নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, সিলেট

সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সাদা পাথর লুট: বিএনপি নেতাসহ কয়েকজনের সম্পদের খোঁজে দুদক

image

সাদা পাথর লুট: বিএনপি নেতাসহ কয়েকজনের সম্পদের খোঁজে দুদক

সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, সিলেট

সিলেটের কম্পিানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই তালিকায় সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরীও রয়েছেন। এমদাদসহ কয়েকজনের সম্পদের খোঁজে সম্প্রতি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাছে নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম। ২৫ নভেম্বরদুদকের ইস্যু করা এ চিঠি পাঠানো হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর। এতে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির পদ স্থগিত হওয়া সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিন এবং কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কাজী আবদুল ওদুদ আলফু মিয়ার নগরের ভেতরে থাকা স্থাবর সম্পদের খোঁজ চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অসাধু যোগসাজশে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর এলাকায় পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় ওই তিন ব্যক্তির নামে থাকা স্থাবর সম্পদের তথ্য থাকলে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন।দুদকের ইস্যু করা চিঠির বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার জানান, দুদকের এ-সংক্রান্ত চিঠি ইস্যুর বিষয়টি তিনি জানেন না। দুদুকের চিঠি ইস্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চিঠি ইস্যুর বিষয়টি আমি জানি না। সাদাপাথর লুটের সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। কেন আমাকে এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে, সেটাও জানি না। এটা মিথ্যা অভিযোগ।’ তিনি আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নিজেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, একটি গোষ্ঠী এ ধরনের অপদার করাতে লিপ্ত রয়েছে আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে ঘায়েল করার জন্য। এদিকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সাদাপাথর লুটপাটের পর থেকেই লুটপাটকারীদের চিহ্নিত করতে দুদক নানা ধরনের অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন অভিযুক্ত ব্যক্তিদের স্থাবর সম্পদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে কেবল তিনজন ব্যক্তিই নন, আরও অনেক অভিযুক্ত সম্পর্কে এমন নানা তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্থাবর সম্পদসহ সবকিছু পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লুটে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ছাড়া ৩ সেপ্টেম্বর দুদক জানিয়েছে, ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটপাটে রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। উপপরিচালক মো. রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল এ বিষয়ে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পেয়েছে। এর আগে গত ১৩ আগস্ট দুদক সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাদাপাথর এলাকায় এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়। পরে অভিযানে পাওয়া যাবতীয় তথ্য প্রতিবেদন আকারে ঢাকায় পাঠানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদাপাথর লুটপাটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৪২ জন রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা ছিল। তালিকায় বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আছেন। এ ছাড়া লুটপাটে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবির নিষ্ক্রিয়তা ও সহযোগিতা ছিল।ওই প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে, ছয়টি ক্যাটাগরিতে পাথর লুটে জড়িত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় এবং সরকারি সংস্থাগুলোর কার কী ভূমিকা ছিল, তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নিষ্ক্রিয়তা, লুটেরাদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়াসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। যে ছয়টি ক্যাটাগরিতে দুদক পাথর লুটের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার বিবরণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, এ ক্রমে প্রথমেই ছিল খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)। এরপর স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, রাজনীতিবিদ ও অন্যরা রয়েছেন।

এদিকে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় গত ১৫ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির পদ স্থগিত হওয়া সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। সম্প্রতি তিনি জামিনে ছাড়া পান। এ ছাড়া পাথর লুটের ঘটনায় গত ৪ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু মিয়া। গত বছরের ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর থেকেই রাজনৈতিক মদদ ও প্রশাসনকি নির্লিপ্ততায় সাদাপাথরে নজিরবিহীন পাথর লুটপাট হয়। এ পর্যটন এলাকা থেকে এবছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার পাথর লুটের অভিযোগ রয়েছে।

‘অপরাধ ও দুর্নীতি’ : আরও খবর

» ‘চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন: আসামি গ্রেপ্তার, আদালতে স্বীকারোক্তি’

» ‘রাষ্ট্রের ২৪ কোটি টাকা ক্ষতি’, সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক

» ৬০ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক আটক

» ব্যাগভর্তি জাল টাকা, হাসপাতালে বিল দেয়ার সময় আটক তিন

» আক্কেলপুরে যৌননিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষককে লাঞ্ছিত

» অনলাইনে বিনিয়োগের ফাঁদ, কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার

» জালিয়াতি করে নিয়োগ পাওয়া বেরোবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন

» আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণ’: সহপাঠীসহ তিনজন রিমান্ডে

» বিচার ও রায় নিয়ে টিউলিপের প্রশ্নের জবাবে যা বললেন দুদক চেয়ারম্যান

» ‘পরকীয়ার জেরে’ খুন হন বাউল শিল্পীর স্বামী, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৬

» ভাঙ্গুড়ায় নকল দুধ তৈরির অভিযোগে ব্যবসায়ীর তিন মাসের কারাদণ্ড

» গৃহবধূর বস্তাবন্দী লাশ: ‘দোষ স্বীকার করে’ জবানবন্দির পর স্বামী ও দেবর কারাগারে

» বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে পিস্তল হাতে ভাইরাল হওয়া সেই যুবক অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার

» অভ্যুত্থানের ১০৬ মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ

» সিলেটে যুবককে অপহরণের পর বিবস্ত্র করে ভিডিও কল: মুক্তিপণ দাবি

» আদালতের রায়কে ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক’, বললেন টিউলিপ

» প্লট দুর্নীতি: ব্রিটিশ এমপি টিউলিপের সাজা, সঙ্গে মা ও খালা

» রেহানা কন্যা রূপন্তীসহ ১৭ জনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য ৫ জানুয়ারি

» কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবসায়ীর হাতে আরেক অস্ত্র ব্যবসায়ী খুন

» নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিযান, দুই জেলায় গ্রেপ্তার ১৯৮ ও ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার