ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদের ইউনিয়ন বমুবিলছড়িতে সুপারি চুরির অপবাদে গ্রাম্য বিচারে মারধর ঘটনার পর অপমান সইতে না পেরে ওমর ফারুক বাবু (১৭) নামের এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। গতকাল শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাইট্টাটিলা পাড়ায় নিজবাড়ির পেছনে দোকানে ঘটেছে ওই কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনা। নিহত ফারুক বাবু ওই এলাকার বশির আহমদের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে নিজের বাড়ি লাগোয়া দোকানের পেছনের বারান্দায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে কিশোর ফারুক বাবু। বাড়ির পেছনে প্রথমে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাবুর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। পরে স্বজনরা দ্রুত এগিয়ে এসে ফারুক বাবুকে উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মরদেহ হাসপাতালে লামা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। শুক্রবার রাতে মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতির জন্য নিহতের স্বজনরা চকরিয়া থানায় এসেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে মাইট্টাটিলা পাড়ার এরশাদ মিস্ত্রির দোকানে সুপারি চুরির অভিযোগে একটি তথাকথিত সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফি, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হোসেন, বাবুর পিতা বশির আহমদসহ কয়েকজন।
অভিযোগ ওঠে, ওই বৈঠকে বাবুকে জনসম্মুখে মারধর করা হয়। সালিশে সর্দার হিসেবে এরশাদ মিস্ত্রি ও মানিক মিয়াও ছিলেন। গতকাল শুক্রবার রাত এগারোটায় চকরিয়া থানায় নিহতের মা আয়েশা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে গ্রামের লোকজন সবাই মিলে সবার সামনে মারধর করেছে, অপমান করেছে। এই লজ্জা সহ্য করতে না পেরে অপমানে আমার ছেলে মৃত্যুর পথ বেঁচে নিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসির মাঝে শোকের ছায়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুপারি চুরির অপবাদে বৈঠকে বসা গ্রাম্য বিচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। নিহতের পিতা-মাতাসহ ওই এলাকার কয়েকজন থানায় এসেছেন। প্রাথমিকভাবে তাদের বরাতে জানা গেছে, ছেলেটি এলাকায় কিছু খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করতো। এ কারণে মা-বাবা তাঁকে বকা দেন। এ অবস্থায় অভিমান করে ওই কিশোর আত্মহত্যা করেছে বলে তারা জানিয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু মরদেহ লামা থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে, তাই লামা থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি জনপদের ইউনিয়ন বমুবিলছড়িতে সুপারি চুরির অপবাদে গ্রাম্য বিচারে মারধর ঘটনার পর অপমান সইতে না পেরে ওমর ফারুক বাবু (১৭) নামের এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে। গতকাল শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাইট্টাটিলা পাড়ায় নিজবাড়ির পেছনে দোকানে ঘটেছে ওই কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনা। নিহত ফারুক বাবু ওই এলাকার বশির আহমদের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকাল তিনটার দিকে নিজের বাড়ি লাগোয়া দোকানের পেছনের বারান্দায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে কিশোর ফারুক বাবু। বাড়ির পেছনে প্রথমে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাবুর মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। পরে স্বজনরা দ্রুত এগিয়ে এসে ফারুক বাবুকে উদ্ধার করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মরদেহ হাসপাতালে লামা থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। শুক্রবার রাতে মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতির জন্য নিহতের স্বজনরা চকরিয়া থানায় এসেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে মাইট্টাটিলা পাড়ার এরশাদ মিস্ত্রির দোকানে সুপারি চুরির অভিযোগে একটি তথাকথিত সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য শফি, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হোসেন, বাবুর পিতা বশির আহমদসহ কয়েকজন।
অভিযোগ ওঠে, ওই বৈঠকে বাবুকে জনসম্মুখে মারধর করা হয়। সালিশে সর্দার হিসেবে এরশাদ মিস্ত্রি ও মানিক মিয়াও ছিলেন। গতকাল শুক্রবার রাত এগারোটায় চকরিয়া থানায় নিহতের মা আয়েশা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে গ্রামের লোকজন সবাই মিলে সবার সামনে মারধর করেছে, অপমান করেছে। এই লজ্জা সহ্য করতে না পেরে অপমানে আমার ছেলে মৃত্যুর পথ বেঁচে নিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসির মাঝে শোকের ছায়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সুপারি চুরির অপবাদে বৈঠকে বসা গ্রাম্য বিচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। নিহতের পিতা-মাতাসহ ওই এলাকার কয়েকজন থানায় এসেছেন। প্রাথমিকভাবে তাদের বরাতে জানা গেছে, ছেলেটি এলাকায় কিছু খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করতো। এ কারণে মা-বাবা তাঁকে বকা দেন। এ অবস্থায় অভিমান করে ওই কিশোর আত্মহত্যা করেছে বলে তারা জানিয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু মরদেহ লামা থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে, তাই লামা থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।