পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি তারেক রহমান রবিন এবং টিটন গাজী উভয়েই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
দুই দিনের রিমান্ড শেষে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে তিনি “ফাঁইসা গেছেন”। অন্যদিকে, টিটন গাজী রিমান্ডের শুনানিতে বলেছেন, তিনি লাল চাঁদকে কোনো আঘাত করেননি বা অন্য কাউকে মারধরের নির্দেশও দেননি, কেবল ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
রবিনের দাবি: ‘আমি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই, ফেঁসে গেছি’
শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ গিয়াস রবিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার আগে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রবিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। আমি দোষী, সারা বাংলাদেশের মানুষ জেনে গেছে।” তিনি জানান, তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিন দাবি করেন, আর ৮ দিন পর তার পর্তুগালের ফ্লাইট ছিল এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য তার ২২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের কারো সঙ্গে তার ‘সম্পর্ক নেই’ দাবি করে রবিন বলেন, “আমি ফাইসা গেছি। ঘটনাস্থলে ছিলাম না। সন্দেহের কারণে আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। আমার জীবনটা শেষ। আম্মু অসুস্থ হয়ে পড়েছে, ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে। আর কিছু বলতে চাই না।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদকে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
টিটনের ভাষ্য: ‘আমি শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম, কাউকে মারিনি’
অপরদিকে, টিটন গাজীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রিমান্ডের শুনানির সময় টিটন গাজী আদালতকে বলেছেন, তিনি ওই ঘটনার সময় কেবল দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি জানান, মনিরের নামের একজন তাকে ফোন দিলে তিনি ঘটনাস্থলে যান, তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তার জানা নেই।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি এজাহারনামীয়। কোতয়ালী-বংশাল এলাকায় ভাঙারির ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে, চাঁদা তোলা নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর আগে চাঁদা না দিলে ভিকটিমকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওতে দেখলাম, পাশবিকভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ইট, রড, সিমেন্ট, পাথর নিয়ে হামলা করে। আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগের কথা শুনেছি, এবার তা দেখলাম। লাশের উপর নৃত্য করার দৃশ্যও দেখলাম। তার সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
টিটনের কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত তাকে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছে, মনোযোগ সহকারে দেখবেন। আমি কোনো আঘাত বা মারধর করিনি। ভিডিওতে দেখবেন, আমি পেস্ট কালারের গেঞ্জি পরা। আমার এ ঘটনায় কোনো ভূমিকা ছিল না। আমি কাউকে মারার হুকুম দেয়নি। শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম।’
মামলার অগ্রগতি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া
লাল চাঁদের বড় বোন এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং পুলিশ একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ও র্যাব এই ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন এবং তারেক রহমান রবিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পাঁচজনকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ব্যবসায়ী মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামি তারেক রহমান রবিন এবং টিটন গাজী উভয়েই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
দুই দিনের রিমান্ড শেষে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার রবিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং দাবি করেছেন যে তিনি “ফাঁইসা গেছেন”। অন্যদিকে, টিটন গাজী রিমান্ডের শুনানিতে বলেছেন, তিনি লাল চাঁদকে কোনো আঘাত করেননি বা অন্য কাউকে মারধরের নির্দেশও দেননি, কেবল ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
রবিনের দাবি: ‘আমি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই, ফেঁসে গেছি’
শুক্রবার ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিব উল্লাহ গিয়াস রবিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার আগে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রবিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না। আমি দোষী, সারা বাংলাদেশের মানুষ জেনে গেছে।” তিনি জানান, তার কাছ থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিন দাবি করেন, আর ৮ দিন পর তার পর্তুগালের ফ্লাইট ছিল এবং বিদেশ যাওয়ার জন্য তার ২২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের কারো সঙ্গে তার ‘সম্পর্ক নেই’ দাবি করে রবিন বলেন, “আমি ফাইসা গেছি। ঘটনাস্থলে ছিলাম না। সন্দেহের কারণে আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। আমার জীবনটা শেষ। আম্মু অসুস্থ হয়ে পড়েছে, ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে। আর কিছু বলতে চাই না।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদকে। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
টিটনের ভাষ্য: ‘আমি শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম, কাউকে মারিনি’
অপরদিকে, টিটন গাজীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রিমান্ডের শুনানির সময় টিটন গাজী আদালতকে বলেছেন, তিনি ওই ঘটনার সময় কেবল দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি জানান, মনিরের নামের একজন তাকে ফোন দিলে তিনি ঘটনাস্থলে যান, তবে কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তার জানা নেই।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর কাইয়ুম হোসেন নয়ন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ‘আসামি এজাহারনামীয়। কোতয়ালী-বংশাল এলাকায় ভাঙারির ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে, চাঁদা তোলা নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর আগে চাঁদা না দিলে ভিকটিমকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওতে দেখলাম, পাশবিকভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে ইট, রড, সিমেন্ট, পাথর নিয়ে হামলা করে। আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগের কথা শুনেছি, এবার তা দেখলাম। লাশের উপর নৃত্য করার দৃশ্যও দেখলাম। তার সর্বোচ্চ রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
টিটনের কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত তাকে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছে, মনোযোগ সহকারে দেখবেন। আমি কোনো আঘাত বা মারধর করিনি। ভিডিওতে দেখবেন, আমি পেস্ট কালারের গেঞ্জি পরা। আমার এ ঘটনায় কোনো ভূমিকা ছিল না। আমি কাউকে মারার হুকুম দেয়নি। শুধু দাঁড়িয়ে ছিলাম।’
মামলার অগ্রগতি ও রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া
লাল চাঁদের বড় বোন এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন এবং পুলিশ একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ও র্যাব এই ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে মাহমুদুল হাসান মহিন এবং তারেক রহমান রবিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের পাঁচজনকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে বিএনপি।