আজ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ। ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন। সৌদি আরবের মক্কা নগরে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। বাংলাদেশে দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। এ দিনটিকে অশেষ পুণ্যময় ও আশীর্বাদধন্য দিন হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
আরব জাহান যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন হজরত মোহাম্মদকে (সা.) বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহতায়ালা। ১ হাজার ৪৫০ বছর আগের এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ৬৩ বছর বয়সে এই ১২ রবিউল আউয়ালেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিনটি পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আজ সরকারি ছুটির দিন।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মুসলিম ঈদ উৎসবগুলোর মধ্যে প্রধান। এই দুই ঈদকে প্রধান উৎসব বলে রসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই ঘোষণা করেছেন।
হিজরতের পর এ ঈদ দুটি স্বয়ং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে রসূলুল্লাহ (সা.)কে দান করা হয় এবং এই সূত্রে তা মুসলিম উম্মাহ প্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু ঈদে মিলাদুন্নবী মুসলমানদের জন্য এমন একটি আনন্দ উৎসব, যার কোন তুলনা হয় না। হজরত মোহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন তাওহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তার আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির বাণীর প্রচার সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আরব সমাজ যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে ছিল, তখন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)কে সারা বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন মহানবী (সা.)। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এই বার্তা প্রচার করেন। পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে মক্কায় তার জন্মোৎসব পালন করার প্রথাটি শুরু করেন রসূলুল্লাহ (সা.)-এর দাদা হজরত আবদুল মোত্তালেব। এ থেকে বোঝা যায়, দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য সর্ব প্রথম হজরত আবদুল মোত্তালেবই বুঝেছিলেন। বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সব ধর্মীয় গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের সুসংবাদে হজরত আবদুল মোত্তালেব অসীম আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে অনেককেই দাওয়াত করেছিলেন। হজরত মওলানা সৈয়দ মুফতি মোহাম্মদ আমীমুল এহসান মোজাদ্দেদী বরকতী (রহ.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, ‘আবদুল মোত্তালেব পৌত্রের জন্মের সুসংবাদ শুনে বাসায় আসেন এবং নবজাতক শিশুকে ‘খানা-ই-কাবায়’ নিয়ে যান এবং দোয়া করেন। জন্মের সাত দিনের মাথায় আকীকা করে, এবং নাম রাখেন ‘মোহাম্মদ’। সমগ্র কোরাইশদের দাওয়াত করে বলেন, ‘আমার এই সন্তান সমগ্র বিশ্বে প্রশংসার অধিকারী হবে।’
রসূলুল্লাহ (সা.)-এর গুণাবলি বর্ণনা ও প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। ১২ রবিউল আউয়াল রসূলুল্লাহ (সা.) জন্মগ্রহণের দিনটি ছিল সোমবার। বিভিন্ন সময়ে বর্ণনা করা হয়েছে, এ দিন মক্কাবাসীরা রসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মস্থান জিয়ারত করত। প্রিয় নবীর জন্ম রাতের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে শেখ আবদুল হক (রহ.) বলেন, ‘এই রাত শবে কদর হ’তে উত্তম।’ যে রাতটিকে তার আবির্ভাবে সম্মানিত করা হয়েছে এটি শবে কদর অপেক্ষা উত্তম, তাছাড়া শবে কদরে শুধু আসমান হতে ফেরেশতারা আগমন করে থাকেন। পক্ষান্তরে জন্মদিবসের রাতে রসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান সত্তার আবির্ভাব ঘটে। জন্ম রজনীর শ্রেষ্ঠত্বের আরও একটি কারণ হচ্ছে, শবে কদরের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য নির্ধারিত। পক্ষান্তরে বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, রসূলুল্লাহ (সা.) -এর মহান সত্তাকে আল্লাহ তাআলা সর্ব জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ নির্ধারণ করেছেন এবং তারই মহান জাতি সত্তার গুণাবলির কারণে আসমান, জমিন ও সব মাখলুকাতকে আল্লাহ তায়ালা সাধারণ নিয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন। রসূলুল্লাহ (সা.)কে আল্লাহ তাআলা সমগ্র জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন বলে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে।’
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বুধবার, ২০ অক্টোবর ২০২১
আজ রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ। ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন। সৌদি আরবের মক্কা নগরে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। বাংলাদেশে দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। এ দিনটিকে অশেষ পুণ্যময় ও আশীর্বাদধন্য দিন হিসেবে বিবেচনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
আরব জাহান যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল, তখন হজরত মোহাম্মদকে (সা.) বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন মহান আল্লাহতায়ালা। ১ হাজার ৪৫০ বছর আগের এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। ৬৩ বছর বয়সে এই ১২ রবিউল আউয়ালেই তিনি ইন্তেকাল করেন।
এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিনটি পালন করবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আজ সরকারি ছুটির দিন।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা মুসলিম ঈদ উৎসবগুলোর মধ্যে প্রধান। এই দুই ঈদকে প্রধান উৎসব বলে রসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই ঘোষণা করেছেন।
হিজরতের পর এ ঈদ দুটি স্বয়ং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে রসূলুল্লাহ (সা.)কে দান করা হয় এবং এই সূত্রে তা মুসলিম উম্মাহ প্রাপ্ত হয়েছে। কিন্তু ঈদে মিলাদুন্নবী মুসলমানদের জন্য এমন একটি আনন্দ উৎসব, যার কোন তুলনা হয় না। হজরত মোহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন তাওহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তার আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির বাণীর প্রচার সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আরব সমাজ যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে ছিল, তখন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)কে সারা বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন মহানবী (সা.)। বিশ্ববাসীকে তিনি মুক্তি ও শান্তির পথে আসার আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এই বার্তা প্রচার করেন। পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে, মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে মক্কায় তার জন্মোৎসব পালন করার প্রথাটি শুরু করেন রসূলুল্লাহ (সা.)-এর দাদা হজরত আবদুল মোত্তালেব। এ থেকে বোঝা যায়, দিবসটির ঐতিহাসিক তাৎপর্য সর্ব প্রথম হজরত আবদুল মোত্তালেবই বুঝেছিলেন। বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সব ধর্মীয় গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের সুসংবাদে হজরত আবদুল মোত্তালেব অসীম আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে অনেককেই দাওয়াত করেছিলেন। হজরত মওলানা সৈয়দ মুফতি মোহাম্মদ আমীমুল এহসান মোজাদ্দেদী বরকতী (রহ.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী, ‘আবদুল মোত্তালেব পৌত্রের জন্মের সুসংবাদ শুনে বাসায় আসেন এবং নবজাতক শিশুকে ‘খানা-ই-কাবায়’ নিয়ে যান এবং দোয়া করেন। জন্মের সাত দিনের মাথায় আকীকা করে, এবং নাম রাখেন ‘মোহাম্মদ’। সমগ্র কোরাইশদের দাওয়াত করে বলেন, ‘আমার এই সন্তান সমগ্র বিশ্বে প্রশংসার অধিকারী হবে।’
রসূলুল্লাহ (সা.)-এর গুণাবলি বর্ণনা ও প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না। ১২ রবিউল আউয়াল রসূলুল্লাহ (সা.) জন্মগ্রহণের দিনটি ছিল সোমবার। বিভিন্ন সময়ে বর্ণনা করা হয়েছে, এ দিন মক্কাবাসীরা রসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মস্থান জিয়ারত করত। প্রিয় নবীর জন্ম রাতের শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে শেখ আবদুল হক (রহ.) বলেন, ‘এই রাত শবে কদর হ’তে উত্তম।’ যে রাতটিকে তার আবির্ভাবে সম্মানিত করা হয়েছে এটি শবে কদর অপেক্ষা উত্তম, তাছাড়া শবে কদরে শুধু আসমান হতে ফেরেশতারা আগমন করে থাকেন। পক্ষান্তরে জন্মদিবসের রাতে রসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান সত্তার আবির্ভাব ঘটে। জন্ম রজনীর শ্রেষ্ঠত্বের আরও একটি কারণ হচ্ছে, শবে কদরের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য নির্ধারিত। পক্ষান্তরে বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, রসূলুল্লাহ (সা.) -এর মহান সত্তাকে আল্লাহ তাআলা সর্ব জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ নির্ধারণ করেছেন এবং তারই মহান জাতি সত্তার গুণাবলির কারণে আসমান, জমিন ও সব মাখলুকাতকে আল্লাহ তায়ালা সাধারণ নিয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন। রসূলুল্লাহ (সা.)কে আল্লাহ তাআলা সমগ্র জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন বলে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে।’
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ ছাড়া ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।