alt

opinion » post-editorial

সংখ্যালঘুদের সম্পদ লুটেরাদের বিচার কি হবে

মিথুশিলাক মুরমু

: মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

একসময়ের তুখোড় পুলিশ কর্মকর্তা। যিনি নীতি-নৈতিকতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স অবস্থানে থেকে প্রতাপের সঙ্গেই এগিয়ে গিয়েছেন সর্বোচ্চ শিখরে। তার মেধা ও দক্ষতা, সাহস ও মনোবল, দূরদর্শিতা ও চেতনার ফসলরূপে সংগ্রহ করেছেন ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল’ (বিপিএম) একবার নয় চার-চারবার। সর্বশেষ ২০২১ সালে তার ঝুলিতে সংগৃহীত হয়েছে শুদ্ধাচার পুরস্কারও।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর মহাপরিচালক পদেও আসীন ছিলেন। গোপালগঞ্জে রিসোর্ট নির্মাণে ৬২১ বিঘা সম্পত্তি ভয়-ভীতি দেখিয়ে করায়ত্ব করেছেন। এসব সম্পত্তির দাবিদার হচ্ছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। আমরা একজন বেনজীরের ঘটনা জেনেছি, আরও কত যে বেনজীর নামে-বেনামে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সহায়-সম্পত্তি, শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিচ্ছেন কে জানে। চাপা কষ্ট নিয়েই দেশান্তরিত কিংবা স্থানচ্যুত হতে হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করতে বাধ্য করা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। নীতি-নৈতিকতা বির্বজিত একশ্রেণির কর্তাব্যক্তি মুখিয়ে থাকেন ধর্মীয় ও জাতিগত, আদিবাসী-অন্ত্যজ শ্রেণীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দিকে। বেনজীর তিনটি ক্ষমতাকে ব্যবহার ও প্রদর্শন করে একট ভয়ের জায়গা তৈরি করেছিলেন। এটা করেছিলেন রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে। মানুষ হিসেবে মূল্যবোধ, মর্যাদা, সাম্য-মৈত্রী ছিল শুধু খাতা-কলমে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সাম্য, সম্প্রীতির বিষয়ে সর্বদা সচেতন ছিলেন। তিনি মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্মানিত করেছেন, কখনো ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি ভেদাভেদ করেননি। আমাদের মনে আছে, বেনজীর আহমেদ দায়িত্বে থাকাকালীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি সহাবস্থান সম্পর্কে অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজায় পূজাম-প পরিদর্শন করে বলিষ্ঠভাবে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘উৎসবে কোনো ধরনের অপশক্তি যাতে কোনো প্রকার উসকানিমূলক সংবাদ কিংবা তথ্য পরিবেশন করতে না পারে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য র‌্যাব ফোর্স সতর্ক রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এ দেশের মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে আশা করছি।’

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি বললেন, ‘আমরা এ দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উন্মেষ ঘটানোর অপপ্রয়াস দেখেছি। বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’ রাজশাহীতে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশের জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসাস্থল হতে চায়।... দেশ ও সমাজ যত এগিয়ে যাবে পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা তত বাড়বে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পুলিশকে প্রস্তুত হতে হবে।’

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মহাপরিচালক হিসেবে ২০১৫ সালে বলেছিলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সুসংহত।’ ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ধর্মীয় সম্প্রীতি সমাবেশে বলেছিলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বা তার পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কোন হামলা বা অন্যায় নির্যাতন হলে

নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।... যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, তাদের কোন দল বা মত নেই। তারা অপরাধী। এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’

আশ্চর্য হই যে, শুধু দেশে নয় দেশের বাইরেও জঙ্গিবাদ, নিরাপত্তা হুমকি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল থেকেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে। ২০২২ সালে এক সম্মেলনে সারা বিশে^র পুলিশ নির্বাহীদের প্ল্যাটফর্মের সামনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নীতিসমূহের পুনরাবৃত্তি করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিলেন।

কর্মজীবনের পরিসমাপ্তিতে বিদেশ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত ড. বেনজীর আহমেদের দর্শন যেন পাল্টে গেল। তিনি হয়তো বলতে পারেন, কর্মসূত্রে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ধারণ করেছিলাম, চাকরি বাঁচানোর লক্ষ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলাম; কিন্তু তিনি যে করবেন না, সেটি কখনোই ব্যক্ত করেননি। এটি ছিল তার কৌশল, ভ-ামি। একমাত্র পাপ যা ক্ষমা করা যায় না, তা হলো ভ-ামি; কারণ একজন মুনাফিকের অনুতাপও ভ-ামি।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উৎখাত করা গর্হিত অপরাধ, যে অপরাধ রাষ্ট্রীয় আইন, নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। স্ববিরোধী বক্তব্য ও কর্মকা- দিয়ে প্রশাসনের অধস্তনদের চিন্তা-চেতনা ও মনোজগতকেও প্রভাবিত করেছে, যা আমাদের প্রজন্মদের বিভ্রান্তি ও বিপথগামী করবে। সরকারের কাছে আবেদন করতে চাই, ক্ষমতার আড়ালে থেকে যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে চলেছে; তাদের মুখোশ উন্মোচন ও বিচারের মুখোমুখি করে পর্যায়ক্রমে জাতিকে শাপমুক্ত করুন।

[লেখক: কলামিস্ট]

শারদীয় পূজার দিনলিপি

ঋণের জন্য আত্মহত্যা, ঋণ নিয়েই চল্লিশা

জাকসু নির্বাচন ও হট্টগোল: আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কী?

নরসুন্দর পেশার গুরুত্ব ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন

বিভাগভিত্তিক এমপিআর নির্বাচন পদ্ধতি

প্ল্যাটফর্ম সমাজে বাংলাদেশ: জ্ঞানের ভবিষ্যৎ কার হাতে?

আনন্দবেদনার হাসপাতাল: সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্তবতা

ছবি

ভিন্ন ধরনের নির্বাচন, ভিন্ন ধরনের ফল

বেসরকারি খাতে সিআইবি’র যাত্রা: ঋণ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত

স্বাস্থ্যসেবায় মানবিকতা প্রতিষ্ঠা হোক

ছবি

নেপালে সরকার পতন ও বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ

ডাকসু নির্বাচন ও সংস্কারপ্রয়াস: রাজনৈতিক চিন্তার নতুন দিগন্ত

নির্বাচন কি সব সমস্যার সমাধান

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

tab

opinion » post-editorial

সংখ্যালঘুদের সম্পদ লুটেরাদের বিচার কি হবে

মিথুশিলাক মুরমু

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪

একসময়ের তুখোড় পুলিশ কর্মকর্তা। যিনি নীতি-নৈতিকতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স অবস্থানে থেকে প্রতাপের সঙ্গেই এগিয়ে গিয়েছেন সর্বোচ্চ শিখরে। তার মেধা ও দক্ষতা, সাহস ও মনোবল, দূরদর্শিতা ও চেতনার ফসলরূপে সংগ্রহ করেছেন ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল’ (বিপিএম) একবার নয় চার-চারবার। সর্বশেষ ২০২১ সালে তার ঝুলিতে সংগৃহীত হয়েছে শুদ্ধাচার পুরস্কারও।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর মহাপরিচালক পদেও আসীন ছিলেন। গোপালগঞ্জে রিসোর্ট নির্মাণে ৬২১ বিঘা সম্পত্তি ভয়-ভীতি দেখিয়ে করায়ত্ব করেছেন। এসব সম্পত্তির দাবিদার হচ্ছে ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়। আমরা একজন বেনজীরের ঘটনা জেনেছি, আরও কত যে বেনজীর নামে-বেনামে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সহায়-সম্পত্তি, শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিচ্ছেন কে জানে। চাপা কষ্ট নিয়েই দেশান্তরিত কিংবা স্থানচ্যুত হতে হচ্ছে সংখ্যালঘুদের। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করতে বাধ্য করা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়। নীতি-নৈতিকতা বির্বজিত একশ্রেণির কর্তাব্যক্তি মুখিয়ে থাকেন ধর্মীয় ও জাতিগত, আদিবাসী-অন্ত্যজ শ্রেণীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির দিকে। বেনজীর তিনটি ক্ষমতাকে ব্যবহার ও প্রদর্শন করে একট ভয়ের জায়গা তৈরি করেছিলেন। এটা করেছিলেন রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে। মানুষ হিসেবে মূল্যবোধ, মর্যাদা, সাম্য-মৈত্রী ছিল শুধু খাতা-কলমে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সাম্য, সম্প্রীতির বিষয়ে সর্বদা সচেতন ছিলেন। তিনি মানুষকে মানুষ হিসেবে সম্মানিত করেছেন, কখনো ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি ভেদাভেদ করেননি। আমাদের মনে আছে, বেনজীর আহমেদ দায়িত্বে থাকাকালীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তি সহাবস্থান সম্পর্কে অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজায় পূজাম-প পরিদর্শন করে বলিষ্ঠভাবে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘উৎসবে কোনো ধরনের অপশক্তি যাতে কোনো প্রকার উসকানিমূলক সংবাদ কিংবা তথ্য পরিবেশন করতে না পারে এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য র‌্যাব ফোর্স সতর্ক রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এ দেশের মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে আশা করছি।’

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তিনি বললেন, ‘আমরা এ দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উন্মেষ ঘটানোর অপপ্রয়াস দেখেছি। বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে রুখে দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।’ রাজশাহীতে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশের জনগণের প্রথম ও শেষ ভরসাস্থল হতে চায়।... দেশ ও সমাজ যত এগিয়ে যাবে পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা তত বাড়বে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দিতে পুলিশকে প্রস্তুত হতে হবে।’

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মহাপরিচালক হিসেবে ২০১৫ সালে বলেছিলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন সুসংহত।’ ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ধর্মীয় সম্প্রীতি সমাবেশে বলেছিলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বা তার পরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কোন হামলা বা অন্যায় নির্যাতন হলে

নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।... যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, তাদের কোন দল বা মত নেই। তারা অপরাধী। এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’

আশ্চর্য হই যে, শুধু দেশে নয় দেশের বাইরেও জঙ্গিবাদ, নিরাপত্তা হুমকি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল থেকেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে। ২০২২ সালে এক সম্মেলনে সারা বিশে^র পুলিশ নির্বাহীদের প্ল্যাটফর্মের সামনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নীতিসমূহের পুনরাবৃত্তি করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছিলেন।

কর্মজীবনের পরিসমাপ্তিতে বিদেশ থেকে ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত ড. বেনজীর আহমেদের দর্শন যেন পাল্টে গেল। তিনি হয়তো বলতে পারেন, কর্মসূত্রে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ধারণ করেছিলাম, চাকরি বাঁচানোর লক্ষ্যেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছিলাম; কিন্তু তিনি যে করবেন না, সেটি কখনোই ব্যক্ত করেননি। এটি ছিল তার কৌশল, ভ-ামি। একমাত্র পাপ যা ক্ষমা করা যায় না, তা হলো ভ-ামি; কারণ একজন মুনাফিকের অনুতাপও ভ-ামি।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উৎখাত করা গর্হিত অপরাধ, যে অপরাধ রাষ্ট্রীয় আইন, নীতি নৈতিকতা ও মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। স্ববিরোধী বক্তব্য ও কর্মকা- দিয়ে প্রশাসনের অধস্তনদের চিন্তা-চেতনা ও মনোজগতকেও প্রভাবিত করেছে, যা আমাদের প্রজন্মদের বিভ্রান্তি ও বিপথগামী করবে। সরকারের কাছে আবেদন করতে চাই, ক্ষমতার আড়ালে থেকে যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে চলেছে; তাদের মুখোশ উন্মোচন ও বিচারের মুখোমুখি করে পর্যায়ক্রমে জাতিকে শাপমুক্ত করুন।

[লেখক: কলামিস্ট]

back to top