alt

উপ-সম্পাদকীয়

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা : স্থপতি স্বর্ণকন্যা শেখ হাসিনা

মোস্তাফা জব্বার

: সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১

দুই

স্মরণে রাখুন পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনসমূহ একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ার ৬ বছর পর শেখ হাসিনা পোড়ামাটিতে চারাগাছ রোপণের কাজ দিয়ে তার বর্তমান রাজনৈতিক জীবনের শুরু করেন। ৮১ থেকে সুদীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই করে ৯৬ সালে তিনি যখন জাতির পিতার দেশটি পরিচালনার দায়িত্ব পান তখন সেটিকে পাকিস্তান বানানোর সব আয়োজন সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। একদিকে উল্টা করা পার্টিকে সোজা করা, নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করা ও অন্যদিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশটিকে উদ্ধার করার কঠিন লড়াইতে তিনি জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে তার একটি সুমহান কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই যে তিনি পিতা, মাতা, ভাই, ভাবী ও আত্মীয়স্বজনসহ পঁচাত্তরের ঘাতকদের বিচারসহ একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করেন। ইতিহাসে এটি এক অনন্য নজির। সন্তান ও বোন হিসেবেও এটি তার অনন্য ভূমিকা তিনি পালন করেছেন।

এর আগে আমরা উল্লেখ করেছি যে ডিজিটাল বাংলাদেশ এর বীজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বপন করেন। আমি একটু স্মরণ করতে চাই যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণাটি কোন পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন। তার প্রথম ৫ বছরের শাসনকালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্মরণ করুন। ৯৬ সালে তিনি ভি-স্যাট ব্যবহারকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করে অনলাইন ইন্টারনেট যুগকে সামনে চলার মহাসড়ক নির্মাণ করে দেন। একই সঙ্গে তিনি একটি মনোপলি মোবাইল অপারেটরের বদলে আরও চারটি মোবাইল অপারেটরকে লাইসেন্স দিয়ে বাংলাদেশে মোবাইলের স্বর্ণযুগের সূচনা করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তিনি ৯৮-৯৯ সালের বাজেটে ঘোষণা করেন। তিনি কম্পিউটারের ওপর থেকে সব শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। সেই সময়েই তিনি কম্পিউটার শিক্ষার সক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। সেই সময়েই তিনি ১০ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির ঘোষণা করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রথম আয়োজনটা তিনি তখনই শুরু করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ২০০১-এর পর বাংলাদেশের অগ্রগতির যাত্রা আবার থামিয়ে দেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে আবারও পাকিস্তান বানানোর প্রচেষ্টা চলতে থাকে। ওই সময়ে সাত বছরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাচ বছরে শেখ হাসিনা যতটা ইতিবাচক রূপান্তর করেছিলেন তাকে পেছনে নিয়ে যাবার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সময়কালে শেখ হাসিনার শুরু করা ডিজিটাইজেসনের কাজগুলোকে উল্টো পথে প্রবাহিত করা হয়। ২০০৭-৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছুটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখলেও শেখ হাসিনাকেই ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করতে হয়েছে।

এটি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার দরকার যে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সেই কন্যা ও বাংলা মায়ের সেই মহিয়সী নারী যিনি বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তোলার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। সেই কারণে তিনটি শিল্প বিপ্লবে যোগ দিতে না পারা দেশটিতে অন্তত তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে শরিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করেন। সম্ভবত এটিও উল্লেখ করা দরকার যে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম রাজনীতিক যিনি সব রাজনীতিকের আগে নিজে কম্পিউটার ব্যবহার করেন। তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহায়তায় তিনি সেই আশির দশকে নিজে কম্পিউটার ব্যবহার করে এমনকি দল পরিচালনা করেন। তিনি নিজেই বলেন, আমি তাকে বাংলা টাইপ করা শিখিয়েছিলাম। স্মরণে রাখা দরকার তিনিই দেশের প্রথম রাজনৈতিক দলের নেত্রী যিনি দলের জন্যও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনি নির্বাচনী প্রচার চালান। ততদিনে অবশ্য তার দলের অফিশিয়াল কার্যক্রম ডিজিটাল হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় তিনি যখন কোন জনসভায় বক্তব্য দিতে ঢাকার বাইরে যেতেন তখন তার সঙ্গে আবাস-এর একটি ছোট দলও থাকতো। জনসভার খবর জনসভারস্থলে বসেই কম্পিউটারে কম্পোজ করে ফেলা হতো। একই সঙ্গে ফিল্মে তোলা ছবি স্থানীয় কোন স্টুডিওতে ডেভেলপ করে স্ক্যান করে টিএন্ডটির ফোনে মডেম যুক্ত করে সেটি আবাসের ঢাকার সেগুন বাগিচা অফিসে পাঠানো হতো এবং সেখান থেকে মডেমের মাধ্যমেই ঢাকা, ঢাকার বাইরে ও বিদেশে ছবি ও খবর পৌঁছে দেয়া হতো। হাজার হাজার বছর উপনিবেশ থাকা ও বিদেশিদের দ্বারা লুণ্ঠিত হওয়া একটি ভূখ- অগ্রগতির সোপানে পা রাখার যে স্বপ্ন বাঙালি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে দেখেছিল-বিজয়ী হয়েছিল, সেই দেশটির ৫০ বছরের ইতিহাসের ২৯ বছরই একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় আমাদের সামনে চলা স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে বাংলাদেশের আজকের অবস্থান বস্তুত বঙ্গবন্ধুর শাসনকালের সাড়ে তিন বছর ও শেখ হাসিনার শাসনকালের ১৭ বছরের শাসনকালের। বিশেষ করে তিনি ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করার পর ২০০৯ সাল থেকে দেশটির যে রূপান্তর ঘটাতে থাকেন তার ফলে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল দুনিয়ার একটি বিস্ময়ের নাম। একদিকে তিনি কৃষি-শিল্প উৎপাদন, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন, মানবসম্পদের দেশে-বিদেশে কার্যকরভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যক্তি, সমাজ, সরকার ও রাষ্ট্রের সামগ্রিক ডিজিটাল রূপান্তর করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে তার রূপকল্প একুশ, এসডিজি গোল ২০৩০, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা ৪১ অথবা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট হবে যে তিনি বঙ্গবন্ধুর কেবল জেনেটিক উত্তরাধিকারী নন, বরং তিনিই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্থপতি। আমরা ২০২১ সালে যখন এই মহান মানুষটির ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি তখন স্মরণ করছি ২০২০ সালে জাতিসংঘে তিনি একটি অসাধারণ ভাষণ দেন, তার ভাষণ সম্পর্কে ডিজি বাংলার প্রতিবেদনটির অংশ বিশেষ তুলে ধরছি, “চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট উদীয়মান চাকরির বাজার বিবেচনা করে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ডিজিটাল একাডেমি এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ডিজিটাল সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের অপেক্ষায় রয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, কাজেই আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই রূপান্তরিত যাত্রার কেন্দ্রে রাখতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যারই ন্যূনতম ইন্টারনেট প্রবেশগম্যতা নেই। সে শূন্যতা পূরণ করতে হবে।’

বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘ডিজিটাল সহযোগিতা : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অ্যাকশন টুডে’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, কভিড-১৯ মহামারি ডিজিটাল পরিষেবার শক্তিকে উন্মোচিত করেছে এবং ডিজিটাল বিভাজনকেও প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশনের জন্য সরকারের চাপের কারণেই বাংলাদেশ ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে একটি ব্যাপক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছে।

তিনি বলেন, দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০৩ দশমিক ৪৮ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। আমাদের ডিজিটালাইজেশন জনগণকে পরিবর্তন-নির্মাতা হওয়ার বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ওপর আমাদের আলোকপাত অর্থনৈতিক বিকাশকে সহজতর করেছে এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ সামাজিক পরিবর্তনকে অনুঘটক করেছে। এটি এসডিজিগুলোকে বাস্তবায়ন এবং কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করছে।” এই ভাষণের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি কেবল ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি নন ডিজিটাল বিশ্বের নেত্রী। ১৮ সাল থেকে সরকারি কাজে বিশ্বের বেশ কটি দেশে গিয়েছি। ইউরোপের স্পেন, সুইজারল্যান্ড, উন্নত জাপান, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড বা ভারত আছে এই তালিকায়। সব জায়গাতেই সেসব দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির জন্য বুকটা ফুলে ওঠেছে। সবাই একবাক্যে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ এর প্রশংসা করেছে। অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাইজেসন এর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া কিংবা প্রয়োগ বিষয়ে জানতে চেয়েছে, সহযোগিতা চেয়েছে বা সমঝোতা স্মারক সই করতে চেয়েছে।

একবার অনুভব করুন এই করোনাকালে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে না ওঠলে আমাদের জীবনযাপন এখন কেমন হতো? সরকার পরিচালনা, ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প-কল কারখানা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথা জীবনধারা কি ভয়ঙ্কর সংকটে পড়তো। এটি বিস্ময়কর যে দেশের করোনা রোগীদের শতকরা ৭০ ভাগ টেলি মেডিসিনে চিকিৎসা নিতে পেরেছে। ভাবা যায় যে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল সংযোগ আর প্রায় ১১ কোটি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ভাবা যায় যে, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক্স সংযোগ রয়েছে। এমনকি হাওর, চর, দ্বীপ বা বিল অঞ্চলে রয়েছে ডিজিটাল সংযোগ। বিশ্বের ৮০টি দেশে সফটওয়্যার ও সেবা রপ্তানি, আমেরিকা, নাইজেরিয়া, নেপালসহ বহু দেশে মোবাইল ও ল্যাপটপ রপ্তানি এবং দেশের মোবাইল চাহিদার শতকরা ৬০ ভাগ দেশীয় উৎপাদনে পূরণ করার অবস্থাতে রয়েছি আমরা।

অন্যদিকে তলাহীন জুড়ির দেশের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া, শতকরা আট ভাগ পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, এমনকি করোনাকালেও দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পদ্মা সেতুসহ শত শত মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন নিসঃন্দেহে অবিস্মরণীয় হয়ে উঠেছে। মুজিব বর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, সব গৃহহীনকে আবাস গড়ে দেয়া, শতভাগ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কমিউনিটি ক্লিনিকের সহায়তায় স্বাস্থ্যসেবা চালু করন দূরদর্শী শেখ হাসিনার সফল ও সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

মুজিব বর্ষের প্রলম্বিত সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজযন্তীকে অবস্থান করে, আমরা যখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পালন করেছি তখন সমগ্র জাতি ও বিশ্বের সব বাঙলা ভাষাভাষী মানুষসহ শোষিত মানুষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা শেখ হাসিনার হাতেই বাস্তব হচ্ছে সেজন্য অভিনন্দন এই মহিয়সী স্বর্ণকণ্যার প্রতি।

ঢাকা। প্রথম লেখা : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০। সর্বশেষ সম্পাদনা : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১।

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

কমিশন কিংবা ভিজিটে জমি রেজিস্ট্রির আইনি বিধান ও প্রাসঙ্গিকতা

ছবি

ঈদের অর্থনীতি

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে ‘পোস্ট পার্টিশন সিনড্রম’

শিক্ষকের বঞ্চনা, শিক্ষকের বেদনা

নিরাপদ সড়ক কেন চাই

রম্যগদ্য : ‘প্রহরীর সাতশ কোটি টাকা...’

ছবি

অবন্তিকাদের আত্মহনন

শিক্ষাবিষয়ক ভাবনা

অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান নয়

পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে

আত্মহত্যা রোধে নৈতিক শিক্ষা

আউশ ধান : পরিবেশ ও কৃষকবান্ধব ফসল

ছবি

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আতুড়ঘর

চেক ডিজঅনার মামলার অধিক্ষেত্র ও প্রাসঙ্গিকতা

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশের কৃষি

ছবি

‘হৃৎ কলমের’ পাখি এবং আমাদের জেগে ওঠা

ছবি

ভূগর্ভস্থ পানি সুরক্ষায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা : স্থপতি স্বর্ণকন্যা শেখ হাসিনা

মোস্তাফা জব্বার

সোমবার, ০৪ অক্টোবর ২০২১

দুই

স্মরণে রাখুন পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পর আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনসমূহ একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ার ৬ বছর পর শেখ হাসিনা পোড়ামাটিতে চারাগাছ রোপণের কাজ দিয়ে তার বর্তমান রাজনৈতিক জীবনের শুরু করেন। ৮১ থেকে সুদীর্ঘ ১৫ বছর লড়াই করে ৯৬ সালে তিনি যখন জাতির পিতার দেশটি পরিচালনার দায়িত্ব পান তখন সেটিকে পাকিস্তান বানানোর সব আয়োজন সম্পন্ন করে রাখা হয়েছে। একদিকে উল্টা করা পার্টিকে সোজা করা, নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করা ও অন্যদিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশটিকে উদ্ধার করার কঠিন লড়াইতে তিনি জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে তার একটি সুমহান কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই যে তিনি পিতা, মাতা, ভাই, ভাবী ও আত্মীয়স্বজনসহ পঁচাত্তরের ঘাতকদের বিচারসহ একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার করেন। ইতিহাসে এটি এক অনন্য নজির। সন্তান ও বোন হিসেবেও এটি তার অনন্য ভূমিকা তিনি পালন করেছেন।

এর আগে আমরা উল্লেখ করেছি যে ডিজিটাল বাংলাদেশ এর বীজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বপন করেন। আমি একটু স্মরণ করতে চাই যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণাটি কোন পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন। তার প্রথম ৫ বছরের শাসনকালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্মরণ করুন। ৯৬ সালে তিনি ভি-স্যাট ব্যবহারকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করে অনলাইন ইন্টারনেট যুগকে সামনে চলার মহাসড়ক নির্মাণ করে দেন। একই সঙ্গে তিনি একটি মনোপলি মোবাইল অপারেটরের বদলে আরও চারটি মোবাইল অপারেটরকে লাইসেন্স দিয়ে বাংলাদেশে মোবাইলের স্বর্ণযুগের সূচনা করেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তিনি ৯৮-৯৯ সালের বাজেটে ঘোষণা করেন। তিনি কম্পিউটারের ওপর থেকে সব শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। সেই সময়েই তিনি কম্পিউটার শিক্ষার সক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। সেই সময়েই তিনি ১০ হাজার প্রোগ্রামার তৈরির ঘোষণা করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রথম আয়োজনটা তিনি তখনই শুরু করেন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ২০০১-এর পর বাংলাদেশের অগ্রগতির যাত্রা আবার থামিয়ে দেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে আবারও পাকিস্তান বানানোর প্রচেষ্টা চলতে থাকে। ওই সময়ে সাত বছরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পাচ বছরে শেখ হাসিনা যতটা ইতিবাচক রূপান্তর করেছিলেন তাকে পেছনে নিয়ে যাবার সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সময়কালে শেখ হাসিনার শুরু করা ডিজিটাইজেসনের কাজগুলোকে উল্টো পথে প্রবাহিত করা হয়। ২০০৭-৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছুটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখলেও শেখ হাসিনাকেই ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করতে হয়েছে।

এটি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার দরকার যে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সেই কন্যা ও বাংলা মায়ের সেই মহিয়সী নারী যিনি বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতাকে অবলম্বন করে বাংলাদেশকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তোলার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। সেই কারণে তিনটি শিল্প বিপ্লবে যোগ দিতে না পারা দেশটিতে অন্তত তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে শরিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের যুগান্তকারী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করেন। সম্ভবত এটিও উল্লেখ করা দরকার যে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম রাজনীতিক যিনি সব রাজনীতিকের আগে নিজে কম্পিউটার ব্যবহার করেন। তার সুযোগ্য পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সহায়তায় তিনি সেই আশির দশকে নিজে কম্পিউটার ব্যবহার করে এমনকি দল পরিচালনা করেন। তিনি নিজেই বলেন, আমি তাকে বাংলা টাইপ করা শিখিয়েছিলাম। স্মরণে রাখা দরকার তিনিই দেশের প্রথম রাজনৈতিক দলের নেত্রী যিনি দলের জন্যও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনি নির্বাচনী প্রচার চালান। ততদিনে অবশ্য তার দলের অফিশিয়াল কার্যক্রম ডিজিটাল হয়ে গেছে। নির্বাচনের সময় তিনি যখন কোন জনসভায় বক্তব্য দিতে ঢাকার বাইরে যেতেন তখন তার সঙ্গে আবাস-এর একটি ছোট দলও থাকতো। জনসভার খবর জনসভারস্থলে বসেই কম্পিউটারে কম্পোজ করে ফেলা হতো। একই সঙ্গে ফিল্মে তোলা ছবি স্থানীয় কোন স্টুডিওতে ডেভেলপ করে স্ক্যান করে টিএন্ডটির ফোনে মডেম যুক্ত করে সেটি আবাসের ঢাকার সেগুন বাগিচা অফিসে পাঠানো হতো এবং সেখান থেকে মডেমের মাধ্যমেই ঢাকা, ঢাকার বাইরে ও বিদেশে ছবি ও খবর পৌঁছে দেয়া হতো। হাজার হাজার বছর উপনিবেশ থাকা ও বিদেশিদের দ্বারা লুণ্ঠিত হওয়া একটি ভূখ- অগ্রগতির সোপানে পা রাখার যে স্বপ্ন বাঙালি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে দেখেছিল-বিজয়ী হয়েছিল, সেই দেশটির ৫০ বছরের ইতিহাসের ২৯ বছরই একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় আমাদের সামনে চলা স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে বাংলাদেশের আজকের অবস্থান বস্তুত বঙ্গবন্ধুর শাসনকালের সাড়ে তিন বছর ও শেখ হাসিনার শাসনকালের ১৭ বছরের শাসনকালের। বিশেষ করে তিনি ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করার পর ২০০৯ সাল থেকে দেশটির যে রূপান্তর ঘটাতে থাকেন তার ফলে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল দুনিয়ার একটি বিস্ময়ের নাম। একদিকে তিনি কৃষি-শিল্প উৎপাদন, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন, মানবসম্পদের দেশে-বিদেশে কার্যকরভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যক্তি, সমাজ, সরকার ও রাষ্ট্রের সামগ্রিক ডিজিটাল রূপান্তর করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে তার রূপকল্প একুশ, এসডিজি গোল ২০৩০, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা ৪১ অথবা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট হবে যে তিনি বঙ্গবন্ধুর কেবল জেনেটিক উত্তরাধিকারী নন, বরং তিনিই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্থপতি। আমরা ২০২১ সালে যখন এই মহান মানুষটির ৭৪তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি তখন স্মরণ করছি ২০২০ সালে জাতিসংঘে তিনি একটি অসাধারণ ভাষণ দেন, তার ভাষণ সম্পর্কে ডিজি বাংলার প্রতিবেদনটির অংশ বিশেষ তুলে ধরছি, “চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে সৃষ্ট উদীয়মান চাকরির বাজার বিবেচনা করে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ডিজিটাল একাডেমি এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে ডিজিটাল সহযোগিতায় বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের অপেক্ষায় রয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, কাজেই আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এই রূপান্তরিত যাত্রার কেন্দ্রে রাখতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যারই ন্যূনতম ইন্টারনেট প্রবেশগম্যতা নেই। সে শূন্যতা পূরণ করতে হবে।’

বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘ডিজিটাল সহযোগিতা : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অ্যাকশন টুডে’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, কভিড-১৯ মহামারি ডিজিটাল পরিষেবার শক্তিকে উন্মোচিত করেছে এবং ডিজিটাল বিভাজনকেও প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশে তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশনের জন্য সরকারের চাপের কারণেই বাংলাদেশ ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে একটি ব্যাপক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছে।

তিনি বলেন, দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০৩ দশমিক ৪৮ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। আমাদের ডিজিটালাইজেশন জনগণকে পরিবর্তন-নির্মাতা হওয়ার বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ওপর আমাদের আলোকপাত অর্থনৈতিক বিকাশকে সহজতর করেছে এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ সামাজিক পরিবর্তনকে অনুঘটক করেছে। এটি এসডিজিগুলোকে বাস্তবায়ন এবং কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করছে।” এই ভাষণের মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি কেবল ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি নন ডিজিটাল বিশ্বের নেত্রী। ১৮ সাল থেকে সরকারি কাজে বিশ্বের বেশ কটি দেশে গিয়েছি। ইউরোপের স্পেন, সুইজারল্যান্ড, উন্নত জাপান, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড বা ভারত আছে এই তালিকায়। সব জায়গাতেই সেসব দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির জন্য বুকটা ফুলে ওঠেছে। সবাই একবাক্যে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ এর প্রশংসা করেছে। অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাইজেসন এর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া কিংবা প্রয়োগ বিষয়ে জানতে চেয়েছে, সহযোগিতা চেয়েছে বা সমঝোতা স্মারক সই করতে চেয়েছে।

একবার অনুভব করুন এই করোনাকালে শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে না ওঠলে আমাদের জীবনযাপন এখন কেমন হতো? সরকার পরিচালনা, ব্যবসা বাণিজ্য, শিল্প-কল কারখানা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথা জীবনধারা কি ভয়ঙ্কর সংকটে পড়তো। এটি বিস্ময়কর যে দেশের করোনা রোগীদের শতকরা ৭০ ভাগ টেলি মেডিসিনে চিকিৎসা নিতে পেরেছে। ভাবা যায় যে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে প্রায় ১৭ কোটি মোবাইল সংযোগ আর প্রায় ১১ কোটি ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। ভাবা যায় যে, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক্স সংযোগ রয়েছে। এমনকি হাওর, চর, দ্বীপ বা বিল অঞ্চলে রয়েছে ডিজিটাল সংযোগ। বিশ্বের ৮০টি দেশে সফটওয়্যার ও সেবা রপ্তানি, আমেরিকা, নাইজেরিয়া, নেপালসহ বহু দেশে মোবাইল ও ল্যাপটপ রপ্তানি এবং দেশের মোবাইল চাহিদার শতকরা ৬০ ভাগ দেশীয় উৎপাদনে পূরণ করার অবস্থাতে রয়েছি আমরা।

অন্যদিকে তলাহীন জুড়ির দেশের মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া, শতকরা আট ভাগ পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, এমনকি করোনাকালেও দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পদ্মা সেতুসহ শত শত মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন নিসঃন্দেহে অবিস্মরণীয় হয়ে উঠেছে। মুজিব বর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, সব গৃহহীনকে আবাস গড়ে দেয়া, শতভাগ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কমিউনিটি ক্লিনিকের সহায়তায় স্বাস্থ্যসেবা চালু করন দূরদর্শী শেখ হাসিনার সফল ও সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

মুজিব বর্ষের প্রলম্বিত সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজযন্তীকে অবস্থান করে, আমরা যখন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পালন করেছি তখন সমগ্র জাতি ও বিশ্বের সব বাঙলা ভাষাভাষী মানুষসহ শোষিত মানুষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা, কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা শেখ হাসিনার হাতেই বাস্তব হচ্ছে সেজন্য অভিনন্দন এই মহিয়সী স্বর্ণকণ্যার প্রতি।

ঢাকা। প্রথম লেখা : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০। সর্বশেষ সম্পাদনা : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১।

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

[লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক]

back to top