দীর্ঘদিন ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিনিয়ত কমছে সূচক। রোববারের (২৭ অক্টোবর) পতনে সূচক চার বছর আগের অবস্থানে নেমে গেছে। পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা অনেকে আশার বাণী দিলেও বিনিয়োগকারীরা আশস্ত হতে পারছেন না।
দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ। বিনিয়োগকারীরা বছরের শুরুতে প্রত্যাশা করছিলেন, হয়তো এবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরবে বাজার। তবে সেই প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। দিন যত যাচ্ছিল, পতনের ধারাও অব্যাহত ছিল।
এরপর আগস্ট মাসে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। শেয়ারবাজারের নেতৃত্বেও আসে বড় পরিবর্তন। এতে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এর মাঝে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্বেও আসে নতুন নেতৃত্ব। এতে কিছুটা আশাবাদী হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিছুদিন সূচকের অবস্থা ভালোও ছিল। কিন্তু ফের বড় পতনের মুখে পড়ে শেয়ারবাজার। এতে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা সাধারণ vবিনিয়োগকারীরা। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বছরের শুরুতে অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারিতে ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৬২৪২ পয়েন্টে। এরপর ফেব্রয়ারিতে কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪৪৭ পয়েন্টে। এরপর ধারাবাহিক পতন শুরু হয়।
এই পতনের কারণে বছরের দ্বিতীয় সর্বনিম্নœ অবস্থানে নামে জুন মাসের ১১ তারিখে। সেদিন ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৫০৭০ পয়েন্টে। এরপর কিছুদিন সামান্য উত্থান হয়েছিল। তারপর আবার শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। এই পতনে সূচক সবনিম্ন অবস্থানে নামে রোববার। এদিন দেশের ডিএসইএক্স ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। রোববার ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৪৯৬৫ পয়েন্টে। এর আগে সাড়ে ৪৬ মাসের বা প্রায় চার বছরের মধ্যে এই অবস্থানে নেমেছিল ডিএসইএক্স অর্থাৎ ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ডিএসইর সূচক দাঁড়িয়েছিল ৪ হাজার ৯৩৪ পয়েন্টে।
এমন পতনের মুখে হতাশায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। রোববার কথা হয় আব্দুল নকিব নামের একজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমি শেয়ারবাজার নিয়ে আশা করিনি। কারণ দীর্ঘদিন থেকে বিনিয়োগ হারাতে হারাতে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু নতুন সরকার আসার পর আবার আমি আশা করতে শুরু করি যে বাজার ভালো হবে। কিন্তু সেই আশায়ও গুড়ে বালি। বর্তমানে আমার মোট পুঁজি প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। এভাবে কিছুদিন গেলে আমি পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে যাবো।’
রোববারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট কমেছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ‘ডিএসইএস’ ৩৬ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ১১০৭ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৪৮ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ১৮৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। রোববার ডিএসইতে ৩০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০৬ কোটি ০১ লাখ টাকা। অর্থাৎ বাজারের সার্বিক ভালো নয়।
রোববার কথা হয় দেশের অন্যতম একজন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বাজারের অবস্থা যখন এমন নিচের দিকে নামতে থাকে, তখন সেটাকে ঠেকানোর জন্য যেসব টুলস আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের শেয়ার কেনা। কিন্তু সরকার এই অবস্থায় শেয়ার কিনতে পারছে না। অর্থাৎ বাজারের অবস্থা যদি আরও খারাপ হয়, তাহলেও কিছুই করার থাকবে না।’
তবে কেন এমন পতন হচ্ছে- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘টানা দরপতনে প্রতিদিনই শেয়ারবাজার ছাড়ছেন অনেক বিনিয়োগকারী। এই দরপতনের ফলে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনেকের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়ছে। শেয়ারের দাম কমে যখন একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে যায়, তখন ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীকে নতুন করে অর্থ বিনিয়োগের তাগাদা দেয়া হয়। যদি কোনো বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগ না করেন, তখন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক তার শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করে নেয়। শেয়ারবাজারে এটি ফোর্সড সেল হিসেবে পরিচিত। বাজারে যত বেশি দরপতন হতে থাকে, ফোর্সড সেলের চাপও ততো বাড়তে থাকে। পতনের অন্যতম কারণও এটা হতে পারে।’
এই অবস্থায় পতন ঠেকানোর কৌশল নিয়ে কাজ করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসিও। এই বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম সংবাদকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে অর্থ সংকট আছে, এটা সত্য। তাই তারল্য বাড়াতে ইতোমধ্যেই অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিকে যেন যে কোনো উপায়ে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। আর আইসিবি অর্থ পেলে শেয়ার কিনে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।’
সম্প্রতি এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি দরপতনের জন্য দায় বিগত সরকারের ১৫ বছরে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি। ওই ১৫ বছরে অনিয়মের মাধ্যমে অস্তিত্বহীন এবং দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার তালিকাভুক্ত করা এবং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দর অস্বাভাবিক পর্যায়ে উঠানো হয়েছিল। কৃত্রিম ব্যবস্থা দিয়ে পতন ঠেকানোর ব্যবস্থাও করা হয়। এখন কোম্পানিগুলোর প্রকৃত অবস্থা বের হতেই দরপতন হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে বাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, সুশাসন নিশ্চিতে বিএসইসি ও সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে। অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বাজার অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বাজারের সমস্যা ও করণীয় নির্ধারণে কাজ করছে বিএসইসি। পাশাপাশি ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করছে সংস্থাটি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ইতোমধ্যে আইসিবি ৩ হাজার কোটি টাকার সভরেন গ্যারান্টি চেয়ে আবেদন করেছিল। আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই গ্যারান্টিপত্র ইস্যু করবে, যাতে এ গ্যারান্টি পত্র দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে পারে।
তবে শিগগিরই এই পতন থেমে যাবে বলেও মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আইসিবি সরকারের কাছে যে টাকা চেয়েছে, সেটা যদি পায়, তাহলে পতন কিছুটা ঠেকানো যাবে। আর শেয়ারবাজারকে স্থায়ীভাবে স্থীতিশীল করতে হলে বড় ও ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হবে।’
সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
দীর্ঘদিন ধরে পতনের মধ্যে রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিনিয়ত কমছে সূচক। রোববারের (২৭ অক্টোবর) পতনে সূচক চার বছর আগের অবস্থানে নেমে গেছে। পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা অনেকে আশার বাণী দিলেও বিনিয়োগকারীরা আশস্ত হতে পারছেন না।
দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ। বিনিয়োগকারীরা বছরের শুরুতে প্রত্যাশা করছিলেন, হয়তো এবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরবে বাজার। তবে সেই প্রত্যাশা পুরণ হয়নি। দিন যত যাচ্ছিল, পতনের ধারাও অব্যাহত ছিল।
এরপর আগস্ট মাসে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়। শেয়ারবাজারের নেতৃত্বেও আসে বড় পরিবর্তন। এতে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এর মাঝে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্বেও আসে নতুন নেতৃত্ব। এতে কিছুটা আশাবাদী হয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিছুদিন সূচকের অবস্থা ভালোও ছিল। কিন্তু ফের বড় পতনের মুখে পড়ে শেয়ারবাজার। এতে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা সাধারণ vবিনিয়োগকারীরা। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বছরের শুরুতে অর্থাৎ পহেলা জানুয়ারিতে ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৬২৪২ পয়েন্টে। এরপর ফেব্রয়ারিতে কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৪৪৭ পয়েন্টে। এরপর ধারাবাহিক পতন শুরু হয়।
এই পতনের কারণে বছরের দ্বিতীয় সর্বনিম্নœ অবস্থানে নামে জুন মাসের ১১ তারিখে। সেদিন ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৫০৭০ পয়েন্টে। এরপর কিছুদিন সামান্য উত্থান হয়েছিল। তারপর আবার শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। এই পতনে সূচক সবনিম্ন অবস্থানে নামে রোববার। এদিন দেশের ডিএসইএক্স ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। রোববার ডিএসইএক্স এর অবস্থান ছিল ৪৯৬৫ পয়েন্টে। এর আগে সাড়ে ৪৬ মাসের বা প্রায় চার বছরের মধ্যে এই অবস্থানে নেমেছিল ডিএসইএক্স অর্থাৎ ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ডিএসইর সূচক দাঁড়িয়েছিল ৪ হাজার ৯৩৪ পয়েন্টে।
এমন পতনের মুখে হতাশায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। রোববার কথা হয় আব্দুল নকিব নামের একজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমি শেয়ারবাজার নিয়ে আশা করিনি। কারণ দীর্ঘদিন থেকে বিনিয়োগ হারাতে হারাতে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু নতুন সরকার আসার পর আবার আমি আশা করতে শুরু করি যে বাজার ভালো হবে। কিন্তু সেই আশায়ও গুড়ে বালি। বর্তমানে আমার মোট পুঁজি প্রায় অর্ধেকে নেমে গেছে। এভাবে কিছুদিন গেলে আমি পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে যাবো।’
রোববারের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট কমেছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ‘ডিএসইএস’ ৩৬ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ১১০৭ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৪৮ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ১৮৩০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। রোববার ডিএসইতে ৩০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০৬ কোটি ০১ লাখ টাকা। অর্থাৎ বাজারের সার্বিক ভালো নয়।
রোববার কথা হয় দেশের অন্যতম একজন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বাজারের অবস্থা যখন এমন নিচের দিকে নামতে থাকে, তখন সেটাকে ঠেকানোর জন্য যেসব টুলস আছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সরকারের শেয়ার কেনা। কিন্তু সরকার এই অবস্থায় শেয়ার কিনতে পারছে না। অর্থাৎ বাজারের অবস্থা যদি আরও খারাপ হয়, তাহলেও কিছুই করার থাকবে না।’
তবে কেন এমন পতন হচ্ছে- এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘টানা দরপতনে প্রতিদিনই শেয়ারবাজার ছাড়ছেন অনেক বিনিয়োগকারী। এই দরপতনের ফলে বেশি সমস্যায় পড়েছেন ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা। তাদের অনেকের শেয়ার জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়ছে। শেয়ারের দাম কমে যখন একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নেমে যায়, তখন ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীকে নতুন করে অর্থ বিনিয়োগের তাগাদা দেয়া হয়। যদি কোনো বিনিয়োগকারী নতুন বিনিয়োগ না করেন, তখন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক তার শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় করে নেয়। শেয়ারবাজারে এটি ফোর্সড সেল হিসেবে পরিচিত। বাজারে যত বেশি দরপতন হতে থাকে, ফোর্সড সেলের চাপও ততো বাড়তে থাকে। পতনের অন্যতম কারণও এটা হতে পারে।’
এই অবস্থায় পতন ঠেকানোর কৌশল নিয়ে কাজ করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসিও। এই বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম সংবাদকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে অর্থ সংকট আছে, এটা সত্য। তাই তারল্য বাড়াতে ইতোমধ্যেই অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিকে যেন যে কোনো উপায়ে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। আর আইসিবি অর্থ পেলে শেয়ার কিনে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।’
সম্প্রতি এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি দরপতনের জন্য দায় বিগত সরকারের ১৫ বছরে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি। ওই ১৫ বছরে অনিয়মের মাধ্যমে অস্তিত্বহীন এবং দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার তালিকাভুক্ত করা এবং কারসাজির মাধ্যমে শেয়ারের দর অস্বাভাবিক পর্যায়ে উঠানো হয়েছিল। কৃত্রিম ব্যবস্থা দিয়ে পতন ঠেকানোর ব্যবস্থাও করা হয়। এখন কোম্পানিগুলোর প্রকৃত অবস্থা বের হতেই দরপতন হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে বাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি, সুশাসন নিশ্চিতে বিএসইসি ও সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে। অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, বাজার অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বাজারের সমস্যা ও করণীয় নির্ধারণে কাজ করছে বিএসইসি। পাশাপাশি ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে বড় বড় শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করছে সংস্থাটি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। ইতোমধ্যে আইসিবি ৩ হাজার কোটি টাকার সভরেন গ্যারান্টি চেয়ে আবেদন করেছিল। আবেদনটি গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই গ্যারান্টিপত্র ইস্যু করবে, যাতে এ গ্যারান্টি পত্র দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগের জন্য টাকা সংগ্রহ করতে পারে।
তবে শিগগিরই এই পতন থেমে যাবে বলেও মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আইসিবি সরকারের কাছে যে টাকা চেয়েছে, সেটা যদি পায়, তাহলে পতন কিছুটা ঠেকানো যাবে। আর শেয়ারবাজারকে স্থায়ীভাবে স্থীতিশীল করতে হলে বড় ও ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হবে।’