ছয় মাস আনারস। বারো মাস কলা। কয়েক মাস পেঁপে। আদা হলুদ কচু কয়েক মাস। আশ্বিনা আনারস কয়েক মাস। এভাবে সারা বছরই চলে হাট বাজার। ক্রেকা পাইকার ফড়িয়াদের পদচারণায় মুখরিত হয়।আনারসের প্রতিদিন বাজার চলে বৈশাখের শেষের দিক থেকে প্রায় কার্তিক মাস পর্যন্ত। শুক্রবার মঙ্গলবার থাকলেও কলা হাট বসে শনিবার বাদে প্রায় প্রতিদিনই। আদা কচুর মৌসুমে প্রায় প্রতিদিন। এভাবে সারা বছরই কোন না কোন কৃষি পন্যের বাজার জমে। অনেক বছর আগে মধুপুর শহরের আনারস কলার হাট বাজার চলে আসে জলছত্র। ধীরে ধীরে জলছত্র বাজারটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিনত হয়। বাজার কমিটি ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন, কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি ও কৃষি বিভাগসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় হয়ে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুরের জলছত্র কৃষি পন্যের বাজারের কথা। বাজারটি টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে। এ বাজারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকার ফড়িয়া আসে, কৃষি পন্য সরবরাহ হয় সারা দেশে। যে কারণে বাজারটি খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বছরের কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে এ বাজারে।
গড় অঞ্চলের কৃষক ব্যবসায়ী পাইকার ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মধুপুরের লাল মাটি কৃষি ফসল চাষাবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী। খরা বন্যার প্রভাব পড়ে না। উঁচু উর্বর মাটি। সহজেই যে কোন ফসল চাষ করা যায়। খরা বা বর্ষাকালেও চলে আবাদ ফসল। বর্ষায় সহজে পানি উঠে না। খরায়ও ফসল পুড়ে না। গড় অঞ্চলের মাঝে মাঝে রয়েছে বাইদ বিল নালা। বৃষ্টি হওয়ার পরপরই পানি নিষ্কাশন হয়ে যায়। যে কারণে সারা বছরই ফসল ফলে।
এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে আনারস, কলা,পেঁপে,আদা, হলুদ,কচু,সবজিসহ অন্যান্য কৃষি ফসল। গড়ের মাটি বেশির ভাগই বন আর উঁচু ভূমি। উঁচু এলাকায় আনারস কলা পেঁপে আদা কচু হলুদসহ অন্যান্য ফসল আর নিচুতে ধান ও শীতকালে সবজি চাষ হয়ে থাকে। যে কারণে সারা বছরই মৌসুম ভিত্তিক ফল ফসল পাওয়া যায়। বৈচিত্র্য্যময় মাটির কারণেই এমন আবাদ ফসল হয়ে থাকে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগের তথ্যে জানা যায়, ৩৭০.৮৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ২৭০ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত উপজেলায় ১৩১ টি মৌজায় কৃষি ব্লক সংখ্যা ৩৪ টি। ভূমিহীন ক্ষুদ্র মাঝারি প্রান্তিক ছোট বড় মিলে ৬০,৮৪৩ টি কৃষি পরিবার রয়েছে। উঁচু নিচু মিলে কোট কৃষি জমির পরিমান ২৬,৯৫০ হেক্টর। নীট,এক ফসলি দুি ফসলি তিন ফসলি চার ফসলের অধিক ব্যবহৃত জমির পরিমান ৫১,৬১৫হেক্টর। ফসলের নিবিড়তা ১৯৫%। বোরো আমন ১০,৪১৫ হেক্টর, আনারস ৬,৬২৭ হেক্টর, সরিষা বোরো আমন ২১০০ হেক্টর, কলা ১৯৪৫ হেক্টর, ভুট্রা- সবজি ১৭৯৬ হেক্টর আদা ৫৯২ হেক্টর, হলুদ ৭৬২ হেক্টর, আলু- সবজি ১২৬ হেক্টর ছাড়াও কাসাবা মুখি কচু , পেয়ারা, আম,কফি,ড্রাগণ ও মিশ্র ফসলসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল চাষাবাদ হয়ে থাকে।
পিরোজপুর গ্রামের কৃষক দুদু মিয়া (৪৫) জানালেন, মধুপুরে সারা বছরই কোন না কোন ফসল চাষ হয়। এসব ফসল বিক্রি করার জন্য স্থানীয় জলছত্র বাজারে বিক্রি করা যায়। রবি মিয়া (৪০) জানালেন, কৃষি পন্যের জন্য এ অঞ্চলের মধ্যে জলছত্র বাজারটি বিখ্যাত। সারা বছরই জমে থাকে। কলা সারা বছর। আনারস ছয় মাস। পেঁপে আদা কচুও চলে মৌসুম ভিত্তিক।
জলছত্র ট্রাক ও কর্ভাডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, জলছত্র এ বাজারটি কৃষি পন্যের জন্য বিখ্যাত। বারো মাসই ফসল থাকে। সারা দেশ থেকে ব্যাপারীপত্র আসে। বেচা কেনা হয়। সারা দেশেই সরবরাহ হয়ে থাকে। দূর থেকে আগতদের জন্য ট্রাক অফিসে সুলভে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজার কমিটি কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন ট্রাক অফিসসহ সকলে মিলে বাজারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করে থাকে। যে কারণে বাজারটির সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
কলার পাইকার হাবিজুল ইসলাম জানান, আনারসের বাজার প্রতিদিন। কলার বাজার শনিবার বাদে প্রায় প্রতিদিন, আদা কচুর হলুদ পেপের বাজার প্রতিদিন। ব্গান থেকে কৃষকরা সরাসরি বাজারে নিয়ে আসে নগদ তামে বিক্রি করে চলে যায়। পাইকারা বিভিন্ন জেলা থেকে আসে। তারা কৃষি পন্য কিনে নিয়ে যায়। এভাবে সারা বছরই এ বাজারে কৃষি পন্য বেচাকেনা হয়। বৃহৎত্তর কৃষি পন্যের বাজার হিসেবে সারা দেশেই এ বাজারের সুনাম রয়েছে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকির আল রানা জানান, মধুপুরের মাটি আবহাওয়া ভূ-প্রকৃতি কৃষি ফসলের জন্য বিশেষ উপযোগী। আনারস কলা পেঁপে ধান পাট চা কফি কাজুবাদাম আদা হুলদ কচু ড্রাগনসহ প্রায় সব ধরণের ফসল সহজেই চাষ করা যায়। মধুপুরের মাটির গুণাগুণ বন্যা মুক্ত উঁচু থাকায় সারা বছরই নানা ধরনের সবজি ফলের চাষ করে কৃষকরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। এ ফসলের কারণে দেশখ্যাত জলছত্র বাজারে বছরে কোটি কোটি টাকার কৃষি পন্য বেচাকেনা হয়ে থাকে।
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
ছয় মাস আনারস। বারো মাস কলা। কয়েক মাস পেঁপে। আদা হলুদ কচু কয়েক মাস। আশ্বিনা আনারস কয়েক মাস। এভাবে সারা বছরই চলে হাট বাজার। ক্রেকা পাইকার ফড়িয়াদের পদচারণায় মুখরিত হয়।আনারসের প্রতিদিন বাজার চলে বৈশাখের শেষের দিক থেকে প্রায় কার্তিক মাস পর্যন্ত। শুক্রবার মঙ্গলবার থাকলেও কলা হাট বসে শনিবার বাদে প্রায় প্রতিদিনই। আদা কচুর মৌসুমে প্রায় প্রতিদিন। এভাবে সারা বছরই কোন না কোন কৃষি পন্যের বাজার জমে। অনেক বছর আগে মধুপুর শহরের আনারস কলার হাট বাজার চলে আসে জলছত্র। ধীরে ধীরে জলছত্র বাজারটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিনত হয়। বাজার কমিটি ট্রাক ও কভার্ড ভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়ন, কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন, কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতি ও কৃষি বিভাগসহ স্থানীয়দের সহযোগিতায় হয়ে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে। বলছিলাম টাঙ্গাইলের মধুপুরের জলছত্র কৃষি পন্যের বাজারের কথা। বাজারটি টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে। এ বাজারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকার ফড়িয়া আসে, কৃষি পন্য সরবরাহ হয় সারা দেশে। যে কারণে বাজারটি খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বছরের কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়ে থাকে এ বাজারে।
গড় অঞ্চলের কৃষক ব্যবসায়ী পাইকার ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মধুপুরের লাল মাটি কৃষি ফসল চাষাবাদের জন্য বিশেষ উপযোগী। খরা বন্যার প্রভাব পড়ে না। উঁচু উর্বর মাটি। সহজেই যে কোন ফসল চাষ করা যায়। খরা বা বর্ষাকালেও চলে আবাদ ফসল। বর্ষায় সহজে পানি উঠে না। খরায়ও ফসল পুড়ে না। গড় অঞ্চলের মাঝে মাঝে রয়েছে বাইদ বিল নালা। বৃষ্টি হওয়ার পরপরই পানি নিষ্কাশন হয়ে যায়। যে কারণে সারা বছরই ফসল ফলে।
এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে আনারস, কলা,পেঁপে,আদা, হলুদ,কচু,সবজিসহ অন্যান্য কৃষি ফসল। গড়ের মাটি বেশির ভাগই বন আর উঁচু ভূমি। উঁচু এলাকায় আনারস কলা পেঁপে আদা কচু হলুদসহ অন্যান্য ফসল আর নিচুতে ধান ও শীতকালে সবজি চাষ হয়ে থাকে। যে কারণে সারা বছরই মৌসুম ভিত্তিক ফল ফসল পাওয়া যায়। বৈচিত্র্য্যময় মাটির কারণেই এমন আবাদ ফসল হয়ে থাকে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগের তথ্যে জানা যায়, ৩৭০.৮৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ২৭০ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত উপজেলায় ১৩১ টি মৌজায় কৃষি ব্লক সংখ্যা ৩৪ টি। ভূমিহীন ক্ষুদ্র মাঝারি প্রান্তিক ছোট বড় মিলে ৬০,৮৪৩ টি কৃষি পরিবার রয়েছে। উঁচু নিচু মিলে কোট কৃষি জমির পরিমান ২৬,৯৫০ হেক্টর। নীট,এক ফসলি দুি ফসলি তিন ফসলি চার ফসলের অধিক ব্যবহৃত জমির পরিমান ৫১,৬১৫হেক্টর। ফসলের নিবিড়তা ১৯৫%। বোরো আমন ১০,৪১৫ হেক্টর, আনারস ৬,৬২৭ হেক্টর, সরিষা বোরো আমন ২১০০ হেক্টর, কলা ১৯৪৫ হেক্টর, ভুট্রা- সবজি ১৭৯৬ হেক্টর আদা ৫৯২ হেক্টর, হলুদ ৭৬২ হেক্টর, আলু- সবজি ১২৬ হেক্টর ছাড়াও কাসাবা মুখি কচু , পেয়ারা, আম,কফি,ড্রাগণ ও মিশ্র ফসলসহ বিভিন্ন কৃষি ফসল চাষাবাদ হয়ে থাকে।
পিরোজপুর গ্রামের কৃষক দুদু মিয়া (৪৫) জানালেন, মধুপুরে সারা বছরই কোন না কোন ফসল চাষ হয়। এসব ফসল বিক্রি করার জন্য স্থানীয় জলছত্র বাজারে বিক্রি করা যায়। রবি মিয়া (৪০) জানালেন, কৃষি পন্যের জন্য এ অঞ্চলের মধ্যে জলছত্র বাজারটি বিখ্যাত। সারা বছরই জমে থাকে। কলা সারা বছর। আনারস ছয় মাস। পেঁপে আদা কচুও চলে মৌসুম ভিত্তিক।
জলছত্র ট্রাক ও কর্ভাডভ্যান ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, জলছত্র এ বাজারটি কৃষি পন্যের জন্য বিখ্যাত। বারো মাসই ফসল থাকে। সারা দেশ থেকে ব্যাপারীপত্র আসে। বেচা কেনা হয়। সারা দেশেই সরবরাহ হয়ে থাকে। দূর থেকে আগতদের জন্য ট্রাক অফিসে সুলভে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজার কমিটি কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন ট্রাক অফিসসহ সকলে মিলে বাজারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করে থাকে। যে কারণে বাজারটির সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
কলার পাইকার হাবিজুল ইসলাম জানান, আনারসের বাজার প্রতিদিন। কলার বাজার শনিবার বাদে প্রায় প্রতিদিন, আদা কচুর হলুদ পেপের বাজার প্রতিদিন। ব্গান থেকে কৃষকরা সরাসরি বাজারে নিয়ে আসে নগদ তামে বিক্রি করে চলে যায়। পাইকারা বিভিন্ন জেলা থেকে আসে। তারা কৃষি পন্য কিনে নিয়ে যায়। এভাবে সারা বছরই এ বাজারে কৃষি পন্য বেচাকেনা হয়। বৃহৎত্তর কৃষি পন্যের বাজার হিসেবে সারা দেশেই এ বাজারের সুনাম রয়েছে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকির আল রানা জানান, মধুপুরের মাটি আবহাওয়া ভূ-প্রকৃতি কৃষি ফসলের জন্য বিশেষ উপযোগী। আনারস কলা পেঁপে ধান পাট চা কফি কাজুবাদাম আদা হুলদ কচু ড্রাগনসহ প্রায় সব ধরণের ফসল সহজেই চাষ করা যায়। মধুপুরের মাটির গুণাগুণ বন্যা মুক্ত উঁচু থাকায় সারা বছরই নানা ধরনের সবজি ফলের চাষ করে কৃষকরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। এ ফসলের কারণে দেশখ্যাত জলছত্র বাজারে বছরে কোটি কোটি টাকার কৃষি পন্য বেচাকেনা হয়ে থাকে।