আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিমছড়ি পাহাড় ও ঝরনা। প্রতি বছর দেশি-বিদেশি প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ পর্যটক হিমছড়ির পর্যটক স্পটে বেড়াতে যান। যদিও পর্যটকরা ২৩ টাকায় প্রবেশ টিকেট কিনে ভিতরে ঢুকেই হতাশ হয়ে পড়েন।
সমতল ভূমি থেকে পাহাড়ে উঠার একমাত্র সিড়িটি এত ছোট যে সেখানে পা রাখা কষ্টকর। আবার দেখলেও ভয় লাগে। তাই টিকেট কিনেও ভেতরে আনেক পর্যটক পাহাড়ে উঠার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তারা কর্তৃপক্ষকে বকাঝকা করে ফিরে যান। পর্যটকদের অভিযোগ শোনার কেউ নেই। অনেকের মতে, পাহাড়ের উপরে উঠার সিঁড়িটি বিপজ্জনক।
সরেজমিন হিমছড়ি গিয়ে দেখা গেছে, কক্সবাজারে যত পর্যটক যান তারা এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় অটোরিকশা, টমটম কিংবা অন্যান্য গাড়ি ভাড়া করে হিমছড়ি পর্যটন স্পটেও বেড়াতে যান। গাড়িটি প্রধান সড়কের কাছে থামানোর সঙ্গে সঙ্গে ইজাদারের লোকজনকে প্রথমে ৩০ টাকা দিতে হয়। এরপর গাড়ি থেকে নেমে কয়েক গজ দূরে হিমছড়ি পাহার ও ঝরনার প্রবেশপথে আবার ২৩ টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়।
টিকেট কিনে প্রথমে পাহাড়ে উপরে উঠতে গিয়ে পর্যটরা হোঁচট খান। কখন কে পড়ে আহত হওয়ার আশঙ্কায় থাকেন। উঠতি বয়সের কিছু পর্যটক উপরে উঠলেও রাস্তাগুলো অনেক বছরের পুরনো। ঝড়বৃষ্টিতে ভেঙে আছে। একবার দুর্ঘটনা ঘটলে মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে।
পাহাড়ের উপরে ছোট ছোট দোকানপাট ভাড়া দেয়া হয়েছে। কেউ একবার উঠলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা তাকে বিশ্রাম নিয়ে নিচে নামতে হয়। ভাঙা ইট, মাটির উপর দিয়ে ভয়-আতঙ্কে পাহাড়ে বসে বা দাঁড়িয়ে সময় কাটাতে হচ্ছে। এরপরও পর্যটকরা পাহাড়ে সুখ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ছবিও তোলেন।
হিমছড়ি পাহাড়ের উপরে দোকানদার গিয়াস উদ্দিন জানান, বছর বছর কোটি টাকার টেন্ডার হলেও উন্নয়ন হয় না। পর্যটকরা পাহাড়ে উঠতে পারে না। তাই দোকানে বেচা-কেনাও কম। মাঝে মধ্যে বন্যহাতি পর্যটন স্পটে ঢুকে পড়ে।
তার মতে, এ পর্যটন স্পটে প্রতিদিন অনেকেই বেড়াতে যান। পাহাড়ে উঠে সাগর দেখার ব্যবস্থা করলে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আর দোকানে কেনাকাটা বাড়বে।
কয়েকজন নারী পর্যটক বলেন, হিমছড়ি পাহাড়ে গিয়ে টাকা খরচ ছাড়া কোন আনন্দ নেই। পাহাড়ে উঠা কষ্টকর ও ঝরনার স্থানটি আকর্ষণীয় করা হয়নি। বন বিভাগ শুধু টাকায়ই নেয়। সেখানে একটু বসা ও হালকা খাবারের ব্যবস্থা নেই। ধুলা-বালুর মধ্যে সবকিছু। আর ছোটখাটো দোকানগুলো যেন পর্যটকদের পকেট কাটতে বসছে। সেখানে কোন নিয়মকানুন নেই। প্রতিটি জিনিস চড়া দামে বিক্রি করছে। একটি ডাব (বড়) আড়াইশ’ টাকা, ছোট ২শ’ টাকা। ওইসব ডাব ঢাকায় সর্বোচ্চ ১শ’ টাকা। নিচে ৬০ টাকাও বিক্রি হয়। নিয়ম-কানুন না থাকায় ক্ষুদ্র অসাধু ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের পকেট কাটেন।
এ সম্পর্কে কক্সবাজার দক্ষিণের বন বিভাগের ডিএফও সরোয়ার আলম মুঠোফোনে জানান, হিমছড়ি পাহাড়ের উঠার সিঁড়িটি অনেক সরু। পর্যটকদের উঠতে কষ্ট হয় বলে তিনি স্বীকার করেন। ২০১২ সালে সম্ভবত সিঁড়িটি তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তাই নতুন করে নামার জন্য আরেকটি আধুনিক সিঁড়ি করার প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। বয়স্ক ও শিশুদের জন্য ক্যাপসুল লিফট চালু করার যায় কি না তা নিয়ে তিনি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।
চলতি বছর হিমছড়ির এই পর্যটন স্পটটি এক কোটি ২০ লাখ টাকায় টেন্ডার দেয়া হয়েছে। লিফট চালু করলে পর্যটক আরও বাড়বে। বছরে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ পর্যটক হিমছড়িতে বেড়াতে যান।
পাহাড়ের উপরে পর্যটকদের বিশ্রাম, খাবারের ব্যবস্থা করলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে ঝুলন্ত সেতু করলেও সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে বলে পর্যটকরা মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২
আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিমছড়ি পাহাড় ও ঝরনা। প্রতি বছর দেশি-বিদেশি প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ পর্যটক হিমছড়ির পর্যটক স্পটে বেড়াতে যান। যদিও পর্যটকরা ২৩ টাকায় প্রবেশ টিকেট কিনে ভিতরে ঢুকেই হতাশ হয়ে পড়েন।
সমতল ভূমি থেকে পাহাড়ে উঠার একমাত্র সিড়িটি এত ছোট যে সেখানে পা রাখা কষ্টকর। আবার দেখলেও ভয় লাগে। তাই টিকেট কিনেও ভেতরে আনেক পর্যটক পাহাড়ে উঠার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তারা কর্তৃপক্ষকে বকাঝকা করে ফিরে যান। পর্যটকদের অভিযোগ শোনার কেউ নেই। অনেকের মতে, পাহাড়ের উপরে উঠার সিঁড়িটি বিপজ্জনক।
সরেজমিন হিমছড়ি গিয়ে দেখা গেছে, কক্সবাজারে যত পর্যটক যান তারা এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকায় অটোরিকশা, টমটম কিংবা অন্যান্য গাড়ি ভাড়া করে হিমছড়ি পর্যটন স্পটেও বেড়াতে যান। গাড়িটি প্রধান সড়কের কাছে থামানোর সঙ্গে সঙ্গে ইজাদারের লোকজনকে প্রথমে ৩০ টাকা দিতে হয়। এরপর গাড়ি থেকে নেমে কয়েক গজ দূরে হিমছড়ি পাহার ও ঝরনার প্রবেশপথে আবার ২৩ টাকা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়।
টিকেট কিনে প্রথমে পাহাড়ে উপরে উঠতে গিয়ে পর্যটরা হোঁচট খান। কখন কে পড়ে আহত হওয়ার আশঙ্কায় থাকেন। উঠতি বয়সের কিছু পর্যটক উপরে উঠলেও রাস্তাগুলো অনেক বছরের পুরনো। ঝড়বৃষ্টিতে ভেঙে আছে। একবার দুর্ঘটনা ঘটলে মৃত্যুঝুঁকিও রয়েছে।
পাহাড়ের উপরে ছোট ছোট দোকানপাট ভাড়া দেয়া হয়েছে। কেউ একবার উঠলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা তাকে বিশ্রাম নিয়ে নিচে নামতে হয়। ভাঙা ইট, মাটির উপর দিয়ে ভয়-আতঙ্কে পাহাড়ে বসে বা দাঁড়িয়ে সময় কাটাতে হচ্ছে। এরপরও পর্যটকরা পাহাড়ে সুখ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে ছবিও তোলেন।
হিমছড়ি পাহাড়ের উপরে দোকানদার গিয়াস উদ্দিন জানান, বছর বছর কোটি টাকার টেন্ডার হলেও উন্নয়ন হয় না। পর্যটকরা পাহাড়ে উঠতে পারে না। তাই দোকানে বেচা-কেনাও কম। মাঝে মধ্যে বন্যহাতি পর্যটন স্পটে ঢুকে পড়ে।
তার মতে, এ পর্যটন স্পটে প্রতিদিন অনেকেই বেড়াতে যান। পাহাড়ে উঠে সাগর দেখার ব্যবস্থা করলে পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আর দোকানে কেনাকাটা বাড়বে।
কয়েকজন নারী পর্যটক বলেন, হিমছড়ি পাহাড়ে গিয়ে টাকা খরচ ছাড়া কোন আনন্দ নেই। পাহাড়ে উঠা কষ্টকর ও ঝরনার স্থানটি আকর্ষণীয় করা হয়নি। বন বিভাগ শুধু টাকায়ই নেয়। সেখানে একটু বসা ও হালকা খাবারের ব্যবস্থা নেই। ধুলা-বালুর মধ্যে সবকিছু। আর ছোটখাটো দোকানগুলো যেন পর্যটকদের পকেট কাটতে বসছে। সেখানে কোন নিয়মকানুন নেই। প্রতিটি জিনিস চড়া দামে বিক্রি করছে। একটি ডাব (বড়) আড়াইশ’ টাকা, ছোট ২শ’ টাকা। ওইসব ডাব ঢাকায় সর্বোচ্চ ১শ’ টাকা। নিচে ৬০ টাকাও বিক্রি হয়। নিয়ম-কানুন না থাকায় ক্ষুদ্র অসাধু ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের পকেট কাটেন।
এ সম্পর্কে কক্সবাজার দক্ষিণের বন বিভাগের ডিএফও সরোয়ার আলম মুঠোফোনে জানান, হিমছড়ি পাহাড়ের উঠার সিঁড়িটি অনেক সরু। পর্যটকদের উঠতে কষ্ট হয় বলে তিনি স্বীকার করেন। ২০১২ সালে সম্ভবত সিঁড়িটি তৈরি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তাই নতুন করে নামার জন্য আরেকটি আধুনিক সিঁড়ি করার প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়েছে। বয়স্ক ও শিশুদের জন্য ক্যাপসুল লিফট চালু করার যায় কি না তা নিয়ে তিনি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।
চলতি বছর হিমছড়ির এই পর্যটন স্পটটি এক কোটি ২০ লাখ টাকায় টেন্ডার দেয়া হয়েছে। লিফট চালু করলে পর্যটক আরও বাড়বে। বছরে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ পর্যটক হিমছড়িতে বেড়াতে যান।
পাহাড়ের উপরে পর্যটকদের বিশ্রাম, খাবারের ব্যবস্থা করলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে ঝুলন্ত সেতু করলেও সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলে বলে পর্যটকরা মন্তব্য করেন।