alt

সিপিডির আলোচনা

প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব নিয়েছে ভারত, এবার চায় ঢাকাই মসলিন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

অর্থ সত্য বা প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে টাঙ্গাইলের শাড়ীর স্বত্ত্ব নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। এবার দেশটি ঢাকাই মসলিন শাড়ীরও জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) বা ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে চেয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ‘বেঙ্গল মসলিন’ শিরোনামে এ আবেদন করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বাংলাদেশের ঢাকার মসলিন হিসেবে বিখ্যাত হলেও এটি ভারতের নিজস্ব পণ্য হিসেবে দেখানোর সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। সেখানে বাংলাদেশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য্য এসব তথ্য জানান। ‘টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি: প্রক্রিয়া, পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের করণীয়’ বিষয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও জানান, ‘শুধু মসলিনই নয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পণ্য ফজলি আম, লক্ষণ ভোগ, খিরসাপাতি আম, নকশি কাঁথা, রসগোল্লা, জামদানি শাড়ী, সুন্দরবনের মধুর স্বত্ত্ব তারা নিজেদের করে নিয়েছে।’ টাঙ্গাইল শাড়ির ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের প্রেক্ষাপটে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনকে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে মেধাস্বত্বের সব বিষয় দেশের ভেতরে ও বাইরে মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে সিপিডি।

সভায় ভারতের টাঙ্গাইল শাড়ির ডিআই রেজিস্ট্রেশন, কি ঘটেছে এবং বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘এখনও আমাদের হাতে সময় রয়েছে। প্রথম কাজ যেটি করতে হবে তা হলো ভারতীয় আইনে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে মামলা করতে হবে। একইসঙ্গে এই মামলা লড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ দিতে হবে।’

ভারতে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই আবেদনের নানা অসংগতি তুলে ধরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সেখানে বলা হয়েছে, দেশভাগের সময় টাঙ্গাইল থেকে হিন্দুদের তন্তুবায় সম্প্রদায় দেশত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় যায়। তারাই এই শাড়ি বানানোর সঙ্গে জড়িত। বাস্তবে টাঙ্গাইল অঞ্চলে দীর্ঘসময় ধরে শুধু হিন্দু নয় মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে এই শাড়ি বানায়। আর বাস্তবে হিন্দুদের চেয়ে এই শাড়ি উৎপাদনের সঙ্গে মুসলিমরাই বেশি জড়িত।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতির জন্য তার ভৌগোলিক উৎস, মান এবং সুরক্ষার বিষয় জড়িত। টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অনেকেই দেশ বিভাগের সময় পশ্চিমবঙ্গ চলে গেছেন। কিন্তু এই শাড়ির ভৌগোলিক পরিচয় তো তাতে পাল্টে যেতে পারে না। ভারতে এই শাড়িকে জিআই করতে গিয়ে প্রতারণামূলক তথ্যের ওপর আশ্রয় নেয়া হয়েছে।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ভারতের জিআই আইন অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে আপত্তি থাকলে তা করতে হবে। এখন বাংলাদেশের উচিত ভারতের আদালতে গিয়ে মামলা করা। এবং সেটা তিন মাসের মধ্যে করতে হবে। ভারত যেসব যুক্তিতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই করেছে, সেগুলো তথ্যনির্ভর নয়। সেগুলো ধোপে টিকবে না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাল্লাই ভারি। কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন হয়েছে ২০২০ সালে। এরপর চার বছর চলে গেছে। এসব তথ্য ওয়েবসাইটেই ছিল। কিন্তু এত দিন ধরে আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কী করল? শুধু সরকার নয়, ব্যবসায়িক গোষ্ঠীরাও কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। এটা আমাদের অজ্ঞতা ও ব্যর্থতা। কিন্তু এখন যেভাবে তাড়াহুড়া করে এর জিআই করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তা অমূলক। এত তাড়াহুড়ায় আমরা আবার ভুল করে বসতে পারি।’

বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু সমনামী এবং অভিন্ন পণ্য আছে। এসব পণ্যের জিআই নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশকে এগোতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয়। তিনি এসব পণ্যের ন্যায্য সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু আন্তর্জাতিক আইনের উল্লেখ করেন। এর মধ্যে আছে প্যারিস কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি (১৮৮৩), মাদ্রিদি এগ্রিমেন্ট অন ইনডিকেটর অব সোর্স (১৮৯১), লিসবনি এগ্রিমেন্ট ফর দ্য প্রোটেকশন অব অরিজিন অ্যান্ড দেয়ার ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন (১৯৫৮) এবং ডব্লিউটিওর বাণিজ্যবিষয়ক মেধাস্বত্ব আইন (ট্রিপস-১৯৯৪)।

অনুষ্ঠানে সিপিডির আরেক সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শুধু প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে মেধাস্বত্বসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিসে হারজিত নির্ধারিত হয়। তাই আমাদের সাবধানে এবং দক্ষতার সঙ্গে এগোতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট নাইমা জাহান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

ছবি

দেশে ‘চামচা পুঁজিবাদী’ অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: সিলেটে ড. দেবপ্রিয়

ছবি

দেশের বাজারে শাওমি ব্ল্যাকশার্ক ব্র্যান্ডের প্যাড ৭ নিয়ে এলো টেকটাইম

ছবি

জুলাই-সেপ্টেম্বরে শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি ৯ হাজার কোটি টাকা

ছবি

তিন দেশ থেকে এক লাখ মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার

ছবি

টানা রেকর্ডের পর কমলো স্বর্ণ-রুপার দাম

ছবি

আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ও সমাধান সার্ভিসেসের চুক্তি

ছবি

শিশুখাদ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিনের শর্ত শিথিল

ছবি

পুঁজিবাজারে গুজব ছড়াতে দেয়া যাবে না: আনিসুজ্জামান চৌধুরী

ছবি

রিজার্ভ ছাড়ালো ৩২ বিলিয়ন ডলার

ছবি

আইসিসিবিতে বাংলাদেশ-চীন গ্রিন টেক্সটাইল এক্সপো শুরু

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক করতে চায় প্রগতি লাইফ ইনস্যুরেন্স

ছবি

বেড়েছে ডলারের দাম

ছবি

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসি. এর ৪১৮তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

চার মাস পর ফের ৩০০ কোটি টাকার ঘরে শেয়ারবাজারের লেনদেন

ছবি

পুঁজিবাজারে শিবলী-রিয়াজ আজীবন নিষিদ্ধ

ছবি

দরপত্র ছাড়া ২৮ লাখ টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনবে সরকার

ছবি

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ ও জেনারেল হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে ওয়ালটনের স্মার্ট ইনভার্টার চিলার

ছবি

বিনিয়োগ ঝুঁকি ও সহনশীলতা সূচকে ১৯৩ তম অবস্থানে বাংলাদেশ: হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে এডিপি বাস্তবায়ন ৫ শতাংশ

ছবি

এলআর গ্লোবালের রিয়াজ ইসলাম শেয়ারবাজারে আজীবন নিষিদ্ধ

ছবি

আমদানি পণ্য ছাড় স্বাভাবিক হয়নি, ব্যবসায়ীরা কষছেন ক্ষতির হিসাব

ছবি

করাচি থেকে সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে: খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদন, চাল আমদানির অনুমতি সীমিত রাখার সুপারিশ

ছবি

বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার : বিডা চেয়ারম্যান

ছবি

দেশে একমাত্র মুনাফাকারী ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক: বিটিএমএ সভাপতি

ছবি

নোভার্টিসের ওষুধ উৎপাদন শুরু করল নেভিয়ান

ছবি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গঠন হচ্ছে শরিয়াহ উপদেষ্টা পর্ষদ

ছবি

কারচুপি নয়, পরিসংখ্যানে পরোক্ষ অপব্যবহার হয়: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

ছবি

নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়ার কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারীদের সম্মানী বাড়ল

ছবি

ঢাকায় তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী

ছবি

প্রাইম ব্যাংকের নতুন সিএফও হলেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন

ছবি

সূচকে বড় উত্থান হলেও লেনদেন তলানিতে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কর্মবিরতি স্থগিত

ছবি

অবলোপন করা ঋণ আদায়ের ৫ শতাংশ পাবেন কর্মকর্তারা

ছবি

ড্যাপ সংশোধনী ও ইমারত বিধিমালা নীতিগত অনুমোদন

ছবি

কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি: এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন

tab

সিপিডির আলোচনা

প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব নিয়েছে ভারত, এবার চায় ঢাকাই মসলিন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

অর্থ সত্য বা প্রতারণামূলক তথ্য দিয়ে টাঙ্গাইলের শাড়ীর স্বত্ত্ব নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। এবার দেশটি ঢাকাই মসলিন শাড়ীরও জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) বা ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে চেয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ‘বেঙ্গল মসলিন’ শিরোনামে এ আবেদন করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বাংলাদেশের ঢাকার মসলিন হিসেবে বিখ্যাত হলেও এটি ভারতের নিজস্ব পণ্য হিসেবে দেখানোর সব প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। সেখানে বাংলাদেশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টচার্য্য এসব তথ্য জানান। ‘টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি: প্রক্রিয়া, পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের করণীয়’ বিষয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও জানান, ‘শুধু মসলিনই নয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পণ্য ফজলি আম, লক্ষণ ভোগ, খিরসাপাতি আম, নকশি কাঁথা, রসগোল্লা, জামদানি শাড়ী, সুন্দরবনের মধুর স্বত্ত্ব তারা নিজেদের করে নিয়েছে।’ টাঙ্গাইল শাড়ির ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের প্রেক্ষাপটে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনকে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে মেধাস্বত্বের সব বিষয় দেশের ভেতরে ও বাইরে মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে সিপিডি।

সভায় ভারতের টাঙ্গাইল শাড়ির ডিআই রেজিস্ট্রেশন, কি ঘটেছে এবং বাংলাদেশের করণীয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়। এতে বিস্তারিত তুলে ধরেন সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, ‘এখনও আমাদের হাতে সময় রয়েছে। প্রথম কাজ যেটি করতে হবে তা হলো ভারতীয় আইনে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে মামলা করতে হবে। একইসঙ্গে এই মামলা লড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ দিতে হবে।’

ভারতে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই আবেদনের নানা অসংগতি তুলে ধরে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সেখানে বলা হয়েছে, দেশভাগের সময় টাঙ্গাইল থেকে হিন্দুদের তন্তুবায় সম্প্রদায় দেশত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় যায়। তারাই এই শাড়ি বানানোর সঙ্গে জড়িত। বাস্তবে টাঙ্গাইল অঞ্চলে দীর্ঘসময় ধরে শুধু হিন্দু নয় মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকে এই শাড়ি বানায়। আর বাস্তবে হিন্দুদের চেয়ে এই শাড়ি উৎপাদনের সঙ্গে মুসলিমরাই বেশি জড়িত।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতির জন্য তার ভৌগোলিক উৎস, মান এবং সুরক্ষার বিষয় জড়িত। টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অনেকেই দেশ বিভাগের সময় পশ্চিমবঙ্গ চলে গেছেন। কিন্তু এই শাড়ির ভৌগোলিক পরিচয় তো তাতে পাল্টে যেতে পারে না। ভারতে এই শাড়িকে জিআই করতে গিয়ে প্রতারণামূলক তথ্যের ওপর আশ্রয় নেয়া হয়েছে।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘ভারতের জিআই আইন অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে আপত্তি থাকলে তা করতে হবে। এখন বাংলাদেশের উচিত ভারতের আদালতে গিয়ে মামলা করা। এবং সেটা তিন মাসের মধ্যে করতে হবে। ভারত যেসব যুক্তিতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই করেছে, সেগুলো তথ্যনির্ভর নয়। সেগুলো ধোপে টিকবে না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাল্লাই ভারি। কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন হয়েছে ২০২০ সালে। এরপর চার বছর চলে গেছে। এসব তথ্য ওয়েবসাইটেই ছিল। কিন্তু এত দিন ধরে আমাদের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কী করল? শুধু সরকার নয়, ব্যবসায়িক গোষ্ঠীরাও কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। এটা আমাদের অজ্ঞতা ও ব্যর্থতা। কিন্তু এখন যেভাবে তাড়াহুড়া করে এর জিআই করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তা অমূলক। এত তাড়াহুড়ায় আমরা আবার ভুল করে বসতে পারি।’

বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু সমনামী এবং অভিন্ন পণ্য আছে। এসব পণ্যের জিআই নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে বাংলাদেশকে এগোতে হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয়। তিনি এসব পণ্যের ন্যায্য সুরক্ষার জন্য বেশ কিছু আন্তর্জাতিক আইনের উল্লেখ করেন। এর মধ্যে আছে প্যারিস কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি (১৮৮৩), মাদ্রিদি এগ্রিমেন্ট অন ইনডিকেটর অব সোর্স (১৮৯১), লিসবনি এগ্রিমেন্ট ফর দ্য প্রোটেকশন অব অরিজিন অ্যান্ড দেয়ার ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন (১৯৫৮) এবং ডব্লিউটিওর বাণিজ্যবিষয়ক মেধাস্বত্ব আইন (ট্রিপস-১৯৯৪)।

অনুষ্ঠানে সিপিডির আরেক সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শুধু প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারণে মেধাস্বত্বসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিসে হারজিত নির্ধারিত হয়। তাই আমাদের সাবধানে এবং দক্ষতার সঙ্গে এগোতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট নাইমা জাহান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

back to top