চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি
এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই বাজার থেকে। পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধসহ নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেশ কমে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের নয় মাস (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ নেতিবাচক (ঋণাত্মক) প্রবৃদ্ধি ছিল।
আর্থৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে ইউরাপের বাজারে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা ২০২৩ সালের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কম আয় করেছিলেন। আর তাতে রপ্তানিকারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। তবে বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) রপ্তানি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে শেষ হয়েছিল বছর। ২০২৪ সালে ইউরোপের দেশগুলোতে মোট ১ হাজার ৯৭৭ কোটি ১২ লাখ (১৯.৭৭ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। আগের বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ১ হাজার ৮৮৫ কোটি ৫৭ লাখ (১৮.৮৫ বিলিয়ন) ডলার।
২০২৫ সাল শুরু হয়েছে বড় চমক নিয়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিসের (ইউরোস্ট্যাট) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই বাজারে ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ইইউর কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ৮৫৭ কোটি ৬৫ লাখ (৮.৫৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। ইইউতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। চীন সবার শীর্ষে। তৃতীয় তুরস্ক।
জানুয়ারিতে চীন ইউরোপের বাজারে ২৪৫ কোটি ৯১ লাখ (২.৪৬ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চীনের রপ্তানির অঙ্ক ছিল ১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। তবে এই বাজারে তুরস্কের রপ্তানি সামান্য কমেছে; দশমিক শূন্য তিন শতাংশ নেতিবাচক (ঋণাত্মক বা নেগেটিভ) প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জানুয়ারিতে তুরস্ক ইউরোপে ৯০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৯০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
ইউরোপে রপ্তানিতে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। জানুয়ারিতে ভারত ইউরোপের বাজারে ৪১ কোটি ১৫ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ শতাংশ। কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে বেশি ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই মাসে দেশটি ইউরোপে ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাদের রপ্তানির অঙ্ক ছিল ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। অন্য দেশগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাকিস্তানের ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ৪৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ১৬ দশমিক শূন্য আট শতাংশ এবং মরক্কোর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ।
২০২৪ সালে ইউরোপের কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ৯২ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা ছিল ২০২৩ সালের চেয়ে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। গত বছর চীন ইউরোপের বাজারে ২৬ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যা আগের বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। তবে গত বছর এই বাজারে তুরস্কের রপ্তানি বেশ খানিকটা কমেছিল; ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ইন্দোনেশিয়ার কমেছিল ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ভারতের বেড়েছিল প্রায় ২ শতাংশ। কম্বোডিয়ার বেড়েছিল ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনামের বেড়েছিল ৪ দশমিক ২১ শতাংশ। পাকিস্তানের বেড়েছিল ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ। মরক্কোর প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হয়। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। এর মধ্যে গাজীপুর ও ঢাকার সাভারে শ্রমিক অসন্তোষের বেশ কয়েক দিন অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ থাকে। উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান এ খাতের কর্মকাণ্ড।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০ কারখানা বন্ধ আছে। শ্রমিক অসন্তোষ-বিক্ষোভের কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ থাকা অধিকাংশ কারখানার মালিক আওয়ামী লীগ নেতাদের। তাদের অনেকেই এখন কারাগারে রয়েছেন। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। বিদেশেও পালিয়ে গেছেন কেউ কেউ।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউর বাজারে বাংলাদেশের ৬৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব। পোশাকের বৈশ্বিক বাজারের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে । বর্তমান অবস্থায়ও ইইউতে বাড়তি ১৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের ২০ শতাংশের মতো আসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দেশ থেকে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২২ সালে এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৯৭৩ কোটি (৯.৭৩ বিলিয়ন) ডলারে উঠেছিল। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি তো দূরের কথা, উল্টো ২৫ শতাংশ কমেছিল।
সেই নেতিবাচক ধারা চলে ২০২৪ সালেও। তবে বছরের শেষ দিকে এসে গতি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত নামমাত্র প্রবৃদ্ধি দিয়ে শেষ হয়েছিল। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি (৭.৩৪ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা ছিল ২০২৩ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। সুসংবাদ হচ্ছে নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল শুরু হয়েছে উল্লম্ফন দিয়ে।
এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল দেশটিতে।
চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই বাজার থেকে। পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধসহ নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেশ কমে গিয়েছিল। ২০২৪ সালের নয় মাস (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ নেতিবাচক (ঋণাত্মক) প্রবৃদ্ধি ছিল।
আর্থৎ ২০২৪ সালের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে ইউরাপের বাজারে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা ২০২৩ সালের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কম আয় করেছিলেন। আর তাতে রপ্তানিকারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। তবে বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) রপ্তানি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে শেষ হয়েছিল বছর। ২০২৪ সালে ইউরোপের দেশগুলোতে মোট ১ হাজার ৯৭৭ কোটি ১২ লাখ (১৯.৭৭ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। আগের বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ১ হাজার ৮৮৫ কোটি ৫৭ লাখ (১৮.৮৫ বিলিয়ন) ডলার।
২০২৫ সাল শুরু হয়েছে বড় চমক নিয়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিসের (ইউরোস্ট্যাট) সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ইউরোপের বাজারে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৫২ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এত প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এই বাজারে ১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ইইউর কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ৮৫৭ কোটি ৬৫ লাখ (৮.৫৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। ইইউতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। চীন সবার শীর্ষে। তৃতীয় তুরস্ক।
জানুয়ারিতে চীন ইউরোপের বাজারে ২৪৫ কোটি ৯১ লাখ (২.৪৬ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চীনের রপ্তানির অঙ্ক ছিল ১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। তবে এই বাজারে তুরস্কের রপ্তানি সামান্য কমেছে; দশমিক শূন্য তিন শতাংশ নেতিবাচক (ঋণাত্মক বা নেগেটিভ) প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জানুয়ারিতে তুরস্ক ইউরোপে ৯০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৯০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
ইউরোপে রপ্তানিতে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। জানুয়ারিতে ভারত ইউরোপের বাজারে ৪১ কোটি ১৫ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৭ শতাংশ। কম্বোডিয়ার প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে বেশি ৬৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এই মাসে দেশটি ইউরোপে ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাদের রপ্তানির অঙ্ক ছিল ২৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। অন্য দেশগুলোর মধ্যে জানুয়ারিতে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পাকিস্তানের ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ৪৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ১৬ দশমিক শূন্য আট শতাংশ এবং মরক্কোর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ।
২০২৪ সালে ইউরোপের কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দেশ থেকে ৯২ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, যা ছিল ২০২৩ সালের চেয়ে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। গত বছর চীন ইউরোপের বাজারে ২৬ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যা আগের বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। তবে গত বছর এই বাজারে তুরস্কের রপ্তানি বেশ খানিকটা কমেছিল; ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ইন্দোনেশিয়ার কমেছিল ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ভারতের বেড়েছিল প্রায় ২ শতাংশ। কম্বোডিয়ার বেড়েছিল ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনামের বেড়েছিল ৪ দশমিক ২১ শতাংশ। পাকিস্তানের বেড়েছিল ১২ দশমিক ৪১ শতাংশ। মরক্কোর প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যাহত হয়। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। এর মধ্যে গাজীপুর ও ঢাকার সাভারে শ্রমিক অসন্তোষের বেশ কয়েক দিন অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ থাকে। উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান এ খাতের কর্মকাণ্ড।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২০০ কারখানা বন্ধ আছে। শ্রমিক অসন্তোষ-বিক্ষোভের কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ থাকা অধিকাংশ কারখানার মালিক আওয়ামী লীগ নেতাদের। তাদের অনেকেই এখন কারাগারে রয়েছেন। অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। বিদেশেও পালিয়ে গেছেন কেউ কেউ।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ইইউর বাজারে বাংলাদেশের ৬৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব। পোশাকের বৈশ্বিক বাজারের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে । বর্তমান অবস্থায়ও ইইউতে বাড়তি ১৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার। মোট রপ্তানি আয়ের ২০ শতাংশের মতো আসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দেশ থেকে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২২ সালে এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৯৭৩ কোটি (৯.৭৩ বিলিয়ন) ডলারে উঠেছিল। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি তো দূরের কথা, উল্টো ২৫ শতাংশ কমেছিল।
সেই নেতিবাচক ধারা চলে ২০২৪ সালেও। তবে বছরের শেষ দিকে এসে গতি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত নামমাত্র প্রবৃদ্ধি দিয়ে শেষ হয়েছিল। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি (৭.৩৪ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা ছিল ২০২৩ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। সুসংবাদ হচ্ছে নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল শুরু হয়েছে উল্লম্ফন দিয়ে।
এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৪৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল দেশটিতে।