শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাম্প্রতিক এক সভার রেজুলেশন ঘিরে তীব্র সমালোচনা চলছে। আদালতের পেশকার ও পিয়নদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের ঘুষ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আরও আলোচনায় আসে। তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার(১৬ মার্চ) শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল বাশার মিঞা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে এই নোটিশ প্রদান করেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মার্চ আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও জিআরওদের কাছ থেকে মামলা দায়ের, দরখাস্ত, জামিননামা দাখিল এবং গারদখানায় ওকালতনামা স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে উৎকোচ গ্রহণের হার নির্ধারণ করা হয়। সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, সি.আর ফাইলিং: ১০০ টাকার বেশি নয়
দরখাস্ত (জি.আর/সি.আর): ১০০ টাকার বেশি নয় জামিননামা দাখিল: ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে গারদখানা ও ওকালতনামা স্বাক্ষর: ১০০ টাকা সিভিল ফাইলিং: সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হলফনামা: ১০০ টাকা এই সিদ্ধান্তের রেজুলেশন কপি জজকোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পেশকার, পিয়ন এবং কোর্ট পুলিশের জিআরওদের কাছে বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া এটি আইনজীবীদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং আইনজীবী সমিতির সভাকক্ষে উন্মুক্ত রাখা হয়। আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আদালতের কর্মচারীদের উৎকোচ নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নোটিশে বলা হয়, পরিমাণ যাই হোক না কেন, ঘুষ গ্রহণ ও প্রদানের যাবতীয় উদ্যোগ সমানভাবে বেআইনি ও নিন্দনীয়। বিচার বিভাগ যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছে, তখন এই ধরনের বেআইনি ও নৈতিকতা বিবর্জিত কার্যবিবরণী আইন পেশাকে কলুষিত করেছে এবং বিচার বিভাগের মর্যাদাহানি ঘটিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।
রোববার শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র আবুল বাশার মিঞা স্বাক্ষরিত দুটি কারণ দর্শানোর নোটি জারি করা হয়। একটি দেয়া হয় আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে আরেকটি দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদককে। আর অনুলিপি দেওয়া হয় জেলা ও দায়রা জজকে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ দুপুর ২ টায় শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশনে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সভা আইনজীবী সমিতির ভবনে আলহাজ্ব অ্যাড. সুলতান হোসেন মিয়া সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান। সবার শুরুতে এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনায় সকল সদস্য অংশ অংশগ্রহণ করেন। এবং আদালতের পেশকার ও পিয়নদের বিভিন্ন আইনি কাজে ঘুষ হিসেবে কত টাকা দেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়—সি.আর ফাইলিং: সর্বোচ্চ ১০০ টাকা, জি.আর/সি.আর দরখাস্ত: ১০০ টাকার বেশি নয়, জামিননামা দাখিল: ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে, গারদখানা ওকালতনামা স্বাক্ষর: ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিং: সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, হলফনামা: ১০০ টাকা। এরপরে আর কোন আলোচনা না থাকায় সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে সভাপতি মহোদয় সভার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা এতে অংশ নিতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান সংবাদকে বলেন, "আমরা দুর্নীতি বন্ধ করার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আদালতের সঙ্গে আমরা আইনজীবীরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে আছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তিন দিনের মধ্যেই লিখিতভাবে শোকজের জবাব দেব।"
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম ও জজ কোর্টের পিপি মনিরুজ্জামান দীপুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫
শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাম্প্রতিক এক সভার রেজুলেশন ঘিরে তীব্র সমালোচনা চলছে। আদালতের পেশকার ও পিয়নদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের ঘুষ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঝড় ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আরও আলোচনায় আসে। তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার(১৬ মার্চ) শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল বাশার মিঞা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে এই নোটিশ প্রদান করেন।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ মার্চ আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও জিআরওদের কাছ থেকে মামলা দায়ের, দরখাস্ত, জামিননামা দাখিল এবং গারদখানায় ওকালতনামা স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে উৎকোচ গ্রহণের হার নির্ধারণ করা হয়। সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, সি.আর ফাইলিং: ১০০ টাকার বেশি নয়
দরখাস্ত (জি.আর/সি.আর): ১০০ টাকার বেশি নয় জামিননামা দাখিল: ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে গারদখানা ও ওকালতনামা স্বাক্ষর: ১০০ টাকা সিভিল ফাইলিং: সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হলফনামা: ১০০ টাকা এই সিদ্ধান্তের রেজুলেশন কপি জজকোর্ট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পেশকার, পিয়ন এবং কোর্ট পুলিশের জিআরওদের কাছে বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া এটি আইনজীবীদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং আইনজীবী সমিতির সভাকক্ষে উন্মুক্ত রাখা হয়। আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্ত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আদালতের কর্মচারীদের উৎকোচ নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নোটিশে বলা হয়, পরিমাণ যাই হোক না কেন, ঘুষ গ্রহণ ও প্রদানের যাবতীয় উদ্যোগ সমানভাবে বেআইনি ও নিন্দনীয়। বিচার বিভাগ যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছে, তখন এই ধরনের বেআইনি ও নৈতিকতা বিবর্জিত কার্যবিবরণী আইন পেশাকে কলুষিত করেছে এবং বিচার বিভাগের মর্যাদাহানি ঘটিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।
রোববার শরীয়তপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র আবুল বাশার মিঞা স্বাক্ষরিত দুটি কারণ দর্শানোর নোটি জারি করা হয়। একটি দেয়া হয় আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে আরেকটি দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদককে। আর অনুলিপি দেওয়া হয় জেলা ও দায়রা জজকে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ দুপুর ২ টায় শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশনে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সভা আইনজীবী সমিতির ভবনে আলহাজ্ব অ্যাড. সুলতান হোসেন মিয়া সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান। সবার শুরুতে এজেন্ডা ভিত্তিক আলোচনায় সকল সদস্য অংশ অংশগ্রহণ করেন। এবং আদালতের পেশকার ও পিয়নদের বিভিন্ন আইনি কাজে ঘুষ হিসেবে কত টাকা দেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়—সি.আর ফাইলিং: সর্বোচ্চ ১০০ টাকা, জি.আর/সি.আর দরখাস্ত: ১০০ টাকার বেশি নয়, জামিননামা দাখিল: ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে, গারদখানা ওকালতনামা স্বাক্ষর: ১০০ টাকা, সিভিল ফাইলিং: সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, হলফনামা: ১০০ টাকা। এরপরে আর কোন আলোচনা না থাকায় সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে সভাপতি মহোদয় সভার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা এতে অংশ নিতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মুহাম্মদ কামরুল হাসান সংবাদকে বলেন, "আমরা দুর্নীতি বন্ধ করার জন্যই এই উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আদালতের সঙ্গে আমরা আইনজীবীরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে আছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তিন দিনের মধ্যেই লিখিতভাবে শোকজের জবাব দেব।"
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে সমিতির সভাপতি অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম ও জজ কোর্টের পিপি মনিরুজ্জামান দীপুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।