শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
বাংলাদেশের সমুদ্রবেষ্টিত ছোট দ্ধীপ সেন্টমার্টিন। গণমাধ্যমে পরিবেশিত সংবাদ তথ্য থেকে জানা যায়Ñ মায়ানমারের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সেন্টমার্টিনের ওপর নজর রাখছে। যে কোন সময় তারা দ্ধীপটির বাংলাদেশের সীমানায় অবস্থান নিতে পারে আরকান আর্মিকে প্রতিহত করার অজুহাতে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী দ্ধীপটিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সেন্টমার্টিন বিষয়ে মায়ানমারকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। বাংলাদেশের মায়নমারের সাথে স্থলবেষ্টিত সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এই এলাকাগুলোতে আরাকান আর্মি বাহিনী প্রবেশ করে নানা অপকর্ম করে পালিয়ে যাচ্ছে। বারবার শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মর্টারসেলের আঘাত করছে সীমান্ত এলাকায়।
মায়ানমারের সংঘর্ষের হামলার খবর বিশ্লেষণে এটা প্রমাণ হয় যে, মায়ানমার থেকে যে পরিমাণ হামলা করা হয়েছে বাংলাদেশের ওপর, তার পাল্টা উত্তর দেয়া হচ্ছে না বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। গত ১৯ জুন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে এই সংকট নিরসন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ মায়ানমারের সহিত আলোচনা করে কি আজ পর্যন্ত কোন সংকট নিরসন করতে পেরেছে?
বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে বড় সংকট হলো রোহিঙ্গা সমস্যা। প্রায় ৭০ বছর ধরে হয়ে যাবে রোহিঙ্গা সমস্যা। এই র্দীঘ সময়ে কি মায়ানমার সরকারের সাথে বাংলাদেশের কোন ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে? মায়ানমার সরকার বাংলাদেশের আহবানে কোন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি কি কোন সময়? নিবিড়ভাবে ভাবতে গেলে দেখা যায়, মায়ানমার সরকার বাংলাদেশের কোন কথাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ১৯৬২ সালে জেনারেল নেউইন ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। ১৯৭৮ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনীর নাগামান (ড্রাগন রাজা) অভিযান চালায় রাখাইন প্রদেশে। এই অভিযানে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। ১৯৮২ সালেও অনেক রোহিঙ্গা নানা ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১৯৭৮ সালে অ্যামেনিস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানাবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে; কিন্তু এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোন প্রতিকার অ্যামনেস্টি গত ৩৮ বছরের করতে পারেনি। প্রতি বছরই কোন না কোনভাবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে তবে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে চার-পাঁচবার। ১৯৯১-৯২ সালে মায়ানমারে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়; ওই সময় প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। ১৯৯২ সাল থেকে ২০২৪ সাল- রোহিঙ্গা আসছে তো আসছেই। বাংলাদেশের দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল থামছে না।
রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসছে সেই সম্পর্কে স্থায়ী কোন সমাধানের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না জাতিসংঘকে। ২০০৫ সালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেয় কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরে নাকি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এই অভিযোগে তা ভেস্তে যায়। ২০১৬ সালে আবার দাঙ্গা দেখা দেয় মায়ানমারে। তখন লাখে লাখে রোহিঙ্গা টেকনাফ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা দাঙ্গা ১৯৪৬ থেকে ২০২৪ প্রায় ৭৮ বছরের বিবদমান একটি সমস্যা। ২০১৬ সালের পর থেকে দেখা যায় আজবধি প্রতি মাসেই কিছু কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যার্বতন ইস্যুতে নানা আলোচনার কথা শোনা যায়, জাতিসংঘসহ পৃথিবীর নানা দেশে, তবে মায়ানমার এই আলোচনায় কর্ণপাতও করছে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে, এ মামলার ফলে কি রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে পারছে বা এই মামলার কারণে মায়ানমার সরকারের কোন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল এসেছে বাংলাদেশে আলোচনার জন্য।
মায়ানমারের উগ্রবাদ কেন ঠেকানো যাচ্ছে না। মায়ানামারের উগ্রবাদের সৃষ্ট কুফলটা বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্য মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, এই বিরাট সমস্যার দায় ভার পোহাতে হচ্ছে বাংলাদেশের। আরকান আর্মির দাঙ্গার কারণে বাংলাদেশকে আশ্রয় দিতে হলো ১৫ লাখের অধিক রোহিঙ্গাকে। এই সমস্যাটি কেন কোন আলোচনায় মীমাংসা হচ্ছে না।
বাংলাদেশের সাথে মায়ানমারের সীমান্ত রেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এই দৈর্ঘ্য রেখায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। প্রায়ই শোনা যায় আরকান আর্মি ও নাসাকা বাহিনীর ছোড়া মর্টারশেল সীমান্ত রেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পড়ছে। ১৬ জুন ২০২৪ তারিখের বিবিসির সংবাদ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্ধীপের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে, তবে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যহত থাকায় টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের মধ্যে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে নাফ নদীতে মায়ানমারের কোন যুদ্ধ জাহাজ দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্র থেকে শোনা যাচ্ছে যে, মায়ানমারের গানবোট ও নেভাল শিপ নাফ নদীতে অবস্থান নিয়েছিল। বাংলাদেশের উচিত, মায়ানমারের যুদ্ধ জাহাজগুলো বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করছে কিনা তা দেখা?
দেশের কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ধারণা যে, নাফ নদীতে মায়ানমারের আর্মি এসেছিল আরকান আর্মিদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য। তাদের আরও ধারণা যে, আরকান আর্মি যদি মায়ানমারের মংডু দখল করে নেয় তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুটা সুরাহা হবে না, এখন যদি মায়ানমার বাহিনী কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে আরকান আর্মিকে প্রতিহত করতে চায় তাহলে কি তাদের প্রশ্রয় দেয়াটা যৌক্তিক হবে? মানবতার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশকে চরম মাশুল দিতে হচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। কারণ দেশবাসীর কাছে সেন্টমার্টিন ইস্যুটিতে নানা ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত এই ধূম্রজালটি নিরসনের ব্যাখ্যা দেয়া।
[লেখক : উন্নয়নকর্মী]
শাহ মো. জিয়াউদ্দিন
শনিবার, ২২ জুন ২০২৪
বাংলাদেশের সমুদ্রবেষ্টিত ছোট দ্ধীপ সেন্টমার্টিন। গণমাধ্যমে পরিবেশিত সংবাদ তথ্য থেকে জানা যায়Ñ মায়ানমারের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সেন্টমার্টিনের ওপর নজর রাখছে। যে কোন সময় তারা দ্ধীপটির বাংলাদেশের সীমানায় অবস্থান নিতে পারে আরকান আর্মিকে প্রতিহত করার অজুহাতে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী দ্ধীপটিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
মায়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ঘিরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, সেন্টমার্টিন বিষয়ে মায়ানমারকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। বাংলাদেশের মায়নমারের সাথে স্থলবেষ্টিত সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এই এলাকাগুলোতে আরাকান আর্মি বাহিনী প্রবেশ করে নানা অপকর্ম করে পালিয়ে যাচ্ছে। বারবার শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মর্টারসেলের আঘাত করছে সীমান্ত এলাকায়।
মায়ানমারের সংঘর্ষের হামলার খবর বিশ্লেষণে এটা প্রমাণ হয় যে, মায়ানমার থেকে যে পরিমাণ হামলা করা হয়েছে বাংলাদেশের ওপর, তার পাল্টা উত্তর দেয়া হচ্ছে না বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। গত ১৯ জুন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমে এই সংকট নিরসন করবে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ মায়ানমারের সহিত আলোচনা করে কি আজ পর্যন্ত কোন সংকট নিরসন করতে পেরেছে?
বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে বড় সংকট হলো রোহিঙ্গা সমস্যা। প্রায় ৭০ বছর ধরে হয়ে যাবে রোহিঙ্গা সমস্যা। এই র্দীঘ সময়ে কি মায়ানমার সরকারের সাথে বাংলাদেশের কোন ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে? মায়ানমার সরকার বাংলাদেশের আহবানে কোন ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি কি কোন সময়? নিবিড়ভাবে ভাবতে গেলে দেখা যায়, মায়ানমার সরকার বাংলাদেশের কোন কথাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ১৯৬২ সালে জেনারেল নেউইন ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে শুরু করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। ১৯৭৮ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনীর নাগামান (ড্রাগন রাজা) অভিযান চালায় রাখাইন প্রদেশে। এই অভিযানে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। ১৯৮২ সালেও অনেক রোহিঙ্গা নানা ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ১৯৭৮ সালে অ্যামেনিস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানাবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে; কিন্তু এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোন প্রতিকার অ্যামনেস্টি গত ৩৮ বছরের করতে পারেনি। প্রতি বছরই কোন না কোনভাবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে তবে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে চার-পাঁচবার। ১৯৯১-৯২ সালে মায়ানমারে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে রোহিঙ্গা এবং বৌদ্ধদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়; ওই সময় প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। ১৯৯২ সাল থেকে ২০২৪ সাল- রোহিঙ্গা আসছে তো আসছেই। বাংলাদেশের দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল থামছে না।
রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আসছে সেই সম্পর্কে স্থায়ী কোন সমাধানের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না জাতিসংঘকে। ২০০৫ সালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেয় কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরে নাকি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এই অভিযোগে তা ভেস্তে যায়। ২০১৬ সালে আবার দাঙ্গা দেখা দেয় মায়ানমারে। তখন লাখে লাখে রোহিঙ্গা টেকনাফ সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা দাঙ্গা ১৯৪৬ থেকে ২০২৪ প্রায় ৭৮ বছরের বিবদমান একটি সমস্যা। ২০১৬ সালের পর থেকে দেখা যায় আজবধি প্রতি মাসেই কিছু কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যার্বতন ইস্যুতে নানা আলোচনার কথা শোনা যায়, জাতিসংঘসহ পৃথিবীর নানা দেশে, তবে মায়ানমার এই আলোচনায় কর্ণপাতও করছে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে, এ মামলার ফলে কি রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরতে পারছে বা এই মামলার কারণে মায়ানমার সরকারের কোন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল এসেছে বাংলাদেশে আলোচনার জন্য।
মায়ানমারের উগ্রবাদ কেন ঠেকানো যাচ্ছে না। মায়ানামারের উগ্রবাদের সৃষ্ট কুফলটা বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্য মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, এই বিরাট সমস্যার দায় ভার পোহাতে হচ্ছে বাংলাদেশের। আরকান আর্মির দাঙ্গার কারণে বাংলাদেশকে আশ্রয় দিতে হলো ১৫ লাখের অধিক রোহিঙ্গাকে। এই সমস্যাটি কেন কোন আলোচনায় মীমাংসা হচ্ছে না।
বাংলাদেশের সাথে মায়ানমারের সীমান্ত রেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এই দৈর্ঘ্য রেখায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। প্রায়ই শোনা যায় আরকান আর্মি ও নাসাকা বাহিনীর ছোড়া মর্টারশেল সীমান্ত রেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসে পড়ছে। ১৬ জুন ২০২৪ তারিখের বিবিসির সংবাদ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্ধীপের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে, তবে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যহত থাকায় টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের মধ্যে পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে নাফ নদীতে মায়ানমারের কোন যুদ্ধ জাহাজ দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্র থেকে শোনা যাচ্ছে যে, মায়ানমারের গানবোট ও নেভাল শিপ নাফ নদীতে অবস্থান নিয়েছিল। বাংলাদেশের উচিত, মায়ানমারের যুদ্ধ জাহাজগুলো বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করছে কিনা তা দেখা?
দেশের কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের ধারণা যে, নাফ নদীতে মায়ানমারের আর্মি এসেছিল আরকান আর্মিদের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করার জন্য। তাদের আরও ধারণা যে, আরকান আর্মি যদি মায়ানমারের মংডু দখল করে নেয় তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুটা সুরাহা হবে না, এখন যদি মায়ানমার বাহিনী কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে আরকান আর্মিকে প্রতিহত করতে চায় তাহলে কি তাদের প্রশ্রয় দেয়াটা যৌক্তিক হবে? মানবতার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশকে চরম মাশুল দিতে হচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। কারণ দেশবাসীর কাছে সেন্টমার্টিন ইস্যুটিতে নানা ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত এই ধূম্রজালটি নিরসনের ব্যাখ্যা দেয়া।
[লেখক : উন্নয়নকর্মী]