কাপাসিয়া (গাজীপুর) : ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর -সংবাদ
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক ঘরই খালি পড়ে রয়েছে। উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি করায় বহু সংখ্যক স্বচ্ছল ব্যক্তিও এখানে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বরাদ্দ পাওয়ার পর এক রাতের জন্যও সেখানে বসবাস করেননি তারা। এসব ঘরে এখন গড়ে উঠেছে মাদক সেবীদের আস্তানা। আবার কোনটিতে বাস করছে বেওয়ারিশ কুকুর কিংবা প্রতিবেশিদের গরু ও ছাগল। আর বেশির ভাগ ঘরেই প্রতিবেশিরা লাকড়ি, খড়কুটা রেখে কিংবা নানা ভাবে দখল করে রেখেছেন। কেউ কেউ আবার দখল টিকিয়ে রাখতে এক-দুই মাস অন্তর অন্তর সেখানে দিনের বেলা একটু হাজিরা দিয়ে সন্ধ্যার আগেই নিজ বাসস্থানে চলে যান। তাই খালি পড়ে থাকা ঘরগুলো প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সেখানকার বাসিন্দাসহ অনেকেই দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকে হতদরিদ্র গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মাঝে ১০টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২ শতাংশ জমিসহ দুইকক্ষ বিশিষ্ট একটি আধাপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ উপজেলায় পাঁচ ধাপে তালিকা করে ১০টি আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ৩২৩টি পরিবারকে এই ঘরগুলোবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী পরিবারগুলোকে আধুনিক সুযোগসুবিধা দিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রতিটি ঘরে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎসংযোগ, স্থাপন করা হয়েছে নলকূপ, রিংওয়েল নলকূপ ও স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন। তরগাঁও ইউনিয়নের ‘দেওনা আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ১১৪টি, রায়েদ ইউনিয়নের ‘সাহা বিদ্যারকোট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৬৫টি, ‘বেলাশী আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ২৫টি ও ‘বাঘেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৫টি, সিংহশ্রী ইউনিয়নের ‘কপালেশ^র আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৪৭টি, ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ‘শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৩৮টি ও ‘ঘাগটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৬টি, টোকইউনিয়নের ‘আড়ালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৫টি, কাপাসিয়া ইউনিয়নের ‘চারবাড়িয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৪টি এবং চাঁদপুর ইউনিয়নের ‘বোয়ালী আশ্রয়ণ পকেল্পে’ ১৪টি ঘর। পরে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ কাপাসিয়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেছে গাজীপুরের জেলা প্রশাসন।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের ‘দেওনা আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ তিনধাপে ১১৪টি হতদরিদ্র পরিবার এ ঘর পেয়েছে। কিন্তু এ ঘরগুলোর মাঝে প্রথম ধাপের ১২নং ঘরটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সোহেল রানার নামে। উদ্বোধনের পর থেকেই কেউ বসবাস না করায় এবং দরজা খোলা থাকায় এ ঘরে দীর্ঘদিন যাবৎ একাধিক কুকুর বসবাস করছে। সম্প্রতি এ ঘরে একটি কুকুর তিনটি বাচ্চা প্রসব করলে তারা বেস উৎফুল্ল চিত্তে ঘরের মেঝেতে লাফালাফি করতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৩নং ঘরটি রাসেল মোল্লার নামে এবং ১৪নং ঘরটি ফিরোজা বেগমের নামে। এ দুটি ঘরেও কেউ বসবাস না করায় প্রতিবেশিরা লাকড়ি রেখে দিয়েছেন। এ ধাপের ৩৬ ও ৫৪ নং ঘরেও কাউকে কোনোদিন থাকতে দেখেননি প্রতিবেশিরা।তাই তাদের নাম ঠিকানা কিছুই তাদের জানা নেই।
তৃতীয় ধাপের ১৪নং ঘরটিলিমা আক্তারের নামেবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্ত এখানেও কেউ বসবাস করেন না। এ ধাপের ৪৭ নং ঘরে কেউ বসবাস না করায় অন্য এক প্রতিবেশি বেশ কয়েকটি ছাগল লালন পালন করেন। তাছাড়া এ ধাপে ১৩ নং বাড়িটি স্থানীয় আলমগীর হোসেনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তার বেশ জমিজমা এবং বাড়িতে ঘর থাকায় এখানে তিনি বসবাস করেন না। ১৮ নং ঘরে বসবাসকারী একজন কাঠমিস্ত্রি পাশের ১৭নং ঘরটিখালি পেয়ে প্রথম থেকেই তার আসবাবপত্র তৈরির কাঠগুলো সে ঘরে রেখে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া ৩, ১২, ১৬, ২৯, ৪৯, ৫৭ ও ৬৫ নং ঘরসহ অন্তত ৫০টি ঘর প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মো. আলী হোসেন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে এ খালি ঘরগুলো স্থানীয় মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
রায়েদ ইউনিয়নের ‘সাহা বিদ্যারকোট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ গিয়ে দেখাযায় মোট ৬৫ ঘর রয়েছে। সেখানকার ১ নং ঘরেরবাসিন্দা নূর মোহাম্মদ, ৬ নং ঘরের বাসিন্দা ইন্তাজমিয়া ও ২২নং ঘরের বাসিন্দা শামীমাসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানেও সব মিলিয়ে অন্তত ৩০টি ঘর উদ্বোধনের পর থেকেই একেবারে খালি পড়ে রয়েছে এবং কতকগুলোর মধ্যে বখাটে যুবকরা রাতের বেলা এসে আড্ডা দেয় এবং নেশা করে। কেউ ব্যবহার করছেনা বলে এখানে একটি গভীর নলকূপ ও তার সাথে সংযুক্ত পানির ট্যাংক দীর্ঘদিন যাবৎ নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে।
সিংহশ্রী ইউনিয়নের ‘কপালেশ্বর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ মোট ৪৭টি ঘর রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা জানান সেখানেও অন্তত ১৪-১৫টি ঘর প্রথম থেকেই খালি পড়ে রয়েছে।
বারিষাব ইউনিয়নের ‘শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ঘর রয়েছে ৩৮টি। সেখানকার ১নং ঘরের বাসিন্দা আসমাসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, অন্তত ১৫-১৬টি ঘরে কেউ কোনদিন বসবাস করেননি। সেখানকার ২১নং ঘরটিখালিপড়ে থাকায় এক প্রতিবেশি দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করে থাকেন।
এসব ঘর বরাদ্দ দানের কাজে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক ব্যক্তি জানান, ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ার সময় সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের দলীয় পদধারী অনেক ইউপি চেয়ারম্যান অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তালিকা দেওয়ায় সঠিক লোক বাছাই করা সম্ভব হয়নি। এখন সবাইকে ২ শতাংশ জমির রেজিস্ট্রিকৃত দলীলসহ ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাই খালি ঘরগুলোর বরাদ্দ বাতিল করতে হলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তিনি যোগদানের বহু আগে এসব ঘরের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বহু ঘরে বরাদ্দ প্রাপ্তরা থাকেনা বলে তিনিও অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
কাপাসিয়া (গাজীপুর) : ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর -সংবাদ
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক ঘরই খালি পড়ে রয়েছে। উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি করায় বহু সংখ্যক স্বচ্ছল ব্যক্তিও এখানে ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বরাদ্দ পাওয়ার পর এক রাতের জন্যও সেখানে বসবাস করেননি তারা। এসব ঘরে এখন গড়ে উঠেছে মাদক সেবীদের আস্তানা। আবার কোনটিতে বাস করছে বেওয়ারিশ কুকুর কিংবা প্রতিবেশিদের গরু ও ছাগল। আর বেশির ভাগ ঘরেই প্রতিবেশিরা লাকড়ি, খড়কুটা রেখে কিংবা নানা ভাবে দখল করে রেখেছেন। কেউ কেউ আবার দখল টিকিয়ে রাখতে এক-দুই মাস অন্তর অন্তর সেখানে দিনের বেলা একটু হাজিরা দিয়ে সন্ধ্যার আগেই নিজ বাসস্থানে চলে যান। তাই খালি পড়ে থাকা ঘরগুলো প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সেখানকার বাসিন্দাসহ অনেকেই দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্য থেকে হতদরিদ্র গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মাঝে ১০টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ২ শতাংশ জমিসহ দুইকক্ষ বিশিষ্ট একটি আধাপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ উপজেলায় পাঁচ ধাপে তালিকা করে ১০টি আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ৩২৩টি পরিবারকে এই ঘরগুলোবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী পরিবারগুলোকে আধুনিক সুযোগসুবিধা দিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রতিটি ঘরে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎসংযোগ, স্থাপন করা হয়েছে নলকূপ, রিংওয়েল নলকূপ ও স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন। তরগাঁও ইউনিয়নের ‘দেওনা আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ১১৪টি, রায়েদ ইউনিয়নের ‘সাহা বিদ্যারকোট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৬৫টি, ‘বেলাশী আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ২৫টি ও ‘বাঘেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৫টি, সিংহশ্রী ইউনিয়নের ‘কপালেশ^র আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৪৭টি, ঘাগটিয়া ইউনিয়নের ‘শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৩৮টি ও ‘ঘাগটিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৬টি, টোকইউনিয়নের ‘আড়ালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৫টি, কাপাসিয়া ইউনিয়নের ‘চারবাড়িয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ৪টি এবং চাঁদপুর ইউনিয়নের ‘বোয়ালী আশ্রয়ণ পকেল্পে’ ১৪টি ঘর। পরে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ কাপাসিয়া উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করেছে গাজীপুরের জেলা প্রশাসন।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের ‘দেওনা আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ তিনধাপে ১১৪টি হতদরিদ্র পরিবার এ ঘর পেয়েছে। কিন্তু এ ঘরগুলোর মাঝে প্রথম ধাপের ১২নং ঘরটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সোহেল রানার নামে। উদ্বোধনের পর থেকেই কেউ বসবাস না করায় এবং দরজা খোলা থাকায় এ ঘরে দীর্ঘদিন যাবৎ একাধিক কুকুর বসবাস করছে। সম্প্রতি এ ঘরে একটি কুকুর তিনটি বাচ্চা প্রসব করলে তারা বেস উৎফুল্ল চিত্তে ঘরের মেঝেতে লাফালাফি করতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় ধাপের ১৩নং ঘরটি রাসেল মোল্লার নামে এবং ১৪নং ঘরটি ফিরোজা বেগমের নামে। এ দুটি ঘরেও কেউ বসবাস না করায় প্রতিবেশিরা লাকড়ি রেখে দিয়েছেন। এ ধাপের ৩৬ ও ৫৪ নং ঘরেও কাউকে কোনোদিন থাকতে দেখেননি প্রতিবেশিরা।তাই তাদের নাম ঠিকানা কিছুই তাদের জানা নেই।
তৃতীয় ধাপের ১৪নং ঘরটিলিমা আক্তারের নামেবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্ত এখানেও কেউ বসবাস করেন না। এ ধাপের ৪৭ নং ঘরে কেউ বসবাস না করায় অন্য এক প্রতিবেশি বেশ কয়েকটি ছাগল লালন পালন করেন। তাছাড়া এ ধাপে ১৩ নং বাড়িটি স্থানীয় আলমগীর হোসেনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হলেও তার বেশ জমিজমা এবং বাড়িতে ঘর থাকায় এখানে তিনি বসবাস করেন না। ১৮ নং ঘরে বসবাসকারী একজন কাঠমিস্ত্রি পাশের ১৭নং ঘরটিখালি পেয়ে প্রথম থেকেই তার আসবাবপত্র তৈরির কাঠগুলো সে ঘরে রেখে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া ৩, ১২, ১৬, ২৯, ৪৯, ৫৭ ও ৬৫ নং ঘরসহ অন্তত ৫০টি ঘর প্রকৃত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মো. আলী হোসেন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে এ খালি ঘরগুলো স্থানীয় মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
রায়েদ ইউনিয়নের ‘সাহা বিদ্যারকোট আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ গিয়ে দেখাযায় মোট ৬৫ ঘর রয়েছে। সেখানকার ১ নং ঘরেরবাসিন্দা নূর মোহাম্মদ, ৬ নং ঘরের বাসিন্দা ইন্তাজমিয়া ও ২২নং ঘরের বাসিন্দা শামীমাসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানেও সব মিলিয়ে অন্তত ৩০টি ঘর উদ্বোধনের পর থেকেই একেবারে খালি পড়ে রয়েছে এবং কতকগুলোর মধ্যে বখাটে যুবকরা রাতের বেলা এসে আড্ডা দেয় এবং নেশা করে। কেউ ব্যবহার করছেনা বলে এখানে একটি গভীর নলকূপ ও তার সাথে সংযুক্ত পানির ট্যাংক দীর্ঘদিন যাবৎ নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে।
সিংহশ্রী ইউনিয়নের ‘কপালেশ্বর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ মোট ৪৭টি ঘর রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা জানান সেখানেও অন্তত ১৪-১৫টি ঘর প্রথম থেকেই খালি পড়ে রয়েছে।
বারিষাব ইউনিয়নের ‘শ্যামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে’ ঘর রয়েছে ৩৮টি। সেখানকার ১নং ঘরের বাসিন্দা আসমাসহ বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, অন্তত ১৫-১৬টি ঘরে কেউ কোনদিন বসবাস করেননি। সেখানকার ২১নং ঘরটিখালিপড়ে থাকায় এক প্রতিবেশি দীর্ঘদিন ধরে গরু পালন করে থাকেন।
এসব ঘর বরাদ্দ দানের কাজে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের এক ব্যক্তি জানান, ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়ার সময় সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছ থেকে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের তালিকা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের দলীয় পদধারী অনেক ইউপি চেয়ারম্যান অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তালিকা দেওয়ায় সঠিক লোক বাছাই করা সম্ভব হয়নি। এখন সবাইকে ২ শতাংশ জমির রেজিস্ট্রিকৃত দলীলসহ ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তাই খালি ঘরগুলোর বরাদ্দ বাতিল করতে হলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তিনি যোগদানের বহু আগে এসব ঘরের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বহু ঘরে বরাদ্দ প্রাপ্তরা থাকেনা বলে তিনিও অভিযোগ পেয়েছেন। এ বিষয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।