alt

‘অর্থ পাচার’: রন ও রিকের বিরুদ্ধে দুই অভিযোগপত্র দুদকের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের দুই মামলার অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার,(২৯ অক্টোবর ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের এপ্রিলে রন ও রিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ। মামলাগুলো হয় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ। দুই মামলার অভিযোগ প্রায় একই ধরনের, যেখানে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকা পাচারের কথা বলা হয়েছে।

সিকদার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জয়নুল হক সিকদারের গড়ে তোলা ব্যবসায়িক ‘সাম্রাজ্য’ বর্তমানে তার স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে এসে পড়েছে। রন ও রিকের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরেই নানা অভিযোগ আসছিল সংবাদমাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তারা ব্যাংকের পরিচালক পদও হারিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, বিদেশে অবস্থানকালে তারা নিজেদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সীমার অতিরিক্ত খরচ করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোকে (সিআইবি) জানানো হয়নি। বরং ন্যাশনাল ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা তাদের ক্রেডিট লিমিট অবৈধভাবে বাড়িয়ে দেন।

রন হক সিকদার প্রায় ৫০ কোটি টাকা, আর রিক হক সিকদার প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা সীমার অতিরিক্ত খরচ করেছেন (২০১৭ সালের ডলার বিনিময় হার অনুযায়ী টাকায়)। এই টাকা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে থাইল্যান্ডে থাকা ২০টি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়, যা দিয়ে দুই ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়। তাদের নামে আরও বিভিন্ন দেশ থেকেও অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পাওয়ার কথা বলছে দুদক।

দুই মামলার আসামির তালিকায় অন্যদের মধ্যে রয়েছেন, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কার্ড ডিভিশন মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. ওয়াদুদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. এস. এম. বুলবুল, চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে চৌধুরী রাসেল আহমেদ, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট উজ্জ্বল কুমার পাল,

মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবীর চন্দ্র কর, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল আলম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ. এন. এম. আহসান হাবিব এবং সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তারিকুল ইসলাম খান। এদের সবাইকে দুটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ

মামলায় বলা হয়েছে, রন হক শিকদার ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচবার বিদেশে গিয়ে ৬১ লাখ ৫২ হাজার ২২৫ ডলার খরচ করেন। অথচ তিনি একবারে সর্বোচ্চ ১২ হাজার করে মোট ৬০ হাজার ডলার খরচ করতে পারতেন। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ডের সীমার অতিরিক্ত ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ ডলার (২০১৭ সালের বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৫০ কোটি টাকা) বিদেশে খরচ করেন।

রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচবার বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেন ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৯ ডলার। তার সীমা ছিল ৬০ হাজার ডলার। সে হিসাবে তিনি অতিরিক্ত খরচ করেন ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ ডলার। পরে সেই অর্থ পাচার করে তা দিয়ে কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে যথাসময়ে সিআইডি ডেটাবেইজে আপলোড করতে হয়। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের হেড অব কার্ড ডিভিশন মাহফুজুর রহমান ২০২০ সাল পর্যন্ত চার বছরেও ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য রিপোর্ট করেননি।

দুটি মামলার ভাষা প্রায় একই রকম। এজাহার অনুযায়ী, সিআইবিকে কোনো তথ্য না জানিয়ে আসামিরা অবৈধভাবে রন ও রিক হক সিকদারের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে অবৈধ লিমিট সুবিধা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, তারা ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার ৪৬১ ডলার খরচ করতে পারতেন। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্রেডিট কার্ডের সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ ঋণ পরে পরিশোধ করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পর্যালোচনায় দেখেছে, থাইল্যান্ডে রন ও রিক হক সিকদারের নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্তত ২০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে সেসব ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, চীন, ভিয়েনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, রাশিয়া থেকেও অর্থ স্থানান্তর হয়েছে রন ও রিক হকের নিজের ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে। ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংক পরিচালকের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক বছরের বেশি সময় ধরে বকেয়া পরিশোধ না করে দুই ভাই অর্থ খরচ অব্যাহত রাখেন।

ছবি

এস আলমের আরও ৪৬৯ একর জমি জব্দের আদেশ

ছবি

খুলনায় জোড়া খুন: ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

সোনারগাঁয়ে ডাকাতির মালামাল ভাগ নিয়ে দুই ডাকাত গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৩

ছবি

অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার

ছবি

পার্বতীপুরে লগি-বৈঠার নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

সিরাজদিখানে র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় আমামি গ্রেপ্তার

ছবি

বাঘায় চর দখলের সংঘর্ষে গুলিতে ২ জন নিহত

ছবি

সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে

ছবি

জেনেভা ক্যাম্পে বোমা বিস্ফোরণে যুবক নিহতের মামলায় ৪ জন রিমান্ডে

ছবি

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি: ৮ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিআইডির মানিলন্ডারিং আইনে মামলা

ছবি

সোনাইমুড়ীতে মাদারাসায় ঘুমন্ত ছাত্রকে জবাই করে হত্যা, হত্যাকারী আটক

ছবি

শেওড়াপাড়ায় কিশোরী নির্যাতন: গৃহকর্ত্রী পারভীন চৌধুরীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড

বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, ফরিদপুরের সৌরভকে গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করলো র‍্যাব

ছবি

নির্বাচন কমিশনের সামনে ‘ককটেল বিস্ফোরণ’, আটক ১

ছবি

পাঁচ মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন নিয়ে হাইকোর্টের রুল

ছবি

হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

ছবি

৬ ভরি স্বর্ণ লুট করতে শরীয়তপুরের ওই নারীকে হত্যা করা হয়: র‌্যাব

ছবি

রাউজানে ১৮ দিনের মাথায় আরও এক যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা

ছবি

বদলগাছীতে প্রবাসীর বাড়িতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা; আহত ২

ছবি

জামালপুরে ২২ হাজার পিস ইয়াবাসহ স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার

ছবি

সালিশ বৈঠকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

মোহাম্মদপুরে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার ৩১, সারাদেশে ১৭২৬

কদমতলীতে ছুরিকাঘাতে আহত পোশাককর্মীর মৃত্যু

ছবি

কুমিল্লায় বিচারের নামে নারী নির্যাতন ইউপি মেম্বারের, ভিডিও ভাইরা

ছবি

যশোরে গুলি ছুড়ে পালানোর সময় দুই সন্ত্রাসীকে আটক করল জনতা

ছবি

মেয়েকে হত্যার দায়ে পিতার কারাদণ্ড

ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতের কন্যাকে দলবেঁধে ধর্ষণ: তিন আসামির কারাদণ্ড

ছবি

শিশুকে ঢাকা থেকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ, কনস্টেবল কারাগারে

ছবি

রাজধানীর ১৫টির বেশি স্থানে ঝটিকা মিছিল, ১৩১ জন গ্রেপ্তার

ছবি

কবিরাজের কাছে জিন ছাড়াতে গিয়ে গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার

ছবি

চোলাই মদ বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ছবি

৯০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কর্মকর্তাসহ ৬ জনের কারাদণ্ড

ছবি

রাজধানীতে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৪

ছবি

বিইউপি ছাত্রীকে ধর্ষণ: প্রধান আসামি সোহেল তিনদিনের রিমান্ডে

ছবি

পর্নো ভিডিও তৈরির অভিযোগে যুগল গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুরে স্বর্ণালংকার লুটের জন্য মা-মেয়েকে হত্যা

tab

‘অর্থ পাচার’: রন ও রিকের বিরুদ্ধে দুই অভিযোগপত্র দুদকের

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের দুই মামলার অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার,(২৯ অক্টোবর ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের এপ্রিলে রন ও রিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ। মামলাগুলো হয় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ। দুই মামলার অভিযোগ প্রায় একই ধরনের, যেখানে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৭১ কোটি টাকা পাচারের কথা বলা হয়েছে।

সিকদার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জয়নুল হক সিকদারের গড়ে তোলা ব্যবসায়িক ‘সাম্রাজ্য’ বর্তমানে তার স্ত্রী ও সন্তানদের হাতে এসে পড়েছে। রন ও রিকের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরেই নানা অভিযোগ আসছিল সংবাদমাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তারা ব্যাংকের পরিচালক পদও হারিয়েছেন।

অভিযোগে বলা হয়, বিদেশে অবস্থানকালে তারা নিজেদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সীমার অতিরিক্ত খরচ করেন, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোকে (সিআইবি) জানানো হয়নি। বরং ন্যাশনাল ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা তাদের ক্রেডিট লিমিট অবৈধভাবে বাড়িয়ে দেন।

রন হক সিকদার প্রায় ৫০ কোটি টাকা, আর রিক হক সিকদার প্রায় সাড়ে ২১ কোটি টাকা সীমার অতিরিক্ত খরচ করেছেন (২০১৭ সালের ডলার বিনিময় হার অনুযায়ী টাকায়)। এই টাকা ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে থাইল্যান্ডে থাকা ২০টি ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়, যা দিয়ে দুই ভাইয়ের ক্রেডিট কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়। তাদের নামে আরও বিভিন্ন দেশ থেকেও অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পাওয়ার কথা বলছে দুদক।

দুই মামলার আসামির তালিকায় অন্যদের মধ্যে রয়েছেন, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব কার্ড ডিভিশন মো. মাহফুজুর রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ সৈয়দ আবদুল বারী, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. ওয়াদুদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. এস. এম. বুলবুল, চৌধুরী মোশতাক আহমেদ ওরফে চৌধুরী রাসেল আহমেদ, সাবেক সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট উজ্জ্বল কুমার পাল,

মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবীর চন্দ্র কর, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল আলম, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ. এন. এম. আহসান হাবিব এবং সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট তারিকুল ইসলাম খান। এদের সবাইকে দুটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ

মামলায় বলা হয়েছে, রন হক শিকদার ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচবার বিদেশে গিয়ে ৬১ লাখ ৫২ হাজার ২২৫ ডলার খরচ করেন। অথচ তিনি একবারে সর্বোচ্চ ১২ হাজার করে মোট ৬০ হাজার ডলার খরচ করতে পারতেন। অর্থাৎ ক্রেডিট কার্ডের সীমার অতিরিক্ত ৬০ লাখ ৯২ হাজার ২২৫ ডলার (২০১৭ সালের বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৫০ কোটি টাকা) বিদেশে খরচ করেন।

রিক হক সিকদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচবার বিদেশে গিয়ে ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেন ২৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৯ ডলার। তার সীমা ছিল ৬০ হাজার ডলার। সে হিসাবে তিনি অতিরিক্ত খরচ করেন ২৬ লাখ ২২ হাজার ৪৯৯ ডলার। পরে সেই অর্থ পাচার করে তা দিয়ে কার্ডের ঋণ পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য মাসিক ভিত্তিতে যথাসময়ে সিআইডি ডেটাবেইজে আপলোড করতে হয়। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের হেড অব কার্ড ডিভিশন মাহফুজুর রহমান ২০২০ সাল পর্যন্ত চার বছরেও ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য রিপোর্ট করেননি।

দুটি মামলার ভাষা প্রায় একই রকম। এজাহার অনুযায়ী, সিআইবিকে কোনো তথ্য না জানিয়ে আসামিরা অবৈধভাবে রন ও রিক হক সিকদারের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে অবৈধ লিমিট সুবিধা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, তারা ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার ৪৬১ ডলার খরচ করতে পারতেন। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্রেডিট কার্ডের সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ ঋণ পরে পরিশোধ করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পর্যালোচনায় দেখেছে, থাইল্যান্ডে রন ও রিক হক সিকদারের নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্তত ২০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে সেসব ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, চীন, ভিয়েনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, রাশিয়া থেকেও অর্থ স্থানান্তর হয়েছে রন ও রিক হকের নিজের ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে। ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ব্যাংক পরিচালকের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক বছরের বেশি সময় ধরে বকেয়া পরিশোধ না করে দুই ভাই অর্থ খরচ অব্যাহত রাখেন।

back to top