মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রতিবছর ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়, যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। ১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই দিনটি স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও জনসচেতনতা বাড়াতে উদযাপিত হচ্ছে। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্ণ হলো। এই দীর্ঘ সময়ে দেশের স্বাস্থ্য খাত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য খাতের শুরু : একটি ইতিহাস
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছিল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। স্বাস্থ্য খাত তখন প্রায় ধ্বংসের মুখে। মাত্র ৬,০০০ চিকিৎসক, অপ্রতুল হাসপাতাল, ওষুধ ও জনবলের তীব্র সংকটে জর্জরিত ছিল গোটা দেশ। তবে সরকার তখন থেকেই পরিকল্পিত স্বাস্থ্যনীতির মাধ্যমে একটি সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য
১. প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা
স্বাধীনতার পর থেকে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নীতির আলোকে গ্রামীণ এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৯৮ সালে প্রায় ১৮,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবাকে সহজলভ্য করে। বর্তমানে প্রায় ১৪,০০০ ক্লিনিক সক্রিয় রয়েছে।
২. শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস
বাংলাদেশ শিশুমৃত্যু হ্রাসে বিশ্বে প্রশংসিত। ১৯৯০ সালে প্রতি হাজারে নবজাতকের মৃত্যুহার ছিল ৯৭, যা ২০২৩ সালে কমে ২৫-এ দাঁড়িয়েছে। মাতৃমৃত্যু হারও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা ও সচেতনতামূলক প্রচার এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৩. টিকাদান কর্মসূচি
১৯৭৯ সালে বিসিজি ও ডিপিটি টিকার মাধ্যমে শুরু হওয়া টিকাদান কার্যক্রম পরে বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ৯০% শিশু এই কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।
৪. এনজিও ও বেসরকারি খাতের অবদান
ব্র্যাক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতো সংস্থা স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবা মডেল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয়।
৫. পরিবার পরিকল্পনা
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনায় শীর্ষস্থানীয়। জন্মহার হ্রাস ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই খাতের অগ্রগতি লক্ষণীয়।
৬. ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা
সরকার ই-হেলথ, টেলিমেডিসিন ও হেলথ ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করে স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটালাইজেশনকে গতিশীল করেছে।
৭. কোভিড-১৯ মোকাবিলা
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীতে সীমিত সম্পদ নিয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া, ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও টিকাদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ ও ব্যর্থতা
১. স্বাস্থ্য বাজেটের ঘাটতি
জিডিপির মাত্র ১%-এরও কম বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে দেওয়া হয়, যেখানে ডঐঙ-এর সুপারিশ ৫%। এটি পরিকাঠামো ও জনবলের ঘাটতির বড় কারণ।
২. সেবার বৈষম্য
শহর ও গ্রামে স্বাস্থ্যসেবার মান ও প্রাপ্যতায় বড় ফারাক। শহরে আধুনিক সুবিধা থাকলেও গ্রামে চিকিৎসক ও অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।
৩. মানসম্মত চিকিৎসার অভাব
চিকিৎসকের সংখ্যা কম, প্রশিক্ষণের মান প্রশ্নবিদ্ধ এবং দুর্নীতি ও কমিশনভিত্তিক ওষুধ বিক্রি সেবার গুণগত মান ক্ষুণœ করছে।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষা
৫৪ বছরেও মানসিক স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর জন্য পরিকাঠামো ও জনবল অত্যন্ত সীমিত।
৫. বেসরকারি সেবার দুরবস্থা
বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রতারণা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও ব্যয়বহুল সেবা প্রদানের প্রবণতা রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা এটিকে আরও জটিল করেছে।
৬. চিকিৎসক ও নার্স সংকট
ডঐঙ-এর মানদ-ে প্রতি ১০,০০০ জনে ২৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন, কিন্তু বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র ৯-১১ জন। নার্স ও প্যারামেডিকের ঘাটতি তীব্র।
৭. রেফারেল ব্যবস্থার দুর্বলতা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো রোগীকে সঠিক সময়ে উচ্চপর্যায়ের হাসপাতালে পাঠাতে ব্যর্থ হয়, যা রোগীর জীবন ঝুঁকিতে ফেলে।
ভবিষ্যৎ করণীয়
১. বাজেট বৃদ্ধি : স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ধীরে ধীরে জিডিপির ৫%-এ উন্নীত করা জরুরি।
২. গ্রামীণ সেবা জোরদার : কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হাসপাতালে জনবল ও পরিকাঠামো বাড়াতে হবে।
৩. স্বাস্থ্য শিক্ষা : জনসচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম প্রসারিত করা প্রয়োজন।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য : জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৫. দুর্নীতি দমন : ওষুধ শিল্প ও স্বাস্থ্যসেবায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫৪ বছরে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে অনেক এগিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যে। তবে জনবল সংকট, বাজেট ঘাটতি ও সেবার বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণের সময় এসেছে। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।
[ লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি ]
মাহতাব হোসাইন মাজেদ
সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রতিবছর ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়, যা বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। ১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই দিনটি স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও জনসচেতনতা বাড়াতে উদযাপিত হচ্ছে। ২০২৫ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্ণ হলো। এই দীর্ঘ সময়ে দেশের স্বাস্থ্য খাত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও কিছু চ্যালেঞ্জ এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য খাতের শুরু : একটি ইতিহাস
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ছিল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। স্বাস্থ্য খাত তখন প্রায় ধ্বংসের মুখে। মাত্র ৬,০০০ চিকিৎসক, অপ্রতুল হাসপাতাল, ওষুধ ও জনবলের তীব্র সংকটে জর্জরিত ছিল গোটা দেশ। তবে সরকার তখন থেকেই পরিকল্পিত স্বাস্থ্যনীতির মাধ্যমে একটি সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য
১. প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা
স্বাধীনতার পর থেকে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নীতির আলোকে গ্রামীণ এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৯৮ সালে প্রায় ১৮,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবাকে সহজলভ্য করে। বর্তমানে প্রায় ১৪,০০০ ক্লিনিক সক্রিয় রয়েছে।
২. শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস
বাংলাদেশ শিশুমৃত্যু হ্রাসে বিশ্বে প্রশংসিত। ১৯৯০ সালে প্রতি হাজারে নবজাতকের মৃত্যুহার ছিল ৯৭, যা ২০২৩ সালে কমে ২৫-এ দাঁড়িয়েছে। মাতৃমৃত্যু হারও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা ও সচেতনতামূলক প্রচার এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৩. টিকাদান কর্মসূচি
১৯৭৯ সালে বিসিজি ও ডিপিটি টিকার মাধ্যমে শুরু হওয়া টিকাদান কার্যক্রম পরে বিস্তৃত হয়। বর্তমানে ৯০% শিশু এই কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।
৪. এনজিও ও বেসরকারি খাতের অবদান
ব্র্যাক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতো সংস্থা স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ব্র্যাকের স্বাস্থ্যসেবা মডেল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয়।
৫. পরিবার পরিকল্পনা
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনায় শীর্ষস্থানীয়। জন্মহার হ্রাস ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই খাতের অগ্রগতি লক্ষণীয়।
৬. ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা
সরকার ই-হেলথ, টেলিমেডিসিন ও হেলথ ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করে স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটালাইজেশনকে গতিশীল করেছে।
৭. কোভিড-১৯ মোকাবিলা
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারীতে সীমিত সম্পদ নিয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া, ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও টিকাদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ।
স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ ও ব্যর্থতা
১. স্বাস্থ্য বাজেটের ঘাটতি
জিডিপির মাত্র ১%-এরও কম বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে দেওয়া হয়, যেখানে ডঐঙ-এর সুপারিশ ৫%। এটি পরিকাঠামো ও জনবলের ঘাটতির বড় কারণ।
২. সেবার বৈষম্য
শহর ও গ্রামে স্বাস্থ্যসেবার মান ও প্রাপ্যতায় বড় ফারাক। শহরে আধুনিক সুবিধা থাকলেও গ্রামে চিকিৎসক ও অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।
৩. মানসম্মত চিকিৎসার অভাব
চিকিৎসকের সংখ্যা কম, প্রশিক্ষণের মান প্রশ্নবিদ্ধ এবং দুর্নীতি ও কমিশনভিত্তিক ওষুধ বিক্রি সেবার গুণগত মান ক্ষুণœ করছে।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষা
৫৪ বছরেও মানসিক স্বাস্থ্যে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এর জন্য পরিকাঠামো ও জনবল অত্যন্ত সীমিত।
৫. বেসরকারি সেবার দুরবস্থা
বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে প্রতারণা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও ব্যয়বহুল সেবা প্রদানের প্রবণতা রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা এটিকে আরও জটিল করেছে।
৬. চিকিৎসক ও নার্স সংকট
ডঐঙ-এর মানদ-ে প্রতি ১০,০০০ জনে ২৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন, কিন্তু বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র ৯-১১ জন। নার্স ও প্যারামেডিকের ঘাটতি তীব্র।
৭. রেফারেল ব্যবস্থার দুর্বলতা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো রোগীকে সঠিক সময়ে উচ্চপর্যায়ের হাসপাতালে পাঠাতে ব্যর্থ হয়, যা রোগীর জীবন ঝুঁকিতে ফেলে।
ভবিষ্যৎ করণীয়
১. বাজেট বৃদ্ধি : স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ধীরে ধীরে জিডিপির ৫%-এ উন্নীত করা জরুরি।
২. গ্রামীণ সেবা জোরদার : কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা হাসপাতালে জনবল ও পরিকাঠামো বাড়াতে হবে।
৩. স্বাস্থ্য শিক্ষা : জনসচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম প্রসারিত করা প্রয়োজন।
৪. মানসিক স্বাস্থ্য : জাতীয় স্বাস্থ্যনীতিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৫. দুর্নীতি দমন : ওষুধ শিল্প ও স্বাস্থ্যসেবায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫৪ বছরে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে অনেক এগিয়েছে, বিশেষ করে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্যে। তবে জনবল সংকট, বাজেট ঘাটতি ও সেবার বৈষম্যের মতো চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে বাস্তবসম্মত সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণের সময় এসেছে। ‘সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা’ লক্ষ্য অর্জনে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।
[ লেখক : প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি ]