রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের শুকনা নন্দারাম এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি সড়কের ওপর পড়ে। এতে গত বুধবার সকাল ছয়টা থেকে সড়কের দুই দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সেনাবাহিনীর একটি এক্সকাভেটর দিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরানো হয়। এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে পর্যটকদের ভোগান্তি হয়েছে, যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
সাজেকে এখন বহসংখ্যক পর্যটক আসা-যাওয়া করে। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ধসকে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে নিতে হবে। পাহাড়-টিলা ধস যে কত বড় ট্র্যাজেডি বয়ে আনতে পারে, সেটা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে। এক হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালে। সেবার ১২৭ জনের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত আগস্ট মাসে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাখাইছড়া চা-বাগানে টিলা ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত জুন মাসে চট্টগ্রাম শহরে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জনিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় নন্দারাম এলাকায় পাহড়া ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশের পাহাড়গুলোর যে বৈশিষ্ট্য, তাতে একটু বৃষ্টি হলেই ধসে পাড়ার আশঙ্কা থাকে। তার ওপর উন্নয়ন বা বসতি স্থাপনের নামে পাহাড় কাটলে বা পাহাড়ের বন ধ্বংস করা হলে এর মাটির গাঁথুনি আরও দুর্বল হয়ে যায়। তখন সামান্য বৃষ্টিতেই পাহাড় ধসের সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রায়ই বর্ষা মৌসুমে বা বৃষ্টির পরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
পাহাড় ধসের প্রধান কারণ পাহাড়ি বন ধ্বংস করা, নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলা। প্রায়ই চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা কাটার খবর পাওয়া যায়। পাহাড়-টিলা কাটার প্রভাবে এসব এলাকায় ভূমিক্ষয় বাড়ছে। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ, নিঃশেষ হচ্ছে বনাঞ্চল। পাহাড়-টিলা ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকা।
আবার প্রভাবশালী মহলও পাহাড় কেটে বাড়িঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়ে থাকে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশের মাটি কেটে বসতি স্থাপন করে হতদরিদ্র অনেকেই সেখানে বসবাস করে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে এক সময় পাহাড়-টিলার অস্তিত্ব থাকবে না। পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধে কোন পদক্ষেপ কার্যকর প্রমাণত হয়নি।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। আইন অমান্য করলে অপরাধ ভেদে কারাদন্ড বা অর্থদন্ড দেয়ার বিধান রয়েছে। পরিবেশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। তাই যে কোনো উপায়ে পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধ করতে হবে। যেসব পাহাড়-টিলা এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে, সেসবের সুরক্ষা করতে হবে। পাহাড় বেষ্টনী দিয়ে বনায়ন করতে হবে।
শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর ২০২২
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাঘাইহাট-সাজেক সড়কের শুকনা নন্দারাম এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি সড়কের ওপর পড়ে। এতে গত বুধবার সকাল ছয়টা থেকে সড়কের দুই দিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সেনাবাহিনীর একটি এক্সকাভেটর দিয়ে সড়ক থেকে মাটি সরানো হয়। এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সেখানে পর্যটকদের ভোগান্তি হয়েছে, যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।
সাজেকে এখন বহসংখ্যক পর্যটক আসা-যাওয়া করে। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ধসকে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে নিতে হবে। পাহাড়-টিলা ধস যে কত বড় ট্র্যাজেডি বয়ে আনতে পারে, সেটা দেশের মানুষ ভালো করেই জানে। এক হিসাব অনুযায়ী, গত ১৩ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে ২০০৭ সালে। সেবার ১২৭ জনের প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত আগস্ট মাসে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাখাইছড়া চা-বাগানে টিলা ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত জুন মাসে চট্টগ্রাম শহরে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জনিয়েছেন, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় নন্দারাম এলাকায় পাহড়া ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশের পাহাড়গুলোর যে বৈশিষ্ট্য, তাতে একটু বৃষ্টি হলেই ধসে পাড়ার আশঙ্কা থাকে। তার ওপর উন্নয়ন বা বসতি স্থাপনের নামে পাহাড় কাটলে বা পাহাড়ের বন ধ্বংস করা হলে এর মাটির গাঁথুনি আরও দুর্বল হয়ে যায়। তখন সামান্য বৃষ্টিতেই পাহাড় ধসের সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রায়ই বর্ষা মৌসুমে বা বৃষ্টির পরে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
পাহাড় ধসের প্রধান কারণ পাহাড়ি বন ধ্বংস করা, নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলা। প্রায়ই চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়-টিলা কাটার খবর পাওয়া যায়। পাহাড়-টিলা কাটার প্রভাবে এসব এলাকায় ভূমিক্ষয় বাড়ছে। বিনষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ, নিঃশেষ হচ্ছে বনাঞ্চল। পাহাড়-টিলা ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকা।
আবার প্রভাবশালী মহলও পাহাড় কেটে বাড়িঘর তৈরি করে ভাড়া দিয়ে থাকে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশের মাটি কেটে বসতি স্থাপন করে হতদরিদ্র অনেকেই সেখানে বসবাস করে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে এক সময় পাহাড়-টিলার অস্তিত্ব থাকবে না। পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধে কোন পদক্ষেপ কার্যকর প্রমাণত হয়নি।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। আইন অমান্য করলে অপরাধ ভেদে কারাদন্ড বা অর্থদন্ড দেয়ার বিধান রয়েছে। পরিবেশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। তাই যে কোনো উপায়ে পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধ করতে হবে। যেসব পাহাড়-টিলা এখনো অক্ষত অবস্থায় আছে, সেসবের সুরক্ষা করতে হবে। পাহাড় বেষ্টনী দিয়ে বনায়ন করতে হবে।