alt

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। আজও বহাল তবিয়তে চেয়ারে রয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবু বক্কর সিদ্দিক ২০২১ সালের ১৮ মার্চ জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। একই সাথে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি একই বছরের ৫ অক্টোবর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরই অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতা শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কলেজের লাইব্রেরিতে বই কেনার নামে হাজার হাজার টাকার ভাউচার দেখালেও বই কেনেন না। ওই টাকা তিনি আত্নসাৎ করেন। ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রেজিষ্টারে বইয়ের নাম তুলতে রাজী না হওয়ায় দায়িত্বরত কর্মচারী আবেদা সুলতানাকে চাকরিচ্যুত করেন। কলেজে অনলাইন পেমেন্ট চালু থাকার পরেও ছাত্রীদের কাছে থেকে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা নেন। এমনকি আদায়কৃত অর্থ কোনো ব্যাংকে জমা না করে অধ্যক্ষ নিজেইে আত্নসাৎ করেন। কলেজের বিজ্ঞান ভবনের একটি ডরমেটরি দখল করে অধ্যক্ষ সেখানে বিশ্রামাগার বানিয়েছেন। তিনি অনিয়ম করে এসি, ফ্রিজ, সোফাসহ আসবাবপত্র কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্র ফি এর টাকা আত্মসাৎ করারও।

এছাড়াও ছাত্রীদেরকে বোরখা বিরূপ মন্তব্য করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। ছাত্রীদের বোরকা পড়ে কলেজে আসতে নিষেধ করেছিলেন। এমনকি পরবর্তীতে বোরখা পড়ে আসলেও তা খুলে রেখে কলেজের পোশাক পড়ে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশের নিয়ম করেছিলেন তিনি। ছাত্রীরা ওইসময় প্রতিবাদ করলে তাদের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করার হুমকি দিয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করেন অধ্যক্ষ আবু ব্ক্কর সিদ্দিক। একই সাথে কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও স্টাফদের বিভিন্ন অযুহাতে শোকজ ও সতর্কীকরণ চিঠি দেন। এমনকি এসিআর খারাপ দেওয়ার ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

ওই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন শিক্ষক বলেন, আমরা তার কাছে জরুরী প্রয়োজেন নৈবক্তিক ছুটি (সিএল) ছুটি চাইলে তিনি আমাদের ছুটি দেন না। ছুটি না পেয়ে প্রতিষ্ঠানে না আসলে তিনি নোটিশ করেন। তার কথা মতো কাজ না করলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাউশিতে চিঠি পাঠানোর হুমকি দেন। এমনকি কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠিয়েছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অনেক শিক্ষক এখানে থাকলে না পেরে বদলি হন। আবার অনেকেই বদলি হতে চান। কলেজের একটি পুকুর শিক্ষক সমিতির নামে ছিল। কিন্তু তিনি আসার পর সেটি কলেজের অর্থ থেকে চাষ করেন। সেখানকার মাছগুলো আমাদের জোড় করে দিয়ে টাকা নেন। কলেজের বেশ কয়েকটি গাছ বন বিভাগের অনুমতি ও টেন্ডার ছাড়া বিক্রি করেন। সেই টাকা কলেজের ফান্ডে জমা করেননি। এখন বিএনপি নেতা এবং জামায়াত নেতারা তার লোক বলে ভয় দেখান।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পাশ করা সানজিদা খাতুন, শ্রাবন্তী, প্রজ্ঞাসহ কয়েকজন ছাত্রী জানান, আমাদের পোশাকে লাগানোর জন্য কলেজের মনোগ্রাম দেওয়া হতো, সেটিতে অতিরিক্ত টাকা নিতো। প্রশংসাপত্র, সার্টিফিকেট ও মার্কশীট উত্তোলনের সময় একশো-দুইশো টাকা নেওয়া হতো। কিন্তু কলেজ থেকে এসবের কোন রশিদ দিতো না। এমনভাবে সকল ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।কলেজ হোস্টেলে ছাত্রীদের জন্য কেনা ফ্রিজ অধ্যক্ষ স্যার নিজে ব্যবহার করে। হোস্টেলে অধ্যক্ষ স্যারের ছেলের জন্মদিনে আমাদের নিয়ে জোড় করে পালন করেছেন।

কলেজের তৎকালীন লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা কর্মচারী মোছা. আবেদা সুলতানা বলেন, কলেজের লাইব্রেরিতে বই কেনার ভাউচার দেখালেও বই কেনা হতো না। অধ্যক্ষ স্যার বই না দিয়ে লাইব্রেরির সংরক্ষিত রেজিষ্টারে বইয়ের নাম তুলতে বাধ্য করিয়েছেন। আমি এই কাজগুলোতে রাজি ছিলাম না। পরে আমাকে লাইব্রেরি থেকে অফিসে বসতে বলেন। আমি অফিসে বসতে রাজি ছিলাম না। তখন আরেকজন স্টাফ দিয়ে আমার থেকে চাবি নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

কলেজের তৎকালীন শিক্ষিকা খন্দকার সানজিদা ওহেদ জানান, অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় ছুটির আবেদন করলেও তাকে ছুটি দেয়া হয়নি। সেসময় তিনি অসুস্থ থাকায় কলেজে আসতে না পারলে তার বেতন বন্ধ রাখাসহ মানসিকভাবে হয়রানি করা হয়। তার সাথে অশালীন ব্যবহার করেন অধ্যক্ষ।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কলেজে কোন টাকা আদায় করা হয়না শুধু মনোগ্রামের টাকা নেয়া হয় যেটা অনলাইনের সিস্টেম নাই। প্রশংসা পত্রের ক্ষেত্রে অফিস স্টাফরা ১শ টাকা করে নেয় যা মাষ্টার রোলে কর্মচারীদের দেয়া হয়।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের সাথে কোন খারাপ আচরণ করা হয়না। মাত্র দুজনকে উপযুক্ত কারনে কারন দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে যা অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেনেই করা হয়েছে। এসিআর খারাপ দেয়ার ক্ষেত্রে কোন হুমকি বা অনিয়ম করা হয়নি। কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ের শিক্ষক খন্দকার সানজিদা নিয়মিত কলেজ করতেন না, ঢাকায় থাকতেন। তাকে বার-বার কলেজে আসতে বললেও তিনি আসেন না। সেজন্য তার এসিআর বইয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। তাকে ছুটি দেয়া হয়নি বিষয়টি সঠিক না। লাইব্রেরি খোলা হয় না, বিষয়টি সঠিক না। দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে দায়িত্বরত আবেদা সুলতানা নিয়মিত লাইব্রেরি খুলতেন না। তিনি না বলে অফিসে আসতেন না। তিনি বলেন, আমাকে আওয়ামী লীগের লোক বলা হয় অথচ আওয়ামীলীগের নেতারা আমাকে এই কলেজে আসতে দেয়নি অনেক চেষ্টা করে অনেক বছর ঘুরে ঘুরে এখানে আসতে পেরেছি। তিনি বলেন আমি এখানকার স্থানীয় কলেজটাকে ভাল করতে চাই কিন্ত পারছিনা। শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করেনা বলতে গেলে সব শিক্ষকরায় আমার বিপক্ষে।

ছবি

পর্যটক-শূন্য প্রথম দিন: সেন্ট মার্টিন ঘাটে নীরবতা, কোনো জাহাজ ছাড়েনি

ছবি

কেশবপুরে দৃষ্টিনন্দন ড্রাগন বাগান দেখতে শতশত মানুষের ভিড়

ছবি

চকরিয়ায় শীতকালীন সবজি চাষ শুরু ভালো ফলনের আশা কৃষকদের

ছবি

লালমাইয়ে স্কুলের পাশে ময়লার ভাগাড়

ছবি

ঘিওরে মেধার স্বীকৃতি মিললেও মিলছেনা প্রাথমিক বৃত্তির টাকা

ছবি

মীরসরাইয়ে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ এবার হেমন্তকালে সাফল্য

ছবি

কোম্পানীগঞ্জে ট্রাক্টরের ধাক্কায় পর্যটকবাহী অটোরিকশার এক যাত্রীর মৃত্যু, আহত ৫

ছবি

আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়েছেন যাত্রীরা

ছবি

শরণখোলায় গাছের নিচে চাপা পড়ে দিনমজুরের মৃত্যু

ছবি

দোয়ারাবাজার সীমান্তে মাদকের থাবা, নতুন আতঙ্ক ‘ড্যান্ডি’

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় সালমান শাহর হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

দুমকিতে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা

ছবি

কলমাকান্দায় মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন সম্পন্ন

ছবি

বরুড়ায় সমস্যায় জর্জরিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ছবি

ভালুকায় শিল্প বর্জে অনাবাদী ৩৩৬ একর কৃষিজমি

ছবি

মোহনগঞ্জে শুঁটকির হাট জমজমাট

ছবি

কুমিল্লার গোমতি নদীর বালুচরে লাউ শাক চাষে ঝুকছে কৃষক

ছবি

সুপারি চুরির অপবাদে মারধর, অপমানে কিশোরের আত্মহত্যা!

ছবি

বেনাপোলে ৮ লাখ টাকার ভারতীয় হোমিও ওষুধ জব্দ

ছবি

নেত্রকোনায় ষাড়ের লড়াইয়ে অংশ নেয়ার অভিযোগে গরু নিলামে

ছবি

‘নরসিংদী শিল্পকলা একাডেমিকে আধুনিকায়ন করা হবে’

ছবি

নন্দীগ্রামে টানা বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

ছবি

পানিতে ডুবে বুদ্ধী প্রতিবন্ধীর মৃত্যু

ছবি

মোরেলগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ইউনিয়ন ও পৌর শাখার কমিটি

ছবি

সিরাজগঞ্জে কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গসহ গ্রেপ্তার ৩

ছবি

ভাঙ্গুড়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক বাড়ছে অপরাধ, প্রশাসন নিষ্ক্রিয়

ছবি

পীরগাছায় মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

ছবি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে জলাবদ্ধতায় ৫০০ একর জমি অনাবাদি

ছবি

তেতুলিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

ঘোড়াঘাটে খাস জমি দখলের মহোৎসব

ছবি

কাপাসিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক ঘরই খালি

ছবি

তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড মাত্রা বৃষ্টিপাত জনজীবন বিপর্যস্ত

ছবি

দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগ নেতা রাজ্জাক হত্যা: ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ

ছবি

নান্দনিক সূর্যাস্তের রাণী ডোমখালী সমুদ্রসৈকত

ছবি

নড়াইলে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

ছবি

আচ্ছাদিত ভ্যান পেয়ে খুশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

tab

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের

প্রতিনিধি, জয়পুরহাট

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। আজও বহাল তবিয়তে চেয়ারে রয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবু বক্কর সিদ্দিক ২০২১ সালের ১৮ মার্চ জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। একই সাথে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি একই বছরের ৫ অক্টোবর অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ওই প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পরই অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতা শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কলেজের লাইব্রেরিতে বই কেনার নামে হাজার হাজার টাকার ভাউচার দেখালেও বই কেনেন না। ওই টাকা তিনি আত্নসাৎ করেন। ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত রেজিষ্টারে বইয়ের নাম তুলতে রাজী না হওয়ায় দায়িত্বরত কর্মচারী আবেদা সুলতানাকে চাকরিচ্যুত করেন। কলেজে অনলাইন পেমেন্ট চালু থাকার পরেও ছাত্রীদের কাছে থেকে বিনা রশিদে অতিরিক্ত টাকা নেন। এমনকি আদায়কৃত অর্থ কোনো ব্যাংকে জমা না করে অধ্যক্ষ নিজেইে আত্নসাৎ করেন। কলেজের বিজ্ঞান ভবনের একটি ডরমেটরি দখল করে অধ্যক্ষ সেখানে বিশ্রামাগার বানিয়েছেন। তিনি অনিয়ম করে এসি, ফ্রিজ, সোফাসহ আসবাবপত্র কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্র ফি এর টাকা আত্মসাৎ করারও।

এছাড়াও ছাত্রীদেরকে বোরখা বিরূপ মন্তব্য করার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। ছাত্রীদের বোরকা পড়ে কলেজে আসতে নিষেধ করেছিলেন। এমনকি পরবর্তীতে বোরখা পড়ে আসলেও তা খুলে রেখে কলেজের পোশাক পড়ে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশের নিয়ম করেছিলেন তিনি। ছাত্রীরা ওইসময় প্রতিবাদ করলে তাদের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করার হুমকি দিয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করেন অধ্যক্ষ আবু ব্ক্কর সিদ্দিক। একই সাথে কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও স্টাফদের বিভিন্ন অযুহাতে শোকজ ও সতর্কীকরণ চিঠি দেন। এমনকি এসিআর খারাপ দেওয়ার ভয় দেখানোর অভিযোগ রয়েছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

ওই প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন শিক্ষক বলেন, আমরা তার কাছে জরুরী প্রয়োজেন নৈবক্তিক ছুটি (সিএল) ছুটি চাইলে তিনি আমাদের ছুটি দেন না। ছুটি না পেয়ে প্রতিষ্ঠানে না আসলে তিনি নোটিশ করেন। তার কথা মতো কাজ না করলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাউশিতে চিঠি পাঠানোর হুমকি দেন। এমনকি কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠিয়েছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে অনেক শিক্ষক এখানে থাকলে না পেরে বদলি হন। আবার অনেকেই বদলি হতে চান। কলেজের একটি পুকুর শিক্ষক সমিতির নামে ছিল। কিন্তু তিনি আসার পর সেটি কলেজের অর্থ থেকে চাষ করেন। সেখানকার মাছগুলো আমাদের জোড় করে দিয়ে টাকা নেন। কলেজের বেশ কয়েকটি গাছ বন বিভাগের অনুমতি ও টেন্ডার ছাড়া বিক্রি করেন। সেই টাকা কলেজের ফান্ডে জমা করেননি। এখন বিএনপি নেতা এবং জামায়াত নেতারা তার লোক বলে ভয় দেখান।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি পাশ করা সানজিদা খাতুন, শ্রাবন্তী, প্রজ্ঞাসহ কয়েকজন ছাত্রী জানান, আমাদের পোশাকে লাগানোর জন্য কলেজের মনোগ্রাম দেওয়া হতো, সেটিতে অতিরিক্ত টাকা নিতো। প্রশংসাপত্র, সার্টিফিকেট ও মার্কশীট উত্তোলনের সময় একশো-দুইশো টাকা নেওয়া হতো। কিন্তু কলেজ থেকে এসবের কোন রশিদ দিতো না। এমনভাবে সকল ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।কলেজ হোস্টেলে ছাত্রীদের জন্য কেনা ফ্রিজ অধ্যক্ষ স্যার নিজে ব্যবহার করে। হোস্টেলে অধ্যক্ষ স্যারের ছেলের জন্মদিনে আমাদের নিয়ে জোড় করে পালন করেছেন।

কলেজের তৎকালীন লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা কর্মচারী মোছা. আবেদা সুলতানা বলেন, কলেজের লাইব্রেরিতে বই কেনার ভাউচার দেখালেও বই কেনা হতো না। অধ্যক্ষ স্যার বই না দিয়ে লাইব্রেরির সংরক্ষিত রেজিষ্টারে বইয়ের নাম তুলতে বাধ্য করিয়েছেন। আমি এই কাজগুলোতে রাজি ছিলাম না। পরে আমাকে লাইব্রেরি থেকে অফিসে বসতে বলেন। আমি অফিসে বসতে রাজি ছিলাম না। তখন আরেকজন স্টাফ দিয়ে আমার থেকে চাবি নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

কলেজের তৎকালীন শিক্ষিকা খন্দকার সানজিদা ওহেদ জানান, অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় ছুটির আবেদন করলেও তাকে ছুটি দেয়া হয়নি। সেসময় তিনি অসুস্থ থাকায় কলেজে আসতে না পারলে তার বেতন বন্ধ রাখাসহ মানসিকভাবে হয়রানি করা হয়। তার সাথে অশালীন ব্যবহার করেন অধ্যক্ষ।

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কলেজে কোন টাকা আদায় করা হয়না শুধু মনোগ্রামের টাকা নেয়া হয় যেটা অনলাইনের সিস্টেম নাই। প্রশংসা পত্রের ক্ষেত্রে অফিস স্টাফরা ১শ টাকা করে নেয় যা মাষ্টার রোলে কর্মচারীদের দেয়া হয়।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের সাথে কোন খারাপ আচরণ করা হয়না। মাত্র দুজনকে উপযুক্ত কারনে কারন দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে যা অফিসিয়াল প্রসিডিউর মেনেই করা হয়েছে। এসিআর খারাপ দেয়ার ক্ষেত্রে কোন হুমকি বা অনিয়ম করা হয়নি। কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ের শিক্ষক খন্দকার সানজিদা নিয়মিত কলেজ করতেন না, ঢাকায় থাকতেন। তাকে বার-বার কলেজে আসতে বললেও তিনি আসেন না। সেজন্য তার এসিআর বইয়ে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। তাকে ছুটি দেয়া হয়নি বিষয়টি সঠিক না। লাইব্রেরি খোলা হয় না, বিষয়টি সঠিক না। দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে দায়িত্বরত আবেদা সুলতানা নিয়মিত লাইব্রেরি খুলতেন না। তিনি না বলে অফিসে আসতেন না। তিনি বলেন, আমাকে আওয়ামী লীগের লোক বলা হয় অথচ আওয়ামীলীগের নেতারা আমাকে এই কলেজে আসতে দেয়নি অনেক চেষ্টা করে অনেক বছর ঘুরে ঘুরে এখানে আসতে পেরেছি। তিনি বলেন আমি এখানকার স্থানীয় কলেজটাকে ভাল করতে চাই কিন্ত পারছিনা। শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করেনা বলতে গেলে সব শিক্ষকরায় আমার বিপক্ষে।

back to top