শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনা পরিষদ থেকে আরো চারজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন, আজাদ আবুল কালাম, সামিনা লুৎফা নিত্রা, লায়েকা বশীর ও র্যাচেল প্যারিস। আজ বুধবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা।
একাডেমিতে কাজকর্মে কোন আইন মানা হয়না, বেআইনী কাজের দায় নিতে চাননা, তাই পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন পদত্যাগী একাধিক সদস্য।
আজাদ আবুল কালাম ও সামিনা লুৎফা তাদের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন, তারা শিল্পকলার ‘বেআইনি’ কাজের সঙ্গে তারা নিজেদের যুক্ত রাখতে চান না।
এই ৪ সদস্যের পদত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, "তাদের পদত্যাপত্র পেয়েছি। আমি যথানিয়মে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।"
গত বছরের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে মহাপরিচালকের পদ ছাড়েন লিয়াকত আলী লাকী। পরে ৯ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালক পদে নাট্যনির্দেশক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদকে দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ১৭ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমি আইন ১৯৮৯ এর ৫(১) উপধারা অনুসারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত পরিষদে সদস্য মনোনীত হন ছায়ানটের সঙ্গীত শিক্ষক লায়েকা বশীর, নৃত্যশিল্পী র্যাচেল অ্যাগনেস প্যারিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ। এছাড়া ঢাকা বিভাগ থেকে মনোনীত হন আজাদ আবুল কালাম, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে জয়দেব রোয়াজা, রাজশাহী বিভাগ থেকে আসাদুজ্জামান দুলাল, খুলনা বিভাগ থেকে শিপন, বরিশাল বিভাগ থেকে দেবাশীস চক্রবর্তী, সিলেট বিভাগ থেকে শামসুল বাসিত শেরো, রংপুর বিভাগ থেকে ইফতেখারুল আলম রাজ এবং ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে কমল কান্তিকে সদস্য মনোনীত করা হয়।
জানা গেছে, গত নয় মাসে পরিষদের সভা হয়েছে মাত্র একবার, সৈয়দ জামিল আহমেদ থাকাকালে। মহাপরিচালক পদ থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগের মত ঘটনার পরও পরিষদের সভাপতি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কোনো সভা ডাকেননি।
গতকাল জমা দেয়া পদত্যাগপত্রে আজাদ আবুল কালাম লিখেছেন, "পরিষদকে সম্পূর্ণ অকার্যকর রেখে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের প্রতি সবচেয়ে বড় অবিচার হিসেবে দেখছি। বেআইনিভাবে শিল্পকলা যতদিন চলেছে, ততদিনের কোনো কর্মকাণ্ডের দায়ভার আমি নেব না, কারণ পরিষদকে ইচ্ছাকৃতভাবে পাশ কাটানো ও অকার্যকর রাখা হয়েছে।"
আর সামিনা লুৎফা লিখেছেন, "শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম আইনানুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে না। কাজেই বেআইনি কাজের সাথে আমি নিজেকে যুক্ত রাখতে ইচ্ছুক নই।"
গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শিল্পকলার চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান পদত্যাগ করেন, আর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে শিল্পকলার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন লেখক আলতাফ পারভেজ।
শিল্পকলা আইনের ৪ নম্বর ধারায় (সাধারণ পরিচালনা বিষয়ে) বলা আছে, একাডেমির সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন একটি পরিষদের উপর ন্যস্ত থাকবে এবং পরিষদ সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কাজ করতে পারবে, যা একাডেমি কর্তৃক প্রযুক্ত ও সম্পন্ন হতে পারে।
শিল্পকলা একাডেমি আইনের ১২(১) উপধারা অনুযায়ী, পরিষদ প্রতি তিন মাসে কমপক্ষে একবার সভায় মিলিত হবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান পরিষদের সভাপতি নির্ধারণ করবেন। কিন্তু এই পরিষদ গঠিত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পরিষদের ১২৫তম সভা হয়। এরপর আর কোনো সভা হয়নি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদাধিকার বলে শিল্পকলা পরিষদের সভাপতি এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
জানতে চাইলে আজাদ আবুল কালাম আজ রাতে সংবাদকে বলেন, “আমি পরিষদের সদস্য হলেও শিল্পকলা একাডেমি কীভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমাকে কোনো তথ্য জানানোও হয়নি। অথচ আইনানুযায়ী পরিষদের সদস্য হিসেবে গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের দায় আমার উপরও বর্তায়।"
তিনি বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমিতে কি কাজ হবে তা তিন মাস পর পর পরিষদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা। আমরা ৯ মাস ধরে এ পরিষদে আছি, প্রথম একটি মিটিং হয়েছে, তারপর আর কোন মিটিং হয়নি। কিন্তু শিল্পকলায় কাজতো হচ্ছেই। অর্থাৎ পর্ষদকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। সেখানে আমাদের কোন ভূমিকাই ছিলনা। তাই পদত্যাগ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে একাডেমিতে অনেক কাজ পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে। আইনগত ভাবে এটা করা যায়না। ইতিমধ্যে একাডেমিতে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি হয়েছে , সেগুলোর দায়তো আমার উপরও পড়বে।’
তিনি বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে এ পদে আমার থাকার কোন যুক্তি খুজে পাইনা। তাই পদত্যাগ করেছি।”
বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫
শিল্পকলা একাডেমির পরিচালনা পরিষদ থেকে আরো চারজন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন, আজাদ আবুল কালাম, সামিনা লুৎফা নিত্রা, লায়েকা বশীর ও র্যাচেল প্যারিস। আজ বুধবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তারা।
একাডেমিতে কাজকর্মে কোন আইন মানা হয়না, বেআইনী কাজের দায় নিতে চাননা, তাই পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন পদত্যাগী একাধিক সদস্য।
আজাদ আবুল কালাম ও সামিনা লুৎফা তাদের পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন, তারা শিল্পকলার ‘বেআইনি’ কাজের সঙ্গে তারা নিজেদের যুক্ত রাখতে চান না।
এই ৪ সদস্যের পদত্যাগ করার বিষয়টি নিশ্চিত করে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, "তাদের পদত্যাপত্র পেয়েছি। আমি যথানিয়মে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেব।"
গত বছরের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে মহাপরিচালকের পদ ছাড়েন লিয়াকত আলী লাকী। পরে ৯ সেপ্টেম্বর মহাপরিচালক পদে নাট্যনির্দেশক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদকে দুই বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর ১৭ অক্টোবর শিল্পকলা একাডেমি আইন ১৯৮৯ এর ৫(১) উপধারা অনুসারে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পরিষদ পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত পরিষদে সদস্য মনোনীত হন ছায়ানটের সঙ্গীত শিক্ষক লায়েকা বশীর, নৃত্যশিল্পী র্যাচেল অ্যাগনেস প্যারিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, লেখক-গবেষক আলতাফ পারভেজ। এছাড়া ঢাকা বিভাগ থেকে মনোনীত হন আজাদ আবুল কালাম, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে জয়দেব রোয়াজা, রাজশাহী বিভাগ থেকে আসাদুজ্জামান দুলাল, খুলনা বিভাগ থেকে শিপন, বরিশাল বিভাগ থেকে দেবাশীস চক্রবর্তী, সিলেট বিভাগ থেকে শামসুল বাসিত শেরো, রংপুর বিভাগ থেকে ইফতেখারুল আলম রাজ এবং ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে কমল কান্তিকে সদস্য মনোনীত করা হয়।
জানা গেছে, গত নয় মাসে পরিষদের সভা হয়েছে মাত্র একবার, সৈয়দ জামিল আহমেদ থাকাকালে। মহাপরিচালক পদ থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগের মত ঘটনার পরও পরিষদের সভাপতি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী কোনো সভা ডাকেননি।
গতকাল জমা দেয়া পদত্যাগপত্রে আজাদ আবুল কালাম লিখেছেন, "পরিষদকে সম্পূর্ণ অকার্যকর রেখে ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদের রক্তের প্রতি সবচেয়ে বড় অবিচার হিসেবে দেখছি। বেআইনিভাবে শিল্পকলা যতদিন চলেছে, ততদিনের কোনো কর্মকাণ্ডের দায়ভার আমি নেব না, কারণ পরিষদকে ইচ্ছাকৃতভাবে পাশ কাটানো ও অকার্যকর রাখা হয়েছে।"
আর সামিনা লুৎফা লিখেছেন, "শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম আইনানুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে না। কাজেই বেআইনি কাজের সাথে আমি নিজেকে যুক্ত রাখতে ইচ্ছুক নই।"
গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে শিল্পকলার চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান পদত্যাগ করেন, আর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে শিল্পকলার পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন লেখক আলতাফ পারভেজ।
শিল্পকলা আইনের ৪ নম্বর ধারায় (সাধারণ পরিচালনা বিষয়ে) বলা আছে, একাডেমির সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন একটি পরিষদের উপর ন্যস্ত থাকবে এবং পরিষদ সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ ও কাজ করতে পারবে, যা একাডেমি কর্তৃক প্রযুক্ত ও সম্পন্ন হতে পারে।
শিল্পকলা একাডেমি আইনের ১২(১) উপধারা অনুযায়ী, পরিষদ প্রতি তিন মাসে কমপক্ষে একবার সভায় মিলিত হবে এবং সভার তারিখ, সময় ও স্থান পরিষদের সভাপতি নির্ধারণ করবেন। কিন্তু এই পরিষদ গঠিত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পরিষদের ১২৫তম সভা হয়। এরপর আর কোনো সভা হয়নি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পদাধিকার বলে শিল্পকলা পরিষদের সভাপতি এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
জানতে চাইলে আজাদ আবুল কালাম আজ রাতে সংবাদকে বলেন, “আমি পরিষদের সদস্য হলেও শিল্পকলা একাডেমি কীভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমাকে কোনো তথ্য জানানোও হয়নি। অথচ আইনানুযায়ী পরিষদের সদস্য হিসেবে গৃহীত সকল সিদ্ধান্তের দায় আমার উপরও বর্তায়।"
তিনি বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমিতে কি কাজ হবে তা তিন মাস পর পর পরিষদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা। আমরা ৯ মাস ধরে এ পরিষদে আছি, প্রথম একটি মিটিং হয়েছে, তারপর আর কোন মিটিং হয়নি। কিন্তু শিল্পকলায় কাজতো হচ্ছেই। অর্থাৎ পর্ষদকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। সেখানে আমাদের কোন ভূমিকাই ছিলনা। তাই পদত্যাগ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে একাডেমিতে অনেক কাজ পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই হয়েছে। আইনগত ভাবে এটা করা যায়না। ইতিমধ্যে একাডেমিতে অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি হয়েছে , সেগুলোর দায়তো আমার উপরও পড়বে।’
তিনি বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে এ পদে আমার থাকার কোন যুক্তি খুজে পাইনা। তাই পদত্যাগ করেছি।”