রাজধানীতে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৮২ কোটি টাকার বেশি বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং বাহনে গড়ে প্রতিদিন ১৬২ কোটি টাকার বেশি বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যানটি যদি সঠিক হয়, তাহলে বলতে হবে- গণপরিবহনে ভাড়ার নামে ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক যাত্রীদের কাছ থেকেই প্রতিদিন ১৮২ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গোটা দেশের হিসাবটি বিবেচনায় নিলে টাকার অংকটা আরও বেড়ে যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে- প্রতিদিন এত বড় অংকের টাকা যে যাত্রীদের পকেট থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে সেটা যাচ্ছে কোথায়। আর কারাইবা এতে লাভবান হচ্ছে।
দেশের নাগরিকরা এমনিতেই করোনাপরবর্তী সময়ে নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছে। তাদের আয় কমেছে, অনেকের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এর বিপরীতে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে দিন দিন ব্যয় বাড়ছে। সাধারণ মানুষ যখন আয়-ব্যায়ের হিসাব মেলাতে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে তখন বিভিন্ন গোষ্ঠী নানান কৌশলে তাদের পকেট কাটছে।
অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যত দাম বাড়ে, দেশে ভোক্তাদের কাছ থেকে তার চেয়েও বেশি দাম আদায় করা হয়; কিন্তু দাম কমলে, যে অনুপাতে কমার কথা তা কমানো হয় না। তখন নানান অজুহাত দাঁড় করা হয়। এতে বরাবরই একটা বিশেষ শ্রেণি লাভবান হয়। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে পরিবহন খাত। প্রতিনিয়ত গণপরিবহনে ভাড়া বাবদও জনসাধারণকে বাড়তি পয়সা খরচ করতে হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে- এতে সরকারের কোন দায় আছে কিনা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহনখাতে সামগ্রিকভাবে যে ব্যয় বেড়েছে, সরকার জনপ্রতি ভাড়া তার চেয়ে বেশি নির্ধারণ করেছে বলে অভিযোগ। কিন্তু পরিবহন মালিকরা সেটাও মানেন না, তারা এর চেয়েও বেশি ভাড়া নেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে যাত্রীসাধারণকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।
সম্প্রতি গণপরিবহনে যাত্রী লাঞ্ছনার ২৫টি ঘটনা ঘটেছে। বাস থেকে ফেলে ১৪ যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন ১০ জন যাত্রী। এতে গণপরিবহন ব্যবহারে যাত্রীদের মধ্যে চরম ভীতির সঞ্চার হয়েছে। কিন্তু সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাউকেই এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি কিলোমিটারে পরিবহন ভাড়া যে পাঁচ পয়সা কমানো হয়েছে এতে যাত্রীসাধারণ উপকৃত হয়নি। তাদের কাছ থেকে আগের বর্ধিত ভাড়াই আদায় করা হচ্ছে। মাঝখানে লাভবান হচ্ছে পরিবহন মালিকরা।
গণপরিবহনের ভাড়ার প্রশ্নে দিনের পর দিন এমন কোনো একটি ব্যবস্থাকে সরকার চলতে দিতে পারে কিনা, যার ফলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; আর একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়- আমরা শুধু এই প্রশ্ন করতে চাই।
বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
রাজধানীতে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। যাত্রীদের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৮২ কোটি টাকার বেশি বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং বাহনে গড়ে প্রতিদিন ১৬২ কোটি টাকার বেশি বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
পরিসংখ্যানটি যদি সঠিক হয়, তাহলে বলতে হবে- গণপরিবহনে ভাড়ার নামে ভয়াবহ নৈরাজ্য চলছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যাত্রীসাধারণ। শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক যাত্রীদের কাছ থেকেই প্রতিদিন ১৮২ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। গোটা দেশের হিসাবটি বিবেচনায় নিলে টাকার অংকটা আরও বেড়ে যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে- প্রতিদিন এত বড় অংকের টাকা যে যাত্রীদের পকেট থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে সেটা যাচ্ছে কোথায়। আর কারাইবা এতে লাভবান হচ্ছে।
দেশের নাগরিকরা এমনিতেই করোনাপরবর্তী সময়ে নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছে। তাদের আয় কমেছে, অনেকের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এর বিপরীতে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে দিন দিন ব্যয় বাড়ছে। সাধারণ মানুষ যখন আয়-ব্যায়ের হিসাব মেলাতে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে তখন বিভিন্ন গোষ্ঠী নানান কৌশলে তাদের পকেট কাটছে।
অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যত দাম বাড়ে, দেশে ভোক্তাদের কাছ থেকে তার চেয়েও বেশি দাম আদায় করা হয়; কিন্তু দাম কমলে, যে অনুপাতে কমার কথা তা কমানো হয় না। তখন নানান অজুহাত দাঁড় করা হয়। এতে বরাবরই একটা বিশেষ শ্রেণি লাভবান হয়। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে পরিবহন খাত। প্রতিনিয়ত গণপরিবহনে ভাড়া বাবদও জনসাধারণকে বাড়তি পয়সা খরচ করতে হচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে- এতে সরকারের কোন দায় আছে কিনা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহনখাতে সামগ্রিকভাবে যে ব্যয় বেড়েছে, সরকার জনপ্রতি ভাড়া তার চেয়ে বেশি নির্ধারণ করেছে বলে অভিযোগ। কিন্তু পরিবহন মালিকরা সেটাও মানেন না, তারা এর চেয়েও বেশি ভাড়া নেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রতিবাদ করলে যাত্রীসাধারণকে লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।
সম্প্রতি গণপরিবহনে যাত্রী লাঞ্ছনার ২৫টি ঘটনা ঘটেছে। বাস থেকে ফেলে ১৪ যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন ১০ জন যাত্রী। এতে গণপরিবহন ব্যবহারে যাত্রীদের মধ্যে চরম ভীতির সঞ্চার হয়েছে। কিন্তু সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাউকেই এসবের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।
সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা কমানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি কিলোমিটারে পরিবহন ভাড়া যে পাঁচ পয়সা কমানো হয়েছে এতে যাত্রীসাধারণ উপকৃত হয়নি। তাদের কাছ থেকে আগের বর্ধিত ভাড়াই আদায় করা হচ্ছে। মাঝখানে লাভবান হচ্ছে পরিবহন মালিকরা।
গণপরিবহনের ভাড়ার প্রশ্নে দিনের পর দিন এমন কোনো একটি ব্যবস্থাকে সরকার চলতে দিতে পারে কিনা, যার ফলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়; আর একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়- আমরা শুধু এই প্রশ্ন করতে চাই।