বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতির মতো প্রাকৃতি দুযোগ মোকাবিলা করেই টিকে থাকতে হয় দেশের মানুষকে। এসব দুর্যোগের সঙ্গে যোগ হয়েছে বজ্রপাত ও অতি উষ্ণতা। মূলত বৈশ্বিক জলবায়ু পরির্বতনজনিত প্রভাবে কোনো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়ছে। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ র্যাপার্টিয়ারের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ বজ্রপাত ও দাবদাহের মতো দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের ইতিহাসে অন্যতম উষ্ণতম মাসের দেখা মিলেছে গত এপ্রিলে। ঢাকায় ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে গত মাসে। বজ্রপাতে প্রতি বছর তিন শতাধিক মানুষ মারা যায়। বন্যা বা সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় বজ্রপাতে এখন বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ১৬৪ জন। তবে বজ্রপাতে কত মানুষ আহত হয়, গবাদি পশু মারা যায় কতগুলো তা জানা যায় না। ঘরবাড়ি বা গাছপালা ধ্বংসের পরিসংখ্যানও জানা যায় না।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়েই গরম বাড়ছে। দেশে গরম বেশি অনুভূত হওয়ার বড় একটি কারণ হচ্ছে জলাশয় ও বন কমে যাওয়া। দেশে বনভূমি কমছে। গাছ কাটা হচ্ছে, জলাভূমি ধ্বংস হচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানীতে জলাশয় ও সবুজের পরিমাণ কমেছে। গত দুই দশকে রাজধানীতে ৭০ ভাগ জলাশয় কমেছে, ইট-কংক্রিটের স্থাপনা বাড়ছে।
জলাভূমি রক্ষা করা না গেলে, সবুজের পরিমাণ বাড়ানো না গেলে ভবিষ্যতেও মানুষকে প্রতিকূল আবহাওয়ার শিকার হতে হবে। কাজেই এ বিষয়ে এখনই নীতিনির্ধারকদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বজ্রপাতের বিপদ সম্পর্কে এখনো দেশের অনেক মানুষ অসচেতন। বিশেষ করে বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে কী করতে হবে, আর কী করা উচিত নয়- সেটা অনেকেরই জানা নেই। বজ্রপাত সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। কখন বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকে, বজ্রাপাতের সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে সেসব বিষয়ে মানুষকে বিশেষ করে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাপক হারে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশের কোনো কোনো স্থানে লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর বসিয়েছে। এ ধরনের আরও যন্ত্র স্থাপন করা দরকার। হাওরাঞ্চলসহ যেসব এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয় সেসব এলাকায় লাইটনিং অ্যারেস্টার যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বজ্রপাতপ্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় কিনা সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখতে হবে।
রোববার, ২১ মে ২০২৩
বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতির মতো প্রাকৃতি দুযোগ মোকাবিলা করেই টিকে থাকতে হয় দেশের মানুষকে। এসব দুর্যোগের সঙ্গে যোগ হয়েছে বজ্রপাত ও অতি উষ্ণতা। মূলত বৈশ্বিক জলবায়ু পরির্বতনজনিত প্রভাবে কোনো কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়ছে। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক বিশেষ র্যাপার্টিয়ারের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই তথ্য।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ বজ্রপাত ও দাবদাহের মতো দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের ইতিহাসে অন্যতম উষ্ণতম মাসের দেখা মিলেছে গত এপ্রিলে। ঢাকায় ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে গত মাসে। বজ্রপাতে প্রতি বছর তিন শতাধিক মানুষ মারা যায়। বন্যা বা সাইক্লোনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় বজ্রপাতে এখন বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
২০১৬ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে প্রায়ই মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২ হাজার ১৬৪ জন। তবে বজ্রপাতে কত মানুষ আহত হয়, গবাদি পশু মারা যায় কতগুলো তা জানা যায় না। ঘরবাড়ি বা গাছপালা ধ্বংসের পরিসংখ্যানও জানা যায় না।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়েই গরম বাড়ছে। দেশে গরম বেশি অনুভূত হওয়ার বড় একটি কারণ হচ্ছে জলাশয় ও বন কমে যাওয়া। দেশে বনভূমি কমছে। গাছ কাটা হচ্ছে, জলাভূমি ধ্বংস হচ্ছে। বিশেষ করে রাজধানীতে জলাশয় ও সবুজের পরিমাণ কমেছে। গত দুই দশকে রাজধানীতে ৭০ ভাগ জলাশয় কমেছে, ইট-কংক্রিটের স্থাপনা বাড়ছে।
জলাভূমি রক্ষা করা না গেলে, সবুজের পরিমাণ বাড়ানো না গেলে ভবিষ্যতেও মানুষকে প্রতিকূল আবহাওয়ার শিকার হতে হবে। কাজেই এ বিষয়ে এখনই নীতিনির্ধারকদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
বজ্রপাতের বিপদ সম্পর্কে এখনো দেশের অনেক মানুষ অসচেতন। বিশেষ করে বজ্রপাতের কবল থেকে রক্ষা পেতে কী করতে হবে, আর কী করা উচিত নয়- সেটা অনেকেরই জানা নেই। বজ্রপাত সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। কখন বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকে, বজ্রাপাতের সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে সেসব বিষয়ে মানুষকে বিশেষ করে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাপক হারে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশের কোনো কোনো স্থানে লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর বসিয়েছে। এ ধরনের আরও যন্ত্র স্থাপন করা দরকার। হাওরাঞ্চলসহ যেসব এলাকায় বেশি বজ্রপাত হয় সেসব এলাকায় লাইটনিং অ্যারেস্টার যন্ত্র বসানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে বজ্রপাতপ্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় কিনা সেটা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখতে হবে।