মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : ডোমখালী সৈকত দেখে যেমন মুগ্ধ হয় দর্শনাথীরা আবার হতাশ হয় বসার জায়গা না থাকায় -সংবাদ
আমাদের চারপাশেই এখন ভ্রমন পিপাসু ও প্রাকৃতিক সুন্দর দেখার জন্য কাতর উৎসুক সকলেই যেন। একটু সময় পেলেই পরিবার বা বন্ধু স্বজন নিয়ে সবাই একছু বেড়িয়ে আসতে পছন্দ করে। আর তা যদি সমূদ্র উপকূল বা প্রকৃতির কোন সমৃদ্ধ স্থান হয় তাহলে তো কথাই নেই। আবার এমন কোন স্থান যেখান থেকে সমূদ্র, সারি সারি গাছ গাছালি আবার রক্তিম সূর্য ডোবা দেখা যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। কিন্তু মীরসরাইয়ের এমন একটি মনোরম স্থান যা দেখে প্রকৃতি প্রেমিকরা খুবই উৎসাহ পান । তবে আবার হতাশ হন সংস্লিষ্ট বিভাগ বা প্রশাসনের উদাসীনতায় । অপূর্ব এমন একটি স্থান মীরসরাইয়ের সাহেরখালী ইউনিয়নের ডোমখালী বীচ। তাকালে দেখতে পাবেন দিগন্ত বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। গত বৃহস্প্রতিবার বিকেলে ডোমখালী বিচে দেখা পাওয়া ফেনী থেকে আসা দর্শনাথী হাসিবুল হক ( ৩২) বলেন আমরা কয়েক বন্ধু সবাই মার্কেটিংয়ে কাজ করি। একটু অবসর পেয়ে সৈকতটা দেখতে আসছি, প্রাকৃতিক সুন্দর দেখে আমরা বিমোহিত কিন্তু হতাশ হয়েছি একটু বসার বেঞ্চি বা কোন পাথর ও নেই যে বসে একটু প্রকৃতি উপভোগ করবো। সেই মাঠে আপন সুখে কাজ করছেন কৃষক। শেষ বিকেলে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষের পাল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন রাখাল। বেড়িবাঁধ সড়কের দুধারে গড়ে উঠেছে গ্রামীণ জনপদ ও সারি সারি বৃক্ষ। আছে খেজুর, নারকেল, তাল, ঝাউ, সেগুন, আকাশমণি, নিম, বাউল, বাবলাসহ অসংখ্য গাছ। যদি শীতের মৌসুমে যান, তাহলে খেজুরের মিষ্টি রসের স্বাদও নিতে পারবেন। সড়কের দক্ষিণে কেওড়া, বাইন, গড়ান, গেওয়া, সুন্দরী, হারগোজসহ লবণাক্ত-সহিষ্ণু নানা বৃক্ষ, লতা ও গুল্ম, যা স্থানটিকে সবুজের সমারোহে পরিণত করেছে। যেদিকে তাকাবেন, শুধু সবুজ আর সবুজ। বাঁধের উত্তর ও পশ্চিমে বয়ে চলা দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত। সাগরের কোলজুড়ে গড়ে উঠেছে ম্যানগ্রোভ বন। এই বনভূমিতে আছে জীববৈচিত্র্যের সমাহার।
বনে দেখা মিলবে নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, কোকিল, চিল, ডাহুক, সাপ, লজ্জাবতী বানর, মেছো বাঘ, কুমির, হরিণ, শিয়ালসহ বিরল ও মহাবিপন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ ও প্রজনন। খুব ভোরে ও সন্ধ্যাবেলায় ঘাস ও লতাপাতা খাওয়ার জন্য বনভূমির বাইরে চরাঞ্চালে চলে আসে হরিণের দল।
দিনের বেলায় বনের ভেতর প্রবেশ করলে হরিণের পদচিহ্ন ও আনাগোনা লক্ষ করা যায়। বনের মধ্যে খাবারের খোঁজে মহিষের দল চরে বেড়ায়। বনের মধ্যে আরও শুনতে পাবেন পাখিদের কলকাকলির শব্দ। বন শেষ হলে শুরু হয় কাদামাটি।
অনেক নৌকাভ্রমণ প্রেমিক জেলেনৌকা নিয়ে পাড়ি দেন সাগরের মোহনায়। জেলেপলীর পরিবারের বড়দের সঙ্গে ছোটরাও মাছ ধরতে সাগরে যায়। দুষ্ট ছেলেরা সাগরের পানিতে লাফালাফি করে। বিকেলে সমুদ্রের পাড় থেকে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য অবলোকনের মাধ্যমে সমুদ্রের সৌন্দযের তৃষ্ণা মেটান ভ্রমণপিপাসুরা। দেশের যে কোনো স্থান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগারহাট বাজারে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে হয় ডোমখালী বেড়িবাঁধ। মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়েও যাওয়া যায়। বড়দারোগারহাট বাজার থেকে বায়ান্নবাঁকের গ্রামবাংলার মেঠো পথ ধরে বেড়িবাঁধ সড়কের ওপর গিয়ে গাড়ি থামে। এই সৈকতটিকে ইতিমধ্যে অনেক সংগঠন ও এসে পিকনিক করেছে নিজেদের ব্যবস্থাপনায়। এই কোন ন্যুন্যতম ব্যবস্থাপনা উদ্যোগ আগামীতে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এই উপকূলাঞ্চলটি উপকূলীয় বন বিভাগের অধিনস্থ এলাকা। আগামীতে বনবিভাগের সাথে আলোচনা করে দর্শনার্থিদের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা আলোচনা করা হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : ডোমখালী সৈকত দেখে যেমন মুগ্ধ হয় দর্শনাথীরা আবার হতাশ হয় বসার জায়গা না থাকায় -সংবাদ
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
আমাদের চারপাশেই এখন ভ্রমন পিপাসু ও প্রাকৃতিক সুন্দর দেখার জন্য কাতর উৎসুক সকলেই যেন। একটু সময় পেলেই পরিবার বা বন্ধু স্বজন নিয়ে সবাই একছু বেড়িয়ে আসতে পছন্দ করে। আর তা যদি সমূদ্র উপকূল বা প্রকৃতির কোন সমৃদ্ধ স্থান হয় তাহলে তো কথাই নেই। আবার এমন কোন স্থান যেখান থেকে সমূদ্র, সারি সারি গাছ গাছালি আবার রক্তিম সূর্য ডোবা দেখা যায় তাহলে তো আর কথাই নেই। কিন্তু মীরসরাইয়ের এমন একটি মনোরম স্থান যা দেখে প্রকৃতি প্রেমিকরা খুবই উৎসাহ পান । তবে আবার হতাশ হন সংস্লিষ্ট বিভাগ বা প্রশাসনের উদাসীনতায় । অপূর্ব এমন একটি স্থান মীরসরাইয়ের সাহেরখালী ইউনিয়নের ডোমখালী বীচ। তাকালে দেখতে পাবেন দিগন্ত বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। গত বৃহস্প্রতিবার বিকেলে ডোমখালী বিচে দেখা পাওয়া ফেনী থেকে আসা দর্শনাথী হাসিবুল হক ( ৩২) বলেন আমরা কয়েক বন্ধু সবাই মার্কেটিংয়ে কাজ করি। একটু অবসর পেয়ে সৈকতটা দেখতে আসছি, প্রাকৃতিক সুন্দর দেখে আমরা বিমোহিত কিন্তু হতাশ হয়েছি একটু বসার বেঞ্চি বা কোন পাথর ও নেই যে বসে একটু প্রকৃতি উপভোগ করবো। সেই মাঠে আপন সুখে কাজ করছেন কৃষক। শেষ বিকেলে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষের পাল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন রাখাল। বেড়িবাঁধ সড়কের দুধারে গড়ে উঠেছে গ্রামীণ জনপদ ও সারি সারি বৃক্ষ। আছে খেজুর, নারকেল, তাল, ঝাউ, সেগুন, আকাশমণি, নিম, বাউল, বাবলাসহ অসংখ্য গাছ। যদি শীতের মৌসুমে যান, তাহলে খেজুরের মিষ্টি রসের স্বাদও নিতে পারবেন। সড়কের দক্ষিণে কেওড়া, বাইন, গড়ান, গেওয়া, সুন্দরী, হারগোজসহ লবণাক্ত-সহিষ্ণু নানা বৃক্ষ, লতা ও গুল্ম, যা স্থানটিকে সবুজের সমারোহে পরিণত করেছে। যেদিকে তাকাবেন, শুধু সবুজ আর সবুজ। বাঁধের উত্তর ও পশ্চিমে বয়ে চলা দৃষ্টিনন্দন সমুদ্রসৈকত। সাগরের কোলজুড়ে গড়ে উঠেছে ম্যানগ্রোভ বন। এই বনভূমিতে আছে জীববৈচিত্র্যের সমাহার।
বনে দেখা মিলবে নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, কোকিল, চিল, ডাহুক, সাপ, লজ্জাবতী বানর, মেছো বাঘ, কুমির, হরিণ, শিয়ালসহ বিরল ও মহাবিপন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ ও প্রজনন। খুব ভোরে ও সন্ধ্যাবেলায় ঘাস ও লতাপাতা খাওয়ার জন্য বনভূমির বাইরে চরাঞ্চালে চলে আসে হরিণের দল।
দিনের বেলায় বনের ভেতর প্রবেশ করলে হরিণের পদচিহ্ন ও আনাগোনা লক্ষ করা যায়। বনের মধ্যে খাবারের খোঁজে মহিষের দল চরে বেড়ায়। বনের মধ্যে আরও শুনতে পাবেন পাখিদের কলকাকলির শব্দ। বন শেষ হলে শুরু হয় কাদামাটি।
অনেক নৌকাভ্রমণ প্রেমিক জেলেনৌকা নিয়ে পাড়ি দেন সাগরের মোহনায়। জেলেপলীর পরিবারের বড়দের সঙ্গে ছোটরাও মাছ ধরতে সাগরে যায়। দুষ্ট ছেলেরা সাগরের পানিতে লাফালাফি করে। বিকেলে সমুদ্রের পাড় থেকে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য অবলোকনের মাধ্যমে সমুদ্রের সৌন্দযের তৃষ্ণা মেটান ভ্রমণপিপাসুরা। দেশের যে কোনো স্থান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগারহাট বাজারে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যেতে হয় ডোমখালী বেড়িবাঁধ। মোটরসাইকেল ও গাড়ি নিয়েও যাওয়া যায়। বড়দারোগারহাট বাজার থেকে বায়ান্নবাঁকের গ্রামবাংলার মেঠো পথ ধরে বেড়িবাঁধ সড়কের ওপর গিয়ে গাড়ি থামে। এই সৈকতটিকে ইতিমধ্যে অনেক সংগঠন ও এসে পিকনিক করেছে নিজেদের ব্যবস্থাপনায়। এই কোন ন্যুন্যতম ব্যবস্থাপনা উদ্যোগ আগামীতে হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এই উপকূলাঞ্চলটি উপকূলীয় বন বিভাগের অধিনস্থ এলাকা। আগামীতে বনবিভাগের সাথে আলোচনা করে দর্শনার্থিদের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা আলোচনা করা হবে।