ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নাটোরের লালপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমন ধান দেশের অনেক এলাকার প্রধান ফসল বলা যায়, যার ফলন কার্তিক-অগ্রহায়ণে পাওয়া যায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের শীষে কৃষকদের স্বপ্ন যেন ঝলমল করছে।
অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ পাওয়ায় এ বছর আমন আবাদ অত্যন্ত সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার অধিকাংশ এলাকার জমিতে আমন ধান হলুদ বর্ন ধারণ করেছে। আগামী ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হবে। তবে কিছু কিছু এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান কাটা পুরোদমে শুরু হবে বলে স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে এখন পরিপূর্ণ তৃপ্তির হাসি।
মোহরকয়া গ্রামের লিটন উদ্দিন (৪৫) তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, এবারের ফসল খুবই ভালো হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকায় কোনো ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণও হয়নি। কৃষি বিভাগ আরও জানিয়েছে, আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পরপরই তারা রবি ফসলের আবাদের প্রস্তুতি শুরু করবে। এবারের এই বাম্পার ফলন স্থানীয় কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বস্তি দেবে এবং এর ইতিবাচক প্রভাব স্থানীয় অর্থনীতিতেও পড়বে বলে কৃষি বিভাগ দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নেই বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে এবং আমরা আশা করছি, উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা এবার ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় জানান এবার ৯ হাজার ১শ ৮৫ হেক্টর জমিতে আমনে ধানের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল খুবই কম। কৃষকরা প্রয়োজনীয় সার ও বীজ পাওয়ায় চাষাবাদে তাদের কোনো বেগ পেতে হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি জানান।
এখন প্রকৃতি যদি সহায়ক হয় তবে কৃষক তার আমন ফসল ঘরে নিতে পারবে। শুরু হবে হেমন্তের নবান্ন উৎসব। এই উৎসব হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। নবান্ন শব্দটির সঙ্গে নতুন ধান ওঠার সম্পর্ক রয়েছে। কিষান-কিষানিদের সব হাসি-কান্নার অবসান ঘটিয়ে অগ্রহায়ণের নতুন আমন ধান ঘরে উঠানোর কাজের মাঝে খুঁজে পায় অপার আনন্দ। গ্রাম বাংলায় নতুন এক আবহের সৃষ্টি হয়। নবান্ন উৎসব যেন সব দুঃখ-কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। প্রাচীনকাল থেকেই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নবান্নকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতি উৎসবে মেতে ওঠে। একে অন্যের মধ্যে তৈরি হয় সামাজিক সুসম্পর্ক, সম্প্রীতি আর ভালোবাসা। এ উৎসবকে ঘিরে সনাতনী সম্প্রদায়ের আছে নানা রকম লৌকিক পার্বণ বিধি।
কার্তিক মাসের শুরুতেই কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধানে পূর্ণ হতে থাকে। কৃষক-কৃষাণিরা ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো এবং এরপর সেই ধান ঢেঁকিতে ছেঁটে বহুবিধ পিঠা-পায়েস ইত্যাদি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
নাটোরের লালপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমন ধান দেশের অনেক এলাকার প্রধান ফসল বলা যায়, যার ফলন কার্তিক-অগ্রহায়ণে পাওয়া যায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের শীষে কৃষকদের স্বপ্ন যেন ঝলমল করছে।
অনুকূল আবহাওয়া, সময়মতো বৃষ্টিপাত এবং কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ পাওয়ায় এ বছর আমন আবাদ অত্যন্ত সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, উপজেলার অধিকাংশ এলাকার জমিতে আমন ধান হলুদ বর্ন ধারণ করেছে। আগামী ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হবে। তবে কিছু কিছু এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান কাটা পুরোদমে শুরু হবে বলে স্হানীয় সূত্রে জানা গেছে। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে এখন পরিপূর্ণ তৃপ্তির হাসি।
মোহরকয়া গ্রামের লিটন উদ্দিন (৪৫) তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, এবারের ফসল খুবই ভালো হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশি। আবহাওয়া ভালো থাকায় কোনো ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণও হয়নি। কৃষি বিভাগ আরও জানিয়েছে, আমন মৌসুম শেষ হওয়ার পরপরই তারা রবি ফসলের আবাদের প্রস্তুতি শুরু করবে। এবারের এই বাম্পার ফলন স্থানীয় কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বস্তি দেবে এবং এর ইতিবাচক প্রভাব স্থানীয় অর্থনীতিতেও পড়বে বলে কৃষি বিভাগ দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।
উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নেই বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে এবং আমরা আশা করছি, উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা এবার ছাড়িয়ে যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় জানান এবার ৯ হাজার ১শ ৮৫ হেক্টর জমিতে আমনে ধানের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণও ছিল খুবই কম। কৃষকরা প্রয়োজনীয় সার ও বীজ পাওয়ায় চাষাবাদে তাদের কোনো বেগ পেতে হয়নি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি জানান।
এখন প্রকৃতি যদি সহায়ক হয় তবে কৃষক তার আমন ফসল ঘরে নিতে পারবে। শুরু হবে হেমন্তের নবান্ন উৎসব। এই উৎসব হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। নবান্ন শব্দটির সঙ্গে নতুন ধান ওঠার সম্পর্ক রয়েছে। কিষান-কিষানিদের সব হাসি-কান্নার অবসান ঘটিয়ে অগ্রহায়ণের নতুন আমন ধান ঘরে উঠানোর কাজের মাঝে খুঁজে পায় অপার আনন্দ। গ্রাম বাংলায় নতুন এক আবহের সৃষ্টি হয়। নবান্ন উৎসব যেন সব দুঃখ-কষ্ট ভুলিয়ে দেয়। প্রাচীনকাল থেকেই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে নবান্নকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতি উৎসবে মেতে ওঠে। একে অন্যের মধ্যে তৈরি হয় সামাজিক সুসম্পর্ক, সম্প্রীতি আর ভালোবাসা। এ উৎসবকে ঘিরে সনাতনী সম্প্রদায়ের আছে নানা রকম লৌকিক পার্বণ বিধি।
কার্তিক মাসের শুরুতেই কৃষকের ঘরে ঘরে নতুন ধানে পূর্ণ হতে থাকে। কৃষক-কৃষাণিরা ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো এবং এরপর সেই ধান ঢেঁকিতে ছেঁটে বহুবিধ পিঠা-পায়েস ইত্যাদি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠে।