রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালে দুদক ৫৬টি মামলা করে। এখনো এসব মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। যে কারণে চার্জশিট দেয়া যাচ্ছে না আর বিচারও শুরু করা যাচ্ছে না।
মামলা হওয়ার এত বছর পরও ঝুলে আছে অর্ধশতাধিক মামলা। কোন একটি মামলারও বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দুদক এখনো কেন তদন্ত শেষ করতে পারছে না, চার্জশিট দিতে পারছে না, সমস্যাটা কোথায়? যেই ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে, তার বিচার কেন করা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন হাইকোর্টের। এর উত্তর জানা জরুরি।
শুরু থেকেই বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। মামলাগুলোতে আসামি বাছাই করা হয়েছে পছন্দমতো। জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি দুদক। অথচ তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে বলেছেন যে, ‘ঋণ জালিয়াতিতে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা ছিল।’ একটি ভালো ব্যাংককে তিনি রুগ্ন করেছেন। তারপরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কেন? তিনি কি এতই শক্তিশালী যে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মামলাও করতে পারবে না। তার ক্ষমতার উৎস কোথায়?
হাইকোর্ট এর আগে বলেছে, ‘ব্যাংক খাতে বড় বড় অপরাধ হচ্ছে। দেশটাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। এভাবে চললে দেশ এগোবে কীভাবে?’ সমস্যা হচ্ছে, ব্যাংক খাতে দুর্নীতির বিচার করা যাচ্ছে না। শুধু যে বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিচারই যে ঝুলে আছে, তা নয়। রাষ্ট্রীয় সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকে অনিয়ম-দুর্নীতির বিচারও হতে দেখা যায় না। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। স্বাধীনতার পর দেশের আর্থিক খাতে বড় বড় অনেক দুর্নীতি ঘটেছে। ব্যাংক লুটপাটের ঘটনায় আজ পর্যন্ত কারও শাস্তি হয়েছে কি না, সেটা গবেষণার বিষয়।
দেশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে লুটপাট হয়, তা মানুষের টাকা। এর কোনো বিচার হয় না কেন? স্বাধীনতার পর ৫০ বছর হয়ে গেল এখনো ব্যাংক খাতকে ঠিক করা গেল না। প্রভাবশালীরা মানুষের আমানত লুট করছে কিন্তু তাদের কিচ্ছু হচ্ছে না। কতটা ক্ষুব্ধ হলে আদালত এই কথা বলতে পারে যে, ‘জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের গুলি করা উচিত। এটাই তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার বিচারে বিলম্বের কারণে উষ্মা প্রকাশ করে এসব কথা বলেছে হাইকোর্ট।
আমরা বলতে চাই, বিচার প্রক্রিয়ার গোড়ায় গলদ থাকলে বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় না। ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির মামলার তদন্ত সুষ্ঠু ও দ্রুত হতে হবে। শক্ত, নিñিদ্র চার্জশিট দিতে হবে। সব অপরাধীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পছন্দমতো আসামি বাছাই করলে চলবে না।
বুধবার, ০৯ নভেম্বর ২০২২
রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালে দুদক ৫৬টি মামলা করে। এখনো এসব মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। যে কারণে চার্জশিট দেয়া যাচ্ছে না আর বিচারও শুরু করা যাচ্ছে না।
মামলা হওয়ার এত বছর পরও ঝুলে আছে অর্ধশতাধিক মামলা। কোন একটি মামলারও বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দুদক এখনো কেন তদন্ত শেষ করতে পারছে না, চার্জশিট দিতে পারছে না, সমস্যাটা কোথায়? যেই ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে, তার বিচার কেন করা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন হাইকোর্টের। এর উত্তর জানা জরুরি।
শুরু থেকেই বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। মামলাগুলোতে আসামি বাছাই করা হয়েছে পছন্দমতো। জালিয়াতির ঘটনায় ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি দুদক। অথচ তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে বলেছেন যে, ‘ঋণ জালিয়াতিতে বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা ছিল।’ একটি ভালো ব্যাংককে তিনি রুগ্ন করেছেন। তারপরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কেন? তিনি কি এতই শক্তিশালী যে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মামলাও করতে পারবে না। তার ক্ষমতার উৎস কোথায়?
হাইকোর্ট এর আগে বলেছে, ‘ব্যাংক খাতে বড় বড় অপরাধ হচ্ছে। দেশটাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। এভাবে চললে দেশ এগোবে কীভাবে?’ সমস্যা হচ্ছে, ব্যাংক খাতে দুর্নীতির বিচার করা যাচ্ছে না। শুধু যে বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতির বিচারই যে ঝুলে আছে, তা নয়। রাষ্ট্রীয় সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকে অনিয়ম-দুর্নীতির বিচারও হতে দেখা যায় না। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। স্বাধীনতার পর দেশের আর্থিক খাতে বড় বড় অনেক দুর্নীতি ঘটেছে। ব্যাংক লুটপাটের ঘটনায় আজ পর্যন্ত কারও শাস্তি হয়েছে কি না, সেটা গবেষণার বিষয়।
দেশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে লুটপাট হয়, তা মানুষের টাকা। এর কোনো বিচার হয় না কেন? স্বাধীনতার পর ৫০ বছর হয়ে গেল এখনো ব্যাংক খাতকে ঠিক করা গেল না। প্রভাবশালীরা মানুষের আমানত লুট করছে কিন্তু তাদের কিচ্ছু হচ্ছে না। কতটা ক্ষুব্ধ হলে আদালত এই কথা বলতে পারে যে, ‘জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের গুলি করা উচিত। এটাই তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার বিচারে বিলম্বের কারণে উষ্মা প্রকাশ করে এসব কথা বলেছে হাইকোর্ট।
আমরা বলতে চাই, বিচার প্রক্রিয়ার গোড়ায় গলদ থাকলে বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় না। ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির মামলার তদন্ত সুষ্ঠু ও দ্রুত হতে হবে। শক্ত, নিñিদ্র চার্জশিট দিতে হবে। সব অপরাধীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে। পছন্দমতো আসামি বাছাই করলে চলবে না।