শিতাংশু গুহ
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪টি ফৌজদারি মামলায় প্রায় ৯০টি অভিযোগ রয়েছে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান দলের ফ্রন্ট-রানার। জয়ী হলে ২০ জানুয়ারি ২০২৫ সালে হোয়াইট হাউসে উঠবেন। হারলে জেলে যাবার সম্ভাবনা বাড়বে। তার জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। নির্বাচন মঙ্গলবার ৫ নভেম্বর ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধ নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থায় আছেন। মার্কিন ভোটাররা এবার ট্রাম্প না বাইডেন-কাকে ভোট দেবেন, এ নিয়ে বিড়ম্বনায় আছেন। অনেকেই বলছেন তারা কাউকেই চাচ্ছেন না।
নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলছে। প্রতিদিন তিনি হাজিরা দিচ্ছেন। তিনি বিচারক, সাক্ষী, জুড়ি কারো বিপক্ষে কথা বলতে পারছেন না, ‘গ্যাগ’ অর্ডার আছে। প্রতিনিয়ত তিনি গ্যাগ অর্ডার ভাঙছেন, এ পর্যন্ত ১০ বার ভেঙেছেন। বিচারক ফাইন করছেন। বলেছেন, এরপর জেলে পাঠাবেন। মার্কিন ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধে কাঠগড়ায়। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায় জালিয়াতি সংক্রান্ত ৩৪টি অভিযোগ, দোষী সাব্যস্ত হলে তার ৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। এটিকে সংক্ষেপে ‘হাস মানি ট্রায়াল’ বলা হচ্ছে।
২০১৬ সালে নির্বাচনের আগে মডেল স্ট্ররমি ড্যানিয়েলের মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছেন। অর্থ দেয়াটা অপরাধ নয়, বলা হচ্ছে- অর্থ দেয়ার প্রক্রিয়াটি অবৈধ। স্ট্ররমি ড্যানিয়েল সাক্ষ্য দিয়েছেন। সবকিছু খোলামেলা বলেছেন। কথা বলতে না পারলেও ট্রাম্প চোখেমুখে বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন। বিচারক ট্রাম্পের উকিলদের সতর্ক করে দেন। ট্রাম্প পক্ষ ইতোমধ্যে দু’বার ‘মিস-ট্রায়াল’ দাবি করেন, বিচারক তা নাকচ করেন। একজন প্রশ্ন করেছে যে, এতসব ঝামেলা নিয়ে ট্রাম্প ঘুমায় কি করে?
নিউইয়র্কের মামলায় ট্রাম্প যদি দোষী সাব্যস্ত হোন, তাহলেও রায়ের কার্যকারিতা হতে হতে বছর চলে যাবে। ট্রাম্প আপিল করবেন, রায় বাতিল চাইবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। তদুপরি মামলাটি ‘মিস-ট্রায়াল’ হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। মামলাটি ‘হ্যাং-জুড়ি’ হতে পারে, অর্থাৎ জুরিরা একমত নাও হতে পারেন। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের প্রফেসর কারেন মরিসন বলেছেন, ‘ট্রাম্প ভাগ্যবান ব্যক্তি’। নিউইয়র্ক ল’ স্কুল প্রফেসর আন্না কমিনস্কি বলেছেন, নিউইয়র্কের মামলা শেষ হবে, আপিল ইত্যাদি শেষ হতে হতে নির্বাচনের ফলাফল হয়ে যাবে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাকি ৩টি মামলা নির্বাচনের আগে আর শুরু হচ্ছে বলে মনে হয় না। ‘জানুয়ারি-৬’ মামলা সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছে। কবে শুরু হবে কেউ জানে না। ফ্লোরিডায় ক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট মামলা বিচারক আইলিন ক্যানন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন। জর্জিয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলা নিয়ে ঝামেলার অন্ত নেই। সেটি শুরু হতে দেরি আছে। সুতরাং আপাতত ট্রাম্প শুধু নিউইয়র্কে স্ট্ররমি ড্যানিয়েল মামলা নিয়ে ব্যস্ত। এ মামলাটি বাকি ৩টি মামলা থেকে দুর্বল। ট্রাম্প কি খালাস পাবেন?
[লেখক : নিউইয়র্ক প্রবাসী]
শিতাংশু গুহ
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪টি ফৌজদারি মামলায় প্রায় ৯০টি অভিযোগ রয়েছে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান দলের ফ্রন্ট-রানার। জয়ী হলে ২০ জানুয়ারি ২০২৫ সালে হোয়াইট হাউসে উঠবেন। হারলে জেলে যাবার সম্ভাবনা বাড়বে। তার জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। নির্বাচন মঙ্গলবার ৫ নভেম্বর ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধ নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থায় আছেন। মার্কিন ভোটাররা এবার ট্রাম্প না বাইডেন-কাকে ভোট দেবেন, এ নিয়ে বিড়ম্বনায় আছেন। অনেকেই বলছেন তারা কাউকেই চাচ্ছেন না।
নিউইয়র্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলছে। প্রতিদিন তিনি হাজিরা দিচ্ছেন। তিনি বিচারক, সাক্ষী, জুড়ি কারো বিপক্ষে কথা বলতে পারছেন না, ‘গ্যাগ’ অর্ডার আছে। প্রতিনিয়ত তিনি গ্যাগ অর্ডার ভাঙছেন, এ পর্যন্ত ১০ বার ভেঙেছেন। বিচারক ফাইন করছেন। বলেছেন, এরপর জেলে পাঠাবেন। মার্কিন ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধে কাঠগড়ায়। তার বিরুদ্ধে ব্যবসায় জালিয়াতি সংক্রান্ত ৩৪টি অভিযোগ, দোষী সাব্যস্ত হলে তার ৪ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। এটিকে সংক্ষেপে ‘হাস মানি ট্রায়াল’ বলা হচ্ছে।
২০১৬ সালে নির্বাচনের আগে মডেল স্ট্ররমি ড্যানিয়েলের মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছেন। অর্থ দেয়াটা অপরাধ নয়, বলা হচ্ছে- অর্থ দেয়ার প্রক্রিয়াটি অবৈধ। স্ট্ররমি ড্যানিয়েল সাক্ষ্য দিয়েছেন। সবকিছু খোলামেলা বলেছেন। কথা বলতে না পারলেও ট্রাম্প চোখেমুখে বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন। বিচারক ট্রাম্পের উকিলদের সতর্ক করে দেন। ট্রাম্প পক্ষ ইতোমধ্যে দু’বার ‘মিস-ট্রায়াল’ দাবি করেন, বিচারক তা নাকচ করেন। একজন প্রশ্ন করেছে যে, এতসব ঝামেলা নিয়ে ট্রাম্প ঘুমায় কি করে?
নিউইয়র্কের মামলায় ট্রাম্প যদি দোষী সাব্যস্ত হোন, তাহলেও রায়ের কার্যকারিতা হতে হতে বছর চলে যাবে। ট্রাম্প আপিল করবেন, রায় বাতিল চাইবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। তদুপরি মামলাটি ‘মিস-ট্রায়াল’ হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। মামলাটি ‘হ্যাং-জুড়ি’ হতে পারে, অর্থাৎ জুরিরা একমত নাও হতে পারেন। জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের প্রফেসর কারেন মরিসন বলেছেন, ‘ট্রাম্প ভাগ্যবান ব্যক্তি’। নিউইয়র্ক ল’ স্কুল প্রফেসর আন্না কমিনস্কি বলেছেন, নিউইয়র্কের মামলা শেষ হবে, আপিল ইত্যাদি শেষ হতে হতে নির্বাচনের ফলাফল হয়ে যাবে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাকি ৩টি মামলা নির্বাচনের আগে আর শুরু হচ্ছে বলে মনে হয় না। ‘জানুয়ারি-৬’ মামলা সুপ্রিম কোর্ট স্থগিত করেছে। কবে শুরু হবে কেউ জানে না। ফ্লোরিডায় ক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট মামলা বিচারক আইলিন ক্যানন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দিয়েছেন। জর্জিয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ মামলা নিয়ে ঝামেলার অন্ত নেই। সেটি শুরু হতে দেরি আছে। সুতরাং আপাতত ট্রাম্প শুধু নিউইয়র্কে স্ট্ররমি ড্যানিয়েল মামলা নিয়ে ব্যস্ত। এ মামলাটি বাকি ৩টি মামলা থেকে দুর্বল। ট্রাম্প কি খালাস পাবেন?
[লেখক : নিউইয়র্ক প্রবাসী]