শিক্ষক-কর্মচারীরা বুধবার দুপুরে শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশে রওনা দিলে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়
তিন দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ ঘোষণার আগে তারা বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) প্রায় আড়াই ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। বিকেল পৌনে ৫টায় শাহবাগ মোড় থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা।
এর আগে আড়াইটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষকরা। তাতে ওই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দেন এমপিও শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি মেনে না নিলে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দেন আজিজী।
এ সময় আজিজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার (বৃহস্পতিবার) আমরা ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবো। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করেছি, আপনারাও আমাদের সহযোগিতা করুন। কাল (বৃহস্পতিবার) দাখিল পরীক্ষা আছে। দাবি না মানলে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না।’
এ সময় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সরকার বাড়ি ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। কিন্তু শিক্ষকরা এতে রাজি নন। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যান।
তোপের মুখে সাকি ও মঞ্জু
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে এসে তোপের মুখে পড়েন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ সময় তাদের উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা।
সাকি ও মঞ্জু শিক্ষকদের জানান, তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য এসেছেন। যেহেতু তারা (শিক্ষক) আলোচনা করতে ইচ্ছুক নন। তারা তিন দফা দাবি মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেবেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু শিক্ষকদের বলেন, ‘আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরারের পক্ষ থেকে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। আমরা আপনাদের চূড়ান্ত কথা ওনাদের জানাতে চাই।’
এ সময় শিক্ষকরা বলতে থাকেন, ‘২০ পার্সেন্টই চূড়ান্ত।’
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একজন শিক্ষক প্রতিনিধি মাইকে বলেন, ‘আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদরা এসেছেন। তবে আমরা একাধিকবার শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বসেছি। আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে।’এ সময় জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। আমি গণসংহতি করি, মঞ্জু ভাই এবি পার্টি করেন। আপনাদের আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি যৌক্তিক সমাধানের জন্য। তাদের কথা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। আপনাদের নেতারা যদি কথা বলতে না চান, আলোচনার সুযোগ না থাকলে আপনাদের দাবি আমরা জানিয়ে দেব।’
শিক্ষকদের তিন দফা
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো- মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা।
এ তিন দাবিতে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এরপর পুলিশ লাঠিপেটা করে, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরদিন সোমবার থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলন করছেন।
পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের অভিমুখে মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। হাইকোর্টের মাজারসংলগ্ন গেইটে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই রাত পর্যন্ত অবস্থান করতে দেখা যায় শিক্ষকদের।
ফের বুধবার সকাল ১১টা থেকে শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশে রওনা দেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শাহবাগ মোড়ে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষক-কর্মচারীরা বুধবার দুপুরে শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশে রওনা দিলে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
তিন দফা দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ ঘোষণার আগে তারা বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) প্রায় আড়াই ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন। বিকেল পৌনে ৫টায় শাহবাগ মোড় থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা।
এর আগে আড়াইটার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষকরা। তাতে ওই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের এলাকায় ব্যাপক যানজট দেখা দেয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দেন এমপিও শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী।
সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি মেনে না নিলে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করার ঘোষণা দেন আজিজী।
এ সময় আজিজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার (বৃহস্পতিবার) আমরা ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করবো। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করেছি, আপনারাও আমাদের সহযোগিতা করুন। কাল (বৃহস্পতিবার) দাখিল পরীক্ষা আছে। দাবি না মানলে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না।’
এ সময় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, সরকার বাড়ি ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। কিন্তু শিক্ষকরা এতে রাজি নন। এরপর আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে যান।
তোপের মুখে সাকি ও মঞ্জু
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে এসে তোপের মুখে পড়েন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ সময় তাদের উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেয় আন্দোলনকারীরা।
সাকি ও মঞ্জু শিক্ষকদের জানান, তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য এসেছেন। যেহেতু তারা (শিক্ষক) আলোচনা করতে ইচ্ছুক নন। তারা তিন দফা দাবি মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে দেবেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু শিক্ষকদের বলেন, ‘আমরা শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরারের পক্ষ থেকে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। আমরা আপনাদের চূড়ান্ত কথা ওনাদের জানাতে চাই।’
এ সময় শিক্ষকরা বলতে থাকেন, ‘২০ পার্সেন্টই চূড়ান্ত।’
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের একজন শিক্ষক প্রতিনিধি মাইকে বলেন, ‘আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদরা এসেছেন। তবে আমরা একাধিকবার শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বসেছি। আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে।’এ সময় জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি। আমি গণসংহতি করি, মঞ্জু ভাই এবি পার্টি করেন। আপনাদের আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি যৌক্তিক সমাধানের জন্য। তাদের কথা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। আপনাদের নেতারা যদি কথা বলতে না চান, আলোচনার সুযোগ না থাকলে আপনাদের দাবি আমরা জানিয়ে দেব।’
শিক্ষকদের তিন দফা
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো- মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা, এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসাভাতা ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা এবং এমপিও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করা।
এ তিন দাবিতে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এরপর পুলিশ লাঠিপেটা করে, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরদিন সোমবার থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলন করছেন।
পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয়ের অভিমুখে মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। হাইকোর্টের মাজারসংলগ্ন গেইটে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানেই রাত পর্যন্ত অবস্থান করতে দেখা যায় শিক্ষকদের।
ফের বুধবার সকাল ১১টা থেকে শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশে রওনা দেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শাহবাগ মোড়ে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে প্রতিবন্ধকতা ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।