মঙ্গলবার বিভিন্ন দাবিতে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয় -সংবাদ
বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দাবি নিয়ে শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখী এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের পদযাত্রা আটকে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি হিসেবে শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সাড়ে ৪টার দিকে পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে পৌঁছালে পুলিশ তা আটককে দেয়। এরপর হাইকোর্টের সামনে শিক্ষক-কর্মচারী ও পুলিশ সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থান করছেন।
যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার আহবান এনসিপির
এদিকে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
দলটির অভিযোগ, সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতার কারণে শিক্ষকরা বারবার ক্লাসরুম ছেড়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।
মঙ্গলবার এনসিপি শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে সবাই নিয়মিতভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করবে এবং সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধান করবে। কিন্তু তার পরিবর্তে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। এনসিপি এর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তর নেতৃত্বে গত ১২ অক্টোবর একটি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের
লাগাতার আন্দোলন
এমপিও শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষক-কর্মচারীরা মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন। দুপুরে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ পালনের কথা থাকলেও সরকারকে আরও সময় দিয়ে তা বিকেলে নেয়া হয়।
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো- মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা।
এদিন বিকেলে শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়লে সেখানেই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনকারী জোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক হাবিবুল্লাহ্ রাজু বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে উঠবো না। এখানেই অবস্থান নেব।’এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, শিক্ষকরা তাদের দাবি জানাচ্ছেন, জানাক। পুলিশ সকাল থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোঝানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু তাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পরে তারা পুলিশের অনুরোধে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেসক্লাবের সামনেই অবস্থান ধরে রাখেন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ভুয়া ভুয়া বলতে থাকে। একপর্যায় পুলিশ বেশ কিছু সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেয়। শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ হলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৬ অক্টোবর এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায়।
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেতেন; গত মে মাসে তা বাড়ানোর পর এখন কর্মচারীরাও মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।
মঙ্গলবার বিভিন্ন দাবিতে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয় -সংবাদ
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
বাড়ি ভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দাবি নিয়ে শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখী এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের পদযাত্রা আটকে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার,(১৪ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি হিসেবে শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সাড়ে ৪টার দিকে পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে পৌঁছালে পুলিশ তা আটককে দেয়। এরপর হাইকোর্টের সামনে শিক্ষক-কর্মচারী ও পুলিশ সদস্যরা মুখোমুখি অবস্থান করছেন।
যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার আহবান এনসিপির
এদিকে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
দলটির অভিযোগ, সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বহীনতার কারণে শিক্ষকরা বারবার ক্লাসরুম ছেড়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর।
মঙ্গলবার এনসিপি শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে সবাই নিয়মিতভাবে তাদের দাবি উত্থাপন করবে এবং সরকার তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধান করবে। কিন্তু তার পরিবর্তে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। এনসিপি এর তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তর নেতৃত্বে গত ১২ অক্টোবর একটি প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের
লাগাতার আন্দোলন
এমপিও শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষক-কর্মচারীরা মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন। দুপুরে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ পালনের কথা থাকলেও সরকারকে আরও সময় দিয়ে তা বিকেলে নেয়া হয়।
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো- মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা।
এদিন বিকেলে শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়লে সেখানেই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষকরা।
আন্দোলনকারী জোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক হাবিবুল্লাহ্ রাজু বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে উঠবো না। এখানেই অবস্থান নেব।’এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, শিক্ষকরা তাদের দাবি জানাচ্ছেন, জানাক। পুলিশ সকাল থেকেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোঝানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু তাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। পরে তারা পুলিশের অনুরোধে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সরে গিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ প্রেসক্লাবের সামনেই অবস্থান ধরে রাখেন। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ভুয়া ভুয়া বলতে থাকে। একপর্যায় পুলিশ বেশ কিছু সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেয়। শিক্ষকদের ওপর ‘পুলিশি হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ হলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেয়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৬ অক্টোবর এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায়।
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেতেন; গত মে মাসে তা বাড়ানোর পর এখন কর্মচারীরাও মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।