বাবা দিবস আজ
প্রতিবছর সারা বিশ্বে জুন মাসের তৃতীয় রোবার বাবা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজ (২১ জুন) বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে বাবা দিবস। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে প্রথম বাবা দিবস উদযাপিত হয়। এরপর থেকে এই দিবসটি নিয়মি বাংলাদেশেও পালন হয়ে আসছে।
বাবা দিবসে আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনের তারাকারা তাদের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের মনের অব্যক্ত কথাগুলো প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। আর সেসব কথাই পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
আব্বার কবরেই যেন আমাকে দাফন করা হয় : ববিতা
শুধুমাত্র বাবা দিবস এলেই যে আব্বাকে মনে পড়ে আমার কাছে কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। আমার জীবনজুড়ে জড়িয়ে আছেন আমার আব্বা। সবাই বলেন, আমি না কী আমার আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠেছি। কিন্তু আদৌকী আমি আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠতে পেরেছি, এটা আমার নিজেরই কাছে নিজের প্রশ্ন। আমার বিয়ের মাত্র চার মাস পরেই আমার আব্বা এ এস এম নিজাম উদ্দিন আতাইয়ুব ইন্তেকাল করেন। যে কারণে মানসিকভাবে সেই সময় অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম। বাবাকে ঘিরে প্রত্যেক সন্তানেরই অনেক স্মৃতি থাকে। আব্বা সবসময় আমাদের ছয় ভাই বোনকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলতেন। আমার জীবনের সাফল্যের মূলমন্ত্র কিন্তু আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। এই যে আমি এতো পরিপাটি থাকি, গুছিয়ে থাকার চেষ্টা করি, এটা আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। আব্বা যখন অফিস থেকে আসতেন তখন আমরা সবাই আব্বাকে পান বানিয়ে খাওয়াতাম। আব্বা তখন বেশ আয়েশ করে পান খেতেন। আব্বার পা টিপে দিতে দিতে তখন সব আবদার করতাম। আব্বা আমাদের সেই আবদার রাখতেন। আবার আব্বা অনেক সিনেমা দেখতেন। সিনেমা দেখে দেখে আমাদেরকে মজার মজার গল্প বলতেন এবং সেই সব গল্পে আব্বা আমাদের অভিনয় করতে বলতেন। সেখান থেকেই কিন্তু অভিনয়ে আমার অনুপ্রেরণা আসা। পরবর্তীতে যখন আমি সিনেমার নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করি, তখনও আব্বা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিতেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয়ের আগে আব্বাই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে চিঠি আদান প্রদান করতেন ইংরেজিতে। শুটিং-এর সময় সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আব্বার চমৎকার একটি সম্পর্ক তৈরী হয়েছিলো। আমার ইংরেজি শেখার খুব শখ ছিলো বিধায় আব্বা আমাকে ছোটবেলাতে একটি ডিকশনারী কিনে দিয়েছিলেন। আমি তখন প্রথম শ্রেনীতে পড়ি। বাগেরহাটে থাকি সবাই। সবাই আমাকে রেখে মামার বাড়ি যাবে বেড়াতে। আমি বুদ্ধি করলাম কীভাবে আব্বাকে রাজি করানো যায়। আব্বা সন্ধ্যা নাগাদ বাসায় ফেরার সময় আমিই হারিকেন নিয়ে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গেলাম। আমাকে দেখে আব্বা ভীষণ খুশি, কারণ তখন বিদ্যুৎ ছিলোনা। অন্ধকারে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গিয়েছিলাম। আব্বা তখন খুশি হয়ে বললেন কী চাও মা? আমি বললাম আমাকেও সঙ্গ মামার বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। আব্বা রাজি হলেন। আব্বা আমার জীবনের আদর্শ। তাই আমার ইচ্ছে আমার মুত্যুর পর যেন বনানী কবরস্থানে আব্বার কবরেই যেন আমাকে দাফন করা হয়।
আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া বড় নিয়ামত আমার বাবা : ঈশিতা
আমার বাবা রশিদ আহমেদ খান একজন স্থপতি। আমার বাবাই এই পুরো পৃথিবীতে একমাত্র মানুষ যিনি আমাকে সারাজীবন ভালোবেসে গেছেন শুধু একটিমাত্র কারণেই, আর তা হলো আমি তাঁর মেয়ে। আমার আব্বাকে খুশী করতে স্কুলে আমাকে ভালো রেজাল্ট করতে হয়নি। নতুনকুঁড়িতে চ্যাম্পিয়ন হতে হয়নি। নাটকে ভালো অভিনয় করতে হয়নি। কিন্তু তারপরও তিনি আমাকে সারাজীবন শুধু ভালোই বেসেগেছেন। আমার আব্বা আমার নিয়ম ভাঙ্গার সঙ্গী। আমারই কোন অন্যায় আবদারের প্রশ্রয়দাতা আমার আব্বা। আবার আমার আনন্দেরও কারণ আব্বা। তিনি একজন সর্বশ্রেষ্ঠ বাবা। আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া আমার অনেক বড় নিয়ামত আমার বাবা।
আমার বাবা আমাদের সবার উপর আস্থা রেখেছেন : মেহজাবিন চৌধুরী
বিশ্বে বর্তমান যে পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে আসলে বাবার কাছে একটিই চাওয়া তিনি যেন নিজের যতœটা নিজেই যেন নেন। সবরকমের হতাশা থেকে যেন দূরে থাকেন। বিশে^ এই মুহূর্তে যতো সমস্যা তা নিয়ে যেন খুব বেশি দু:শ্চিন্তা না করেন। আমি মনেকরি নিজ থেকে ভালো থাকার চেষ্টাটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক সন্তানের চোখেই বাবা সুপার হিরো, আমার চোখেও আমার বাবা একজন সুপার হিরো। কারণ এমন কিছু নেই যা বাবা আমাদের জন্য করেননি। সবচেয়ে বড় কথা আমার বাবা তার প্রত্যেক সন্তানের উপর আস্থা রেখেছেন। আমার বাবা সবসময়ই এটা বলেন আমরা যে কাজই করিনা কেন সেটাতে যেন আমরা শীর্ষে যেতে পারি। পড়াশুনার ব্যাপারে তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। তবে ভালো ফলাফলটা চেয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে বাবা এবং মায়ের কাছে একটিই চাওয়া বেশি তা হলো তারা দু’জনই যেন নিজেদের যতœ নেন, ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন।
আবার যদি অভিনয় করি আব্বুর সঙ্গেই একই ফ্রেমে করবো: আঁখি আলমগীর
আব্বুর আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে পেরেছি কিংবা পারিনি সেটা সত্যিকার অর্থে আব্বু ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা সত্যি আমার আব্বু একজন পরিপূর্ণ মানুষ। তার মতো হওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। এটা সত্যি পৃথিবীর কোন সন্তানই বাবা মায়ের সম্পূর্ণ আদর্শে বাবা মায়ের পছন্দমতো নিজেকে গড়ে তুলতে পারেনা। কারণ প্রত্যেক বাবা মায়ের কাছেই তার সন্তান ভীষণ আদরের ভালোবাসার হলেও সেই সন্তান কিন্তু একজন স্বতন্ত্র মানুষ। আমরা সব ভাই বোনই আসলে আব্বুর সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে মানসিকভাবে এবং মনের দিক দিয়ে সম্পৃক্ত। নানান বিপদে আপদে আমাদের কাছে সাহসিকতার আরেক নাম আমাদের আব্বু। এই যে আমি এতো বড় হয়েছি, নিজে স্বাবলম্বী হয়েছি কিন্তু আব্বুর কাছে জবাবদিহি’র জায়গাটা কিন্তু এখনো রয়েগেছে। তার মেয়ে হিসেবে আমি সত্যিই ভীষণ গর্বিত। করোনা দুর্যোগের এমন সময়ে আমার আব্বু আম্মুর জন্য একটাই কামনা, আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন। তাদের যেন আল্লাহ দীর্ঘায়ূ দেন। অনেকেই বলেন, আমি কেন আর অভিনয় করিনা। তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলতে চাই, আবার যদি আমি অভিনয় করি তবে অবশ্যই আব্বুর সঙ্গেই একই ফ্রেমে অভিনয় করবো, নতুবা নয়।
আমি বিনয়ী হয়েছি আব্বুকে দেখেই : পপি
যেহেতু কনজারভেটিভ ফ্যামিলির মেয়ে আমি তাই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শুরুতে পরিবারের কারো তেমন কোন সমর্থন ছিলোনা যে আমি নায়িকা হিসেবে সিনেমাতে অভিনয় করি। আমার বাবা শুরু থেকেই সিনেমাতে অভিনয়ের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু তারপরও যখন কাজ শুরু করেছি, একের পর এক ভালো ভালো গল্পের সিনেমাতে কাজ করতে থাকি। তখন আব্বু আমাকে সমর্থন দেয়া শুরু করেন। যে কারণে পরবর্তীতে আব্বুর অনুপ্রেরণাতেই আমি সিনেমাতে নিজেকে আরো নিবেদিত করে কাজ শুরু করি। আমার অনেক সিনেমার শুটিং-এ আব্বু সঙ্গে গিয়েছেন এবং ধৈর্য্য ধরে আমার পাশে থেকেছেন। এটা অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু আমার বাবা আমার জন্যই কষ্ট করেছেন। আব্বু চুপচাপ স্বভাবের একজন মানুষ। প্রয়োজনের বাইরে তিনি কথা বলতে অভ্যস্ত নন। যথেষ্ট বিনয়ী একজন মানুষ। আব্বুর এই স্বভাবটাই আমি পেয়েছি। আমি প্রয়োজনের বাইরে কথা বলতে পছন্দ করিনা। সবাইকে বয়সানুযায়ী শ্রদ্ধা রেখে কথা বলি, ¯েœহ করি। আমার আব্বুর জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আব্বু সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন।
আমার বাবাই আমার চলার পথের শক্তি : তারিন
আমার দেখা প্রথম নায়ক, আমার কাছে সেরা, বাবা তোমার হৃদয়টা যে আদর দিয়ে ঘেরা, সারাজীবন দিয়েই গেছো, আরো কতো দেবে, সামান্য এই ভালোবাসা, বলো বাবা নেবে?... বেশ কয়েক বছর আগে বাবাকে নিয়ে আমার গাওয়া একটি গান এটি। গানটি লিখেছিলেন জুলফিকার রাসেল, সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন ইবরার টিপু। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানিয়েই গানটি গেয়েছিলাম আমি। আমার বাবা একজন সৎ মানুষ, তার এই সততাকেই আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়ে আমি পথ চলার চেষ্টা করি। আমার বাবা পিডাব্লিউডি’র ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বাবা এতোটাই সৎ ছিলেন যে ঢাকা শহরে তার একটি বাড়ি নেই। বাবা সারা জীবন মানুষের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করে গেছেন। বাবা আমাদের সব বোনদের একটি কথাই বলতেন, ‘সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে যাবে, বিনিময়ে চাইবেনা কিছুই, সে মনে রাখবে-তাও আশা করবেনা। যদি ভালো কাজ করো তার প্রতিদান নিশ্চয়ই পাবে।’ বাবার এই কথা মাথায় রেখেই আমরা সব বোনেরা জীবনের পথ চলি। আমার বাবা আমার চলার পথের সবচেয়ে বড় শক্তি, অনুপ্রেরণা। আমার বাবা অসুস্থ হবার পরও তার সন্তানদের প্রতি প্রতিমুহুর্তে যে ভালোবাসা প্রকাশ করেন তা আমাদের অনেক আনন্দ দেয়। বাবা আমাদের মাঝে সুস্থভাবে বেঁচে থাকুন এটাই চাই মহান আল্লাহর কাছে। বাবাই আমাদের স্বর্গ, এমন বাবার সন্তান হিসেবে আমি অবশ্যই গর্বিত।
বাবা এখনো আমাকে অপু বলেই ডাকেন : অপূর্ব
আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই আমি আমার বাবার আদর্শে বেড়ে উঠেছি, বড় হয়েছি। বাবার আদর্শের সবচেয়ে যে বিষয়টি আমি আমার নিজের মধ্যে লালন করি তা হলো, বাবা সবসময়ই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে একই সুঁতোয় গেঁথে থাকতে ভালোবাসতেন। একসঙ্গে থাকার মধ্যে সবসময়ই তারমধ্যে ভীষণ ভালোলাগা কাজ করতো। সবার সঙ্গে সবার সবসময় দেখা হয়, কথা হয় এটাই বাবাকে ভীষণ আনন্দ দিতো। আমিও ঠিক তাই পছন্দ করি। পারিবারিক যে বন্ধন সেটাকে এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। তাই বাবার আদর্শকে আমার নিজের মধ্যে লালন করে বাবার মতো করেই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসি আমি। আমি যেমন বাবার ¯েœহ মায়া মমতায় বেড়ে উঠেছি, তাই আমিও চাই আমার মায়া মমতা ¯েœহ’তে আমার সন্তান আয়াশ বেড়ে উঠার পাশাপাশি আমার বাবা মানে আয়াশ তার দাদার ¯েœহ মায়া মমতাত্ওে বেড়ে উঠুক। দাদা দাদীর কাছ থেকেও সে যেন কিছু শিখতে পারে সেটাও চাই আমি। আমি মনকরি একজন সন্তানের সঠিকভাবে বিকাশের ক্ষেত্রে পরিবারে থাকা প্রত্যেক সদস্যেরই আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে। একজন মানুষ ছোট থেকে বড় হয়ে উঠার ক্ষেত্রে পারিবারিক শিক্ষাটাই প্রধান এবং সবার আগে। পরিবার থেকে শিক্ষা নিয়েই সে বাইরের পৃথিবীতে পা বাড়ায়। আমিও আমার বাবা মা, ভাই বোনের কাছ থেকে পারিবারিক শিক্ষা নিয়েই নিজেকে বাইরের পৃথিবীতে বিকশিত করেছি। তাই আমি চাই আমার পরিবারে আমার বাবা মায়ের ¯েœহ মায়া মমতায় আমার সন্তানও বেড়ে উঠুক। আমার বাবা আমাকে ছোট্ট বেলায় অপু বলে ডাকতেন, এখনো তাই ডাকেন।
আমি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে, এটাই আমার গর্ব : দিঠি আনোয়ার
ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমার আব্বু দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত একজন মানুষ। আব্বুর এই বিষয়টি আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করে। যে কারণে আমারও মাঝে মাঝে মনে হয় দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করা উচিত। অবশ্য আমি এখন আমার দুই সন্তান আদিয়ান, আকিব, আমার সংসার জীবন, আমার সঙ্গীত জীবন নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তবে এসব ব্যস্ততা কমে গেলে আমার ইচ্ছে আছে নিজেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার। দেশের মানুষের জন্য আব্বুর মতোই কিছু করার প্রবল ইচ্ছে আমার। আমার আব্বু গাজী মাজহারুল আনোয়ার এটাই আমার অনেক অনেক গর্বের বিষয়। আমি তার সন্তান হিসেবে অনেক স্থানেই সম্মানিত হই। আব্বুর সুনাম শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও আছে। আমি জীবনে চলার পথে আব্বুর কর্মক্ষেত্রে সফলতার বিষয়টি বেশি ফলো করার চেষ্টা করি। তিনি তার বাবা মাকে ভীষণ শ্রদ্ধা করতেন, সেবা করতেন। একজন সন্তান হিসেবে তিনি যেমন শ্রেষ্ঠ, একজন স্বামী হিসেবেও তিনি শ্রেষ্ঠ, একজন বাবা হিসেবেও তিনি পৃথিবীর অন্যকম শ্রেষ্ঠ বাবা। আবার দাদা, নানা হিসেবেও তিনি শ্রেষ্ঠ। আমার জীবনের সবকিছুই আব্বু জানেন। আব্বুর সঙ্গেই শেয়ার করে শান্তি পাই। সবাই আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।
আমি আমার বাবার মতোই ক্ষমাশীল : কণা
ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সম্পর্কটা আমাদের দূরত্বের নয় বন্ধুত্বের। ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সবকিছুই শেয়ার করতাম। মগবাজার গার্লস স্কুলে পড়ার সময় আমি আর আমার বড় বোন একই রিক্সায় আব্বুর সঙ্গে যেতাম। আমি আব্বুর কোলে বসতাম, আর আপু পাশে। আমি আরেকটু বড় হবার পর আমি উপরে বসতাম। এক সময় একসঙ্গে আর স্কুলে যাওয়া হয়ে উঠতোনা। এই বড় বেলায় এসে ছোটবেলার সেই আব্বু, আমি আর আপুর একই রিক্সায় করে স্কুলে যাওয়ার দিনগুলো খুউব মসি করি। আমার কণা নামটি আমার খালুর রাখা। স্বাভাবিক ভাবেই একজন সন্তান বিশেষত মেয়েরা তার মায়ের অনেক গুনাবলীই পেয়ে থাকে। কিন্তু আমি আমার বাবার সততা এবং ক্ষমা করে দেয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে পেয়েছি। আমি আমার পেশায়, আমার কাজে যথেষ্ট সৎ থাকার চেষ্টা করি এবং আমি আমার বাবার মতোই ক্ষমাশীল। জীবন নিয়ে আমার খুউব বেশি উচ্চাকাঙ্খা নেই। এখন যা আছি আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি। আমার আম্মু আমার সঙ্গে দেশের বাইরে অনেক দেশে ঘুরেছেন। কিন্তু আব্বু বিমানে উঠতে চান না বিধায় তাকে নিয়ে আমার কোথাও ঘুরতে যাবার সুযোগ হয়নি। তাই আমার খুউব ইচ্ছে একদিন জোর করে হলেও আব্বুকে বিমানে উঠাবো, দেশের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবো। আব্বুর সঙ্গে কখনো কোথাও গেলে বিশেষত মার্কেটে আব্বু আমার পিছনে হাটেন। আমাকে নিয়ে কে কী বলেন সেটা আব্বু শুনতে চেষ্টা করেন। আবার কোন স্টেজ শো’তে গেলে আব্বু আমাকে ম্যাসেজ পাঠান-দর্শক এখন নাচের গান চাচ্ছে। এই বিষয়গুলো দারুন ভালোলাগে।
বাবা ছাড়া পৃথিবী কল্পনা করিনা : মিম
যেহেতু আমার বাবা শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন তাই বিভিন্ন সময়ে যখন বাবার কর্মক্ষেত্রে আমি গিয়েছি, নিজ চোখে দেখেছি বাবাকে সবাই কতো সম্মান করেন, ভালোবাসেন। আবার সেই বাবাই যখন আমার সঙ্গে এখন কোথাও যান তখন তিনি নিজ চোখে উপভোগ করেন সেই বাবারই মেয়েকে দর্শক কতোটা ভালোবাসছেন, শ্রদ্ধা করছেন। বাবার বুক তখন আনন্দে ভরে যায়। আমারও চোখে তখন জল চলে আসে। নিশ্চয়ই এটা অনেক ভালোলাগার যে বাবার আন্দ হওয়ার মতো, গর্ব করার মতো জীবনে কিছু একটা করতে পেরেছি। অভিনয়ে দিয়ে দর্শকের মন জয় করা খুব সহজ কোন কথা নয়। সেই কঠিন কাজটিই যখন করতে পেরেছি তখনই আমাকে নিয়ে বাবার আনন্দ হয় বেশি। বাবা আমাকে ছোটবেলায় টুকটুকি বলে ডাকতেন। আবার একটু বড় হবার পর বাবা আমাকে বাবু বলে ডাকা শুরু করেন। এখনো আমাকে বাবা বাবু বলেই ডাকেন। এই বড় বেলাতে এসেও বাবার বাবু ডাকার মধ্যে ছোট্টবেলার সেই আদুরের ডাকটাই পাই আমি। লাক্স চ্যানেলআই সুপারস্টার হবার পর আমি প্রথম হুমায়ূন আহমেদ স্যারের নির্দেশনায় রিয়াজ ভাইয়ের বিপরীতে অভিনয় করে পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম। পুরো টাকাটাই তখন বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। অবশ্য তারও আগে আমি যখন অষ্টম শ্রেনীতে বৃত্তি পেলাম বৃত্তির টাকাও বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। সত্যি বলতে কী বাবা আমার জীবনের পুরোটাতে এমনভাবে মিশে আছেন বাবা ছাড়া পৃথিবীতে আমি একটি দিনও কল্পনাও করতে পারিনা। আমার বাবা মায়ের আগেই যেন ঈশ^র আমাকে এই পৃথিবী থেকে নিয়ে যান।
বাবা হাজার বছর আগলে রাখুক ভালোবাসা দিয়ে : লুইপা
আমার প্রতি আমার বাবা কিংবা মায়ের ভালোভাসার গভীর অনুভূতি, ভালোবাসাটা আরো অনেক বেশি করে অনুধাবন করার চেষ্টা করছি আমার গর্ভে যখন পায়রা আসে এবং পরবর্তীতে আমার জীবনজুড়ে যখন পায়রার বিচরণ শুরু হয়। একজন সন্তান তার বাবা মায়ের কাছে কতোটা আদরের, কতোটা ¯েœহের, কতোটা আরাধনার, কতোটা স্বপ্নের সেটা আসলে এখন অনেক বেশি উপলদ্ধি করি। আমি আমার বাবার আদর্শে নিজেকে গড়ে তোলার শতভাগ চেষ্টা করেও তার আদর্শের অংশ বিশেষ হতে পেরেছি কী না জানিনা। তবে আব্বার আদর্শকে বুকে লালন করে আমি সঙ্গীতাঙ্গনের একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই নিজেকে। আব্বার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষের কাছে তার বিশ^স্থতা, মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা। আমিও মানুষের কাছে বিশ^স্থ হতে চাই, চাই মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। অনেকেই পৃথিবীতে স্বর্গ খুঁেজন। পুরো পৃথিবীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে জায়গাগুলো ঘুরে বেড়ান পরম সুখ প্রাপ্তির আশায়। কিন্তু আমার কাছে আমার বাবা আমার মা’ই স্বর্গের সুখ। এই সুখের পৃথিবী ছেড়ে আর কোথাও কী যাওয়া যায়? যায়না। আমার বাবা হাজার বছর আগলে রাখুক তার ভালোবাসা দিয়ে আমাকে, এটাই চাই। সুস্থ থাকুক আমার বাবা তার পুরো পৃথিবীর সবাইকে নিয়ে।
বাবা বারবার ঠকে একই ভুল করতেন : ইউসুফ আহমেদ খান
বাবা- যার কাছে সন্তানের জন্য কোনও কষ্টই কষ্ট না। রোদ, বৃষ্টি, জ্যাম, ভাঙ্গা রাস্তা, এগুলো কোনও বাঁধা না। বাইরে কোনও অনুষ্ঠানে বিরানীর প্যাকেট পেলে নিজে না খেয়ে তা সন্তানের জন্য নিয়া আসা, এগুলো দেখে বড় হয়েছি, আমার মায়ের অনেক বকা শুনেও মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকতে দেখেছি, তাদের ক্ষমা করতে দেখেছি, সব ভুলে যেতে দেখেছি, মা ভুলতেন না, মনে রেখে বাবাকে গুছিয়ে দিতেন, বাবা বার বার একই ভুল করতেন, এখনও করেন। ছোট্টবেলা থেকেই দেখে আসছি, বাবা বিশেষ বিচারক হিসেবে আসনে বসা, সেখানে তাকে কোনও দিন নিজের স্টুডেন্ট কেও ছাড় দিতে দেখিনি, অনেক ধরনের চাপে পড়েও কোনদিন অন্যায় রায় দিতে দেখিনি, তাহলে হয়তো দুটো গাড়ি, আর তিনটা বাড়ি হতো আমাদের, তবে আমাদের আজকের অবস্থান নিয়ে মাথা উঁচু করে কথা বলি, আমি ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান এর সন্তান। ঢাকার বাইরে থেকে কেউ যদি ভাল গাইতো, তাদের দশগুণ উৎসাহ দিতে দেখেছি, এরকম সহজ সরল, নীতিবান, মানবিক এবং সময় সচেতন একজন মানুষ আমার বাবা। আমার বাবা ভীষণ মায়ার মানুষ, এখনও বাবাকে জড়িয়ে ধরে, পা তুলে দিয়ে বাবার বুকে ঘুমাই, সব ভাইবোন মিলে। যে কারোরই ভালোকে ভালো বলা মানুষের শিক্ষা পেয়ে আমি ধন্য, মা’র প্রতি কৃতজ্ঞ এরকম বাবা পেয়েছি বলে।
বাবা নেই কিন্তু বাবার স্বপ্নটা পূরণ করতে চাই : নিথর মাহবুব
আমার বাবা কদরুজ্জামান মোল্লা গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। বাবা চলে যাবার পর থেকে প্রতিটি দিনই নিজের ভিতর একটা হাহাকার অনুভব করি। মনে হলেই চোখ ভিজে যায়। যখন বাবা ছিলেন প্রচন্ড একটা শক্তি অনুভব করতাম। বাবার মৃত্যুর পর মা-ও অনেকটা অসহায় দুর্বল হয়ে গেছেন। আমার বাবা ভালো ওয়াজ করতে পারতেন। বাবা সুন্দর ও জোরালো কন্ঠে গজল, নজরুল সঙ্গীতও ভালো লাগত। আমি খুব সৌভাগ্যবান যে, আমি আমার বাবা এবং মায়ের সব ভালো দিকগুলো পেয়েছি। আমাকে নিয়ে আমার মা-বাবা উভয়ই সবসময় চিন্তা করতেন। কারণ তাদের দৃষ্টিতে আমি উল্টা-পাল্টা ছিলাম। মানে নাটক, গান, আবৃত্তি এসবের পিছনে সময় নষ্ট করতাম।
আমি ২০০৩ সালের দিকে যখন ঢাকায় এসে কষ্ট করছিলাম, তখন বাবা কদিন পরপরই চিঠি লিখে পাঠাতেন। পাগলামী না করে প্রতিটি টিঠিতে ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করতে বলতেন। নাটক, গান এসব রেখে গ্রামের গিয়ে আমাদের হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতে বলতেন। তবে বাবা পরে নিশ্চিশ হতে পেরেছিলেন যে আমার সময়গুলো বিফলে যায়নি। ২০০৯ সালে যখন আমার অভিনীত বাংলালিংক এর একটি বিজ্ঞাপন প্রারে আসলো, বাবা এলাকার চায়ের দোকানে যখন আড্ডা দিতে বসলে, যখন টিভিতে বিজ্ঞাপনটি আসত আঙ্গুল তাক করে টিভিতে আমাকে দেখিয়ে সবাইকে বলতেন- এটা আমার ছেলে, যদিও গ্রামের সবাই আমাকে চিনে তবুও তিনি আবেগে সেটা বলতেন। গ্রামে গেলে সবাই আমাকে এসব জানাতেন। পত্রিকায় যখন নিউজ আসত বাজারের লোকেরা ডেকে বাবাকে বলতো- মোল্লাসাব আপনার ছেলের ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। বাবা পত্রিকা সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে যেতেন মাকে দেখানোর জন্য। অথচ তিনি একসময় আমার নাটক করা, গান করা এসব পছন্দ করতেন না। সন্তানের সাফল্য বাবা-মাকে কতটা খুশি করে তা আমি আমার বাবাকে দিয়ে বুঝেছি। বাবার ধারণা ছিল আমি অনেক টাকাও রোজগার করছি। আমাকে বাড়িতে একটা পাঁচ তালা বিল্ডিং করতে বলতেন। বাবা জানতেন না এই দেশে শিল্পীদের রোজগার এতো বেশি না। তবে বাবা বেঁচে থাকতেই টিনের চাল দিয়ে এক তালা একটা দালান করতে পেরেছি। যখন বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করি বাবা খুব খুশি ছিলেন। তখনও বলতেন পরে আবার একটা পাঁচ তালা বিল্ডিং উঠাবি। আমরা চার ভাইবোন তাই হয়তো বাবার স্বপ্ন ছিল পাঁচ তালা একটা বিল্ডিং। যদি আল্লাহ কখনো সামর্থ্য দেন বাবার এই ইচ্ছেটা পুরণ করতে চাই। আমার বাবাকে যেন আল্লাহ বেহেস্ত নসীব করেন, বাবা দিবসে সবার কাছে এই দোয়া চাই।
বাবার সহজ সরল আর সত্যবাদী বিশেষণ’ই আমি ধারণ করেছি : তরুন মুন্সী
আমার বাবা পেশাগতভাবে সরকারী এবং বেসরকারী দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানেই কর্মরত ছিলেন। চাকুরীর সুবাদে বাবা দেশের বাইরেও বেশকিছুদিন ছিলেন। যতোদিন আমার বাবা চাকুরী করেছেন বেশ সততার সাথে সুনামের সাথেই চাকুরী করেছেন। আমি যেহেতু বাবার বড় সন্তান তাই আমার সঙ্গে বাবার সম্পর্কটা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সংসারের অনেককিছুই এখন বাবা আমার সঙ্গে শেয়ার করেন, অনেক কিছুর ক্ষেত্রে বাবা আমার উপর ভীষণ আস্থা রেখেই নিজে নির্ভার থাকেন। সন্তান হিসেবে আরো দীর্ঘ সময় বাবা মায়ের সেবা করার স্বপ্ন দেখি। একবার স্কুলে আমার বাবাকে আমার একজন শিক্ষক এমন কিছু তথ্য বাবার কাছে তুলে ধরেছিলেন যা আমার বাবার জন্য ছিলো বিব্রতকর। কিন্তু সেই বিষয়টিকে আমি পজিটিভলিই নিয়েছিলাম।
কারণ আমি মনেকরি একজন শিক্ষকও বাবারই মতো। কারণ সেই ঘটনার কারণেই পরবর্তীতে আমার পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভালো হয়। সন্তান হিসেবে বাবাকে বলতে চাই, প্রতিদিনই বাবার শক্তি এবং ছায়াটাকে উপভোগ করতে চাই। আমি আসলে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। লেখাপড়া শেষে চাকুরী করলেও সঙ্গীতকে পেশা হিসেবে নেবার কারণে এক সময় খুউব চিন্তিত ছিলেন আমার বাবা মা। তবে আমি যা কিছুই করিনা কেন আমার বাবা এবং মায়ের নীরব সমর্থন ছিলো এবং তাদের বিশ্বাস ছিলো আমি ভালো করতে পারবো। আমার বাবা একজন সহজ সরল মানুষ, একজন সত্যবাদী মানুষ। বাবার সহজ সরল এবং সত্যবাদীতার বিষয়টিই আমার নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সবসময়ই আমার বাবার সমর্থন ছিলো। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমার বাবা যেন সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন।
বাবাকে দিয়ে একটি গান গাওয়ানোর স্বপ্ন আমার : রুমান রুনি
বাবাকে নিয়ে এভাবে কখনো কোনদিন বলতে হবে এটা আসলে আমার ভাবনাতেই কখনো ছিলোনা। মানুষের জীবনের কিছু মুহুর্ত আসে যা তার কল্পনারও বাইরে। আমি আমার বাবাকে নিয়ে বাবা দিবসে পাঠকের উদ্দেশ্যে কিছু বলবো, এটা যেন আমার জীবনের অন্যরকম এক প্রাপ্তি। আমার বাবা মো : সিরাজুল ইসলাম আকন্দ। বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরী করতেন। প্রত্যেকটা বাবাদের তার সন্তানদের কে নিয়ে আলাদা স্বপ্ন থাকে। যখন সেই স্বপ্ন পূরণ না হয় তাহলে বাবারা কিছুটা হলেও কষ্ট পান। কিন্তু কখনো কোন বাবা তা প্রকাশ করেন না। আমার বাবাও কোনদিন তা কোনভাবেই প্রকাশ করেননি। তবে আমি বুঝতে পারি। কিছুদিন আগে ‘বাবা’ নামের একটা নাটক নির্মাণ করেছিলাম। বাবা দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। তখন বাবা বলেছিল তুই তোর নির্মাণেই নিজের মেধাটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা কর। আর কিছুই করিস না। চেষ্টা করছি বাবার কথা রাখতে। কিন্তু বাবা অনেক পরিশ্রমী আর আমি অলস প্রকৃতির। বাবার আদর শাসন দুটোই সমানতালে পেয়েছি। বাবা আদর যেমন করতো ঠিক তেমনিভাবে শাসনটাও। কথায় বলে না শাসন করা তারই সাজে আদর করেন যিনি। আমার বাবা খুব সুন্দর গান করেন।
যদি কোনদিন বাবার একটা মৌলিক গান আমি করাইতে পারি আমি নিজেকে অনেক বেশি সৌভাগ্যবান মনে করবো। আমার বাবা খুবই সহজসরল একজন মানুষ । আজ পর্যন্ত বাবার কাছে চেয়ে কোন জিনিস পাই নাই এমন হয় নাই। আমার বাবা এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ একজন মানুষ,বাবাকে নিয়ে বলে শেষ করা যাবেনা। পৃথিবীতে যেমন একটিও খারাপ বাবা নেই ঠিক তেমনি ভাবে আমি বলতে পারি, আমার বাবার মতো অধিক সরলতায় আক্রান্ত মানুষ খুব একটা নেই বললেই চলে। প্রতিটি সন্তানের জন্যই বাবারা শতভাগ আশাবাদী, অপ্রকাশিত সুপ্ত এই ইচ্ছেগুলো প্রতিনিয়ত বাবাদের বুকে অংকুরিত হতে থাকে। বাবা দিবসে সন্তান হিসেবে আমি এবং আমাদের সকল সন্তানদের উচিৎ বাবাদের মনে অংকুরিত হওয়া ইচ্ছে গুলোকে শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে তোলা। ভালোবাসি বাবা তোমাকে।
বাবা দিবস আজ
রোববার, ২১ জুন ২০২০
প্রতিবছর সারা বিশ্বে জুন মাসের তৃতীয় রোবার বাবা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজ (২১ জুন) বাংলাদেশেও উদযাপিত হচ্ছে বাবা দিবস। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে প্রথম বাবা দিবস উদযাপিত হয়। এরপর থেকে এই দিবসটি নিয়মি বাংলাদেশেও পালন হয়ে আসছে।
বাবা দিবসে আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনের তারাকারা তাদের বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের মনের অব্যক্ত কথাগুলো প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। আর সেসব কথাই পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
আব্বার কবরেই যেন আমাকে দাফন করা হয় : ববিতা
শুধুমাত্র বাবা দিবস এলেই যে আব্বাকে মনে পড়ে আমার কাছে কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। আমার জীবনজুড়ে জড়িয়ে আছেন আমার আব্বা। সবাই বলেন, আমি না কী আমার আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠেছি। কিন্তু আদৌকী আমি আব্বার আদর্শে বেড়ে উঠতে পেরেছি, এটা আমার নিজেরই কাছে নিজের প্রশ্ন। আমার বিয়ের মাত্র চার মাস পরেই আমার আব্বা এ এস এম নিজাম উদ্দিন আতাইয়ুব ইন্তেকাল করেন। যে কারণে মানসিকভাবে সেই সময় অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম। বাবাকে ঘিরে প্রত্যেক সন্তানেরই অনেক স্মৃতি থাকে। আব্বা সবসময় আমাদের ছয় ভাই বোনকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলতেন। আমার জীবনের সাফল্যের মূলমন্ত্র কিন্তু আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। এই যে আমি এতো পরিপাটি থাকি, গুছিয়ে থাকার চেষ্টা করি, এটা আব্বার কাছ থেকেই পাওয়া। আব্বা যখন অফিস থেকে আসতেন তখন আমরা সবাই আব্বাকে পান বানিয়ে খাওয়াতাম। আব্বা তখন বেশ আয়েশ করে পান খেতেন। আব্বার পা টিপে দিতে দিতে তখন সব আবদার করতাম। আব্বা আমাদের সেই আবদার রাখতেন। আবার আব্বা অনেক সিনেমা দেখতেন। সিনেমা দেখে দেখে আমাদেরকে মজার মজার গল্প বলতেন এবং সেই সব গল্পে আব্বা আমাদের অভিনয় করতে বলতেন। সেখান থেকেই কিন্তু অভিনয়ে আমার অনুপ্রেরণা আসা। পরবর্তীতে যখন আমি সিনেমার নায়িকা হিসেবে কাজ শুরু করি, তখনও আব্বা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিতেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয়ের আগে আব্বাই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে চিঠি আদান প্রদান করতেন ইংরেজিতে। শুটিং-এর সময় সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে আব্বার চমৎকার একটি সম্পর্ক তৈরী হয়েছিলো। আমার ইংরেজি শেখার খুব শখ ছিলো বিধায় আব্বা আমাকে ছোটবেলাতে একটি ডিকশনারী কিনে দিয়েছিলেন। আমি তখন প্রথম শ্রেনীতে পড়ি। বাগেরহাটে থাকি সবাই। সবাই আমাকে রেখে মামার বাড়ি যাবে বেড়াতে। আমি বুদ্ধি করলাম কীভাবে আব্বাকে রাজি করানো যায়। আব্বা সন্ধ্যা নাগাদ বাসায় ফেরার সময় আমিই হারিকেন নিয়ে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গেলাম। আমাকে দেখে আব্বা ভীষণ খুশি, কারণ তখন বিদ্যুৎ ছিলোনা। অন্ধকারে আব্বাকে এগিয়ে আনতে গিয়েছিলাম। আব্বা তখন খুশি হয়ে বললেন কী চাও মা? আমি বললাম আমাকেও সঙ্গ মামার বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে। আব্বা রাজি হলেন। আব্বা আমার জীবনের আদর্শ। তাই আমার ইচ্ছে আমার মুত্যুর পর যেন বনানী কবরস্থানে আব্বার কবরেই যেন আমাকে দাফন করা হয়।
আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া বড় নিয়ামত আমার বাবা : ঈশিতা
আমার বাবা রশিদ আহমেদ খান একজন স্থপতি। আমার বাবাই এই পুরো পৃথিবীতে একমাত্র মানুষ যিনি আমাকে সারাজীবন ভালোবেসে গেছেন শুধু একটিমাত্র কারণেই, আর তা হলো আমি তাঁর মেয়ে। আমার আব্বাকে খুশী করতে স্কুলে আমাকে ভালো রেজাল্ট করতে হয়নি। নতুনকুঁড়িতে চ্যাম্পিয়ন হতে হয়নি। নাটকে ভালো অভিনয় করতে হয়নি। কিন্তু তারপরও তিনি আমাকে সারাজীবন শুধু ভালোই বেসেগেছেন। আমার আব্বা আমার নিয়ম ভাঙ্গার সঙ্গী। আমারই কোন অন্যায় আবদারের প্রশ্রয়দাতা আমার আব্বা। আবার আমার আনন্দেরও কারণ আব্বা। তিনি একজন সর্বশ্রেষ্ঠ বাবা। আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া আমার অনেক বড় নিয়ামত আমার বাবা।
আমার বাবা আমাদের সবার উপর আস্থা রেখেছেন : মেহজাবিন চৌধুরী
বিশ্বে বর্তমান যে পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে আসলে বাবার কাছে একটিই চাওয়া তিনি যেন নিজের যতœটা নিজেই যেন নেন। সবরকমের হতাশা থেকে যেন দূরে থাকেন। বিশে^ এই মুহূর্তে যতো সমস্যা তা নিয়ে যেন খুব বেশি দু:শ্চিন্তা না করেন। আমি মনেকরি নিজ থেকে ভালো থাকার চেষ্টাটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক সন্তানের চোখেই বাবা সুপার হিরো, আমার চোখেও আমার বাবা একজন সুপার হিরো। কারণ এমন কিছু নেই যা বাবা আমাদের জন্য করেননি। সবচেয়ে বড় কথা আমার বাবা তার প্রত্যেক সন্তানের উপর আস্থা রেখেছেন। আমার বাবা সবসময়ই এটা বলেন আমরা যে কাজই করিনা কেন সেটাতে যেন আমরা শীর্ষে যেতে পারি। পড়াশুনার ব্যাপারে তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন। তবে ভালো ফলাফলটা চেয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে বাবা এবং মায়ের কাছে একটিই চাওয়া বেশি তা হলো তারা দু’জনই যেন নিজেদের যতœ নেন, ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন।
আবার যদি অভিনয় করি আব্বুর সঙ্গেই একই ফ্রেমে করবো: আঁখি আলমগীর
আব্বুর আদর্শে নিজেকে গড়ে তুলতে পেরেছি কিংবা পারিনি সেটা সত্যিকার অর্থে আব্বু ভালো বলতে পারবেন। তবে এটা সত্যি আমার আব্বু একজন পরিপূর্ণ মানুষ। তার মতো হওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। এটা সত্যি পৃথিবীর কোন সন্তানই বাবা মায়ের সম্পূর্ণ আদর্শে বাবা মায়ের পছন্দমতো নিজেকে গড়ে তুলতে পারেনা। কারণ প্রত্যেক বাবা মায়ের কাছেই তার সন্তান ভীষণ আদরের ভালোবাসার হলেও সেই সন্তান কিন্তু একজন স্বতন্ত্র মানুষ। আমরা সব ভাই বোনই আসলে আব্বুর সঙ্গে পরিপূর্ণভাবে মানসিকভাবে এবং মনের দিক দিয়ে সম্পৃক্ত। নানান বিপদে আপদে আমাদের কাছে সাহসিকতার আরেক নাম আমাদের আব্বু। এই যে আমি এতো বড় হয়েছি, নিজে স্বাবলম্বী হয়েছি কিন্তু আব্বুর কাছে জবাবদিহি’র জায়গাটা কিন্তু এখনো রয়েগেছে। তার মেয়ে হিসেবে আমি সত্যিই ভীষণ গর্বিত। করোনা দুর্যোগের এমন সময়ে আমার আব্বু আম্মুর জন্য একটাই কামনা, আল্লাহ যেন তাদের ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন। তাদের যেন আল্লাহ দীর্ঘায়ূ দেন। অনেকেই বলেন, আমি কেন আর অভিনয় করিনা। তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলতে চাই, আবার যদি আমি অভিনয় করি তবে অবশ্যই আব্বুর সঙ্গেই একই ফ্রেমে অভিনয় করবো, নতুবা নয়।
আমি বিনয়ী হয়েছি আব্বুকে দেখেই : পপি
যেহেতু কনজারভেটিভ ফ্যামিলির মেয়ে আমি তাই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শুরুতে পরিবারের কারো তেমন কোন সমর্থন ছিলোনা যে আমি নায়িকা হিসেবে সিনেমাতে অভিনয় করি। আমার বাবা শুরু থেকেই সিনেমাতে অভিনয়ের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু তারপরও যখন কাজ শুরু করেছি, একের পর এক ভালো ভালো গল্পের সিনেমাতে কাজ করতে থাকি। তখন আব্বু আমাকে সমর্থন দেয়া শুরু করেন। যে কারণে পরবর্তীতে আব্বুর অনুপ্রেরণাতেই আমি সিনেমাতে নিজেকে আরো নিবেদিত করে কাজ শুরু করি। আমার অনেক সিনেমার শুটিং-এ আব্বু সঙ্গে গিয়েছেন এবং ধৈর্য্য ধরে আমার পাশে থেকেছেন। এটা অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু আমার বাবা আমার জন্যই কষ্ট করেছেন। আব্বু চুপচাপ স্বভাবের একজন মানুষ। প্রয়োজনের বাইরে তিনি কথা বলতে অভ্যস্ত নন। যথেষ্ট বিনয়ী একজন মানুষ। আব্বুর এই স্বভাবটাই আমি পেয়েছি। আমি প্রয়োজনের বাইরে কথা বলতে পছন্দ করিনা। সবাইকে বয়সানুযায়ী শ্রদ্ধা রেখে কথা বলি, ¯েœহ করি। আমার আব্বুর জন্য সবাই দোয়া করবেন যেন আব্বু সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন।
আমার বাবাই আমার চলার পথের শক্তি : তারিন
আমার দেখা প্রথম নায়ক, আমার কাছে সেরা, বাবা তোমার হৃদয়টা যে আদর দিয়ে ঘেরা, সারাজীবন দিয়েই গেছো, আরো কতো দেবে, সামান্য এই ভালোবাসা, বলো বাবা নেবে?... বেশ কয়েক বছর আগে বাবাকে নিয়ে আমার গাওয়া একটি গান এটি। গানটি লিখেছিলেন জুলফিকার রাসেল, সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন ইবরার টিপু। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা জানিয়েই গানটি গেয়েছিলাম আমি। আমার বাবা একজন সৎ মানুষ, তার এই সততাকেই আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়ে আমি পথ চলার চেষ্টা করি। আমার বাবা পিডাব্লিউডি’র ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বাবা এতোটাই সৎ ছিলেন যে ঢাকা শহরে তার একটি বাড়ি নেই। বাবা সারা জীবন মানুষের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করে গেছেন। বাবা আমাদের সব বোনদের একটি কথাই বলতেন, ‘সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে যাবে, বিনিময়ে চাইবেনা কিছুই, সে মনে রাখবে-তাও আশা করবেনা। যদি ভালো কাজ করো তার প্রতিদান নিশ্চয়ই পাবে।’ বাবার এই কথা মাথায় রেখেই আমরা সব বোনেরা জীবনের পথ চলি। আমার বাবা আমার চলার পথের সবচেয়ে বড় শক্তি, অনুপ্রেরণা। আমার বাবা অসুস্থ হবার পরও তার সন্তানদের প্রতি প্রতিমুহুর্তে যে ভালোবাসা প্রকাশ করেন তা আমাদের অনেক আনন্দ দেয়। বাবা আমাদের মাঝে সুস্থভাবে বেঁচে থাকুন এটাই চাই মহান আল্লাহর কাছে। বাবাই আমাদের স্বর্গ, এমন বাবার সন্তান হিসেবে আমি অবশ্যই গর্বিত।
বাবা এখনো আমাকে অপু বলেই ডাকেন : অপূর্ব
আমার বাবা একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই আমি আমার বাবার আদর্শে বেড়ে উঠেছি, বড় হয়েছি। বাবার আদর্শের সবচেয়ে যে বিষয়টি আমি আমার নিজের মধ্যে লালন করি তা হলো, বাবা সবসময়ই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে একই সুঁতোয় গেঁথে থাকতে ভালোবাসতেন। একসঙ্গে থাকার মধ্যে সবসময়ই তারমধ্যে ভীষণ ভালোলাগা কাজ করতো। সবার সঙ্গে সবার সবসময় দেখা হয়, কথা হয় এটাই বাবাকে ভীষণ আনন্দ দিতো। আমিও ঠিক তাই পছন্দ করি। পারিবারিক যে বন্ধন সেটাকে এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই। তাই বাবার আদর্শকে আমার নিজের মধ্যে লালন করে বাবার মতো করেই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে ভালোবাসি আমি। আমি যেমন বাবার ¯েœহ মায়া মমতায় বেড়ে উঠেছি, তাই আমিও চাই আমার মায়া মমতা ¯েœহ’তে আমার সন্তান আয়াশ বেড়ে উঠার পাশাপাশি আমার বাবা মানে আয়াশ তার দাদার ¯েœহ মায়া মমতাত্ওে বেড়ে উঠুক। দাদা দাদীর কাছ থেকেও সে যেন কিছু শিখতে পারে সেটাও চাই আমি। আমি মনকরি একজন সন্তানের সঠিকভাবে বিকাশের ক্ষেত্রে পরিবারে থাকা প্রত্যেক সদস্যেরই আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে। একজন মানুষ ছোট থেকে বড় হয়ে উঠার ক্ষেত্রে পারিবারিক শিক্ষাটাই প্রধান এবং সবার আগে। পরিবার থেকে শিক্ষা নিয়েই সে বাইরের পৃথিবীতে পা বাড়ায়। আমিও আমার বাবা মা, ভাই বোনের কাছ থেকে পারিবারিক শিক্ষা নিয়েই নিজেকে বাইরের পৃথিবীতে বিকশিত করেছি। তাই আমি চাই আমার পরিবারে আমার বাবা মায়ের ¯েœহ মায়া মমতায় আমার সন্তানও বেড়ে উঠুক। আমার বাবা আমাকে ছোট্ট বেলায় অপু বলে ডাকতেন, এখনো তাই ডাকেন।
আমি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মেয়ে, এটাই আমার গর্ব : দিঠি আনোয়ার
ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমার আব্বু দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত একজন মানুষ। আব্বুর এই বিষয়টি আমাকে দারুণভাবে উৎসাহিত করে। যে কারণে আমারও মাঝে মাঝে মনে হয় দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করা উচিত। অবশ্য আমি এখন আমার দুই সন্তান আদিয়ান, আকিব, আমার সংসার জীবন, আমার সঙ্গীত জীবন নিয়েই বেশি ব্যস্ত। তবে এসব ব্যস্ততা কমে গেলে আমার ইচ্ছে আছে নিজেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার। দেশের মানুষের জন্য আব্বুর মতোই কিছু করার প্রবল ইচ্ছে আমার। আমার আব্বু গাজী মাজহারুল আনোয়ার এটাই আমার অনেক অনেক গর্বের বিষয়। আমি তার সন্তান হিসেবে অনেক স্থানেই সম্মানিত হই। আব্বুর সুনাম শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও আছে। আমি জীবনে চলার পথে আব্বুর কর্মক্ষেত্রে সফলতার বিষয়টি বেশি ফলো করার চেষ্টা করি। তিনি তার বাবা মাকে ভীষণ শ্রদ্ধা করতেন, সেবা করতেন। একজন সন্তান হিসেবে তিনি যেমন শ্রেষ্ঠ, একজন স্বামী হিসেবেও তিনি শ্রেষ্ঠ, একজন বাবা হিসেবেও তিনি পৃথিবীর অন্যকম শ্রেষ্ঠ বাবা। আবার দাদা, নানা হিসেবেও তিনি শ্রেষ্ঠ। আমার জীবনের সবকিছুই আব্বু জানেন। আব্বুর সঙ্গেই শেয়ার করে শান্তি পাই। সবাই আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন।
আমি আমার বাবার মতোই ক্ষমাশীল : কণা
ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সম্পর্কটা আমাদের দূরত্বের নয় বন্ধুত্বের। ছোটবেলা থেকেই আব্বুর সঙ্গে সবকিছুই শেয়ার করতাম। মগবাজার গার্লস স্কুলে পড়ার সময় আমি আর আমার বড় বোন একই রিক্সায় আব্বুর সঙ্গে যেতাম। আমি আব্বুর কোলে বসতাম, আর আপু পাশে। আমি আরেকটু বড় হবার পর আমি উপরে বসতাম। এক সময় একসঙ্গে আর স্কুলে যাওয়া হয়ে উঠতোনা। এই বড় বেলায় এসে ছোটবেলার সেই আব্বু, আমি আর আপুর একই রিক্সায় করে স্কুলে যাওয়ার দিনগুলো খুউব মসি করি। আমার কণা নামটি আমার খালুর রাখা। স্বাভাবিক ভাবেই একজন সন্তান বিশেষত মেয়েরা তার মায়ের অনেক গুনাবলীই পেয়ে থাকে। কিন্তু আমি আমার বাবার সততা এবং ক্ষমা করে দেয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে পেয়েছি। আমি আমার পেশায়, আমার কাজে যথেষ্ট সৎ থাকার চেষ্টা করি এবং আমি আমার বাবার মতোই ক্ষমাশীল। জীবন নিয়ে আমার খুউব বেশি উচ্চাকাঙ্খা নেই। এখন যা আছি আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি। আমার আম্মু আমার সঙ্গে দেশের বাইরে অনেক দেশে ঘুরেছেন। কিন্তু আব্বু বিমানে উঠতে চান না বিধায় তাকে নিয়ে আমার কোথাও ঘুরতে যাবার সুযোগ হয়নি। তাই আমার খুউব ইচ্ছে একদিন জোর করে হলেও আব্বুকে বিমানে উঠাবো, দেশের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবো। আব্বুর সঙ্গে কখনো কোথাও গেলে বিশেষত মার্কেটে আব্বু আমার পিছনে হাটেন। আমাকে নিয়ে কে কী বলেন সেটা আব্বু শুনতে চেষ্টা করেন। আবার কোন স্টেজ শো’তে গেলে আব্বু আমাকে ম্যাসেজ পাঠান-দর্শক এখন নাচের গান চাচ্ছে। এই বিষয়গুলো দারুন ভালোলাগে।
বাবা ছাড়া পৃথিবী কল্পনা করিনা : মিম
যেহেতু আমার বাবা শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন তাই বিভিন্ন সময়ে যখন বাবার কর্মক্ষেত্রে আমি গিয়েছি, নিজ চোখে দেখেছি বাবাকে সবাই কতো সম্মান করেন, ভালোবাসেন। আবার সেই বাবাই যখন আমার সঙ্গে এখন কোথাও যান তখন তিনি নিজ চোখে উপভোগ করেন সেই বাবারই মেয়েকে দর্শক কতোটা ভালোবাসছেন, শ্রদ্ধা করছেন। বাবার বুক তখন আনন্দে ভরে যায়। আমারও চোখে তখন জল চলে আসে। নিশ্চয়ই এটা অনেক ভালোলাগার যে বাবার আন্দ হওয়ার মতো, গর্ব করার মতো জীবনে কিছু একটা করতে পেরেছি। অভিনয়ে দিয়ে দর্শকের মন জয় করা খুব সহজ কোন কথা নয়। সেই কঠিন কাজটিই যখন করতে পেরেছি তখনই আমাকে নিয়ে বাবার আনন্দ হয় বেশি। বাবা আমাকে ছোটবেলায় টুকটুকি বলে ডাকতেন। আবার একটু বড় হবার পর বাবা আমাকে বাবু বলে ডাকা শুরু করেন। এখনো আমাকে বাবা বাবু বলেই ডাকেন। এই বড় বেলাতে এসেও বাবার বাবু ডাকার মধ্যে ছোট্টবেলার সেই আদুরের ডাকটাই পাই আমি। লাক্স চ্যানেলআই সুপারস্টার হবার পর আমি প্রথম হুমায়ূন আহমেদ স্যারের নির্দেশনায় রিয়াজ ভাইয়ের বিপরীতে অভিনয় করে পাঁচ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলাম। পুরো টাকাটাই তখন বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। অবশ্য তারও আগে আমি যখন অষ্টম শ্রেনীতে বৃত্তি পেলাম বৃত্তির টাকাও বাবার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। সত্যি বলতে কী বাবা আমার জীবনের পুরোটাতে এমনভাবে মিশে আছেন বাবা ছাড়া পৃথিবীতে আমি একটি দিনও কল্পনাও করতে পারিনা। আমার বাবা মায়ের আগেই যেন ঈশ^র আমাকে এই পৃথিবী থেকে নিয়ে যান।
বাবা হাজার বছর আগলে রাখুক ভালোবাসা দিয়ে : লুইপা
আমার প্রতি আমার বাবা কিংবা মায়ের ভালোভাসার গভীর অনুভূতি, ভালোবাসাটা আরো অনেক বেশি করে অনুধাবন করার চেষ্টা করছি আমার গর্ভে যখন পায়রা আসে এবং পরবর্তীতে আমার জীবনজুড়ে যখন পায়রার বিচরণ শুরু হয়। একজন সন্তান তার বাবা মায়ের কাছে কতোটা আদরের, কতোটা ¯েœহের, কতোটা আরাধনার, কতোটা স্বপ্নের সেটা আসলে এখন অনেক বেশি উপলদ্ধি করি। আমি আমার বাবার আদর্শে নিজেকে গড়ে তোলার শতভাগ চেষ্টা করেও তার আদর্শের অংশ বিশেষ হতে পেরেছি কী না জানিনা। তবে আব্বার আদর্শকে বুকে লালন করে আমি সঙ্গীতাঙ্গনের একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই নিজেকে। আব্বার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মানুষের কাছে তার বিশ^স্থতা, মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা। আমিও মানুষের কাছে বিশ^স্থ হতে চাই, চাই মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। অনেকেই পৃথিবীতে স্বর্গ খুঁেজন। পুরো পৃথিবীর নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে জায়গাগুলো ঘুরে বেড়ান পরম সুখ প্রাপ্তির আশায়। কিন্তু আমার কাছে আমার বাবা আমার মা’ই স্বর্গের সুখ। এই সুখের পৃথিবী ছেড়ে আর কোথাও কী যাওয়া যায়? যায়না। আমার বাবা হাজার বছর আগলে রাখুক তার ভালোবাসা দিয়ে আমাকে, এটাই চাই। সুস্থ থাকুক আমার বাবা তার পুরো পৃথিবীর সবাইকে নিয়ে।
বাবা বারবার ঠকে একই ভুল করতেন : ইউসুফ আহমেদ খান
বাবা- যার কাছে সন্তানের জন্য কোনও কষ্টই কষ্ট না। রোদ, বৃষ্টি, জ্যাম, ভাঙ্গা রাস্তা, এগুলো কোনও বাঁধা না। বাইরে কোনও অনুষ্ঠানে বিরানীর প্যাকেট পেলে নিজে না খেয়ে তা সন্তানের জন্য নিয়া আসা, এগুলো দেখে বড় হয়েছি, আমার মায়ের অনেক বকা শুনেও মানুষকে বিশ্বাস করে ঠকতে দেখেছি, তাদের ক্ষমা করতে দেখেছি, সব ভুলে যেতে দেখেছি, মা ভুলতেন না, মনে রেখে বাবাকে গুছিয়ে দিতেন, বাবা বার বার একই ভুল করতেন, এখনও করেন। ছোট্টবেলা থেকেই দেখে আসছি, বাবা বিশেষ বিচারক হিসেবে আসনে বসা, সেখানে তাকে কোনও দিন নিজের স্টুডেন্ট কেও ছাড় দিতে দেখিনি, অনেক ধরনের চাপে পড়েও কোনদিন অন্যায় রায় দিতে দেখিনি, তাহলে হয়তো দুটো গাড়ি, আর তিনটা বাড়ি হতো আমাদের, তবে আমাদের আজকের অবস্থান নিয়ে মাথা উঁচু করে কথা বলি, আমি ওস্তাদ ইয়াকুব আলী খান এর সন্তান। ঢাকার বাইরে থেকে কেউ যদি ভাল গাইতো, তাদের দশগুণ উৎসাহ দিতে দেখেছি, এরকম সহজ সরল, নীতিবান, মানবিক এবং সময় সচেতন একজন মানুষ আমার বাবা। আমার বাবা ভীষণ মায়ার মানুষ, এখনও বাবাকে জড়িয়ে ধরে, পা তুলে দিয়ে বাবার বুকে ঘুমাই, সব ভাইবোন মিলে। যে কারোরই ভালোকে ভালো বলা মানুষের শিক্ষা পেয়ে আমি ধন্য, মা’র প্রতি কৃতজ্ঞ এরকম বাবা পেয়েছি বলে।
বাবা নেই কিন্তু বাবার স্বপ্নটা পূরণ করতে চাই : নিথর মাহবুব
আমার বাবা কদরুজ্জামান মোল্লা গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। বাবা চলে যাবার পর থেকে প্রতিটি দিনই নিজের ভিতর একটা হাহাকার অনুভব করি। মনে হলেই চোখ ভিজে যায়। যখন বাবা ছিলেন প্রচন্ড একটা শক্তি অনুভব করতাম। বাবার মৃত্যুর পর মা-ও অনেকটা অসহায় দুর্বল হয়ে গেছেন। আমার বাবা ভালো ওয়াজ করতে পারতেন। বাবা সুন্দর ও জোরালো কন্ঠে গজল, নজরুল সঙ্গীতও ভালো লাগত। আমি খুব সৌভাগ্যবান যে, আমি আমার বাবা এবং মায়ের সব ভালো দিকগুলো পেয়েছি। আমাকে নিয়ে আমার মা-বাবা উভয়ই সবসময় চিন্তা করতেন। কারণ তাদের দৃষ্টিতে আমি উল্টা-পাল্টা ছিলাম। মানে নাটক, গান, আবৃত্তি এসবের পিছনে সময় নষ্ট করতাম।
আমি ২০০৩ সালের দিকে যখন ঢাকায় এসে কষ্ট করছিলাম, তখন বাবা কদিন পরপরই চিঠি লিখে পাঠাতেন। পাগলামী না করে প্রতিটি টিঠিতে ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করতে বলতেন। নাটক, গান এসব রেখে গ্রামের গিয়ে আমাদের হাই স্কুলে শিক্ষকতা করতে বলতেন। তবে বাবা পরে নিশ্চিশ হতে পেরেছিলেন যে আমার সময়গুলো বিফলে যায়নি। ২০০৯ সালে যখন আমার অভিনীত বাংলালিংক এর একটি বিজ্ঞাপন প্রারে আসলো, বাবা এলাকার চায়ের দোকানে যখন আড্ডা দিতে বসলে, যখন টিভিতে বিজ্ঞাপনটি আসত আঙ্গুল তাক করে টিভিতে আমাকে দেখিয়ে সবাইকে বলতেন- এটা আমার ছেলে, যদিও গ্রামের সবাই আমাকে চিনে তবুও তিনি আবেগে সেটা বলতেন। গ্রামে গেলে সবাই আমাকে এসব জানাতেন। পত্রিকায় যখন নিউজ আসত বাজারের লোকেরা ডেকে বাবাকে বলতো- মোল্লাসাব আপনার ছেলের ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। বাবা পত্রিকা সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে যেতেন মাকে দেখানোর জন্য। অথচ তিনি একসময় আমার নাটক করা, গান করা এসব পছন্দ করতেন না। সন্তানের সাফল্য বাবা-মাকে কতটা খুশি করে তা আমি আমার বাবাকে দিয়ে বুঝেছি। বাবার ধারণা ছিল আমি অনেক টাকাও রোজগার করছি। আমাকে বাড়িতে একটা পাঁচ তালা বিল্ডিং করতে বলতেন। বাবা জানতেন না এই দেশে শিল্পীদের রোজগার এতো বেশি না। তবে বাবা বেঁচে থাকতেই টিনের চাল দিয়ে এক তালা একটা দালান করতে পেরেছি। যখন বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করি বাবা খুব খুশি ছিলেন। তখনও বলতেন পরে আবার একটা পাঁচ তালা বিল্ডিং উঠাবি। আমরা চার ভাইবোন তাই হয়তো বাবার স্বপ্ন ছিল পাঁচ তালা একটা বিল্ডিং। যদি আল্লাহ কখনো সামর্থ্য দেন বাবার এই ইচ্ছেটা পুরণ করতে চাই। আমার বাবাকে যেন আল্লাহ বেহেস্ত নসীব করেন, বাবা দিবসে সবার কাছে এই দোয়া চাই।
বাবার সহজ সরল আর সত্যবাদী বিশেষণ’ই আমি ধারণ করেছি : তরুন মুন্সী
আমার বাবা পেশাগতভাবে সরকারী এবং বেসরকারী দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানেই কর্মরত ছিলেন। চাকুরীর সুবাদে বাবা দেশের বাইরেও বেশকিছুদিন ছিলেন। যতোদিন আমার বাবা চাকুরী করেছেন বেশ সততার সাথে সুনামের সাথেই চাকুরী করেছেন। আমি যেহেতু বাবার বড় সন্তান তাই আমার সঙ্গে বাবার সম্পর্কটা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। সংসারের অনেককিছুই এখন বাবা আমার সঙ্গে শেয়ার করেন, অনেক কিছুর ক্ষেত্রে বাবা আমার উপর ভীষণ আস্থা রেখেই নিজে নির্ভার থাকেন। সন্তান হিসেবে আরো দীর্ঘ সময় বাবা মায়ের সেবা করার স্বপ্ন দেখি। একবার স্কুলে আমার বাবাকে আমার একজন শিক্ষক এমন কিছু তথ্য বাবার কাছে তুলে ধরেছিলেন যা আমার বাবার জন্য ছিলো বিব্রতকর। কিন্তু সেই বিষয়টিকে আমি পজিটিভলিই নিয়েছিলাম।
কারণ আমি মনেকরি একজন শিক্ষকও বাবারই মতো। কারণ সেই ঘটনার কারণেই পরবর্তীতে আমার পরীক্ষার ফলাফল অনেক ভালো হয়। সন্তান হিসেবে বাবাকে বলতে চাই, প্রতিদিনই বাবার শক্তি এবং ছায়াটাকে উপভোগ করতে চাই। আমি আসলে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। লেখাপড়া শেষে চাকুরী করলেও সঙ্গীতকে পেশা হিসেবে নেবার কারণে এক সময় খুউব চিন্তিত ছিলেন আমার বাবা মা। তবে আমি যা কিছুই করিনা কেন আমার বাবা এবং মায়ের নীরব সমর্থন ছিলো এবং তাদের বিশ্বাস ছিলো আমি ভালো করতে পারবো। আমার বাবা একজন সহজ সরল মানুষ, একজন সত্যবাদী মানুষ। বাবার সহজ সরল এবং সত্যবাদীতার বিষয়টিই আমার নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সবসময়ই আমার বাবার সমর্থন ছিলো। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আমার বাবা যেন সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন।
বাবাকে দিয়ে একটি গান গাওয়ানোর স্বপ্ন আমার : রুমান রুনি
বাবাকে নিয়ে এভাবে কখনো কোনদিন বলতে হবে এটা আসলে আমার ভাবনাতেই কখনো ছিলোনা। মানুষের জীবনের কিছু মুহুর্ত আসে যা তার কল্পনারও বাইরে। আমি আমার বাবাকে নিয়ে বাবা দিবসে পাঠকের উদ্দেশ্যে কিছু বলবো, এটা যেন আমার জীবনের অন্যরকম এক প্রাপ্তি। আমার বাবা মো : সিরাজুল ইসলাম আকন্দ। বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরী করতেন। প্রত্যেকটা বাবাদের তার সন্তানদের কে নিয়ে আলাদা স্বপ্ন থাকে। যখন সেই স্বপ্ন পূরণ না হয় তাহলে বাবারা কিছুটা হলেও কষ্ট পান। কিন্তু কখনো কোন বাবা তা প্রকাশ করেন না। আমার বাবাও কোনদিন তা কোনভাবেই প্রকাশ করেননি। তবে আমি বুঝতে পারি। কিছুদিন আগে ‘বাবা’ নামের একটা নাটক নির্মাণ করেছিলাম। বাবা দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। তখন বাবা বলেছিল তুই তোর নির্মাণেই নিজের মেধাটাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা কর। আর কিছুই করিস না। চেষ্টা করছি বাবার কথা রাখতে। কিন্তু বাবা অনেক পরিশ্রমী আর আমি অলস প্রকৃতির। বাবার আদর শাসন দুটোই সমানতালে পেয়েছি। বাবা আদর যেমন করতো ঠিক তেমনিভাবে শাসনটাও। কথায় বলে না শাসন করা তারই সাজে আদর করেন যিনি। আমার বাবা খুব সুন্দর গান করেন।
যদি কোনদিন বাবার একটা মৌলিক গান আমি করাইতে পারি আমি নিজেকে অনেক বেশি সৌভাগ্যবান মনে করবো। আমার বাবা খুবই সহজসরল একজন মানুষ । আজ পর্যন্ত বাবার কাছে চেয়ে কোন জিনিস পাই নাই এমন হয় নাই। আমার বাবা এককথায় বলতে গেলে অসাধারণ একজন মানুষ,বাবাকে নিয়ে বলে শেষ করা যাবেনা। পৃথিবীতে যেমন একটিও খারাপ বাবা নেই ঠিক তেমনি ভাবে আমি বলতে পারি, আমার বাবার মতো অধিক সরলতায় আক্রান্ত মানুষ খুব একটা নেই বললেই চলে। প্রতিটি সন্তানের জন্যই বাবারা শতভাগ আশাবাদী, অপ্রকাশিত সুপ্ত এই ইচ্ছেগুলো প্রতিনিয়ত বাবাদের বুকে অংকুরিত হতে থাকে। বাবা দিবসে সন্তান হিসেবে আমি এবং আমাদের সকল সন্তানদের উচিৎ বাবাদের মনে অংকুরিত হওয়া ইচ্ছে গুলোকে শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে তোলা। ভালোবাসি বাবা তোমাকে।