চলতি বছর আলু বিক্রি মৌসুমে দরপতনের কারণে গজারিয়ার আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের ঝুঁকির আশঙ্কায় রয়েছেন। আশানুরূপ ক্রেতা না থাকায় বিপুল পরিমান আলু রয়ে গেছে হিমাগারে। দুটি হিমাগারের শেড ও অভ্যন্তরীন চেম্বারে স্তুপাকারে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আলু।
আলু চাষী কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবী, “সরকারের বেধে দেয়া প্রতি কেজি ২২ টাকা দামে কেউ আলু কিনছে না, বাধ্য হয়ে ১২ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।“
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবী, গত আলু রোপণ মৌসুমে গজারিয়া উপজেলায় দুইসহস্রাধিক হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এর আগের বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় গত বছর উল্লিখিত পরিমান জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল, অনুকুল আবহাওয়ার কারণে হেক্টর প্রতি জমিতে আলুর ফলনও ছিল আশাতীত ভালো। সাধারণত, মাঘ ফাল্গুন মাসে কৃষক জমি থেকে আলু সংগ্রহ করে কিছু আলু বিক্রি করে অধিক পরিমান আলু পরবর্তী সময়ে বেশী দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে হিমাগারে সংরক্ষণ করে থাকেন। চলতি বছর আলু বিক্রয় মৌসুমে দরপতন ও ক্রেতা কম হওয়ায় বিপুল পরিমান আলু হিমাগারে আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা। সংশ্লষ্টি সুত্র জানায়,গজারিয়া উপজেলার মেঘনা মাল্টিপারপাসে ৮৫ হাজার বস্তা ও আলহাজ লাল মিয়া সপ্তমূখী খাদ্য প্রকল্প নামক হিমাগারে ৭৫ হাজার বস্তা (প্রতিবস্তায় ৫০ কেজি) এখনও রয়ে গেছে।
আলহাজ লাল মিয়া সপ্তমূখী খাদ্য প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো: মামুনুর রশীদ ও মেঘনা মাল্টি পারপাস হিমাগারের ব্যবস্থাপক মো: শাহাদাত হোসেন মিলন গত বৃহস্পতিবার সংবাদকে জানান, দুটি হিমাগারেই ধারন ক্ষমতার অর্ধকেরও বেশী পরিমান আলু এখনও রয়ে গেছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তি চলতি নভেম্বর মাসেই শেষ, মৌসুম শেষে এতো বিশাল পরিমান আলু নিয়ে কৃষক পড়েছেন মহা-বিপাকে। আলু চাষী কৃষক আক্তার হোসেনসহ কয়েকজন ও সংশ্লিষ্ট আলু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর আলু বিক্রি মৌসুমে আলুর অত্যাধিক দর পতনের কারণে তারা আর্থিক ভাবে লোকসানের ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।তারপর মৌসুমের শেষ পর্যায়ে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর তিন ভাগের দুই ভাগ হিমাগোরে অবিক্রিত পড়ে থাকায় রাতের ঘুম উধাও হয়ে গেছে। তাদের একটাই প্রশ্ন! আমরা এতো আলু আমরা কী করবো? গত বৃহস্পতিবারবার কয়েক জন আলু চাষী ও ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়। তাদের মধ্যে উপজেলার মাথাভাঙ্গা গ্রামের আলু চাষী আব্দুল খালেক ব্যাপারী, গত রোপণ মৌসুমে ১১ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করে প্রতি বিঘায় বীজ সার ও জমির পরিচর্যা মিলিয়ে একুনে প্রতি বিঘায় ব্যয় হয়েছিল ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা, প্রতি বিঘায় আলুর ফলন ছিল ৫০ থেকে ৫৮ বস্তা( প্রতি বস্তায় ৫০কেজি হিসাব) তাহলে গড়ে প্রতিবস্তা আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছিল গড়ে ১ হাজার টাকা। আট থেকে দশ মাস প্রতি বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষন ব্যয় ৩শ’ টাকা যোগ করলে দশমাস পর ১৩শ’ টাকার আলুর প্রতি বস্তা বিক্রি করতে হচ্ছে ২ শ’ থেকে ২শ‘ ৫০টাকায়। এতে করে প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হচ্ছে হাজার টাকা অধিক।
একই কথা বললেন করিম খাঁ গ্রামের আলু চাষী মিনটু মিয়া ,তিনি বলেন, নিজে জমির উৎপাদিত ও ক্রয় করে মুনাফার আশায় হিমাগারে ৩ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করেছিলেন তিনি। দরপতনের পর ৪০ লাখ টাকা লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা সদরে অবস্থিত “মেঘনা মাল্টিপারপাস হিমাগার” এর ব্যবস্হাপক মো, সাহাদাত হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের ধারন ক্ষমতা ১০ হাজার মে.টন অর্থাৎ ১ লাখ ৮৯ হাজার বস্তা। গত বছর আলুর উৎপাদন ভালো হওয়ায়, ১ লাখ ৯০ হাজর বস্তা আলু সংরক্ষিত ছিল হিমাগারে। রসুলপুর এলাকায় অবস্থিত অপর একটি হিমাগারে সংরক্ষন করা হয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার বস্তা আলু। কিন্তু আলুর দাম নিম্নমুখী হওয়ায় এখন লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। জানা যায়, উপজেলায় আল হাজ লাল মিয়া সপ্তমুখী খাদ্য প্রকল্প ও মেঘনা মাল্টিপারপাস নামে দুটি হিমাগার রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, মাথাভাঙা ও রসুলপুর এলাকার দুটি হিমাগারের শেডের মেঝেতে বিছানো শত শত মণ আলু, ভেতরে মজুত করা রয়েছে বস্তায় বস্তায়। শেডে নারী শিশুসহ নানা বয়সী শ্রমিকলরা পঁচে যাওয়া আলু বাছাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় ২ হাজার ৪হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উৎপাদন হয়েছিল ৬২ হাজার ৬৫৩ মেট্রিক টন।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার দুটি হিমাগারের একই চিত্র। বিক্রিতে ভাটা পড়ায় সময়ের সঙ্গে হিমাগার থেকে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে আলু যাচ্ছে না খুচরা বাজারে। এর মধ্যে আসছে আলু আবাদের মৌসুম। তাই মজুত এই বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তারা আরও বলছেন, খুচরা বাজারে ভালো দাম থাকলেও হিমাগার পর্যায়ে মিলছে না ন্যায্যমূল্য। প্রতি কেজি আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণে ব্যয় ২৫-৩০টাকা। বর্তমানে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১২থেকে ১৪ টাকায়। এতে কেজিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। তাই ভারী হচ্ছে লোকসানের পাল্লা। কয়েকজন আলু চাষী বলেন, গত আলু রোপণ মৌসুমে অধওক পরিমান বৃষ্টিপাত হওয়ায় অধিকাংশ জমিতে রোপণ করা বীজ আলু পচে যাওয়ায় ধারদেনা করে জমিতে দ্বিতীয় দফায় বীজ দিতে খরচ দ্বিগুণ হয়েছিল।
হিমাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি মৌসুমেএই সময়ের মধ্যে হিমাগারের তিন ভাগের দুই ভাগ আলু বের হয়ে যায়। কিন্তু এবার তিন ভাগের দুই ভাগ আলু এখনও হিমাগারে রয়ে গেছে, কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমরা হিমাগার ভাড়াও কমিয়েছি এবং মানবিক কারণে চুক্তির মেয়াদ শেষে নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের পর আরো মাস খানেক সময় আলু গুদামে রাখার সুযোগ দেয়ার চিন্তা করছি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক বলেন, আগামী মৌসুমে আলু বীজের দাম আনুপাতিক হারে কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ,সার পর্যাপ্ত মওজুদ রয়েছে নির্ধারিত মুল্যে তা পাবে কৃষক যে কারণে আগামী মৌসুমে আলু চাষের পরিমান কমবে না বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
চলতি বছর আলু বিক্রি মৌসুমে দরপতনের কারণে গজারিয়ার আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের ঝুঁকির আশঙ্কায় রয়েছেন। আশানুরূপ ক্রেতা না থাকায় বিপুল পরিমান আলু রয়ে গেছে হিমাগারে। দুটি হিমাগারের শেড ও অভ্যন্তরীন চেম্বারে স্তুপাকারে ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আলু।
আলু চাষী কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দাবী, “সরকারের বেধে দেয়া প্রতি কেজি ২২ টাকা দামে কেউ আলু কিনছে না, বাধ্য হয়ে ১২ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।“
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবী, গত আলু রোপণ মৌসুমে গজারিয়া উপজেলায় দুইসহস্রাধিক হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। এর আগের বছর আলুর দাম ভালো পাওয়ায় গত বছর উল্লিখিত পরিমান জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল, অনুকুল আবহাওয়ার কারণে হেক্টর প্রতি জমিতে আলুর ফলনও ছিল আশাতীত ভালো। সাধারণত, মাঘ ফাল্গুন মাসে কৃষক জমি থেকে আলু সংগ্রহ করে কিছু আলু বিক্রি করে অধিক পরিমান আলু পরবর্তী সময়ে বেশী দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে হিমাগারে সংরক্ষণ করে থাকেন। চলতি বছর আলু বিক্রয় মৌসুমে দরপতন ও ক্রেতা কম হওয়ায় বিপুল পরিমান আলু হিমাগারে আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন চাষী ও ব্যবসায়ীরা। সংশ্লষ্টি সুত্র জানায়,গজারিয়া উপজেলার মেঘনা মাল্টিপারপাসে ৮৫ হাজার বস্তা ও আলহাজ লাল মিয়া সপ্তমূখী খাদ্য প্রকল্প নামক হিমাগারে ৭৫ হাজার বস্তা (প্রতিবস্তায় ৫০ কেজি) এখনও রয়ে গেছে।
আলহাজ লাল মিয়া সপ্তমূখী খাদ্য প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো: মামুনুর রশীদ ও মেঘনা মাল্টি পারপাস হিমাগারের ব্যবস্থাপক মো: শাহাদাত হোসেন মিলন গত বৃহস্পতিবার সংবাদকে জানান, দুটি হিমাগারেই ধারন ক্ষমতার অর্ধকেরও বেশী পরিমান আলু এখনও রয়ে গেছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তি চলতি নভেম্বর মাসেই শেষ, মৌসুম শেষে এতো বিশাল পরিমান আলু নিয়ে কৃষক পড়েছেন মহা-বিপাকে। আলু চাষী কৃষক আক্তার হোসেনসহ কয়েকজন ও সংশ্লিষ্ট আলু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর আলু বিক্রি মৌসুমে আলুর অত্যাধিক দর পতনের কারণে তারা আর্থিক ভাবে লোকসানের ঝুঁকির মুখে রয়েছেন।তারপর মৌসুমের শেষ পর্যায়ে হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর তিন ভাগের দুই ভাগ হিমাগোরে অবিক্রিত পড়ে থাকায় রাতের ঘুম উধাও হয়ে গেছে। তাদের একটাই প্রশ্ন! আমরা এতো আলু আমরা কী করবো? গত বৃহস্পতিবারবার কয়েক জন আলু চাষী ও ব্যবসায়ীর সাথে কথা হয়। তাদের মধ্যে উপজেলার মাথাভাঙ্গা গ্রামের আলু চাষী আব্দুল খালেক ব্যাপারী, গত রোপণ মৌসুমে ১১ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করে প্রতি বিঘায় বীজ সার ও জমির পরিচর্যা মিলিয়ে একুনে প্রতি বিঘায় ব্যয় হয়েছিল ৫০ থেকে ৫২ হাজার টাকা, প্রতি বিঘায় আলুর ফলন ছিল ৫০ থেকে ৫৮ বস্তা( প্রতি বস্তায় ৫০কেজি হিসাব) তাহলে গড়ে প্রতিবস্তা আলুর উৎপাদন খরচ পড়েছিল গড়ে ১ হাজার টাকা। আট থেকে দশ মাস প্রতি বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষন ব্যয় ৩শ’ টাকা যোগ করলে দশমাস পর ১৩শ’ টাকার আলুর প্রতি বস্তা বিক্রি করতে হচ্ছে ২ শ’ থেকে ২শ‘ ৫০টাকায়। এতে করে প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হচ্ছে হাজার টাকা অধিক।
একই কথা বললেন করিম খাঁ গ্রামের আলু চাষী মিনটু মিয়া ,তিনি বলেন, নিজে জমির উৎপাদিত ও ক্রয় করে মুনাফার আশায় হিমাগারে ৩ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করেছিলেন তিনি। দরপতনের পর ৪০ লাখ টাকা লোকসানের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা সদরে অবস্থিত “মেঘনা মাল্টিপারপাস হিমাগার” এর ব্যবস্হাপক মো, সাহাদাত হোসেন জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের ধারন ক্ষমতা ১০ হাজার মে.টন অর্থাৎ ১ লাখ ৮৯ হাজার বস্তা। গত বছর আলুর উৎপাদন ভালো হওয়ায়, ১ লাখ ৯০ হাজর বস্তা আলু সংরক্ষিত ছিল হিমাগারে। রসুলপুর এলাকায় অবস্থিত অপর একটি হিমাগারে সংরক্ষন করা হয়েছিল ১ লাখ ২৫ হাজার বস্তা আলু। কিন্তু আলুর দাম নিম্নমুখী হওয়ায় এখন লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। জানা যায়, উপজেলায় আল হাজ লাল মিয়া সপ্তমুখী খাদ্য প্রকল্প ও মেঘনা মাল্টিপারপাস নামে দুটি হিমাগার রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, মাথাভাঙা ও রসুলপুর এলাকার দুটি হিমাগারের শেডের মেঝেতে বিছানো শত শত মণ আলু, ভেতরে মজুত করা রয়েছে বস্তায় বস্তায়। শেডে নারী শিশুসহ নানা বয়সী শ্রমিকলরা পঁচে যাওয়া আলু বাছাইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে এ উপজেলায় ২ হাজার ৪হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আলু উৎপাদন হয়েছিল ৬২ হাজার ৬৫৩ মেট্রিক টন।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার দুটি হিমাগারের একই চিত্র। বিক্রিতে ভাটা পড়ায় সময়ের সঙ্গে হিমাগার থেকে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে আলু যাচ্ছে না খুচরা বাজারে। এর মধ্যে আসছে আলু আবাদের মৌসুম। তাই মজুত এই বিপুল পরিমাণ আলু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তারা আরও বলছেন, খুচরা বাজারে ভালো দাম থাকলেও হিমাগার পর্যায়ে মিলছে না ন্যায্যমূল্য। প্রতি কেজি আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণে ব্যয় ২৫-৩০টাকা। বর্তমানে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১২থেকে ১৪ টাকায়। এতে কেজিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। তাই ভারী হচ্ছে লোকসানের পাল্লা। কয়েকজন আলু চাষী বলেন, গত আলু রোপণ মৌসুমে অধওক পরিমান বৃষ্টিপাত হওয়ায় অধিকাংশ জমিতে রোপণ করা বীজ আলু পচে যাওয়ায় ধারদেনা করে জমিতে দ্বিতীয় দফায় বীজ দিতে খরচ দ্বিগুণ হয়েছিল।
হিমাগার সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি মৌসুমেএই সময়ের মধ্যে হিমাগারের তিন ভাগের দুই ভাগ আলু বের হয়ে যায়। কিন্তু এবার তিন ভাগের দুই ভাগ আলু এখনও হিমাগারে রয়ে গেছে, কৃষকদের কথা চিন্তা করে আমরা হিমাগার ভাড়াও কমিয়েছি এবং মানবিক কারণে চুক্তির মেয়াদ শেষে নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের পর আরো মাস খানেক সময় আলু গুদামে রাখার সুযোগ দেয়ার চিন্তা করছি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল আরাফাত বিন সিদ্দিক বলেন, আগামী মৌসুমে আলু বীজের দাম আনুপাতিক হারে কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ,সার পর্যাপ্ত মওজুদ রয়েছে নির্ধারিত মুল্যে তা পাবে কৃষক যে কারণে আগামী মৌসুমে আলু চাষের পরিমান কমবে না বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।