স্বাস্থ্যসেবায় স্কোরিংয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করা বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে সবুজের সমারোহ। স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রেখেছে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন জানান, সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগের র্যাংকিং-এ সারাদেশের ৪৯২টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৯.৪৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ছাদে সারি সারি টবে সবুজের সমারোহ। গাছে গাছে ঝুলছে ফল ও নয়নাভিরাম ফুল। এসব গাছ দৃষ্টি আকর্ষণের সাথে সাথে ছাদের বাতাসেও এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি করেছে। ছাদের পাশাপাশি পুরো কমপ্লেক্স চত্ব¡রসহ আবাসিক ভবনের আনাচে-কানাচে গড়ে তোলা হয়েছে বাহারি জাতের ফুলবাগান।
সেইসঙ্গে শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট সবজি খেত ও ভেষজ বাগান। পুরো চত্ব¡র ঝকঝকে তকতকে। সন্ধ্যার পর থেকেই ভুতুড়ে পরিবেশ দূর করতে আবাসিক ভবনসহ পুরো হাসপাতাল এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতসহ এ সবুজায়ন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন।
তিনি জানান, ৩৬ বছর পর হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়েছে যেখানে নিয়মিত সিজারিয়ান সেকশন অপারেশন হয়। পাশাপাশি এই হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে ৫০টার উপরে নরমাল ডেলিভারি হয়।
এছাড়া হাসপাতালে নবজাতক এর জন্য বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রায় ২২ বছর পর অত্র হাসপাতালে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন চালু করা হয়েছে। এছাড়া এই হাসপাতালে প্যাথোলোজির সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা, যক্ষা রোগীদের জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা, ইসিজি, এ এন সি এবং পি এন সি সেবা, সুসজ্জিত ডেন্টাল সার্ভিস, কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা, টেলি-মেডিসিন চিকিৎসা সেবা, হারবাল চিকিৎসা সেবা, ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার রোগীদের জন্য এন সি ডি কর্নার, শিশুদের জন্য আই এম সি আই কর্নার ও কে এম সি কর্নারসহ রোগীদের জন্য অন্যান্য সকল ধরনের স্বাস্থ্য সেবা চালু আছে। সেইসাথে হাসপাতালের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির সভাবর্ধক ও ফলজ গাছের মাধ্যমে মনোরম ছাদবাগান তৈরি করা হয়েছে, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য পুষ্টি বাগানসহ তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলজ বৃক্ষের বাগান।
রোগী ও তাদের অ্যাটেন্ডেন্টদের খাবারের জন্য আছে ডাইনিং রুমের ব্যবস্থা, আছে সুন্দর গ্যারেজের ব্যবস্থা। শেরপুর উপজেলাসহ আশপাশের প্রায় ৬-৭টি উপজেলার মানুষ আগে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে বগুড়া থেকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিয়ে আসত, তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য ২০২১ সাল থেকে অত্র হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হয়। আগে এই হাসপাতাল থেকে দৈনিক গড়ে ২০০-২৫০জন রোগী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতেন আর বর্তমানে পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নের ফলে দৈনিক গড়ে প্রায় ৯০০-১০০০ জন মানুষ তাদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে থাকেন।
২০২১ সালের ১২ আগস্ট শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন ৩৩তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন। তিনি এ হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই পাল্টে গেছে হাসপাতালের দৃশ্যপট। কৈশোর বান্ধব সেবায়ও হাসপাতালটি সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণ দালাল মুক্ত হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি রোগীদের সঠিক সেবা নিশ্চিতে বদলে ফেলা হয়েছে ভেতরের পরিবেশ।
২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক চারতলা বিশিষ্ট ওপিডি ভবনসহ আরও ৪টি ভবন উদ্বোধন করা হয়। এমন অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেও হাসপাতালটিতে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা ছিল খুবই কম।
পরে, ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকনের হাত ধরেই স্বাভাবিক প্রসব কার্যক্রমের উদ্যোগ ও ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। তার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে মানুষের আস্থা ফিরছে স্বাভাবিক প্রসবে। ইতোমধ্যে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসবে উপজেলায় সাড়া ফেলেছে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
স্বাস্থ্যসেবায় স্কোরিংয়ে সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করা বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে সবুজের সমারোহ। স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রেখেছে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন জানান, সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিভাগের র্যাংকিং-এ সারাদেশের ৪৯২টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৯.৪৪ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ছাদে সারি সারি টবে সবুজের সমারোহ। গাছে গাছে ঝুলছে ফল ও নয়নাভিরাম ফুল। এসব গাছ দৃষ্টি আকর্ষণের সাথে সাথে ছাদের বাতাসেও এক অন্যরকম আবহের সৃষ্টি করেছে। ছাদের পাশাপাশি পুরো কমপ্লেক্স চত্ব¡রসহ আবাসিক ভবনের আনাচে-কানাচে গড়ে তোলা হয়েছে বাহারি জাতের ফুলবাগান।
সেইসঙ্গে শোভা পাচ্ছে ছোট ছোট সবজি খেত ও ভেষজ বাগান। পুরো চত্ব¡র ঝকঝকে তকতকে। সন্ধ্যার পর থেকেই ভুতুড়ে পরিবেশ দূর করতে আবাসিক ভবনসহ পুরো হাসপাতাল এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতসহ এ সবুজায়ন করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন।
তিনি জানান, ৩৬ বছর পর হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়েছে যেখানে নিয়মিত সিজারিয়ান সেকশন অপারেশন হয়। পাশাপাশি এই হাসপাতালে প্রতি মাসে গড়ে ৫০টার উপরে নরমাল ডেলিভারি হয়।
এছাড়া হাসপাতালে নবজাতক এর জন্য বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রায় ২২ বছর পর অত্র হাসপাতালে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন চালু করা হয়েছে। এছাড়া এই হাসপাতালে প্যাথোলোজির সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা, যক্ষা রোগীদের জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা, ইসিজি, এ এন সি এবং পি এন সি সেবা, সুসজ্জিত ডেন্টাল সার্ভিস, কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা, টেলি-মেডিসিন চিকিৎসা সেবা, হারবাল চিকিৎসা সেবা, ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার রোগীদের জন্য এন সি ডি কর্নার, শিশুদের জন্য আই এম সি আই কর্নার ও কে এম সি কর্নারসহ রোগীদের জন্য অন্যান্য সকল ধরনের স্বাস্থ্য সেবা চালু আছে। সেইসাথে হাসপাতালের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির সভাবর্ধক ও ফলজ গাছের মাধ্যমে মনোরম ছাদবাগান তৈরি করা হয়েছে, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য পুষ্টি বাগানসহ তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফলজ বৃক্ষের বাগান।
রোগী ও তাদের অ্যাটেন্ডেন্টদের খাবারের জন্য আছে ডাইনিং রুমের ব্যবস্থা, আছে সুন্দর গ্যারেজের ব্যবস্থা। শেরপুর উপজেলাসহ আশপাশের প্রায় ৬-৭টি উপজেলার মানুষ আগে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে বগুড়া থেকে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিয়ে আসত, তাদের কষ্ট লাঘব করার জন্য ২০২১ সাল থেকে অত্র হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হয়। আগে এই হাসপাতাল থেকে দৈনিক গড়ে ২০০-২৫০জন রোগী স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতেন আর বর্তমানে পরিবেশ ও সেবার মান উন্নয়নের ফলে দৈনিক গড়ে প্রায় ৯০০-১০০০ জন মানুষ তাদের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে থাকেন।
২০২১ সালের ১২ আগস্ট শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন ৩৩তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকন। তিনি এ হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই পাল্টে গেছে হাসপাতালের দৃশ্যপট। কৈশোর বান্ধব সেবায়ও হাসপাতালটি সারাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণ দালাল মুক্ত হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি রোগীদের সঠিক সেবা নিশ্চিতে বদলে ফেলা হয়েছে ভেতরের পরিবেশ।
২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক চারতলা বিশিষ্ট ওপিডি ভবনসহ আরও ৪টি ভবন উদ্বোধন করা হয়। এমন অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেও হাসপাতালটিতে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা ছিল খুবই কম।
পরে, ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী লিংকনের হাত ধরেই স্বাভাবিক প্রসব কার্যক্রমের উদ্যোগ ও ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। তার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে মানুষের আস্থা ফিরছে স্বাভাবিক প্রসবে। ইতোমধ্যে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসবে উপজেলায় সাড়া ফেলেছে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।