বেতাগী (বরগুনা) : বেতাগী উপজেলার কাঁচাবাজারে সবজির দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের -সংবাদ
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাঁচাবাজারে সবজির দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের। প্রতিদিনই সবজির দাম আকাশচুম্বী হচ্ছে। একসময় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম ছিল ক্রেতা-বান্ধব, কিন্তু এখন পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে একচেটিয়া পাইকারদের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের মনিটরিং না থাকায় এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনজন প্রভাবশালী পাইকার—মো. আলী, নাসির ও সজিব এক হয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগে বেতাগী বাজারে একাধিক পাইকার থাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, ফলে দামও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তিনজন পাইকার যৌথভাবে সবজির পাইকারি ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। খুলনা ও যশোর থেকে কাঁচামাল এনে তারা বেতাগীর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে, এমনকি খুচরা বিক্রেতাদের কাছেও তারা নির্দিষ্ট উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে। বাজারের সাম্প্রতিক দামের তুলনায় দেখা গেছে, গত ১ অক্টোবর বুধবার কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০০ টাকায়, যেখানে খুলনা থেকে পাইকারি মূল্য ছিল ২২০ টাকা। কড়োলা ছিল ৮০ টাকা, যা পাইকারি ছিল মাত্র ৫৯ টাকা। ৪ অক্টোবর শনিবার কাঁচামরিচের পাইকারি দাম দাঁড়ায় ৩৬০ টাকা এবং খুচরা বাজারে তা ৪০০ টাকায় পৌঁছায়, অথচ খুলনা থেকে তা আনা হয়েছিল ২৮০ টাকায়। এভাবেই সিন্ডিকেটের প্রভাবে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বাজারমূল্য। বাজারের অধিকাংশ দোকানদার জানান, তারা সকালে পাইকারদের কাছ থেকে সবজি কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করলেও শেষে ক্ষতিই হয়। কারণ সবজির কিছু অংশ পচে যায়, কিন্তু সেই ক্ষতির দায় পাইকাররা নেয় না। তাদের নির্ধারিত দামে কিনতে হয় বাধ্য হয়ে। এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে পাইকার বেশি থাকায় দাম কমত, এখন তিনজন পাইকার মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিযোগিতা নাই, তাই দামও কমে না। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার খরচ সব মিলিয়ে আমরা শেষে লোকসানে পড়ি। নেতারা আবার বাকিতে নেয়, টাকা ফেরত দেয় না, সেই টাকাও আমাদের পকেট থেকে উঠে।
তবে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করে পাইকারি ব্যবসায়ী মো. আলী বলেন, আমরা খুলনা থেকে ট্রাক ভরে মাল এনে বিক্রি করি। খরচ অনেক বেড়ে গেছে ভাড়া, লোডিং আনলোডিং, শ্রমিকদের মজুরি সব কিছুই বেশি। তাই কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করি।
অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এক ধরণের অস্থিরতা চলছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এই সিন্ডিকেট আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, সিন্ডিকেট ও অতিরিক্ত দামের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গত ১ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অল্প দামে ব্যাগ ভর্তি বাজার কর্মসূচি আয়োজন করে। তবে সে সময়ও মূল বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক হয়নি। বেতাগীর সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বাজার যেন এখন কয়েকজনের ইচ্ছামতো চলে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ চান যাতে একচেটিয়া সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয় এবং বাজারে আবারও স্বাভাবিক দাম ফিরে আসে। বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরে কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, “বাজারে সিন্ডিকেট বা কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই তদ ন্ত করব। ন্যায্য দামে পণ্য নিশ্চিত করতে প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং চালাবে।”
বেতাগী (বরগুনা) : বেতাগী উপজেলার কাঁচাবাজারে সবজির দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাঁচাবাজারে সবজির দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ ক্রেতাদের। প্রতিদিনই সবজির দাম আকাশচুম্বী হচ্ছে। একসময় প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম ছিল ক্রেতা-বান্ধব, কিন্তু এখন পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে একচেটিয়া পাইকারদের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের মনিটরিং না থাকায় এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনজন প্রভাবশালী পাইকার—মো. আলী, নাসির ও সজিব এক হয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগে বেতাগী বাজারে একাধিক পাইকার থাকায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, ফলে দামও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তিনজন পাইকার যৌথভাবে সবজির পাইকারি ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। খুলনা ও যশোর থেকে কাঁচামাল এনে তারা বেতাগীর খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে, এমনকি খুচরা বিক্রেতাদের কাছেও তারা নির্দিষ্ট উচ্চমূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে। বাজারের সাম্প্রতিক দামের তুলনায় দেখা গেছে, গত ১ অক্টোবর বুধবার কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০০ টাকায়, যেখানে খুলনা থেকে পাইকারি মূল্য ছিল ২২০ টাকা। কড়োলা ছিল ৮০ টাকা, যা পাইকারি ছিল মাত্র ৫৯ টাকা। ৪ অক্টোবর শনিবার কাঁচামরিচের পাইকারি দাম দাঁড়ায় ৩৬০ টাকা এবং খুচরা বাজারে তা ৪০০ টাকায় পৌঁছায়, অথচ খুলনা থেকে তা আনা হয়েছিল ২৮০ টাকায়। এভাবেই সিন্ডিকেটের প্রভাবে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে বাজারমূল্য। বাজারের অধিকাংশ দোকানদার জানান, তারা সকালে পাইকারদের কাছ থেকে সবজি কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করলেও শেষে ক্ষতিই হয়। কারণ সবজির কিছু অংশ পচে যায়, কিন্তু সেই ক্ষতির দায় পাইকাররা নেয় না। তাদের নির্ধারিত দামে কিনতে হয় বাধ্য হয়ে। এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে পাইকার বেশি থাকায় দাম কমত, এখন তিনজন পাইকার মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিযোগিতা নাই, তাই দামও কমে না। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার খরচ সব মিলিয়ে আমরা শেষে লোকসানে পড়ি। নেতারা আবার বাকিতে নেয়, টাকা ফেরত দেয় না, সেই টাকাও আমাদের পকেট থেকে উঠে।
তবে একচেটিয়া ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করে পাইকারি ব্যবসায়ী মো. আলী বলেন, আমরা খুলনা থেকে ট্রাক ভরে মাল এনে বিক্রি করি। খরচ অনেক বেড়ে গেছে ভাড়া, লোডিং আনলোডিং, শ্রমিকদের মজুরি সব কিছুই বেশি। তাই কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করি।
অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এক ধরণের অস্থিরতা চলছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় এই সিন্ডিকেট আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, সিন্ডিকেট ও অতিরিক্ত দামের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ধ্রুবতারা ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন গত ১ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অল্প দামে ব্যাগ ভর্তি বাজার কর্মসূচি আয়োজন করে। তবে সে সময়ও মূল বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক হয়নি। বেতাগীর সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বাজার যেন এখন কয়েকজনের ইচ্ছামতো চলে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ চান যাতে একচেটিয়া সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয় এবং বাজারে আবারও স্বাভাবিক দাম ফিরে আসে। বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হরে কৃষ্ণ অধিকারী বলেন, “বাজারে সিন্ডিকেট বা কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই তদ ন্ত করব। ন্যায্য দামে পণ্য নিশ্চিত করতে প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং চালাবে।”