বাংলাদেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের একটি সহজলভ্য উৎস হলো ডিম- মুরগি। যার মাধ্যমে দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের একটি বড় অংশের আমিষের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরে পোলট্রি শিল্পে তৈরি সিন্ডিকেট ও নানামুখী প্রতিকূলতা গ্রামগঞ্জে ক্ষুদ্র খামারিদের সংখ্যা কমিয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
বিগত কয়েক বছরে পোলট্রি উপকরণের দাম বৃদ্ধি ও বাজার সিন্ডিকেট বর্তমানে গ্রামগঞ্জে ক্ষুদ্র খামারিদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। নানামুখী সংকটের ফলে লোকসান গুনতে গুনতে বর্তমানে গ্রামগঞ্জে একে একে বন্ধ হচ্ছে প্রান্তিক পোলট্রি খামার। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক খামারি প্রভাব পড়ছে দেশের ডিম-মুরগির বাজারে।
বিগত কয়েক বছরের তুলনায় পোলট্রি শিল্পে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। বর্তমানে ক্যাটাগরি অনুযায়ী মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি দামে। বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাণিজ খাদ্য ও ওষুধের দাম। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে পরিবহন খাতে। এছাড়া বিগত কয়েক বছরের বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের দাম। ফলে বিদ্যুতের বাড়তি দাম মুরগি ও ডিম উৎপাদনে যোগ করেছে বাড়তি খরচ।
পাশাপাশি ডিম-মুরগির বাজারজাতকরণে রয়েছে নানা মহলের সিন্ডিকেট। সময় ও স্থানের ব্যবধানে প্রান্তিক খামারিদের কাছে থেকে ক্রয় করা ডিম বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি দামে। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছেন। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে প্রান্তিক খামারিরা পোলট্রি শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। যার প্রভাবে ডিম- মুরগির বাজারে তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট। দিন দিন ঊর্ধমুখী হচ্ছে ডিম-মুরগির বাজার। তৈরি হচ্ছে আমদানি নির্ভর বাজার ব্যবস্থা।
অন্যদিকে পোলট্রি শিল্পে বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীর দাপট এবং করপোরেট কোম্পানিরগুলোর বড় পরিসরে বিনিয়োগ। ফলে উৎপাদন খরচে বড় পার্থক্য থাকায় বাজারে বড় কোম্পানির সঙ্গে টিকতে পারছেন না প্রান্তিক খামারিরা। সে কারণে পোলট্রি শিল্প অনেকটাই করপোরেট কোম্পানিরগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো উৎপাদন, প্যাকেজিং আর ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির সুবিধা পাওয়ায় বাজারজাতকরণে তারা অনেকটা এগিয়ে প্রান্তিক খামারিদের তুলনায়।
বর্তমানে ছোট খামারিদের প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন তাদের সক্ষমতা বাড়ানো। প্রয়োজন পোলট্রি উপকরণের দাম কমানো। অধিক পরিসরে চিকিৎসাসেবা, প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। বাজারজাতকরণে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। সরকারি ভাবে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা চালুর মাধ্যম প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে ডিম- মুরগি উৎপাদনে আগ্রহ বৃদ্ধি করা।
স্বল্প আয়ের মানুষদের আমিষের চাহিদা পূরণ ও ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টির বিষয়ে আমাদের এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে বাজার ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় আমাদের এখন থেকেই বিশেষ নজর দিতে হবে।
মুজাহিদুল ইসলাম,
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী কলেজ
বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
বাংলাদেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষের একটি সহজলভ্য উৎস হলো ডিম- মুরগি। যার মাধ্যমে দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের একটি বড় অংশের আমিষের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরে পোলট্রি শিল্পে তৈরি সিন্ডিকেট ও নানামুখী প্রতিকূলতা গ্রামগঞ্জে ক্ষুদ্র খামারিদের সংখ্যা কমিয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
বিগত কয়েক বছরে পোলট্রি উপকরণের দাম বৃদ্ধি ও বাজার সিন্ডিকেট বর্তমানে গ্রামগঞ্জে ক্ষুদ্র খামারিদের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। নানামুখী সংকটের ফলে লোকসান গুনতে গুনতে বর্তমানে গ্রামগঞ্জে একে একে বন্ধ হচ্ছে প্রান্তিক পোলট্রি খামার। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রান্তিক খামারি প্রভাব পড়ছে দেশের ডিম-মুরগির বাজারে।
বিগত কয়েক বছরের তুলনায় পোলট্রি শিল্পে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। বর্তমানে ক্যাটাগরি অনুযায়ী মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি দামে। বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাণিজ খাদ্য ও ওষুধের দাম। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে পরিবহন খাতে। এছাড়া বিগত কয়েক বছরের বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুতের দাম। ফলে বিদ্যুতের বাড়তি দাম মুরগি ও ডিম উৎপাদনে যোগ করেছে বাড়তি খরচ।
পাশাপাশি ডিম-মুরগির বাজারজাতকরণে রয়েছে নানা মহলের সিন্ডিকেট। সময় ও স্থানের ব্যবধানে প্রান্তিক খামারিদের কাছে থেকে ক্রয় করা ডিম বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুণ বাড়তি দামে। ফলে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হচ্ছেন। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে প্রান্তিক খামারিরা পোলট্রি শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। যার প্রভাবে ডিম- মুরগির বাজারে তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম সংকট। দিন দিন ঊর্ধমুখী হচ্ছে ডিম-মুরগির বাজার। তৈরি হচ্ছে আমদানি নির্ভর বাজার ব্যবস্থা।
অন্যদিকে পোলট্রি শিল্পে বেড়েছে মধ্যস্বত্বভোগীর দাপট এবং করপোরেট কোম্পানিরগুলোর বড় পরিসরে বিনিয়োগ। ফলে উৎপাদন খরচে বড় পার্থক্য থাকায় বাজারে বড় কোম্পানির সঙ্গে টিকতে পারছেন না প্রান্তিক খামারিরা। সে কারণে পোলট্রি শিল্প অনেকটাই করপোরেট কোম্পানিরগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। বড় বড় কোম্পানিগুলো উৎপাদন, প্যাকেজিং আর ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির সুবিধা পাওয়ায় বাজারজাতকরণে তারা অনেকটা এগিয়ে প্রান্তিক খামারিদের তুলনায়।
বর্তমানে ছোট খামারিদের প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন তাদের সক্ষমতা বাড়ানো। প্রয়োজন পোলট্রি উপকরণের দাম কমানো। অধিক পরিসরে চিকিৎসাসেবা, প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। বাজারজাতকরণে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। সরকারি ভাবে ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা চালুর মাধ্যম প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে ডিম- মুরগি উৎপাদনে আগ্রহ বৃদ্ধি করা।
স্বল্প আয়ের মানুষদের আমিষের চাহিদা পূরণ ও ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টির বিষয়ে আমাদের এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
ভবিষ্যতে বাজার ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় আমাদের এখন থেকেই বিশেষ নজর দিতে হবে।
মুজাহিদুল ইসলাম,
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ, রাজশাহী কলেজ