ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চার মাস ধরে রাজধানীর বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। ক্রেতারা বলছেন, বিক্রেতারা ‘সবজির মৌসুম নয়’ বা ‘বৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে’ এসব ধরনের নানা অজুহাত দেখিয়ে দাম কমাচ্ছে না। বর্তমানে পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম ৮০-১০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। ক্রেতারা বাড়তি দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বাড়তি দামের কারণে স্বল্প আয়ের অনেক পরিবার এখন কম সবজি কিনছেন। এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
মসুর ডালের দাম
প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা
অদৃশ্য কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ-মাংস
একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা
শুক্রবার,(১০ অক্টোবর ২০২৫) কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি (ছোট) প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি পিস ১৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি দামের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। বাজার করতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘প্রতিটি সবজির দাম ৮০-১০০ টাকার ঘরে, আবার কিছু কিছু সবজি তার চেয়েও বেশি দাম। বিগত চার মাস ধরে অতিরিক্ত বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। এত বেশি দামে সবজি কিনতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। আগে যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম এখন অতিরিক্ত বেশি দাম হওয়ার কারণে আধা কেজি সবজি কিনছি।’
অন্যদিকে সবজির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে মগবাজারের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাবে আরও কিছুটা দাম বেড়েছে সবজির। এছাড়া বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হওয়ায় সেই সবজিগুলোর দাম বাড়তে যাচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই নতুন সবজি উঠতে শুরু করবে, তখন থেকে সবজির দাম কমে যাবে।’
এদিকে কিছুদিন ধরে কাঁচামরিচের দাম হু হু করে বাড়ছিল। সেই কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে প্রতি কেজি মরিচ পাওয়া যাচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ৩৫০ টাকার ওপরে ছিল।
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে এক কেজি মসুর ডালের দাম এখন ১৫৫-১৬০ টাকা। এই দাম ছোট দানার অর্থাৎ সরু মসুর ডালের। গত দেড় মাস আগে বাজার থেকে এই ডাল কেনা যেত ১৩৫-১৪০ টাকায় অর্থাৎ দেড় মাসের ব্যবধানে ছোট দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে খুচরা বাজারে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।
এদিকে, বাজারে মাছ-মাংসের দাম আগের মতো চড়া দামে আটকে আছে। সরজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়, যা গত এক মাস আগেও ছিল ১৬০-১৭০ টাকার মধ্যে। দেশি মুরগির দাম ৫০০-৫৫০ টাকার নিচে নেই। জনপ্রিয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া ও চিংড়ির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই বলছেন, ‘অদৃশ্য এক সিন্ডিকেট নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে দামের বিশাল ব্যবধান তৈরি করে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করছে।’
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের বাজার মনিটরিং দুর্বল হয়ে পড়ায় এই ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’ দিন দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে। পাইকারি-খুচরা দামের ব্যবধান কমাতে না পারলে নিত্যপণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে না। বাজারে এসে ক্রেতারা বলছেন, গরু-খাসির মাংস অনেক আগেই নাগালের বাইরে গেছে। এখন মুরগি ও মাছও বিলাসী খাবারের তালিকায় ঢুকছে।
খুচরা বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির দায় নিচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, পাইকারি পর্যায়েই প্রতিদিন দাম ওঠানামা করছে। খামারিরা ফিড, পরিবহন খরচ ও উৎপাদন ব্যয় বাড়ানোর অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন, ফলে খুচরা বিক্রেতাদেরও বাধ্য হয়ে সেই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অর্থাৎ একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছে এ সিন্ডিকেট।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
চার মাস ধরে রাজধানীর বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। ক্রেতারা বলছেন, বিক্রেতারা ‘সবজির মৌসুম নয়’ বা ‘বৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে’ এসব ধরনের নানা অজুহাত দেখিয়ে দাম কমাচ্ছে না। বর্তমানে পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম ৮০-১০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। ক্রেতারা বাড়তি দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বাড়তি দামের কারণে স্বল্প আয়ের অনেক পরিবার এখন কম সবজি কিনছেন। এই পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
মসুর ডালের দাম
প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা
অদৃশ্য কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ-মাংস
একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা
শুক্রবার,(১০ অক্টোবর ২০২৫) কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ১০০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি (ছোট) প্রতি পিস ৬০ টাকা, গাজর প্রতি পিস ১৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি দামের কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। বাজার করতে আসা একজন ক্রেতা বলেন, ‘প্রতিটি সবজির দাম ৮০-১০০ টাকার ঘরে, আবার কিছু কিছু সবজি তার চেয়েও বেশি দাম। বিগত চার মাস ধরে অতিরিক্ত বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। এত বেশি দামে সবজি কিনতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। আগে যেখানে এক কেজি সবজি কিনতাম এখন অতিরিক্ত বেশি দাম হওয়ার কারণে আধা কেজি সবজি কিনছি।’
অন্যদিকে সবজির দাম বৃদ্ধি বিষয়ে মগবাজারের একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাবে আরও কিছুটা দাম বেড়েছে সবজির। এছাড়া বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হওয়ায় সেই সবজিগুলোর দাম বাড়তে যাচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যেই নতুন সবজি উঠতে শুরু করবে, তখন থেকে সবজির দাম কমে যাবে।’
এদিকে কিছুদিন ধরে কাঁচামরিচের দাম হু হু করে বাড়ছিল। সেই কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে প্রতি কেজি মরিচ পাওয়া যাচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। গত সপ্তাহে তা ৩৫০ টাকার ওপরে ছিল।
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে এক কেজি মসুর ডালের দাম এখন ১৫৫-১৬০ টাকা। এই দাম ছোট দানার অর্থাৎ সরু মসুর ডালের। গত দেড় মাস আগে বাজার থেকে এই ডাল কেনা যেত ১৩৫-১৪০ টাকায় অর্থাৎ দেড় মাসের ব্যবধানে ছোট দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে খুচরা বাজারে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।
এদিকে, বাজারে মাছ-মাংসের দাম আগের মতো চড়া দামে আটকে আছে। সরজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়, যা গত এক মাস আগেও ছিল ১৬০-১৭০ টাকার মধ্যে। দেশি মুরগির দাম ৫০০-৫৫০ টাকার নিচে নেই। জনপ্রিয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া ও চিংড়ির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই বলছেন, ‘অদৃশ্য এক সিন্ডিকেট নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে দামের বিশাল ব্যবধান তৈরি করে সিন্ডিকেটের সদস্যরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করছে।’
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের বাজার মনিটরিং দুর্বল হয়ে পড়ায় এই ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’ দিন দিন আরও শক্তিশালী হচ্ছে। পাইকারি-খুচরা দামের ব্যবধান কমাতে না পারলে নিত্যপণ্যের বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে না। বাজারে এসে ক্রেতারা বলছেন, গরু-খাসির মাংস অনেক আগেই নাগালের বাইরে গেছে। এখন মুরগি ও মাছও বিলাসী খাবারের তালিকায় ঢুকছে।
খুচরা বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির দায় নিচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, পাইকারি পর্যায়েই প্রতিদিন দাম ওঠানামা করছে। খামারিরা ফিড, পরিবহন খরচ ও উৎপাদন ব্যয় বাড়ানোর অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন, ফলে খুচরা বিক্রেতাদেরও বাধ্য হয়ে সেই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অর্থাৎ একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছে এ সিন্ডিকেট।