দুর্বল ও তারল্যসংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার আশ্বাস থাকলেও সাধারণ বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে কোনও নির্দেশনা নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে। জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিএসইসির পক্ষ থেকে গভর্নরের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়।
‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুযায়ী, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে, তবে সেখানে পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান বিনিয়োগকারীদের কোনও শেয়ার থাকবে না— এসব শেয়ার নতুনভাবে ইস্যু করা হবে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার এই ব্যাংকগুলোর সংকটের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন, দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা। তাই তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দায় নিরূপণের দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের মতে, সরকার যেমন আমানতকারীদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তেমনই বিনিয়োগকারীদের বিষয়েও ন্যায্যতা বজায় রাখা উচিত।
গভর্নরের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- ১. ব্যাংকের আর্থিক সম্পদের পাশাপাশি লাইসেন্স, ব্র্যান্ড ভ্যালু, শাখা নেটওয়ার্ক ও মানবসম্পদ মূল্যায়ন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নির্ধারণ। ২. দায়ী ব্যক্তিদের জামানত ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে প্রাপ্ত অর্থের অংশ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করা। ৩. দায়ী ব্যক্তিদের শেয়ার বাদে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগকে ন্যূনতম মূল্যে প্রতিফলিত করে একীভূত করার অনুপাত নির্ধারণ। ৪. বিনিয়োগকারীদের অংশীদারিত্ব মূল্য নির্ধারণ ও ঘোষণা না করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে তালিকাচ্যুত না করা।
বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ ব্যাংকে একীভূতকরণের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগ্রস্ত ৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ১৪টি প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, তবে এসব বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি।
এছাড়া একীভূতকরণ বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ডিভিশন (এফআইডি) আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে, যেখানে বিএসইসির কোনও প্রতিনিধি নেই। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পায়নি, ফলে তারা শেয়ারবাজারে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক একীভূত হয়ে একটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকে রূপ নেবে। নতুন ব্যাংকের প্রস্তাবিত নাম ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ ।
নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা দেবে সরকার— অর্ধেক নগদ, বাকি অর্ধেক সুকুক বন্ডের মাধ্যমে।
একীভূত ব্যাংকটি প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন হবে, পরে ধীরে ধীরে বেসরকারি খাতে মালিকানা স্থানান্তর করা হবে। ব্যাংকটি পুঁজিবাজারেও তালিকাভুক্ত হবে।
প্রশাসক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ নির্বাহী পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্যাংকে তাদের সহযোগিতায় আরও চারজন করে কর্মকর্তা কাজ করবেন।
বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের আইনগত অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।”
রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
দুর্বল ও তারল্যসংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার আশ্বাস থাকলেও সাধারণ বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে কোনও নির্দেশনা নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে। জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিএসইসির পক্ষ থেকে গভর্নরের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়।
‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুযায়ী, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে, তবে সেখানে পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান বিনিয়োগকারীদের কোনও শেয়ার থাকবে না— এসব শেয়ার নতুনভাবে ইস্যু করা হবে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার এই ব্যাংকগুলোর সংকটের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন, দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা। তাই তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দায় নিরূপণের দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের মতে, সরকার যেমন আমানতকারীদের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, তেমনই বিনিয়োগকারীদের বিষয়েও ন্যায্যতা বজায় রাখা উচিত।
গভর্নরের কাছে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে- ১. ব্যাংকের আর্থিক সম্পদের পাশাপাশি লাইসেন্স, ব্র্যান্ড ভ্যালু, শাখা নেটওয়ার্ক ও মানবসম্পদ মূল্যায়ন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নির্ধারণ। ২. দায়ী ব্যক্তিদের জামানত ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে প্রাপ্ত অর্থের অংশ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করা। ৩. দায়ী ব্যক্তিদের শেয়ার বাদে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগকে ন্যূনতম মূল্যে প্রতিফলিত করে একীভূত করার অনুপাত নির্ধারণ। ৪. বিনিয়োগকারীদের অংশীদারিত্ব মূল্য নির্ধারণ ও ঘোষণা না করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে তালিকাচ্যুত না করা।
বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ ব্যাংকে একীভূতকরণের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগ্রস্ত ৯টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ১৪টি প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, তবে এসব বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে কোনও পরামর্শ করা হয়নি।
এছাড়া একীভূতকরণ বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস ডিভিশন (এফআইডি) আট সদস্যের কমিটি গঠন করেছে, যেখানে বিএসইসির কোনও প্রতিনিধি নেই। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পায়নি, ফলে তারা শেয়ারবাজারে মূল্যসংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক একীভূত হয়ে একটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকে রূপ নেবে। নতুন ব্যাংকের প্রস্তাবিত নাম ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ ।
নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা দেবে সরকার— অর্ধেক নগদ, বাকি অর্ধেক সুকুক বন্ডের মাধ্যমে।
একীভূত ব্যাংকটি প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন হবে, পরে ধীরে ধীরে বেসরকারি খাতে মালিকানা স্থানান্তর করা হবে। ব্যাংকটি পুঁজিবাজারেও তালিকাভুক্ত হবে।
প্রশাসক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচ নির্বাহী পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ব্যাংকে তাদের সহযোগিতায় আরও চারজন করে কর্মকর্তা কাজ করবেন।
বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “একীভূতকরণের প্রক্রিয়ায় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের আইনগত অধিকার যেন সুরক্ষিত থাকে, সেই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।”