হয়। আবার টিনের ঘরের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আশ্রয় নিয়েও অনেকে মারা যান।

বজ্রপাতের বিপদ সম্পর্কে এখনো বহু মানুষ অসচেতন। বিশেষ করে বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে কী করতে হবে, আর কী করা উচিত নয়, সেটা অনেকেই জানেন না। বজ্রপাত সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। কখন বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকে, বজ্রপাতের সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, সেসব বিষয়ে মানুষকে বিশেষ করে বজ্রপাত প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাপক হারে জানাতে হবে।

বজ্রপাত প্রতিরোধে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় তালগাছ লাগাচ্ছে। তবে তালগাছ লাগানোর ক্ষেত্রে স্থান নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তালগাছগুলো লাগানো হয়েছে মূলত রাস্তার পাশে। এতে বজ্রপাত রোধের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বজ্রপাতে সাধারণত চাষাবাদের কাজে নিয়োজিত কৃষক মাঠে বা জলাধারের পাশে অবস্থানরত মানুষ মারা যায়। এ জন্য বজ্রপাতপ্রবণ স্থানে তালগাছ লাগানো জরুরি।

তালগাছ লাগানো হলেও এর সুফল মিলতে অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে। গাছগুলোকে বজ্রপাত প্রতিরোধের মতো সক্ষম বা বড় হতে কমবেশি ১০ বছর সময় লাগতে পারে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা জরুরি ভিত্তিতে লাইটনিং অ্যারেস্টার বসানোর ওপর জোর দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশের কোন কোন স্থানে লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর বসিয়েছে। এ ধরনের আরও যন্ত্র স্থাপন করা দরকার। হাওরাঞ্চলসহ যেসব এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয় সেসব এলাকায় লাইটনিং অ্যারেস্টার যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বজ্রপাত প্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় কি না, সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখতে হবে।

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

লাউয়াছড়া বন : নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে

tab

সম্পাদকীয়

বজ্রপাতে করুণ মৃত্যু

রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২

কৃষি শ্রমিক, জমির মালিক এবং নারী-শিশু মিলে তারা ১৪ জন। তাদের সবাই গিয়েছিল ফসলের খেতে। কৃষি শ্রমিকরা রোপা আমনের চারা তুলছিল। সে সময় বৃষ্টি শুরু হলে তারা সবাই টিনের তৈরি একটি সেচ ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল। তখন বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে আটজনের মৃত্যু হয়। পরে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আহত হয়েছে অপর পাঁচজন। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মাটিকোড়া গ্রামে। এই ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের পাশাপাশি এলাকাবাসীও শোকাভিভূত।

বজ্রপাতে একসঙ্গে অনেক সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর করুণ ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে বরযাত্রীদের একটি দলের ওপর বজ্রপাত হলে ১৭ জন মারা যায়। বরযাত্রীর বৃষ্টির সময় নদীতীরে অবস্থিত ইজারাদারের টিনের চালার টং ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। বন্যা বা সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় বজ্রপাতে এখন বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারা দেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ১৬৪ জন। তবে বজ্রপাতে কত মানুষ আহত হয়, গবাদি পশু মারা যায় কতগুলো তা জানা যায়। ঘরবাড়ি বা গাছপালা ধ্বংসের পরিসংখ্যানও জানা যায় না।

কৃষি জমি, খেলার মাঠ বা উন্মুক্ত প্রান্তরে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। বৃষ্টির সময়ে এসব স্থানে থাকা মানুষ আশ্রয় খুঁজে পায় না। যে কারণে তারা বজ্রপাতের সহজ শিকার হয়। আবার টিনের ঘরের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আশ্রয় নিয়েও অনেকে মারা যান।

বজ্রপাতের বিপদ সম্পর্কে এখনো বহু মানুষ অসচেতন। বিশেষ করে বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে হলে কী করতে হবে, আর কী করা উচিত নয়, সেটা অনেকেই জানেন না। বজ্রপাত সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। কখন বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকে, বজ্রপাতের সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, সেসব বিষয়ে মানুষকে বিশেষ করে বজ্রপাত প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাপক হারে জানাতে হবে।

বজ্রপাত প্রতিরোধে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় তালগাছ লাগাচ্ছে। তবে তালগাছ লাগানোর ক্ষেত্রে স্থান নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তালগাছগুলো লাগানো হয়েছে মূলত রাস্তার পাশে। এতে বজ্রপাত রোধের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বজ্রপাতে সাধারণত চাষাবাদের কাজে নিয়োজিত কৃষক মাঠে বা জলাধারের পাশে অবস্থানরত মানুষ মারা যায়। এ জন্য বজ্রপাতপ্রবণ স্থানে তালগাছ লাগানো জরুরি।

তালগাছ লাগানো হলেও এর সুফল মিলতে অনেক বছর অপেক্ষা করতে হবে। গাছগুলোকে বজ্রপাত প্রতিরোধের মতো সক্ষম বা বড় হতে কমবেশি ১০ বছর সময় লাগতে পারে। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা জরুরি ভিত্তিতে লাইটনিং অ্যারেস্টার বসানোর ওপর জোর দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশের কোন কোন স্থানে লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর বসিয়েছে। এ ধরনের আরও যন্ত্র স্থাপন করা দরকার। হাওরাঞ্চলসহ যেসব এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয় সেসব এলাকায় লাইটনিং অ্যারেস্টার যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বজ্রপাত প্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় কি না, সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখতে হবে।

back to top