শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার লকাই কাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ১৪ বছর বয়সি নূরে আলম থ্যালাসেমিয়া নামক জটিল রক্তরোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
একই গ্রামে নানাবাড়িতে থাকে নূর ও তার বাবা-মা। তার বাবা গাজী মৃধা ঢাকায় কামরাঙ্গীরচরে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন। তবে গত এক বছর যাবৎ তিনি গ্রামে ফিরে এসে একটি ছোট চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। ওই দোকান থেকেই পরিবারের খরচ, ছেলের চিকিৎসাসহ সবকিছুই চালাতে হয় তাকে। প্রতি মাসেই নূরের জন্য প্রয়োজন হয় অন্তত দুই ব্যাগ রক্ত। সঙ্গে থাকে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা খরচ। এতে সব মিলিয়ে নূরের জন্য মাসিক ব্যয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকারো বেশি। অথচ চায়ের দোকান থেকে মাসে আয় হয় মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে দোকান ভাড়া দিতে হয় চার হাজার টাকা।
চিকিৎসকদের মতে, একটি জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নূরের রক্তের প্রয়োজন অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু সেই অপারেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় আড়াই লাখ টাকাÑ যা সংগ্রহ করা নূরের পরিবারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
অর্থাভাবে এক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে নূরের পড়াশোনা। সে ঢাকার একটি বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল। নূরের বাবা-মায়ের আর্থিক সামর্থ্য নেই ছেলেকে আবার স্কুলে পাঠানোর বা তার চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়ার।
জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান হাওলাদার সংবাকে বলেন, ‘নুরে আলমের পরিবার খুবই অসহায়। ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। অপারেশনের জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, তা তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা জরুরি।’
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. রোমান বাদশা সংবাদকে বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তরোগ। এ রোগের কারণে ত্রুটিপূর্ণ রক্তকণিকা তৈরি হয়। এর কারণে রক্তকণিকা দ্রুত ভেঙে যায়। সেক্ষেত্রে রোগীকে বার বার রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া খুব দ্রুত রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়ার কারণে সিপ্লন বড় হয়ে যায়। আর সিপ্লন বড় হয়ে গেলে আরও বেশি রক্তের চাহিদা বেড়ে যায়। এজন্য থ্যালাসেমিয়া রোগের সর্বশেষ চিকিৎসা হচ্ছে স্প্লিন কেটে ফেলে দেয়া। আর সেটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেললে রক্তের চাহিদা কমে আসবে।’
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্তা(ইউএনও) কাবেরী রায়কে অবগত করলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করব এবং সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আরও কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া পড়াশোনা চালিয়ে নিতেও বিভিন্ন সংস্থাকে যুক্ত করার চেষ্টা করব।’
নূরের মা-বাবা এখন সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান মানুষের সহযোগীতার অপেক্ষায়। হয়তো কারো ছোট্ট একটি সহায়তাই বদলে দিতে পারে একটি শিশুর জীবন।
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার লকাই কাজী কান্দি গ্রামের বাসিন্দা ১৪ বছর বয়সি নূরে আলম থ্যালাসেমিয়া নামক জটিল রক্তরোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
একই গ্রামে নানাবাড়িতে থাকে নূর ও তার বাবা-মা। তার বাবা গাজী মৃধা ঢাকায় কামরাঙ্গীরচরে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন। তবে গত এক বছর যাবৎ তিনি গ্রামে ফিরে এসে একটি ছোট চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। ওই দোকান থেকেই পরিবারের খরচ, ছেলের চিকিৎসাসহ সবকিছুই চালাতে হয় তাকে। প্রতি মাসেই নূরের জন্য প্রয়োজন হয় অন্তত দুই ব্যাগ রক্ত। সঙ্গে থাকে ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা খরচ। এতে সব মিলিয়ে নূরের জন্য মাসিক ব্যয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকারো বেশি। অথচ চায়ের দোকান থেকে মাসে আয় হয় মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে দোকান ভাড়া দিতে হয় চার হাজার টাকা।
চিকিৎসকদের মতে, একটি জরুরি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নূরের রক্তের প্রয়োজন অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু সেই অপারেশনের জন্য প্রয়োজন প্রায় আড়াই লাখ টাকাÑ যা সংগ্রহ করা নূরের পরিবারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব।
অর্থাভাবে এক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে নূরের পড়াশোনা। সে ঢাকার একটি বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিল। নূরের বাবা-মায়ের আর্থিক সামর্থ্য নেই ছেলেকে আবার স্কুলে পাঠানোর বা তার চিকিৎসা চালিয়ে নেওয়ার।
জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান হাওলাদার সংবাকে বলেন, ‘নুরে আলমের পরিবার খুবই অসহায়। ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। অপারেশনের জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, তা তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা জরুরি।’
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার(আরএমও) ডা. রোমান বাদশা সংবাদকে বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তরোগ। এ রোগের কারণে ত্রুটিপূর্ণ রক্তকণিকা তৈরি হয়। এর কারণে রক্তকণিকা দ্রুত ভেঙে যায়। সেক্ষেত্রে রোগীকে বার বার রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া খুব দ্রুত রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়ার কারণে সিপ্লন বড় হয়ে যায়। আর সিপ্লন বড় হয়ে গেলে আরও বেশি রক্তের চাহিদা বেড়ে যায়। এজন্য থ্যালাসেমিয়া রোগের সর্বশেষ চিকিৎসা হচ্ছে স্প্লিন কেটে ফেলে দেয়া। আর সেটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেললে রক্তের চাহিদা কমে আসবে।’
এ বিষয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্তা(ইউএনও) কাবেরী রায়কে অবগত করলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করব এবং সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে আরও কিছু অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া পড়াশোনা চালিয়ে নিতেও বিভিন্ন সংস্থাকে যুক্ত করার চেষ্টা করব।’
নূরের মা-বাবা এখন সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয়বান মানুষের সহযোগীতার অপেক্ষায়। হয়তো কারো ছোট্ট একটি সহায়তাই বদলে দিতে পারে একটি শিশুর জীবন।