ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করে সকলের নজর কেড়েছে ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আওলাতলী গ্রামের মরহুম শুক্কুর আলীর ছেলে প্রবাস ফেরৎ মোঃ আক্তার হোসেন। অল্প জমিতে তার এ পদ্ধতির আদা চাষের সাফল্যে এলাকার অন্যান্য কৃষক ও বেকার তরুনরাও অনুপ্রাণিত হয়ে আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
১৫ নভেম্বর শনিবার সরজমিন আ্ওলাতলী গ্রামে গেলে আদা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত আক্তার হোসেনের কাছ থেকে জানাযায় প্রবাস থেকে ফিরে কি ভাবে তিনি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। সামান্য লেখাপড়া জানা আক্তার হোসেন জীবনের শুরুতে স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন দোকানে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিদের সাথে কাজ করে ওয়েল্ডিংয়ে দক্ষতা অর্জণ করেন। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ ও উন্নত জীবন লাভের আশায় ২০০৭ সালে পাড়ি জমান সিঙ্গাপুরে। দীর্ঘ ১০ বছর প্রবাস জীবন শেষে ২০১৭ সালে দেশে ফিরে নিজ এলাকায় সীডষ্টোর বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা করলেও কৃষি কাজের প্রতি তার আগ্রহ ছিল ছোট বেলা থেকেই। বর্তমানে কৃষি পন্যের মাঝে আদার চাহিদা ও বাজার মূল্য বেশী ও লাভ জনক হওয়ায় ইউটিউব দেখে বস্তায় আদা চাষের ধারনা নিয়ে তিনি এ পদ্ধতিতে আবাদ শুরু করেন। চলতি মৌসুমে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সাড়ে ৫ কাঠা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে সাড়ে ৪ হাজার বস্তায় আদা বীজ বপন করেন। এপ্রিল মে মাসে লাগানো বীজ হতে কয়েক মাসের মধ্যেই সবুজ পাতায় ভরে উঠে আক্তারের আদা ক্ষেত। ফলন ভাল হওয়ায় বড় হওয়া আদার চাপে অনেক বস্তা ফেটে গেছে। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে সুফল পেয়েছেন। তিনি জানান বস্তা তৈরী,বীজ ক্রয় ও রোপন, সার,কীটনাশক, সেচ ও আগাছা পরিষ্কার বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৮১ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। ডিসেম্বর বা জানুয়ারীতে ফসল উঠানোর সময় পর্যন্ত আরও ৫০ হাজার টাকার মত খরচ হতে পারে। তিনি আশা করছেন সাড়ে ৫ কাঠা জমি হতে কমপক্ষে পাঁচ মেট্রিক টন আদা উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি কেজি আদা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে তার ৫ লাখ টাকার মত মুনাফা আসতে পারে বলে আশা করছেন। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান প্রতিটি বস্তায় চুন,জৈব সার ও কাঠের গুড়া মিশিয়ে মাটি তৈরী করে বীজ বপন করেন। প্রথমে পানি সেচ দিয়ে এক সপ্তাহ রাখার পর বীজ বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় চারা গজানো শুরু করে। দুই মাস পর সার দেওয়া হয়েছে, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক স্প্রে করেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা করায় গাছগুলি সতেজ রয়েছে। উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের পাড়াগাঁও কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান বস্তায় আদা চাষের বিশেষ সুবিধা হলো এ পদ্ধতিতে ছত্রাক আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে অপরদিকে অতি বৃষ্টিতেও আদা পচেনা। জমিতে আদা আবাদ করার চেয়ে বস্তায় আবাদ করা অনেক বেশী লাভ জনক। তাছারা অল্প জায়গায় বেশী ফলন পাওয়া সম্ভব। বাসা বাড়ীর ছাদের উপর বস্তায় আদা চাষ করে প্রত্যেকেই নিজেদের চাহিদা মিটাতে পারে। আক্তার হোসেনের সফলতা দেখে অনেকেই এখন জমিতে চাষ না করে বস্তায় আদা চাষে যুক্ত হচ্ছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করে সকলের নজর কেড়েছে ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আওলাতলী গ্রামের মরহুম শুক্কুর আলীর ছেলে প্রবাস ফেরৎ মোঃ আক্তার হোসেন। অল্প জমিতে তার এ পদ্ধতির আদা চাষের সাফল্যে এলাকার অন্যান্য কৃষক ও বেকার তরুনরাও অনুপ্রাণিত হয়ে আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
১৫ নভেম্বর শনিবার সরজমিন আ্ওলাতলী গ্রামে গেলে আদা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত আক্তার হোসেনের কাছ থেকে জানাযায় প্রবাস থেকে ফিরে কি ভাবে তিনি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। সামান্য লেখাপড়া জানা আক্তার হোসেন জীবনের শুরুতে স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন দোকানে ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিদের সাথে কাজ করে ওয়েল্ডিংয়ে দক্ষতা অর্জণ করেন। পরবর্তীতে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ ও উন্নত জীবন লাভের আশায় ২০০৭ সালে পাড়ি জমান সিঙ্গাপুরে। দীর্ঘ ১০ বছর প্রবাস জীবন শেষে ২০১৭ সালে দেশে ফিরে নিজ এলাকায় সীডষ্টোর বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা করলেও কৃষি কাজের প্রতি তার আগ্রহ ছিল ছোট বেলা থেকেই। বর্তমানে কৃষি পন্যের মাঝে আদার চাহিদা ও বাজার মূল্য বেশী ও লাভ জনক হওয়ায় ইউটিউব দেখে বস্তায় আদা চাষের ধারনা নিয়ে তিনি এ পদ্ধতিতে আবাদ শুরু করেন। চলতি মৌসুমে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সাড়ে ৫ কাঠা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে সাড়ে ৪ হাজার বস্তায় আদা বীজ বপন করেন। এপ্রিল মে মাসে লাগানো বীজ হতে কয়েক মাসের মধ্যেই সবুজ পাতায় ভরে উঠে আক্তারের আদা ক্ষেত। ফলন ভাল হওয়ায় বড় হওয়া আদার চাপে অনেক বস্তা ফেটে গেছে। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে সুফল পেয়েছেন। তিনি জানান বস্তা তৈরী,বীজ ক্রয় ও রোপন, সার,কীটনাশক, সেচ ও আগাছা পরিষ্কার বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ৮১ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। ডিসেম্বর বা জানুয়ারীতে ফসল উঠানোর সময় পর্যন্ত আরও ৫০ হাজার টাকার মত খরচ হতে পারে। তিনি আশা করছেন সাড়ে ৫ কাঠা জমি হতে কমপক্ষে পাঁচ মেট্রিক টন আদা উৎপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি কেজি আদা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারলে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিক্রি হবে। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে তার ৫ লাখ টাকার মত মুনাফা আসতে পারে বলে আশা করছেন। চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান প্রতিটি বস্তায় চুন,জৈব সার ও কাঠের গুড়া মিশিয়ে মাটি তৈরী করে বীজ বপন করেন। প্রথমে পানি সেচ দিয়ে এক সপ্তাহ রাখার পর বীজ বপনের ২৫ থেকে ৩০ দিনের মাথায় চারা গজানো শুরু করে। দুই মাস পর সার দেওয়া হয়েছে, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক স্প্রে করেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা করায় গাছগুলি সতেজ রয়েছে। উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের পাড়াগাঁও কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান বস্তায় আদা চাষের বিশেষ সুবিধা হলো এ পদ্ধতিতে ছত্রাক আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে অপরদিকে অতি বৃষ্টিতেও আদা পচেনা। জমিতে আদা আবাদ করার চেয়ে বস্তায় আবাদ করা অনেক বেশী লাভ জনক। তাছারা অল্প জায়গায় বেশী ফলন পাওয়া সম্ভব। বাসা বাড়ীর ছাদের উপর বস্তায় আদা চাষ করে প্রত্যেকেই নিজেদের চাহিদা মিটাতে পারে। আক্তার হোসেনের সফলতা দেখে অনেকেই এখন জমিতে চাষ না করে বস্তায় আদা চাষে যুক্ত হচ্ছেন।