জয়পুরহাট : ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র -সংবাদ
জয়পুরহাটে দীর্ঘ ৭-৮ পর কমিউনিটি ক্লিনিক ওষুধ পেলেও সংকট কাটেনি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে। জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ ছিল ৮ মাস ধরে। এছাড়াও জনবল সংকট ও নানান অনিয়মের কারণে প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে প্রান্তিক জনপদের অসহায় মানুষগুলোর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ জনগণ। তারা দ্রুত ওষুধ সরবরাহসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান দাবি নিয়ে কথা বলেছে, পাশাপাশি এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম সরব হওয়াই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসে যার ফলে ইতোমধ্যেই জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানও হয়েছে অনেকাংশে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলায় বর্তমানে ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই সচল হলেও ২৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র চরম ওষুধ সংকটে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানই প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসাসেবার প্রধান ও একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে এসব কেন্দ্রে ভিড়জমান। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৮ মাস ধরে কোনো ধরনের ওষুধ সরবরাহ না থাকায় এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো চরম সংকটে পড়েছে।
এছাড়া অধিকাংশ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে জনবল সংকট রয়েছে। যেখানে ৬ জন জনবল থাকার কথা, সেখানে ৬ জনের বিপরিতে কর্মরত ৩ জন। আবার অনেক কেন্দ্রেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়মিতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর ফলে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছেন জেলা সদর হাসপাতাল বা বে-সরকারি ক্লিনিকে যেতে। আবার অনেকেই অর্থ সংকটে ওষুধ কিনতে পারছেন না। তাই জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ সরবরাহসহ স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কোমরগ্রামের মিজানুর রহমান ও আশিক বলেন, কয়েকদিন ধরে ওষুধ নেওয়ার জন্য ঘুরছি, কিন্তু পাচ্ছি না। শুনছি আসবে, কিন্তু কবে আসবে কেউ বলতে পারে না। শহরে গেলে ১০০-২০০ টাকা খরচ হয়। এখানে যদি ওষুধ থাকতো তাহলে শহরে যেতে হতো না।
জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার রামপুরা গ্রামের মারুফ ও আদনান হোসেন বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রায় সময়-ই বন্ধ থাকে। কোনো ওষুধ মেলে না। কবে যে ওষুধ আসবে, কেউ জানে না। গরিব মানুষের জন্য এটা অনেক বড় সমস্যা।
জেলার সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেলিনা পারভীন বলেন, ২০২৪ ডিসেম্বর মাসের পর থেকে আমরা আর কোনো ওষুধ পাচ্ছি না। এজন্য রোগীদের দিতে পারছি না। তবে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে কাউন্সিলিং সেবা দিচ্ছি। শুনেছি, দুই-এক মাসের মধ্যে ওষুধ আসতে পারে।
সদরের জামালপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চন্দনা রানী বলেন, ৭ মাস ধরে ওষুধ নেই। রোগীরা আসে আবার ফিরে যায়। আমরা যদি ওষুধ না পাই, তাহলে কিভাবে সেবা দেব?
এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ডিসেম্বরের পর থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পরিবার পরিকল্পনাসহ অন্যান্য সেবা চালু আছে। তবে আশা করছি, দ্রুত ওষুধ সরবরাহ শুরু হবে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. আল মামুন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কেউ নিয়মিত না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ডিসেম্বরের পর থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় কিছুটা সমস্যা ছিল ওষুধ সরবরাহ আসায় সেটি আর নেই। তবে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রেগুলোতে এখনো ওষুধ সরবরাহ বন্ধ আছে, ডিজি বরাবরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দু-এক সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ আসবে আর পাওয়া মাত্র সমস্যার সমাধানও হবে।
জয়পুরহাট : ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র -সংবাদ
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
জয়পুরহাটে দীর্ঘ ৭-৮ পর কমিউনিটি ক্লিনিক ওষুধ পেলেও সংকট কাটেনি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে। জেলার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ ছিল ৮ মাস ধরে। এছাড়াও জনবল সংকট ও নানান অনিয়মের কারণে প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে প্রান্তিক জনপদের অসহায় মানুষগুলোর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ জনগণ। তারা দ্রুত ওষুধ সরবরাহসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান দাবি নিয়ে কথা বলেছে, পাশাপাশি এ বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম সরব হওয়াই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নড়েচড়ে বসে যার ফলে ইতোমধ্যেই জেলার ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানও হয়েছে অনেকাংশে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেলায় বর্তমানে ১১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা অনেকটাই সচল হলেও ২৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র চরম ওষুধ সংকটে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানই প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের চিকিৎসাসেবার প্রধান ও একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা নিতে এসব কেন্দ্রে ভিড়জমান। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৮ মাস ধরে কোনো ধরনের ওষুধ সরবরাহ না থাকায় এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো চরম সংকটে পড়েছে।
এছাড়া অধিকাংশ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে জনবল সংকট রয়েছে। যেখানে ৬ জন জনবল থাকার কথা, সেখানে ৬ জনের বিপরিতে কর্মরত ৩ জন। আবার অনেক কেন্দ্রেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়মিতভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর ফলে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে সাধারণ মানুষ বাধ্য হচ্ছেন জেলা সদর হাসপাতাল বা বে-সরকারি ক্লিনিকে যেতে। আবার অনেকেই অর্থ সংকটে ওষুধ কিনতে পারছেন না। তাই জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ সরবরাহসহ স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কোমরগ্রামের মিজানুর রহমান ও আশিক বলেন, কয়েকদিন ধরে ওষুধ নেওয়ার জন্য ঘুরছি, কিন্তু পাচ্ছি না। শুনছি আসবে, কিন্তু কবে আসবে কেউ বলতে পারে না। শহরে গেলে ১০০-২০০ টাকা খরচ হয়। এখানে যদি ওষুধ থাকতো তাহলে শহরে যেতে হতো না।
জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার রামপুরা গ্রামের মারুফ ও আদনান হোসেন বলেন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে প্রায় সময়-ই বন্ধ থাকে। কোনো ওষুধ মেলে না। কবে যে ওষুধ আসবে, কেউ জানে না। গরিব মানুষের জন্য এটা অনেক বড় সমস্যা।
জেলার সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সেলিনা পারভীন বলেন, ২০২৪ ডিসেম্বর মাসের পর থেকে আমরা আর কোনো ওষুধ পাচ্ছি না। এজন্য রোগীদের দিতে পারছি না। তবে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে কাউন্সিলিং সেবা দিচ্ছি। শুনেছি, দুই-এক মাসের মধ্যে ওষুধ আসতে পারে।
সদরের জামালপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার চন্দনা রানী বলেন, ৭ মাস ধরে ওষুধ নেই। রোগীরা আসে আবার ফিরে যায়। আমরা যদি ওষুধ না পাই, তাহলে কিভাবে সেবা দেব?
এ বিষয়ে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ডিসেম্বরের পর থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে পরিবার পরিকল্পনাসহ অন্যান্য সেবা চালু আছে। তবে আশা করছি, দ্রুত ওষুধ সরবরাহ শুরু হবে।
জয়পুরহাট সিভিল সার্জন ডা. আল মামুন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কেউ নিয়মিত না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ডিসেম্বরের পর থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ওষুধ সরবরাহ না থাকায় কিছুটা সমস্যা ছিল ওষুধ সরবরাহ আসায় সেটি আর নেই। তবে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রেগুলোতে এখনো ওষুধ সরবরাহ বন্ধ আছে, ডিজি বরাবরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি দু-এক সপ্তাহের মধ্যে সরবরাহ আসবে আর পাওয়া মাত্র সমস্যার সমাধানও হবে।