শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি দেশের শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই ব্যাংকটি ২০০১ সালে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা, আগামীর পদক্ষেপ জানিয়েছেন সংবাদ-এর অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক রমজান আলীকে।
সংবাদ: ব্যাংকিং খাতে এখন চ্যালেঞ্জ কী?
মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ: বড় চ্যালেঞ্জ এখন আমানত ধরে রাখা। এছাড়া রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ। গ্রাহকের চাহিদা মতো আমাদনির এলসি খোলাও চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও বর্তমানে ব্যাংক খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
সংবাদ: আপনি যোগদানের পর শাহ্জালাল ব্যাংকে কী পরিবর্তন হয়েছে?
মোসলেহ উদ্দীন: নানা সংকটের পরেও ব্যাংকটির আমানতের পাশাপাশি বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার মত। যা গত বছর ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকার মত। বর্তমানে বছরে রপ্তানির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশী। আমদানিতে রয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা মত। গড়ে বছরে ৫ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আসছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা গত বছর ছিল ৪ শতাংশ। এই ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানত ও বিনিয়োগ দুটো-ই নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। ইমার্জিং ক্রেডিট লিমিটেড (ইসিআরএল) এর রেটিং এ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট রেটিং লং টার্মে এএ+ এবং শর্ট টার্মে এসটি-২। এই রেটিং দ্বারা প্রমাণিত হয় যে শাজজালাল ব্যাংক শক্তিশালী একটি ব্যাংক।
সংবাদ: বর্তমানে ব্যাংকে কী ধরণের সেবা দিচ্ছেন?
মোসলেহ উদ্দীন: শরিয়াহ মোতাবেক সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছি। চালু রয়েছে ১৪০টি শাখা, ৪টি উপশাখা, ১১৫টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ও ১২০টি এটিএম বুথ। শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরীয়া’র ওয়াকালাহ্ ধারণা অনুসরণ করে চালু করেছে ইসলামী ক্রেডিট কার্ড। চব্বিশ ঘণ্টা এটিএম সার্ভিস ও রিয়েল টাইম অন-লাইন ব্যাংকিং। আমাদের রয়েছে এসএমএস পুশ-পুল সার্ভিস, যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহক তাদের লেনদেনের তথ্য ও ব্যালান্স জানতে পারেন। বৈদেশিক রেমিটেন্স সেবার জন্য বিশ্বের বিখ্যাত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রেমিট্যান্স কোম্পানীর সাথে আমাদের চুক্তি রয়েছে। তাছাড়া আমাদের সকল শাখায় রয়েছে অন-লাইন ভিত্তিক ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট করার সুবিধা। এছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংকের সকল শাখায় রয়েছে ই-জিপি সার্ভিস। যার মাধ্যমে সব সরকারী টেন্ডার অনলাইনে দাখিল করা যায়। এই ই-জিপি’র সাথে সংশ্লিষ্ট পে-অর্ডারের জন্য কোনো চার্জ আরোপ করা হয় না। শুধু তাই নয়, ই-জিপি সার্ভিসের সাথে প্রয়োজনীয় আর্নেস্ট মানি সংস্থানের জন্য অত্যন্ত সহজ শর্তে আর্নেস্ট মানি অথবা পে-অর্ডার ফাইন্যান্স স্কীম আছে, যার মাধ্যমে দরদাতাগণ সহজেই টেন্ডার-ডকুমেন্ট দাখিল করতে পারেন।
সংবাদ: সবচেয়ে বেশি ঋণ দিচ্ছেন কোন খাতে?
মোসলেহ উদ্দীন: শুরু থেকেই ব্যাংকটি করপোরেট ব্যাংকিং করে আসছে। তবে এখন করপোরেটের দিকে যাচ্ছি না। শিল্প ঋণের পাশাপাশি কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি রপ্তানি ও শিল্প খাতে ঋণ দিচ্ছি। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রধিকার দেয়া হচ্ছে। গ্রামের মানুষকে স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এছাড়া প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। নিচের দিকের লোকজনকে ক্ষুদ্রঋণ ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে আমরা চাই বেশি বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আমরা মানুষের উন্নয়নের সঙ্গে বেশি জড়িত হতে চাই। এটাই হলো আমাদের মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা শাখা ও উপশাখা সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি।
সংবাদ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ?
মোসলেহ উদ্দীন: ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছে। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। অনেক পরিকল্পনা। প্রথমত দেশের তিনটি ব্যাংকের মধ্যে থাকা। একটি ভালো ব্যাংক তৈরি করতে যা যা পরিকল্পনা দরকার সব ধরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আমাদের ব্যাংকিং সেবাকে ‘গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড’-এ উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। দেশে ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান, শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠান, উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি, পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চল ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।
বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি দেশের শরিয়াহভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এই ব্যাংকটি ২০০১ সালে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা, আগামীর পদক্ষেপ জানিয়েছেন সংবাদ-এর অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক রমজান আলীকে।
সংবাদ: ব্যাংকিং খাতে এখন চ্যালেঞ্জ কী?
মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ: বড় চ্যালেঞ্জ এখন আমানত ধরে রাখা। এছাড়া রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা একটি চ্যালেঞ্জ। গ্রাহকের চাহিদা মতো আমাদনির এলসি খোলাও চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও বর্তমানে ব্যাংক খাতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
সংবাদ: আপনি যোগদানের পর শাহ্জালাল ব্যাংকে কী পরিবর্তন হয়েছে?
মোসলেহ উদ্দীন: নানা সংকটের পরেও ব্যাংকটির আমানতের পাশাপাশি বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমানে ব্যাংকটির আমানতের পরিমাণ সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার মত। যা গত বছর ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকার মত। বর্তমানে বছরে রপ্তানির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশী। আমদানিতে রয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা মত। গড়ে বছরে ৫ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আসছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমে ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা গত বছর ছিল ৪ শতাংশ। এই ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানত ও বিনিয়োগ দুটো-ই নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। ইমার্জিং ক্রেডিট লিমিটেড (ইসিআরএল) এর রেটিং এ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট রেটিং লং টার্মে এএ+ এবং শর্ট টার্মে এসটি-২। এই রেটিং দ্বারা প্রমাণিত হয় যে শাজজালাল ব্যাংক শক্তিশালী একটি ব্যাংক।
সংবাদ: বর্তমানে ব্যাংকে কী ধরণের সেবা দিচ্ছেন?
মোসলেহ উদ্দীন: শরিয়াহ মোতাবেক সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছি। চালু রয়েছে ১৪০টি শাখা, ৪টি উপশাখা, ১১৫টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ও ১২০টি এটিএম বুথ। শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরীয়া’র ওয়াকালাহ্ ধারণা অনুসরণ করে চালু করেছে ইসলামী ক্রেডিট কার্ড। চব্বিশ ঘণ্টা এটিএম সার্ভিস ও রিয়েল টাইম অন-লাইন ব্যাংকিং। আমাদের রয়েছে এসএমএস পুশ-পুল সার্ভিস, যার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহক তাদের লেনদেনের তথ্য ও ব্যালান্স জানতে পারেন। বৈদেশিক রেমিটেন্স সেবার জন্য বিশ্বের বিখ্যাত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রেমিট্যান্স কোম্পানীর সাথে আমাদের চুক্তি রয়েছে। তাছাড়া আমাদের সকল শাখায় রয়েছে অন-লাইন ভিত্তিক ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট করার সুবিধা। এছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংকের সকল শাখায় রয়েছে ই-জিপি সার্ভিস। যার মাধ্যমে সব সরকারী টেন্ডার অনলাইনে দাখিল করা যায়। এই ই-জিপি’র সাথে সংশ্লিষ্ট পে-অর্ডারের জন্য কোনো চার্জ আরোপ করা হয় না। শুধু তাই নয়, ই-জিপি সার্ভিসের সাথে প্রয়োজনীয় আর্নেস্ট মানি সংস্থানের জন্য অত্যন্ত সহজ শর্তে আর্নেস্ট মানি অথবা পে-অর্ডার ফাইন্যান্স স্কীম আছে, যার মাধ্যমে দরদাতাগণ সহজেই টেন্ডার-ডকুমেন্ট দাখিল করতে পারেন।
সংবাদ: সবচেয়ে বেশি ঋণ দিচ্ছেন কোন খাতে?
মোসলেহ উদ্দীন: শুরু থেকেই ব্যাংকটি করপোরেট ব্যাংকিং করে আসছে। তবে এখন করপোরেটের দিকে যাচ্ছি না। শিল্প ঋণের পাশাপাশি কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ দেয়ার পাশাপাশি রপ্তানি ও শিল্প খাতে ঋণ দিচ্ছি। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রধিকার দেয়া হচ্ছে। গ্রামের মানুষকে স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। এছাড়া প্রান্তিক মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দেয়ার জন্য এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ওপর বেশি জোর দিচ্ছি। নিচের দিকের লোকজনকে ক্ষুদ্রঋণ ও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে আমরা চাই বেশি বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আমরা মানুষের উন্নয়নের সঙ্গে বেশি জড়িত হতে চাই। এটাই হলো আমাদের মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। তারই ধারাবাহিকতায় সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরা শাখা ও উপশাখা সম্প্রসারণ করে যাচ্ছি।
সংবাদ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ?
মোসলেহ উদ্দীন: ব্যাংকের ভালো ও নির্ভরযোগ্য বোর্ড অফ ডিরেক্টরস রয়েছে। বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা পরিষদের মধ্যে স্বচ্ছতা আছে। অনেক পরিকল্পনা। প্রথমত দেশের তিনটি ব্যাংকের মধ্যে থাকা। একটি ভালো ব্যাংক তৈরি করতে যা যা পরিকল্পনা দরকার সব ধরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আমাদের ব্যাংকিং সেবাকে ‘গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড’-এ উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। দেশে ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান, শ্রমঘন শিল্প প্রতিষ্ঠান, উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি, পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চল ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।