alt

সম্পাদকীয়

জলাশয়গুলো রক্ষা করুন

: মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী রহমতখালী খাল। প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে রেখেছে খালের দুই পাড়। লক্ষ্মীপুর শহরের বিভিন্ন বাজারসহ অন্যান্য এলাকায় নির্বিচারে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে খালে। ফলে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পানি। দেখা দিচ্ছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগবালাই, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। তাছাড়া খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন হয় না। অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের। এ নিয়ে গতকাল সোমবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারি, জকসিন, মাদাম ও পৌর শহরের বাজারের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খালটির দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার। এক সময় ভোলা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী নিয়ে স্টিমার ও নৌকায় আসা-যাওয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। এ খালের পানি দিয়েই বিভিন্ন মৌসুমে ধান ও সবজির চাষ করতেন কৃষকরা। কিন্তু এসব এখন শুধুই অতীত। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দখল-দূষণে প্রবহমান খালটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

একসময় প্রবাহিত নদী-খাল ঘিরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছিল হাটবাজার ও ব্যবসাকেন্দ্র। নদী-খালকে কেন্দ্র করেই বহু মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। কৃষকেরা সেচ কাজে পানি ব্যবহার করতেন। জীবিকার জন্য জেলেরা রাতদিন নৌকা দিয়ে মাছ ধরতেন। প্রশ্ন হচ্ছে, নদী-খালগুলো সেই রূপ, প্রকৃতি ও পরিবেশ বজায় আছে কি না। কারণ মানুষ খালকে খাল রাখছেনা, জলাশয়কে জলাশয় রাখছে না, এমনকি নদীকেও নদী রাখছে না।

শুধু লক্ষ্মীপুরেই নয়, সারাদেশেই নদী-খাল দখল-দূষণের মহোসৎব চলছে। চর পড়ে এবং দখল-দূষণের কারণে দেশের নদী-খালগুলো এখন মৃতপ্রায়। হারিয়ে যাওয়ার পথে বহু নদী-খাল-জলাশয়। নদীর ধারে গড়ে উঠেছে শিল্প ও কলকারখানা, অপরিকল্পিতভাবে দেয়া হচ্ছে শত শত বাঁধ। যখন যেভাবে প্রয়োজন তখন সেভাবে নদী-খাল-জলাশয় ব্যবহার করা হচ্ছে। ভরাট করে দখল করার উৎসবে মেতে উঠেছে প্রভাবশালীরা। সারাদেশ যেন এখন নদী-খাল-জলাশয় বৈরী দেশে পরিণত হয়েছে।

মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কার্যকলাপের দেশের নদ-নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশকে এভাবে ধ্বংস করলে তার কুফল ভোগ করতে হবে সবাইকে। দূষণের কারণে বহু নদী আক্ষরিক্ষ অর্থেই ভাগাড়ে পরিণত করছে। নদ-নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা নানা হিসাব কষে দেখিয়েছেন যে, এতে মানুষের জীবন ও জীবিকাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী-খাল দখল-ভরাট-সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় সারা দেশে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা সংযোগ রয়েছে। এর পেছনে দায় রয়েছে মানুষেরই।

কিন্তু এসব বিষয়ে মানুষের কোন ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্বও প্রশ্নবিদ্ধ। তারা দখল ও দূষণমুক্ত করার কাজ ঠিকমতো করে না বলে প্রায়ই অভিযোগ মেলে। লক্ষ্মীপুরের রহমতখালী খালের প্রশ্নেও এমনটা ঘটছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মানুষ যদি সচেতন না হয়, কর্তৃপক্ষ যদি সজাগ না হয়-তাহলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জলাশয়গুলোর একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

এই যুদ্ধবিরতি হোক স্থায়ী শান্তির সূচনা

তাপপ্রবাহে চাই সতর্কতা, সচেতনতা ও সুরক্ষা পরিকল্পনা

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই

ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় শতবর্ষী বটগাছ নিধন : এ কোন সভ্যতা?

বেইলি রোডে আবার আগুন : নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় এখনই

tab

সম্পাদকীয়

জলাশয়গুলো রক্ষা করুন

মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী রহমতখালী খাল। প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে রেখেছে খালের দুই পাড়। লক্ষ্মীপুর শহরের বিভিন্ন বাজারসহ অন্যান্য এলাকায় নির্বিচারে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে খালে। ফলে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পানি। দেখা দিচ্ছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগবালাই, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। তাছাড়া খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন হয় না। অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণের। এ নিয়ে গতকাল সোমবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ, মান্দারি, জকসিন, মাদাম ও পৌর শহরের বাজারের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খালটির দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার। এক সময় ভোলা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাণিজ্যিক পণ্যসামগ্রী নিয়ে স্টিমার ও নৌকায় আসা-যাওয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। এ খালের পানি দিয়েই বিভিন্ন মৌসুমে ধান ও সবজির চাষ করতেন কৃষকরা। কিন্তু এসব এখন শুধুই অতীত। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে দখল-দূষণে প্রবহমান খালটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

একসময় প্রবাহিত নদী-খাল ঘিরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছিল হাটবাজার ও ব্যবসাকেন্দ্র। নদী-খালকে কেন্দ্র করেই বহু মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। কৃষকেরা সেচ কাজে পানি ব্যবহার করতেন। জীবিকার জন্য জেলেরা রাতদিন নৌকা দিয়ে মাছ ধরতেন। প্রশ্ন হচ্ছে, নদী-খালগুলো সেই রূপ, প্রকৃতি ও পরিবেশ বজায় আছে কি না। কারণ মানুষ খালকে খাল রাখছেনা, জলাশয়কে জলাশয় রাখছে না, এমনকি নদীকেও নদী রাখছে না।

শুধু লক্ষ্মীপুরেই নয়, সারাদেশেই নদী-খাল দখল-দূষণের মহোসৎব চলছে। চর পড়ে এবং দখল-দূষণের কারণে দেশের নদী-খালগুলো এখন মৃতপ্রায়। হারিয়ে যাওয়ার পথে বহু নদী-খাল-জলাশয়। নদীর ধারে গড়ে উঠেছে শিল্প ও কলকারখানা, অপরিকল্পিতভাবে দেয়া হচ্ছে শত শত বাঁধ। যখন যেভাবে প্রয়োজন তখন সেভাবে নদী-খাল-জলাশয় ব্যবহার করা হচ্ছে। ভরাট করে দখল করার উৎসবে মেতে উঠেছে প্রভাবশালীরা। সারাদেশ যেন এখন নদী-খাল-জলাশয় বৈরী দেশে পরিণত হয়েছে।

মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কার্যকলাপের দেশের নদ-নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতির একটা অবিচ্ছেদ্য অংশকে এভাবে ধ্বংস করলে তার কুফল ভোগ করতে হবে সবাইকে। দূষণের কারণে বহু নদী আক্ষরিক্ষ অর্থেই ভাগাড়ে পরিণত করছে। নদ-নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার কারণে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে, পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা নানা হিসাব কষে দেখিয়েছেন যে, এতে মানুষের জীবন ও জীবিকাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদী-খাল দখল-ভরাট-সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় সারা দেশে বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা সংযোগ রয়েছে। এর পেছনে দায় রয়েছে মানুষেরই।

কিন্তু এসব বিষয়ে মানুষের কোন ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়-দায়িত্বও প্রশ্নবিদ্ধ। তারা দখল ও দূষণমুক্ত করার কাজ ঠিকমতো করে না বলে প্রায়ই অভিযোগ মেলে। লক্ষ্মীপুরের রহমতখালী খালের প্রশ্নেও এমনটা ঘটছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মানুষ যদি সচেতন না হয়, কর্তৃপক্ষ যদি সজাগ না হয়-তাহলে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জলাশয়গুলোর একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।

back to top