যশোর: চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদনে যশোরের কেশবপুরে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে -সংবাদ
চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদনে যশোরের কেশবপুরে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলার সাড়ে ৪ হাজার মাছের ঘের ও পুকুরে অতিরিক্ত মাছের উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩১ হাজার টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৫৮০ কোটি টাকা। উৎপাদিত মাছ কেশবপুরের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখছে। গত কয়েক দশক ধরে এ উপজেলা মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলার পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে ছোট বড় মাছের ঘের রয়েছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ৪ হাজার ৬৫৮টি মৎস্য ঘের ও ৬ হাজার ৬৪০টি পুকুরে মাছ চাষ হয়। এরমধ্যে সাধারণ ঘের রয়েছে ২ হাজার ৮৪২টি। যার আয়তন ৫ হাজার ৩৯১ হেক্টর ও বাণিজ্যিক ঘের রয়েছে ৫১৭টি। যার আয়তন ১ হাজার ২২৫ হেক্টর ও ৬ হাজার ৬৪০টি পুকুরের আয়তন ৬৯৮ হেক্টর জমি। হাজার হাজার শ্রমিক মৎস্য ঘের ও মাছ উৎপাদন কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এছাড়া, কয়েক হাজার জেলে সম্প্রদায়ের লোক এ পেশায় নিয়োজিত। তারা এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবনযাপণ করে থাকেন।
অন্যদিকে, গলদা চিংড়ির ঘের রয়েছে ৬৬১টি। যার অধিকাংশই সুফলাকাটি ও গৌরীঘোনা ইউনিয়নে অবস্থিত। যার আয়তন ৫১৫ হেক্টর, বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে ৬৩৮টি। যার আয়তন ৩১৫ হেক্টর জমি। চলতি বছর রুই, কাতলা, পাবদাসহ সাদা মাছ উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৫৭৫ মেট্রিকটন। উৎপাদিত মাছের মূল্য ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া, চিংড়ি মাছ উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৪০০ মেট্রিকটন ও বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ২৬৫ মেট্রিকটন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ কোটি টাকা।
এবছর মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, ২৭ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন। সেখানে ৫০০ মেট্রিকটন মাছ বেশি উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে কেশবপুরের চাহিদা রয়েছে, ৬ হাজার মেট্রিকটন। অবশিষ্ট মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে রপ্তানী করা হয়। গলদা, বাগদা চিংড়ি ও পাবদা মাছ ইউরোপসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। এউপজেলার উৎপাদিত মাছ আমিষের চাহিদা পূরণসহ দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। এছাড়া, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬০২টি মৎস্য ঘেরে ২৯ হাজার ১২২ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়।
মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বিশ্বাস ও সেলিমুজ্জামান আসাদ বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ী ও চাষিরা সরকারের প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা পেলে মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। কেশবপুর পাইকারী মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হান্নান বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর মাছের উৎপাদন বেশি হওয়ায় আড়তেও মাছের মজুদ ছিল প্রচুর। মাছের বাজার মূল্যও ভালো। এ উপজেলার উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়েছে। মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, এলাকার মৎস্য চাষিদের সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে কয়েক দশক ধরে মাছ উৎপাদনে কেশবপুর উপজেলা এতদাঞ্চলের মধ্যে শীর্ষে আবস্থান করছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মাছের উৎপাদন বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
যশোর: চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদনে যশোরের কেশবপুরে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে -সংবাদ
রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
চিংড়ি ও সাদা মাছ উৎপাদনে যশোরের কেশবপুরে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলার সাড়ে ৪ হাজার মাছের ঘের ও পুকুরে অতিরিক্ত মাছের উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩১ হাজার টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৫৮০ কোটি টাকা। উৎপাদিত মাছ কেশবপুরের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখছে। গত কয়েক দশক ধরে এ উপজেলা মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলার পাঁজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে ছোট বড় মাছের ঘের রয়েছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ৪ হাজার ৬৫৮টি মৎস্য ঘের ও ৬ হাজার ৬৪০টি পুকুরে মাছ চাষ হয়। এরমধ্যে সাধারণ ঘের রয়েছে ২ হাজার ৮৪২টি। যার আয়তন ৫ হাজার ৩৯১ হেক্টর ও বাণিজ্যিক ঘের রয়েছে ৫১৭টি। যার আয়তন ১ হাজার ২২৫ হেক্টর ও ৬ হাজার ৬৪০টি পুকুরের আয়তন ৬৯৮ হেক্টর জমি। হাজার হাজার শ্রমিক মৎস্য ঘের ও মাছ উৎপাদন কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এছাড়া, কয়েক হাজার জেলে সম্প্রদায়ের লোক এ পেশায় নিয়োজিত। তারা এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে জীবনযাপণ করে থাকেন।
অন্যদিকে, গলদা চিংড়ির ঘের রয়েছে ৬৬১টি। যার অধিকাংশই সুফলাকাটি ও গৌরীঘোনা ইউনিয়নে অবস্থিত। যার আয়তন ৫১৫ হেক্টর, বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে ৬৩৮টি। যার আয়তন ৩১৫ হেক্টর জমি। চলতি বছর রুই, কাতলা, পাবদাসহ সাদা মাছ উৎপাদন হয়েছে ২৭ হাজার ৫৭৫ মেট্রিকটন। উৎপাদিত মাছের মূল্য ৫২০ কোটি টাকা। এছাড়া, চিংড়ি মাছ উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৪০০ মেট্রিকটন ও বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে ২৬৫ মেট্রিকটন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ কোটি টাকা।
এবছর মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, ২৭ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন। সেখানে ৫০০ মেট্রিকটন মাছ বেশি উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে কেশবপুরের চাহিদা রয়েছে, ৬ হাজার মেট্রিকটন। অবশিষ্ট মাছ ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে রপ্তানী করা হয়। গলদা, বাগদা চিংড়ি ও পাবদা মাছ ইউরোপসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়। এউপজেলার উৎপাদিত মাছ আমিষের চাহিদা পূরণসহ দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখছে। এছাড়া, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬০২টি মৎস্য ঘেরে ২৯ হাজার ১২২ মেট্রিকটন মাছ উৎপাদন হয়।
মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বিশ্বাস ও সেলিমুজ্জামান আসাদ বলেন, মৎস্য ব্যবসায়ী ও চাষিরা সরকারের প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা পেলে মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। কেশবপুর পাইকারী মৎস্য আড়ৎ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হান্নান বিশ্বাস বলেন, চলতি বছর মাছের উৎপাদন বেশি হওয়ায় আড়তেও মাছের মজুদ ছিল প্রচুর। মাছের বাজার মূল্যও ভালো। এ উপজেলার উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়েছে। মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, এলাকার মৎস্য চাষিদের সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে কয়েক দশক ধরে মাছ উৎপাদনে কেশবপুর উপজেলা এতদাঞ্চলের মধ্যে শীর্ষে আবস্থান করছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মাছের উৎপাদন বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।