alt

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য: শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন

জাঁ-নেসার ওসমান

: বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

“এ্যা... কী এটা কি লিকেচেন যে, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” বাজারে তো এই নিয়া এলাহি কা- ঘইট্টা যাইবো, হৈ চৈ পইড়া যাইবো গা!”

“এলাহি কা- ঘটুক বা মকবুল এলাহি ঘটুক, যতই হৈ চৈ পড়–ক বা আমায় তোরা রিমান্ডে নে, আমি কিন্তু এলাহি মকবুলের মতো সত্য কথা বলেই যাবো, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”।”

“কিন্তু আমি কোই কি, হ্যারা বিদেশে থাকে, হ্যারা পার্টি কোইরা টার্কি খায়, আমেরকিার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বন্ধু, সামিয়া-শারিকার লগে বাস করে, হ্যাগো কতা বাদ দেন, আপনে মিয়া থার্ড ওয়ার্ল্ডের নাগরিক, আপনে মিয়া ক্যেমনে হ্যাগো কথার প্রতিধ্বনী করেন?”

“আরে বুড়োবক, তুই এটা বুজছিস না কেনো, সত্য সব সময়ই সত্য। সে আমেরিকায় হোক বা বাংলাদেশে হোক, সত্যমেব জয়তে, সত্যের জয় হবেই। সত্য সত্যই।”

“মাগার তামান্না কি বাত হ্যায়, যো আপনে সকল যায়গায় সকল সময় সদা সত্য কথা নেই বলেগা, সামঝা!”

“ওই আহাম¥ক ভাষার জগাখিচুড়ি, তোকে তো সেটাই বোঝাচ্ছিলাম যে, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”। শিক্ষা তুই ইচ্ছা করলেই কোচিং সেন্টারে ভর্তি হোয়ে, লেখকের আসল নাম, আজিজুর রহমান, ছদ্মনাম শওকত ওসমান। জননী, জননী, ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি...এই সব জপতে জপতে মুখস্থ করে ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষিত হলি, শিক্ষা সহজ, কিন্তু বিদ্যা! তুমি কি বিদ্যা গ্রহণ করিয়াছো, তুমি কি প্রকৃত বিদ্যান হইয়াছো? এখানেই তোমার এলাহি কা- ঘটছে যেআমরা কি শিক্ষিত হোইলাম না বিদ্যান হইলাম?”

“শিক্ষিত আর বিদ্যান একই কথা, খালি টাকার এপিঠ ওপিঠ। এ যেমন একদিকে সামিয়া আর এক দিকে শারিকা! ব্জুলাইন, আপনের “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” ধোপে টিকবো না, এই দেশে সবই সমান। বিদেশ থ্যেইক্কা আঙ্গুর আমদানি করেন কেজি চার’শ ট্যাকা, আর নিজের দেশের কাঁচা মরিচের কেজি চার’শ ট্যাকা হেঃ হেঃ সবই সমান। সেই দেশে আপনে কন এলাহি কইছে “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” হাগলনি কোনো!”

“বুঝলাম তোর ভাষায় “শিক্ষা-বিদ্যা” দুইই সমান, তাহলে তুই যখন শিক্ষিত হয়ে সরকারি চাকুরি করে পাঁচ হাজার টাকায় বালিশ কিনিস তখন তুই শিক্ষিত না বিদ্যান?”

“আরে ভাইডি হ্যেইয়াতো এথিকসের বিষয়, এইডা শিক্ষিত বা বিদ্যানের কুনো বিষয় না। আপনে যদি ভালা ঘরের পোলা হন, তায়লে আপনে আর চুরি চামারিতে যাইবেন না। কিন্তু পানি ওয়ালার পোলা, ভ্যান চালকের পোলা, কামের বেটি রহিমার পোলা, আপনের ভাষায় লেখকের আসল নাম, আজিজুর রহমান, ছদ্মনাম শওকত ওসমান। জননী, জননী, ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি...এই সব জপতে জপতে মুখস্থ কইরা শিক্ষিত হইলে, সুযোগ পাইলে হালার পোলারা তো ট্যাকা চুরি কোরবোই! ও গো লাই¹া ট্যাকার লোভ সামলানো কঠিন।”

“তাহলে তোর এই পানি ওয়ালার পোলা, ভ্যান চালকের পোলা এরা কি বিদ্যান? বল বল এরা শিক্ষিত না বিদ্যান?”

“বুঝলাম, আবরার রে বুয়েটে, ভ্যান চালকের পোলা খালি ক্রিকেটের উইকেটের বাড়িই দিছে এক’শটা,এইডা কুনো শিক্ষিত বা বিদ্যানের কাম না, এইডা তো জন্তু জানোয়ারের কাম। বাঙালি হয়া বাঙালি মারস শরম করে না!”

“তাহলে বুঝ। আমি যে বললাম “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” এ কথা তুই মানতে চাচ্ছিস না কেনো? তারপর দেখ তোদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব স্যার তার “কাদামাটি বইয়ের” ২৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, অনেক শিক্ষিতের জীবনের প্রথম পাঠ শুরু হয় মেসের রান্নার বামার সাথে, তাহলে এখানে শিক্ষা আর বিদ্যার মাঝে তুই ফারাক খুঁজে পাচ্ছিস না?”

“বুইজলাম আন্নের কতার মইধ্যে যুক্তি দ্যেহা যার কিন্তুক, শিক্ষিত লোক বিদ্যান না, হ্যেইডা ঠিক মাইন্না নিতে মনে সায় দেয় না। এই যে আমাগো ঐশী, কলেজে পড়া শিক্ষিত তরুণী, হ্যেয় নিজে হ্যের বাপ-মারে খুন করলো, তো আপনে হ্যেরে কি কোইবেন, “শিক্ষত না,বিদ্যান?”

“তুইই বল। এক ষোড়শী কন্যা তার নিজ বাবা-মাকে ঠা-া মাথায় খুন করছে, এটা কত খানি পৈশাচিক ঘটনা তুই ভাবতে পারিস! পত্রপত্রিকায় পড়েছি এই মেয়েকে নাকি তার বাবা প্রতি মাসে এক লক্ষটাকা হাত খরচ দিতো! এই রকম সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে ঐশী খুন করলো!”

“ভাইডি আন্নেতো আঁরে টব্বস বানাই দিলেন, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”! কথাটা এলাহি কা- ঘটাইবো। আজীবন শুনলাম শিক্ষিত-বিদ্যান একই জন, অহন তো দেহি না বিষয়টার মইধ্যেও ফারাক আছে। তায়লে আপনে কন যে বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধইরা বাংলাদেশ খালি শিক্ষিত লুকেরা দেশ পরিচালনা করছে, কুনো বিদ্যান লোক আসে নাই?”

“না একবারে ঢালাও ভাবে বললেতো হবে না, মাঝে মাঝে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো ঐ যে যথাশব্দের লেখক মরহুম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, আমাদের বিচারপতি শ্রদ্ধেও শাহবুদ্দিন স্যার এমনি কিছু ক্ষণজন্মারা এসেছিলেন।”

“তায়লে গুরু একটা চান্স আছে। এই যে আইতাছে নির্বাচন, এইডার মইধ্যে পাবলিকরে কমু, ওই দেশবাসী জনগণ, তুমরা এবার তুমরার ভুট শিক্ষিত ব্যাটারে না দিয়া বিদ্যান রে দিও, তায়লে সোনার বাংলা হীরার বাংলা হয়া যাইবো গা।”

“খুবই ভালো প্রস্তাব কিন্তু কে শিক্ষিত কে বিদ্যান তা তোর আপামর জনগণ চিনবে কি কোরে?”

“আপনেতো আমারে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? হেই রহম এক গ্যাঁড়া কলে ফালায়া দিলেন...”

“দ্যাখ আসন্ন নির্বাচনে কী হয়, ক্রস ইয়োর ফিংগার...”

“ওকে, ওয়েটিং ফর আসন্ন নির্বাচন, দেখুম পাবলিক কারে বাইচ্ছা লয়, শিক্ষিত রে, নাকি বিদ্যান রে...”

[লেখক: চলচ্চিত্রকার]

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

বাংলার সংস্কৃতি : উৎস, বিবর্তন ও বর্তমান সমাজ-মনন

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জনগণের ভূমিকা উপেক্ষিত

শ্রমজীবী মানুষের শোভন কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের বাস্তবতা

প্রবারণার আলোয় আলোকিত হোক মানবজাতি

অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের শেষ সুযোগ?

পাহাড় থেকে সমতল: আদিবাসী নারীর নিরাপত্তা

সোশ্যাল মিডিয়ার ‘লাইক’ সংস্কৃতি: আসক্তি নাকি নতুন যোগাযোগ?

জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যু

মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক পরিবর্তন: আমরা কী শিক্ষা নিতে পারি

রম্যগদ্য: “কেশ ফ্যালায় ভাই, কেশ ফ্যালায়...”

লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীর অধিকার: বিসিএস ও শিক্ষা ক্যাডারের বৈষম্য

ন্যাশনাল গ্যালারি : রঙতুলির মহাসমুদ্রে একদিন

যুব শক্তি বনাম বেকারত্ব

প্রযুক্তি, আর্থিক পরিকল্পনা ও গণিতের ব্যবহার

ফরাসি বিপ্লব: বৈষম্য নিরসনে সামগ্রিক মুক্তির প্রেরণা

অন্তর্বর্তী সরকারের নিউইয়র্ক সফর

প্রবীণদের যত্ন: নৈতিক দায়িত্ব থেকে সামাজিক শক্তি নির্মাণ

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের অপরিহার্যতা

জনমিতিক সুবিধা: স্বপ্নের দশক ও নীতিগত সংস্কারের অপরিহার্যতা

বিদ্যালয় ও মাঠ দখলের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের সংগ্রাম

শিক্ষাসংস্কারে চাই সুস্পষ্ট লক্ষ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

ভারতে এসআইআর বিতর্ক

কীটনাশক: জনস্বাস্থ্যের হুমকি

কীটনাশক: জনস্বাস্থ্যের হুমকি

ব্যাংক একীভূতকরণ: আর্থিক খাতের সামনে নতুন বাস্তবতা

দায়িত্বশীল আচরণে গড়ে উঠুক দেশের পর্যটন খাত

এশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় নতুন সমীকরণ

বাংলাদেশের গিগ অর্থনীতি: উন্নয়নের হাতিয়ার নাকি অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ?

জলাতঙ্ক: প্রতিরোধযোগ্য তবু প্রাণঘাতী

বেড়ে চলা বৈষম্যের দেওয়াল

নৃশংসতার ভিডিও, নীরব দর্শক আর হারিয়ে যাওয়া মানবতা

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও জনস্বাস্থ্যের সংকট

জেন জি’র অস্থির অভিযাত্রা

রম্যগদ্য: রবার্ট ব্রুস ও মাকড়শা

tab

opinion » post-editorial

রম্যগদ্য: শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন

জাঁ-নেসার ওসমান

বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

“এ্যা... কী এটা কি লিকেচেন যে, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” বাজারে তো এই নিয়া এলাহি কা- ঘইট্টা যাইবো, হৈ চৈ পইড়া যাইবো গা!”

“এলাহি কা- ঘটুক বা মকবুল এলাহি ঘটুক, যতই হৈ চৈ পড়–ক বা আমায় তোরা রিমান্ডে নে, আমি কিন্তু এলাহি মকবুলের মতো সত্য কথা বলেই যাবো, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”।”

“কিন্তু আমি কোই কি, হ্যারা বিদেশে থাকে, হ্যারা পার্টি কোইরা টার্কি খায়, আমেরকিার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বন্ধু, সামিয়া-শারিকার লগে বাস করে, হ্যাগো কতা বাদ দেন, আপনে মিয়া থার্ড ওয়ার্ল্ডের নাগরিক, আপনে মিয়া ক্যেমনে হ্যাগো কথার প্রতিধ্বনী করেন?”

“আরে বুড়োবক, তুই এটা বুজছিস না কেনো, সত্য সব সময়ই সত্য। সে আমেরিকায় হোক বা বাংলাদেশে হোক, সত্যমেব জয়তে, সত্যের জয় হবেই। সত্য সত্যই।”

“মাগার তামান্না কি বাত হ্যায়, যো আপনে সকল যায়গায় সকল সময় সদা সত্য কথা নেই বলেগা, সামঝা!”

“ওই আহাম¥ক ভাষার জগাখিচুড়ি, তোকে তো সেটাই বোঝাচ্ছিলাম যে, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”। শিক্ষা তুই ইচ্ছা করলেই কোচিং সেন্টারে ভর্তি হোয়ে, লেখকের আসল নাম, আজিজুর রহমান, ছদ্মনাম শওকত ওসমান। জননী, জননী, ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি...এই সব জপতে জপতে মুখস্থ করে ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষিত হলি, শিক্ষা সহজ, কিন্তু বিদ্যা! তুমি কি বিদ্যা গ্রহণ করিয়াছো, তুমি কি প্রকৃত বিদ্যান হইয়াছো? এখানেই তোমার এলাহি কা- ঘটছে যেআমরা কি শিক্ষিত হোইলাম না বিদ্যান হইলাম?”

“শিক্ষিত আর বিদ্যান একই কথা, খালি টাকার এপিঠ ওপিঠ। এ যেমন একদিকে সামিয়া আর এক দিকে শারিকা! ব্জুলাইন, আপনের “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” ধোপে টিকবো না, এই দেশে সবই সমান। বিদেশ থ্যেইক্কা আঙ্গুর আমদানি করেন কেজি চার’শ ট্যাকা, আর নিজের দেশের কাঁচা মরিচের কেজি চার’শ ট্যাকা হেঃ হেঃ সবই সমান। সেই দেশে আপনে কন এলাহি কইছে “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” হাগলনি কোনো!”

“বুঝলাম তোর ভাষায় “শিক্ষা-বিদ্যা” দুইই সমান, তাহলে তুই যখন শিক্ষিত হয়ে সরকারি চাকুরি করে পাঁচ হাজার টাকায় বালিশ কিনিস তখন তুই শিক্ষিত না বিদ্যান?”

“আরে ভাইডি হ্যেইয়াতো এথিকসের বিষয়, এইডা শিক্ষিত বা বিদ্যানের কুনো বিষয় না। আপনে যদি ভালা ঘরের পোলা হন, তায়লে আপনে আর চুরি চামারিতে যাইবেন না। কিন্তু পানি ওয়ালার পোলা, ভ্যান চালকের পোলা, কামের বেটি রহিমার পোলা, আপনের ভাষায় লেখকের আসল নাম, আজিজুর রহমান, ছদ্মনাম শওকত ওসমান। জননী, জননী, ক্রীতদাসের হাসি, ক্রীতদাসের হাসি...এই সব জপতে জপতে মুখস্থ কইরা শিক্ষিত হইলে, সুযোগ পাইলে হালার পোলারা তো ট্যাকা চুরি কোরবোই! ও গো লাই¹া ট্যাকার লোভ সামলানো কঠিন।”

“তাহলে তোর এই পানি ওয়ালার পোলা, ভ্যান চালকের পোলা এরা কি বিদ্যান? বল বল এরা শিক্ষিত না বিদ্যান?”

“বুঝলাম, আবরার রে বুয়েটে, ভ্যান চালকের পোলা খালি ক্রিকেটের উইকেটের বাড়িই দিছে এক’শটা,এইডা কুনো শিক্ষিত বা বিদ্যানের কাম না, এইডা তো জন্তু জানোয়ারের কাম। বাঙালি হয়া বাঙালি মারস শরম করে না!”

“তাহলে বুঝ। আমি যে বললাম “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন” এ কথা তুই মানতে চাচ্ছিস না কেনো? তারপর দেখ তোদের অবসরপ্রাপ্ত সচিব স্যার তার “কাদামাটি বইয়ের” ২৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, অনেক শিক্ষিতের জীবনের প্রথম পাঠ শুরু হয় মেসের রান্নার বামার সাথে, তাহলে এখানে শিক্ষা আর বিদ্যার মাঝে তুই ফারাক খুঁজে পাচ্ছিস না?”

“বুইজলাম আন্নের কতার মইধ্যে যুক্তি দ্যেহা যার কিন্তুক, শিক্ষিত লোক বিদ্যান না, হ্যেইডা ঠিক মাইন্না নিতে মনে সায় দেয় না। এই যে আমাগো ঐশী, কলেজে পড়া শিক্ষিত তরুণী, হ্যেয় নিজে হ্যের বাপ-মারে খুন করলো, তো আপনে হ্যেরে কি কোইবেন, “শিক্ষত না,বিদ্যান?”

“তুইই বল। এক ষোড়শী কন্যা তার নিজ বাবা-মাকে ঠা-া মাথায় খুন করছে, এটা কত খানি পৈশাচিক ঘটনা তুই ভাবতে পারিস! পত্রপত্রিকায় পড়েছি এই মেয়েকে নাকি তার বাবা প্রতি মাসে এক লক্ষটাকা হাত খরচ দিতো! এই রকম সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে ঐশী খুন করলো!”

“ভাইডি আন্নেতো আঁরে টব্বস বানাই দিলেন, “শিক্ষা সহজ, বিদ্যা কঠিন”! কথাটা এলাহি কা- ঘটাইবো। আজীবন শুনলাম শিক্ষিত-বিদ্যান একই জন, অহন তো দেহি না বিষয়টার মইধ্যেও ফারাক আছে। তায়লে আপনে কন যে বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধইরা বাংলাদেশ খালি শিক্ষিত লুকেরা দেশ পরিচালনা করছে, কুনো বিদ্যান লোক আসে নাই?”

“না একবারে ঢালাও ভাবে বললেতো হবে না, মাঝে মাঝে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো ঐ যে যথাশব্দের লেখক মরহুম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, আমাদের বিচারপতি শ্রদ্ধেও শাহবুদ্দিন স্যার এমনি কিছু ক্ষণজন্মারা এসেছিলেন।”

“তায়লে গুরু একটা চান্স আছে। এই যে আইতাছে নির্বাচন, এইডার মইধ্যে পাবলিকরে কমু, ওই দেশবাসী জনগণ, তুমরা এবার তুমরার ভুট শিক্ষিত ব্যাটারে না দিয়া বিদ্যান রে দিও, তায়লে সোনার বাংলা হীরার বাংলা হয়া যাইবো গা।”

“খুবই ভালো প্রস্তাব কিন্তু কে শিক্ষিত কে বিদ্যান তা তোর আপামর জনগণ চিনবে কি কোরে?”

“আপনেতো আমারে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে? হেই রহম এক গ্যাঁড়া কলে ফালায়া দিলেন...”

“দ্যাখ আসন্ন নির্বাচনে কী হয়, ক্রস ইয়োর ফিংগার...”

“ওকে, ওয়েটিং ফর আসন্ন নির্বাচন, দেখুম পাবলিক কারে বাইচ্ছা লয়, শিক্ষিত রে, নাকি বিদ্যান রে...”

[লেখক: চলচ্চিত্রকার]

back to top