দেশে চালের উৎপাদন প্রতিবছরই চাহিদার তুলনায় বেশি হলেও বাজারে চালের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ভরা মৌসুমে, যখন চালের দাম কমার কথা, তখন উল্টো তা আকাশছোঁয়া। ভালো মানের মোটা চাল খুচরায় ৬৫ টাকা, আর সরু চাল প্রায় ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছেÑ এমন অবস্থা দেশের ইতিহাসে খুব কমই দেখা গেছে। এর ফলে নি¤œআয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৪ দশমিক ৬ কোটি টন চাল উৎপাদিত হয়েছে, যা মোট চাহিদা ৩ দশমিক ৮৫ কোটি টনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। তাহলে প্রশ্ন ওঠেÑ উৎপাদন উদ্বৃত্ত থাকার পরও কেন চালের দাম বাড়ছে? এখানে একটি বড় কারণ পরিসংখ্যানের সীমাবদ্ধতা। বিবিএস কেবল মানুষের সরাসরি খাদ্যগ্রহণের চাহিদা হিসাব করে; গবাদিপশুর খাদ্য ও শিল্পকারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত চালের পরিমাণ হিসাব করা হয় না। এই ‘নন-হিউম্যান’ এবং ‘মেশিন কনজাম্পশন’ চালের প্রকৃত চাহিদাকে অনেক বাড়িয়ে দেয়, যা বাজারে চাপ তৈরি করে।
সরকারি তথ্য ও বাস্তবতার মধ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে। টিসিবি যেখানে মোটা চালের দাম ৫২-৫৭ টাকা বলছে, সেখানে বাস্তবে তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। সরু চালের ক্ষেত্রেও এমনই পার্থক্য। ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের তথ্য-সংগ্রহ ও পরিবেশনায় আরও নির্ভরযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা আনা জরুরি।
সরকার গত বছর প্রায় ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমদানি হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৪০ হাজার টন। ব্যবসায়ীরা আমদানিতে অনাগ্রহী থেকেছেন সম্ভাব্য দাম পতনের ভয়ে।
খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, মিল মালিকরা বড় আকারে চাল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। এ ধরনের মজুদদারির বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালাতে হবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করতে হবে।
চালের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন, সংরক্ষণ, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার মধ্যে ভারসাম্য আনা জরুরি। বাজারে সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রগুলো (ওএমএস) আরও বিস্তৃত করতে হবে, খাদ্য মজুদের স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরি করতে হবে এবং চালকল পর্যায়ে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। একই সঙ্গে আগামী দিনের জন্য চাহিদার প্রকৃত চিত্র নির্ণয় করে পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে সমন্বয় থাকে।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
দেশে চালের উৎপাদন প্রতিবছরই চাহিদার তুলনায় বেশি হলেও বাজারে চালের দাম এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ভরা মৌসুমে, যখন চালের দাম কমার কথা, তখন উল্টো তা আকাশছোঁয়া। ভালো মানের মোটা চাল খুচরায় ৬৫ টাকা, আর সরু চাল প্রায় ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছেÑ এমন অবস্থা দেশের ইতিহাসে খুব কমই দেখা গেছে। এর ফলে নি¤œআয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ৪ দশমিক ৬ কোটি টন চাল উৎপাদিত হয়েছে, যা মোট চাহিদা ৩ দশমিক ৮৫ কোটি টনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। তাহলে প্রশ্ন ওঠেÑ উৎপাদন উদ্বৃত্ত থাকার পরও কেন চালের দাম বাড়ছে? এখানে একটি বড় কারণ পরিসংখ্যানের সীমাবদ্ধতা। বিবিএস কেবল মানুষের সরাসরি খাদ্যগ্রহণের চাহিদা হিসাব করে; গবাদিপশুর খাদ্য ও শিল্পকারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত চালের পরিমাণ হিসাব করা হয় না। এই ‘নন-হিউম্যান’ এবং ‘মেশিন কনজাম্পশন’ চালের প্রকৃত চাহিদাকে অনেক বাড়িয়ে দেয়, যা বাজারে চাপ তৈরি করে।
সরকারি তথ্য ও বাস্তবতার মধ্যে ব্যাপক ফারাক রয়েছে। টিসিবি যেখানে মোটা চালের দাম ৫২-৫৭ টাকা বলছে, সেখানে বাস্তবে তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। সরু চালের ক্ষেত্রেও এমনই পার্থক্য। ফলে বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের তথ্য-সংগ্রহ ও পরিবেশনায় আরও নির্ভরযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা আনা জরুরি।
সরকার গত বছর প্রায় ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমদানি হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৪০ হাজার টন। ব্যবসায়ীরা আমদানিতে অনাগ্রহী থেকেছেন সম্ভাব্য দাম পতনের ভয়ে।
খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, মিল মালিকরা বড় আকারে চাল মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। এ ধরনের মজুদদারির বিরুদ্ধে দ্রুত অভিযান চালাতে হবে। বাজার মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করতে হবে।
চালের বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন, সংরক্ষণ, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার মধ্যে ভারসাম্য আনা জরুরি। বাজারে সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রগুলো (ওএমএস) আরও বিস্তৃত করতে হবে, খাদ্য মজুদের স্বচ্ছ নীতিমালা তৈরি করতে হবে এবং চালকল পর্যায়ে কঠোর নজরদারি চালাতে হবে। একই সঙ্গে আগামী দিনের জন্য চাহিদার প্রকৃত চিত্র নির্ণয় করে পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে সমন্বয় থাকে।