ফরিদপুরের সদরপুরে তিন ফসলি জমির মাটি কিনে নিচ্ছে ইটভাটাগুলো। টাকার বিনিময়ে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে কৃষকরা। মাটি কাটার কারণে জমি হারাচ্ছে উর্বরা শক্তি, কমছে শস্য উৎপাদন। পরিবেশের ক্ষতি তো হচ্ছেই, ফসলি জমি কেটে ইট তৈরি করলে কী ক্ষতি হয় সেটা নতুন করে বলা নিষ্প্রয়োজন।
পরিবেশের ক্ষতি সম্পর্কে ইটভাটার মালিকরা কখনোই মাথা ঘামান না। তাদের উদাসীনতায় দেশের পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি ইতোমধ্যে হয়ে গেছে।
একসময় অভিযোগ ছিল, জমির মালিকরা জোর করে বা কৌশলে কৃষি জমির মাটি কিনে নেয়। এখন দেখা যাচ্ছে অনেক স্থানের অনেক কৃষকই স্বেচ্ছায় জমির মাটি বিক্রি করছে। এর কারণ হচ্ছে অর্থযোগ। কৃষকরা মাটি বিক্রি করে নগদ টাকা পাচ্ছেন, ফসল ফলানোর চেয়ে মাটি বিক্রি করাকে বেশি লাভজনক মনে করছেন। এতে সময় ও শ্রম লাগে না। যে কারণে অনেকেই এ পথে পা বাড়াচ্ছেন। কিন্তু আপাত এই মুনাফা জাতীয় কৃষি উৎপাদনে যে কত বড় ক্ষতি করছে, সেটা তারা ভেবে দেখছেন না।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমিতে ভালো ফসল উৎপাদনের উপযোগী হলো জমির উপরিভাগের মাটি। জমির মাটির উৎপাদন শক্তি জমা থাকে মাটির ৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি গভীরতায়। এটাই হলো জমির টপসয়েল। এই টপ সয়েল তৈরিতে একশ’ থেকে পাঁচশ’ বছর সময় লাগে। ফসল বেড়ে ওঠার সব গুণাগুণ মাটির এ অংশে থাকে। বীজ এ অংশ থেকে জীবনীশক্তি ও বিকাশের উপাদান গ্রহণ করে। এতে ওই জমিতে ফসল ভালো হয়। আর এই অংশটি কেটে নিলে জমি তার মৃত্তিকা শক্তি হারায়। মাটি কেটে নেয়া ফসলি জমির হারানো এ উর্বরা শক্তি ফিরে পেতে ১০ বছরেরও অধিক কাল অপেক্ষা করতে হয়।
ইটভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন এবং কৃষি জমির মাটি কাটা আইন (নিয়ন্ত্রক) ২০১৩-এর উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কেউ যদি আইন অমান্য করে তাহলে জেল বা জরিমানার বিধান রয়েছে।
পরিবেশ ও কৃষিকে রক্ষা করতে হলে কৃষি জমির মাটির যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে ইটভাটার মালিকদের যেমন দায়-দায়িত্ব আছে, তেমনি কৃষকদের দায়-দায়িত্ব থাকার প্রয়োজনকে অস্বীকার করা চলে না। ইট তৈরিতে মাটিরও দরকার পড়ে।
তবে মাটি ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। আমরা আশা করবো ইট তৈরিতে মাটির ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইন মেনে চলা হবে। আর যারা আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এখন ইট তৈরিতে মাটির অনেক বিকল্প বের হয়েছে। যেটা কৃষি ও পরিবেশ উভয়কেই রক্ষা করে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। যারা ইট তৈরি করে তাদেরকে মাটির বিকল্প ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আর ফসলি জমির মাটি বিক্রি সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করতে হবে।
শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩
ফরিদপুরের সদরপুরে তিন ফসলি জমির মাটি কিনে নিচ্ছে ইটভাটাগুলো। টাকার বিনিময়ে মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে কৃষকরা। মাটি কাটার কারণে জমি হারাচ্ছে উর্বরা শক্তি, কমছে শস্য উৎপাদন। পরিবেশের ক্ষতি তো হচ্ছেই, ফসলি জমি কেটে ইট তৈরি করলে কী ক্ষতি হয় সেটা নতুন করে বলা নিষ্প্রয়োজন।
পরিবেশের ক্ষতি সম্পর্কে ইটভাটার মালিকরা কখনোই মাথা ঘামান না। তাদের উদাসীনতায় দেশের পরিবেশের যথেষ্ট ক্ষতি ইতোমধ্যে হয়ে গেছে।
একসময় অভিযোগ ছিল, জমির মালিকরা জোর করে বা কৌশলে কৃষি জমির মাটি কিনে নেয়। এখন দেখা যাচ্ছে অনেক স্থানের অনেক কৃষকই স্বেচ্ছায় জমির মাটি বিক্রি করছে। এর কারণ হচ্ছে অর্থযোগ। কৃষকরা মাটি বিক্রি করে নগদ টাকা পাচ্ছেন, ফসল ফলানোর চেয়ে মাটি বিক্রি করাকে বেশি লাভজনক মনে করছেন। এতে সময় ও শ্রম লাগে না। যে কারণে অনেকেই এ পথে পা বাড়াচ্ছেন। কিন্তু আপাত এই মুনাফা জাতীয় কৃষি উৎপাদনে যে কত বড় ক্ষতি করছে, সেটা তারা ভেবে দেখছেন না।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমিতে ভালো ফসল উৎপাদনের উপযোগী হলো জমির উপরিভাগের মাটি। জমির মাটির উৎপাদন শক্তি জমা থাকে মাটির ৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি গভীরতায়। এটাই হলো জমির টপসয়েল। এই টপ সয়েল তৈরিতে একশ’ থেকে পাঁচশ’ বছর সময় লাগে। ফসল বেড়ে ওঠার সব গুণাগুণ মাটির এ অংশে থাকে। বীজ এ অংশ থেকে জীবনীশক্তি ও বিকাশের উপাদান গ্রহণ করে। এতে ওই জমিতে ফসল ভালো হয়। আর এই অংশটি কেটে নিলে জমি তার মৃত্তিকা শক্তি হারায়। মাটি কেটে নেয়া ফসলি জমির হারানো এ উর্বরা শক্তি ফিরে পেতে ১০ বছরেরও অধিক কাল অপেক্ষা করতে হয়।
ইটভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন এবং কৃষি জমির মাটি কাটা আইন (নিয়ন্ত্রক) ২০১৩-এর উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কেউ যদি আইন অমান্য করে তাহলে জেল বা জরিমানার বিধান রয়েছে।
পরিবেশ ও কৃষিকে রক্ষা করতে হলে কৃষি জমির মাটির যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে ইটভাটার মালিকদের যেমন দায়-দায়িত্ব আছে, তেমনি কৃষকদের দায়-দায়িত্ব থাকার প্রয়োজনকে অস্বীকার করা চলে না। ইট তৈরিতে মাটিরও দরকার পড়ে।
তবে মাটি ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। আমরা আশা করবো ইট তৈরিতে মাটির ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইন মেনে চলা হবে। আর যারা আইন মানবে না তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এখন ইট তৈরিতে মাটির অনেক বিকল্প বের হয়েছে। যেটা কৃষি ও পরিবেশ উভয়কেই রক্ষা করে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। যারা ইট তৈরি করে তাদেরকে মাটির বিকল্প ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আর ফসলি জমির মাটি বিক্রি সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করতে হবে।